চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা আঞ্চলিক মহাসড়ক, জেলার পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের একটি। তবে ২০২২ সালে প্রায় ৯ কোটি টাকায় সংস্কার হওয়ার পরও সড়কটি এখন চলাচলের অনুপযোগী। উঁচু-নিচু জায়গা, বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দে ভরা সড়কটি প্রতিদিনই পরিণত হচ্ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকিপূর্ণ পথে। আড়াই বছরে অন্তত ১০ বার জোড়াতালি দিয়েও উন্নতি হয়নি পরিস্থিতির।
স্থানীয়দের অভিযোগ সড়ক নির্মাণের নামে হয়েছে ব্যাপক লুটপাট। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নিম্নমানের কাজ করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছে। তাদের দাবি, কোটি টাকার প্রকল্পের সঠিক প্রয়োগ না হওয়ায় জনগণ আজ ভোগান্তির শিকার।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ জানায়, চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগার থেকে দামুড়হুদার ডুগডুগি বাজার পর্যন্ত ৯ দশমিক ৭ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। ব্যয় নির্ধারণ করা হয় আট কোটি ৬২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। কাগজে-কলমে ঠিকাদার ছিল জহিরুল লিমিটেড, তবে স্থানীয়ভাবে কাজ বাস্তবায়ন করেন যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরফিন আলম রঞ্জু। একই বছরের নভেম্বরেই কাজ শেষ হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, সংস্কারের পর অল্পদিন ভালো থাকলেও দ্রুতই বিভিন্ন স্থানে ধস, ফাটল ও গর্ত তৈরি হয়েছে। যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, মাইক্রো বাসসহ হাজারো যান প্রতিদিন এই সড়কে চলাচল করে। দর্শনা, মুজিবনগর ও জীবননগর সংযোগের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে এখন প্রায় ১০ কিলোমিটারজুড়ে চলাচলই ঝুঁকিপূর্ণ।
দর্শনার বাসিন্দা আওয়াল হাসান বলেন, ‘সংস্কারের পর মাত্র ১৫ দিন ভালো ছিল। এর পর থেকেই গর্তের পর গর্ত। অন্তত ১০ বার জোড়াতালি দেয়া হয়েছে, কিন্তু কোনো লাভ নেই।’
উজিরপুরের রাজিবুল হাসানের দাবি, সড়কের নামে কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। জনগণ আজ দুর্ভোগে।
ফকিরপাড়ার কামাল উদ্দীন বলেন, এই সড়কে দুর্ঘটনা হয়ে কয়েকজন মারা গেছেন। তবু স্থায়ী সমাধান নেই।
সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ সুজাত কাজী বলেন, এটি সংস্কার নয়, সম্পূর্ণ পুনর্নির্মাণ করা উচিত ছিল। শুধু কার্পেটিং করায় দ্রুত নষ্ট হয়েছে। উঁচু-নিচু অংশ সমতলের কাজ চললেও স্থায়ী সমাধানে বড় প্রকল্প প্রয়োজন। বিষয়টি উচ্চপর্যায়ে জানানো হয়েছে।



