নিজস্ব প্রতিবেদক
দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণীর বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে বেসরকারি তথা কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার হাইকোর্টের এক আদেশে এই অধিকার ফিরে পেয়েছে দেশের কয়েক লাখ কোমলমতি শিক্ষার্থী। যদিও সরকারের সিদ্ধান্ত ছিল শুধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই সরকারিভাবে অনুষ্ঠিত বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। কিন্তু এই অযৌক্তিক ও অমানবিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম মহাসচিব ফারুক হোসেন। রিট পিটিশন নং-১৪৭৩৫/২০২৫। আর এই রিটে পক্ষভুক্ত হয়ে আইনি লড়াইয়ে যুক্ত হন আরো ৪২ জন শিক্ষক। রিট পিটিশনটি দায়ের করে শুনানিতে অংশ নেন বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট নিয়াজ মোর্শেদ। গত ১৭ জুলাই শুধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিয়ে বৃত্তি পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে পরিপত্র জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে এই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট পিটিশনটি দায়ের করা হয়।
অবশ্য শুরু থেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষায় বেসরকারি তথা কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ। তারা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ডা: বিধান রঞ্জন রায়ের সাথে সাক্ষাৎ করে এই দাবির বিষয়টিও একাধিকবার তুলে ধরেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব মাসুদ রানাও উপস্থিত ছিলেন। ওই সময়ে কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে তাদের দাবিসংবলিত স্মারকলিপি উপদেষ্টার হাতে তুলে দেন অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো: মিজানুর রহমান সরকার। তিনি বরাবরই বলে আসছিলেন যে, আমরা বিশ্বাস করি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আজকের এই শিশুদের হাতেই নির্ভর করছে দেশের আগামী নেতৃত্ব। কাজেই শিক্ষায় দৃশ্যমান সাফল্য বাংলাদেশের একটি বড় অর্জন। আমরা দৃঢ়তার সাথে মনে করি, বাংলাদেশের কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ছয় লাখ শিক্ষক দেশের এই অর্জনের অংশীদারও বটে। বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো শিক্ষাক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী ও সময়োপযোগী অবদান রেখে আসছে এবং বেকার সমস্যা দূরীকরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। দেশের ৪০ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুলে প্রায় ৫০ লাখ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। মহাসচিব মিজানুর রহমান সরকার আরো বলেন, ২০০৯ সাল থেকে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। তাই চলতি বছর থেকে পুনরায় অনুষ্ঠিতব্য বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ দানের অনুরোধ জানান তিনি।
 


