- মেয়াদ ২ বছর বাড়ানো হলো
- ১৪.৬৪ কোটি টাকার অডিট আপত্তি
প্রকল্প গ্রহণের আগে যথাযথভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই না করায় জোয়ারের পানির চাপেই কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। কারণ রাস্তার কোনো কোনো অংশে জোয়ারের সময় স্বাভাবিক ঢেউয়ের দূরত্ব বিবেচনা করা হয়নি। মেয়াদের শেষ দিকে এসে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ (১.৬০ কিমি-৩২ কিমি পর্যন্ত) সড়ক প্রশস্তকরণ (১ম সংশোধিত) চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াই মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হলো। আগামী ২০২৭ সালের জুনে প্রকল্প সমাপ্ত করতে হবে। তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকার একটি অডিট আপত্তি রয়েছে বলে পরিকল্পনা কমিশন থেকে জানা গেছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের ৩০ দশমিক ৪০ কিলোমিটার সড়কাংশ ৫ দশমিক ৫ মিটার এবং রেজু খালের ওপর বিদ্যমান ৩০৫ মিটার দীর্ঘ সেতুটি ১০ দশমিক ২৫ মিটার (দুই লেন) প্রস্থে উন্নীতকরণের মাধ্যমে নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন, পর্যটন শিল্পের প্রসারসহ প্রকল্প এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন। ২০২২ সালের জুনে প্রকল্পটি এক হাজার ৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৫ সালের জুনে শেষ করার জন্য অনুমোদন দেয়া হয়।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে, ১১৩ দশমিক ২৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ৭ দশমিক ২৪ লাখ ঘনমিটার মাটি ভরাট, ২৯ দশমিক ৪২ কিলোমিটার ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ ও শূন্য দশমিক ৩২ কিলোমিটার ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট বাঁক সরলীকরণ, ছয় হাজার ৪৮০ মিটার আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ, ৬৩ হাজার ৭২০ বর্গমিটার জিও টেক্সটাইলসহ সিসি ব্লক স্থাপন, ৬০৮টি সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন, ৫৪ হাজার ৩৬০টি টেট্রাপড নির্মাণ, ৯ হাজার ১২০ বর্গমিটার রোড মার্কিং, ইউটিলিটি স্থানান্তর, ২ লেনের একটি সেতু নির্মাণ (৩০৫ মিটার), নিকাশ কাঠামো নির্মাণ (৯ হাজার ১৮০ মিটার এল ড্রেন ও ১৩ হাজার ৯৪ মিটার ইউ ড্রেন) ইত্যাদি।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় এ যাবৎ ১৬টি পিআইসি সভা, পাঁচটি পিএসসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডিপিপি মোতাবেক প্রতি তিন মাস অন্তর পিআইসি ও পিএসসি সভা অনুষ্ঠানের সংস্থান থাকলেও তা করা হয়নি, যা পরিকল্পনা শৃঙ্খলার ব্যত্যয়। মনিটরিংয়ের অন্যতম টুল পিআইসি ও পিএসসি সভার সংস্থান মোতাবেক অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে হবে। প্রতি সভায় কর্মপরিকল্পনা অনুসারে কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য বলছে, প্রকল্পের আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অডিট হয়েছে এবং একটি অডিট আপত্তি আছে। অডিট আপত্তিতে জড়িত অর্থের মোট পরিমাণ ১৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। ভবিষ্যতে এ ধরনের বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা বা প্রকল্প পরিচালককে যতœবান ও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অডিট আপত্তি নিষ্পত্তি করে অডিট রিপোর্ট আইএমইডিতে পাঠাতে হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ প্রকল্পটি সম্পর্কে বলছে, কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের কোনো কোনো অংশে জোয়ারের সময় স্বাভাবিক ঢেউয়ের দূরত্ব বিবেচনা করা হয়নি, যার ফলে রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। প্রকল্প গ্রহণের পূর্বে যথাযথভাবে ফিজিবিলিটি স্টাডি না করায় এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে বলে কমিটি মনে করে। ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রকল্প নেয়ার সময় যথাযথভাবে ফিজিবিলিটি স্টাডি করে প্রাকৃতিক বিষয়গুলো অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।