নতুন বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখার প্রত্যয়

নয়া দিগন্তের ২১তম বর্ষপূর্তি উদযাপন

একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার এলে তাদের গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে নয়া দিগন্ত তাদের পাশে থাকবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক
Printed Edition
নয়া দিগন্তের ২১তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ২১ পাউন্ড ওজনের কেট কাটছেন অতিথিবৃন্দ
নয়া দিগন্তের ২১তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ২১ পাউন্ড ওজনের কেট কাটছেন অতিথিবৃন্দ |নাসিম শিকদার

ফ্যাসিবাদী আমলে অনেক বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও নয়া দিগন্ত পেশাদারিত্ব বজায় রেখে দেশের জন্য ভূমিকা রেখেছে। গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীন এ সময়ে পত্রিকাটিকে দেশ ও জাতির কল্যাণে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আরো সাহসী হতে হবে। একটি সমৃদ্ধশীল নতুন বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে।

দৈনিক নয়া দিগন্তের ২১তম বর্ষপূতি উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী ও সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্যে এমন প্রত্যাশার কথা বলেন। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সকাল ১০টা ৫৬ মিনিটে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন নয়া দিগন্তের সম্পাদক সালাহউদ্দিন মুহাম্মদ বাবর। তিনি বলেন, নয়া দিগন্ত পরিবারের জন্য আজ এক অনন্য আনন্দের দিন। এ আনন্দের দিনে উপস্থিত সবাইকে নয়া দিগন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এ স্মরণীয় মুহূর্তে নয়া দিগন্তের স্থপতিদের অন্যতম শহীদ মীর কাসেম আলী, কমোডর আতাউর রহমান, সাবেক সচিব শাহ আবদুল হান্নানের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি। স্থপতিদের অন্যতম আবু নাসের মোহাম্মদ আবদুজ জাহের, ইসকান্দার আলী খান, শামসুল হুদাসহ সবার অবদান স্মরণ করছি। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি মরহুম সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিনকে। তিনি বলেন, নয়া দিগন্ত পরিবার বিগত ১৬ বছর চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। দুঃস্বপ্নের সেসব দিনগুলোতে শত বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে যেসব ব্যক্তি, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান আমাদের পাশে ছিলেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি গত বছরের আগস্ট বিপ্লবের বীর সেনানীদের প্রতি। সে বিপ্লবের ছটায় গোটা জাতির সাথে আমাদের প্রতিষ্ঠানও আলোকিত হয়েছে। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের ঐতিহাসিক পরিবর্তনকে মজবুতি দিতে নয়া দিগন্ত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একই সাথে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রাখতে। আগস্ট বিপ্লবের শহীদদেরকে আল্লাহ যেন শহিদী মর্যাদা দেন এবং আহতদের যেন দ্রুত সুস্থতা দান করেন সেজন্য দোয়া করছি। এ সময় তিনি ’৭১-এর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন।

সালাহউদ্দিন মুহাম্মদ বাবর বলেন, বর্তমান সরকার আমাদের প্রতি যে সহানুভূতি দেখিয়েছে তাতে আমাদের মাঝে আশা তৈরি হয়েছে, ইনশা আল্লাহ নয়া দিগন্ত স্বপ্ন পূরণে সক্ষম হবে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার এলে তাদের গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে নয়া দিগন্ত তাদের পাশে থাকবে বলে তিনি প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

স্বাগত বক্তৃতার পর নয়া দিগন্তের অগ্রযাত্রা নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন শেষে অতিথিরা কেক কেটে বর্ষপূর্তি উদযাপন করেন। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মুফতি ফখরুল ইসলাম, স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা: এম মোজাহেরুল হক, দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান শিব্বির মাহমুদ, বোর্ড সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইস্কান্দার আলী, মুহাম্মদ ইউনুছ, খন্দকার জাকির হোসেন, খন্দকার এনায়েত হোসেন, নয়া দিগন্ত প্রকাশক শামসুল হুদা, সম্পাদক সালাহউদ্দিন মুহাম্মদ বাবর, দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আযম মীর শাহীদুল আহসান, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ, নয়া দিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলী, সিটি এডিটর আশরাফুল ইসলাম, চিফ রিপোর্টার আবু সালেহ আকনসহ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিক ও সংস্কৃতিকর্মীরা।

