চূড়ান্ত নিবন্ধন পাচ্ছে এনসিপিসহ ৩ দল

সীমানার গেজেটে ১৪ বা ১৫ নভেম্বর

Printed Edition

বিশেষ সংবাদদাতা

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শাপলা কলি প্রতীকসহ চূড়ান্ত নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। পাশাপাশি আরো দুটি দল আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পাচ্ছে। এ দল দুটি হলো- আম জনগণ পার্টি ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)। গণবিজ্ঞপ্তি জারির পর দলগুলোর বিষয়ে কোনো দাবি আপত্তি না থাকলে এ দলগুলো ইসির চূড়ান্ত নিবন্ধন পাবে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে গতকাল নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

সচিব আখতার আহমেদ বলেন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিক বাছাই শেষে ১৪৩টি আবেদনের মধ্যে মাঠপর্যায়ের তদন্তে তিনটি দল শর্ত পূরণ করেছে। এই তিনটি দল হলো- বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলগুলোকে নিবন্ধনের জন্য যোগ্য মনে করছে কমিশন। তিনি বলেন, এই তিনটি দলের নিবন্ধন বিষয়ে জনসাধারণের মতামত ও আপত্তি জানানোর জন্য বুধবার আজ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। জনমত জানানোর সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে বিবেচিত হলেও পরবর্তী সময়ে জাতীয় জনতা পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (শাহজাহান সিরাজ) এবং জাতীয় লীগের নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। এই দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা না থাকায় সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া আম জনতার দল, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, ভাষানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জনতার দল, মৌলিক বাংলা, জনতার পার্টি এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি- এ আটটি দলকে সঠিকতা না পাওয়ায় নামঞ্জুর করা হয়েছে।

যোগ্যতা অর্জনের মাপকাঠি এবং শিথিলতা : সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিনিয়র সচিব জানান, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের ন্যূনতম দুটি শর্তের মধ্যে যেকোনো একটি পূরণ করা বাধ্যতামূলক। শর্ত দুটি হলো, ১০০টি উপজেলা/ মহানগর পর্যায়ে কার্যকরী কার্যালয় এবং সদস্য থাকতে হবে। অথবা ২২টি জেলায় কার্যকরী কার্যালয় এবং সদস্য থাকতে হবে। তিনি বলেন, আদালতের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে কিছুটা সহনশীলতার (লিনিয়েন্টলি) ভিত্তিতে সামান্য শর্টফল (ঘাটতি) থাকলেও দলগুলোকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।

সীমানার গেজেট ১৫ নভেম্বর

চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের সময়সীমা প্রসঙ্গে ইসি সচিব আরো জানান, ১২ নভেম্বর পর্যন্ত জনসাধারণের কাছ থেকে দাবি, আপত্তি বা অভিমত পাওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সময়সীমা শেষ হওয়ার পর, যদি কোনো জটিলতা না থাকে তবে ১৪ বা ১৫ নভেম্বরের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বা গেজেট প্রকাশ করা সম্ভব হবে।

প্রতীক ও অন্যান্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এনসিপি এবং আরো দুটি দল প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছে। এর মধ্যে একটি দল প্রতীক পরিবর্তনের অনুরোধ করেছে। এই বিষয়ে কমিশন যাচাই-বাছাই করছে এবং প্রাপ্যতা থাকলে বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হবে।

এনসিপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি

এ দিকে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে প্রধান এবং দলটির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা: তাসনিম জারাকে কমিটির সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এনসিপির আহ্বায়ক মো: নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল এ তথ্য জানানো হয়।

এই কমিটি ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে এনসিপির সার্বিক প্রস্তুতি, প্রার্থী নির্বাচন, মাঠ পর্যায়ের সমন্বয়, আইনি ও প্রশাসনিক কার্যক্রম, মিডিয়া ব্যবস্থাপনা, প্রচারণা, প্রশিক্ষণ ও মনিটরিংসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ তদারকি করবে।

এ ছাড়াও কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন- আরিফুল ইসলাম আদীব, মাহবুব আলম মাহির, খালেদ সাইফুল্লাহ, এহতেশাম হক, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল আমিন, আলাউদ্দীন মোহাম্মদ, অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা, অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর, সাইফুল্লাহ হায়দার ও অ্যাডভোকেট মো: তারিকুল ইসলাম।