পরে অতিথিরা একে একে মঞ্চে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। এ ছাড়া বিশিষ্ট ব্যক্তিরা দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন এবং নয়া দিগন্ত সম্পাদকের হাতে ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। অনেকে ক্রেস্ট, মিষ্টি নিয়েও হাজির হন অনুষ্ঠানস্থলে।

দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান শিব্বির মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের বোর্ড সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইসকান্দার আলী খান, নয়া দিগন্ত প্রকাশক শামসুল হুদা, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক রেজাউদ্দিন স্টালিন, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবদুল মজিদ, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা: মো: শাহিনুল আলম, স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা: এম মোজাহেরুল হক, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম প্রমুখ।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান, জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ইকতিদার হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন, জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সেক্রেটারি আতাউর রহমান সরকার, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের অফিস সেক্রেটারি কামরুল আহসান হাসান, সহকারী প্রচার সম্পাদক আবদুস সাত্তার সুমন, সহকারী মিডিয়া সম্পাদক আশরাফুল আলম ইমন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান হীরা, বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ডা: মো: মুজিবুর রহমান হাওলাদার, স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা: সৈয়দ মো: আকরাম হোসেন, বিএমইউর দন্ত অনুষদের ডিন ডা: মো: সাখাওয়াৎ হোসেন সায়ন্থ, জিয়া পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক ডাবলু।

অনুষ্ঠানস্থলে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহের হোসেনের পক্ষে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক মো: জাহাঙ্গীর কবীর, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির পক্ষে শুভেচ্ছা জানান সমিতির সভাপতি শাহীন সুমন ও কোষাধ্যক্ষ মো: তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া (সায়মন তারিক), বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশেনের মহাসচিব মো: মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে শুভেচ্ছা জানান সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ হামিদুর রহমান, দফতর সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, সিলেট জেলা সভাপতি বদরুল আলম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, উপদেষ্টা হওয়ার আগে আমি দীর্ঘদিন নয়া দিগন্তে কলাম লিখেছি। সে হিসেবে আমি নয়া দিগন্ত পরিবারের একজন গর্বিত সদস্য। তিনি আরো বলেন, নয়া দিগন্ত সব সময় সত্য তুলে ধরে। উপদেষ্টা হওয়ার পর আমার মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম তুলে ধরেও তারা আমাদের সরকারকে সহযোগিতা করছে। তিনি সম্প্রতি ফেসবুকের বিভিন্ন লেখালেখির প্রসঙ্গে বলেন, আমি একজন মুসলমান হিসেবে বায়তুল মোকাররম মসজিদে যাই ইবাদত করতে। কিন্তু ঢাকেশ^রী মন্দিরে যাই রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে। যে কেউ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকলে তাকে সব ধর্মের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হয়। সব ধর্মের মানুষের সাথে যাতে সম্পর্ক সুদৃঢ় থাকে সেজন্য কাজ করতে হয়। দেশে একটি গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে। তারা যাতে সেটি না করতে পারে সেজন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় কাজ করছে। আমি যখন উপদেষ্টা থাকব না তখন আর মন্দিরে, প্যাগোডায় যেতে হবে না। তখন আমি শুধু মসজিদে যাবো। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যদি কোনো বিশিষ্ট আলেমকেও বসিয়ে দেয়া হয় তাকেও রাষ্ট্রের কারণে মদের লাইসেন্স দিতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নয়া দিগন্ত আমাদের কাছে সংগ্রামের আরেক নাম। ফ্যাসিবাদী শাসনামলে এই পত্রিকার সাংবাদিক, সম্পাদক, প্রকাশক ও কর্মীরা অকথ্য নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। কিন্তু তবু তারা ধৈর্য, সতর্কতা ও বিচক্ষণতার সাথে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা চালিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, বিগত স্বৈরাচারী শাসনামলে এই পত্রিকার সাংবাদিকদের ওপর ছিল দমন-পীড়নের ভয়াবহ ছায়া। তবুও তারা গণমানুষের চেতনা ও সত্যের সংবাদ প্রচারে অটল ছিলেন। বিএনপি মহাসচিব তাদের এই সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রকামী শক্তিগুলোর ওপর ফ্যাসিবাদী সরকারের দমন-পীড়নের কথা জাতি ভুলে যায়নি। ৬০ লাখ কর্মীর নামে মিথ্যা মামলা, ২০ হাজারের বেশি নেতাকর্মী হত্যাকাণ্ড ও ১৭০০ ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন। জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, নয়া দিগন্তের প্রতিষ্ঠাতা মীর কাসেম আলী, সালাহউদ্দিন কাদেরসহ অনেক আলেম-ওলামাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে মিথ্যা মামলায়। এসব এই জাতির ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায়। তিনি বলেন, দেশবাসী একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চায়-এমন বাংলাদেশ, যা কোনো বিদেশী শক্তির নিয়ন্ত্রণে নয়, জনগণের ইচ্ছায় পরিচালিত হবে। নয়া দিগন্ত সে লক্ষ্যে গণমানুষের কণ্ঠস্বর হিসেবে ভূমিকা রেখে চলেছে।

বিএনপি মহাসচিব ১৯৭৫ সালের বাকশাল শাসনের সময় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণের দুঃসময় স্মরণ করে বলেন, তখন সাংবাদিকরা বেকার হয়েছিলেন, অনেকে রাস্তায় হকারি করেছেন। পরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনেন, বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হয়েছে। সংস্কার সনদে স্বাক্ষর করা দলগুলোর ঐক্যের মাধ্যমে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই। গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারে সবাইকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, ‘নয়া দিগন্ত সবসময় সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। দলের পক্ষ থেকে সম্পাদক, প্রকাশক, রিপোর্টার ও সব কর্মীবৃন্দকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।’ বক্তব্যের শেষে মির্জা ফখরুল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে নয়া দিগন্ত পরিবারকে শুভেচ্ছা জানান।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আমরা একটি সুবিচারপূর্ণ, ন্যায়ের শাসনের দেশ চাই। নয়া দিগন্তের প্রতিষ্ঠাতারা এমন একটি সমাজ গঠনের জন্য শুরু থেকে কাজ করছেন। আগামীতেও তারা একটি জুলুম-শোষণমুক্ত সমাজ গঠনে কাজ করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। নয়া দিগন্ত আগামীতে আরো সাহসিকতা নিয়ে এগিয়ে যাবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দৈনিক নয়া দিগন্ত একটা স্বপ্ন নিয়ে গঠিত হয়েছিল। যার লক্ষ্য ছিল নতুন প্রজন্মের জন্য একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে দেয়া। এ সময় তিনি নয়া দিগন্তের উদ্যোক্তাদের অন্যতম শহীদ মীর কাসেম আলীকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, নতুন দিগন্ত গড়ার যে উদ্দেশে নয়া দিগন্ত কাজ করছিল ফ্যাসিস্ট শাসক তা বুঝতে পেরে এর উদ্যোক্তাদের মধ্যে মীর কাসেম আলীকে বিনা অপরাধে নিষ্ঠুরভাবে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিল।

বিগত ১৭ বছরে অনেক ঝড়-ঝাপটা সহ্য করেও নয়া দিগন্ত সত্যের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, এজন্য তিনি পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। অন্যায়, ভুল, অসভ্যতার বিরুদ্ধে নয়া দিগন্ত তার অস্তিত্ব জানান দিয়ে বলেছে যে আমাদের প্রতিষ্ঠাতাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আমরা সংগ্রামের পথে অটুট থাকব এবং অনড় থাকব। এজন্য নয়া দিগন্তকে আরো সাহসী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নয়া দিগন্ত প্রতিষ্ঠা থেকে সামাজিক দায়বদ্ধতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ফ্যাসিবাদের সময়েও তারা সাহসিকতার সাথে কলম ধরেছে, টিমটিম করে হলেও গণতন্ত্রের আলো জ্বালিয়ে রেখেছিল। অনেক পত্রিকা হারিয়ে গেলেও নয়া দিগন্ত টিকে থেকেছে- এটাই তাদের কৃতিত্ব। তিনি বলেন, ‘দুই-চার কলাম লেখার জন্য আমাকে প্রায় সাড়ে ৯ বছর নির্বাসনে থাকতে হয়েছে, আয়না ঘরে থাকতে হয়েছে, নির্যাতনে কারাগারে থাকতে হয়েছে। কিন্তু কখনো সংগ্রামের পথ থেকে পিছিয়ে যাইনি।’

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘একসময় আমি ও আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ভাই পিজি হাসপাতালের প্রিজনসেলে ছিলাম। করোনারি কেয়ার ইউনিটের একটি সেলে আমাদের রাখা হয়েছিল। আমরা একে অপরকে দেখতে পেতাম। তিনি তখন অনশন করছিলেন। আমি অনেক বুঝিয়েছিলাম, আপনি মারা গেলে শেখ হাসিনা খুশি হবে- দয়া করে অনশন ভঙ্গ করুন। পরে মুরুব্বিরা গিয়ে ছয়-সাত দিন পর তিনি অনশন ভঙ্গ করেন।’

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আজ আমরা ছাত্রদের অভ্যুত্থানের গৌরবময় ইতিহাস শুনলাম, রক্তঝরা দিনগুলোর স্মৃতি মনে করলাম। এই অতীতের ভিত্তিতেই আমাদের আগামীর বাংলাদেশ গড়তে হবে। আমাদের সন্তানদের জন্য একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকারব্যবস্থা গড়ে তোলাই হবে আমাদের দায়িত্ব।’ তিনি আরো বলেন, ‘দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রায় আমাদের সবাইকে এক থাকতে হবে। মতাদর্শে ভিন্নতা থাকলেও দেশের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যদি আমাদের অনৈক্যের কারণে ফ্যাসিবাদের প্রত্যাবর্তন ঘটে, জাতি আমাদের মা করবে না। তিনি আহ্বান জানান, আমাদের সন্তানদের রক্তের অঙ্গীকার পূরণ করতে হবে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তনের সব দরজা বন্ধ করতে হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন।

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের বলেন, নয়া দিগন্ত গত ১৬-১৭ বছর কঠিন সময় পার করেছে। তার পরও তারা সত্যের পথে অবিচল থেকেছে। তারা দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করেছে। আগামীতে তারাও সাহসিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।

খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেন, নয়া দিগন্ত সব সময় ইসলামের পক্ষে কাজ করছে। ইসলামের যেকোনো সঙ্কটে আমরা যখন আন্দোলন করি তখন নয়া দিগন্ত থেকে আমরা সমর্থন পাই।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, নয়া দিগন্ত যে দুঃসময়ে টিকে আছে, সেটা জাতির জন্য অনুপ্রেরণার বিষয়। আগামী দিনেও যদি ফ্যাসিবাদ বা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সঙ্কুচিত হয়, আমি মনে করি তখনো আমাদের আশ্রয়স্থল ও ভরসার জায়গা থাকবে নয়া দিগন্ত। রিজভী বলেন, নয়া দিগন্ত অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজকের অবস্থানে এসেছে। আমরা যারা রাজনীতি করি, সেই পথচলার সাক্ষী আমরা নিজেরাই। গণতন্ত্রের ভয়াল দুঃসময়ে নয়া দিগন্ত জাতিকে প্রাণবন্ত রাখার যে ভূমিকা রেখেছে, তা জাতি অনেক দিন মনে রাখবে। তিনি আরো বলেন, আমরা ১৬-১৭ বছর এক ভয়াবহ সময় পার করেছি, তখন সকালে জেগে প্রথম খোঁজ করতাম নয়া দিগন্ত এসেছে কি না। কারণ সেটিই ছিল আমাদের প্রেরণার জায়গা।

রিজভী বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন, শাহাদতবার্ষিকী কিংবা রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যখন অন্য পত্রিকাগুলো ভয়ে কিছু প্রকাশ করতে পারেনি, তখন নয়া দিগন্ত সাহসের সাথে তাদের স্মৃতি ও আদর্শ তুলে ধরেছে। এই সাহসিকতা কখনো ভোলা যাবে না। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির বিজয় অর্জনে নয়া দিগন্তের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ থাকবে। অতীতের মতো ভবিষ্যতেও এই দৈনিক একই দায়িত্ব পালন করবে এটিই আমাদের প্রত্যাশা।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, আমি প্রতিদিন নয়া দিগন্ত পড়ি। এই পত্রিকা সব সময় আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লিখেছে। এ জন্য তাদের নানা সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। তার পরও তারা কখনো পিছপা হয়নি। তিনি আগামীতে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনে নয়া দিগন্ত ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, দৈনিক নয়া দিগন্ত ফ্যাসিবাদী সময়ের সবচেয়ে বড় সংগ্রামের নাম। ফ্যাসিবাদী আমলে পত্রিকার সাংবাদিকদের নির্যাতন করা হয়। তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল কায়েম করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি। শেখ হাসিনা সেটা পেরেছিলেন। ইউনিক ফর্মুলায় বাকশাল কায়েম করেছিল হাসিনা। তিনি উল্লেখ করেন, ফ্যাসিবাদী আমলে সব গণমাধ্যম এক সুরে কথা বলত। তখন নয়া দিগন্ত দাঁড়িয়ে ছিল, সে সময় দাঁড়িয়ে থাকাই ছিল সবচেয়ে বড় জিহাদ। শেখ হাসিনার পুরো শাসনের ঘটনাবলি লিখে রাখা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান শিব্বির মাহমুদ বলেন, ২১ বছর মানেই উচ্ছ্বাস। বিদেশে ২১ বছর হলে বিশেষভাবে পালন করা হয়। নয়া দিগন্ত আজকে ২১ বছর পালন করছে। আগস্ট বিপ্লবের পর আমরা আজ স্বাধীনভাবে উৎসব করছি, এ জন্য আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করছি। একই সাথে আগস্ট বিপ্লবীদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এ সময় তিনি দেশকে স্বনির্ভর করে গড়ে তুলতে কর্মমুখী শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেয়ার আহবান জানান।

দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের বোর্ড সদস্য ইস্কান্দার আলী খান বলেন, নয়া দিগন্তের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আমি ছিলাম। শহীদ মীর কাসেম আলীর নেতৃত্বে আমরা রাতদিন পরিশ্রম করে পত্রিকা প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছি। ফ্যাসিবাদী সরকারের কারণে আমাকে সাত বছর দেশের বাইরে থাকতে হয়েছে। আগস্ট বিপ্লবের পর দেশে আসার সুযোগ পেয়েছি। এ জন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। তিনি বলেন, নয়া দিগন্ত প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সত্যের সাথে থেকেছে। আগামীতেও সত্যের পথে অবিচল থাকবে ইনশা আল্লাহ।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা: মো: শাহিনুল আলম বলেন, নয়া দিগন্ত স্বৈরাচারের দিনগুলোতে সাহসের সাথে লড়াই করেছে, অসত্যের সাথে আপস করেনি। এই দৈনিকটির এ ধরনের অবস্থানের কারণে নির্যাতিত হয়েছে, নানা হুমকি-ধমকি এসেছে। বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দিয়েছে। তবু নয়া দিগন্ত মাথা নোয়ায়নি, লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহস ও কৌশল অবলম্বন করে টিকে রয়েছে। অসত্যকে পরাজিত করতে বাংলাদেশে যে এলিমেন্টগুলো ছিল তাদেরকে উৎসাহ দিয়েছে তাদের লেখনিতে।

বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা: এম মোজাহেরুল হক বলেন, আমরা প্রতিদিন নয়া দিগন্তকে দেখতে পাই সত্যের সাথে লড়াই করতে। বিগত স্বৈরাচারের সময় নয়া দিগন্ত তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের প্রতি অবিচল থেকেছে। সাহসী ভূমিকা পালন করার কারণে নয়া দিগন্তকে সাফার করতে হয়েছে কিন্তু তারা আপস করেননি। আশা করি, ভবিষ্যতে নয়া দিগন্ত এভাবেই জাতিকে পথ দেখিয়ে যাবে।

ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম তার বক্তব্যে নয়া দিগন্তের ২১তম বর্ষপূর্তিতে উপস্থিত অতিথিরা, সাংবাদিকরা এবং নয়া দিগন্ত পরিবারের সদস্যদের আন্তরিক মোবারকবাদ জানান। তিনি বলেন, আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জুলাই বিপ্লবের সব শহীদকে যাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে আজ আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ ও স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছি। একই সাথে স্মরণ করছি নয়া দিগন্তের সাবেক সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিনকে এবং দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের স্বপ্নদ্রষ্টা, ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রথম কেন্দ্রীয় সভাপতি, শহীদ মীর কাসেম আলী ভাইকে। তিনি বলেন, শহীদ মীর কাসেম আলী ছিলেন আমাদের প্রেরণার বাতিঘর। তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে জাতির জন্য কাজ করতে হয়, কিভাবে আগ্রাসন ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে হয় এবং কিভাবে কথার সাথে কাজের সামঞ্জস্য রাখতে হয়। তাঁর জীবন থেকে আমরা শিখি বাংলাদেশে আজকের প্রাইভেট সেক্টরের বিকাশে তিনিই ছিলেন অন্যতম উদ্যোক্তা। সাদিক কায়েম আরো বলেন, গত ফ্যাসিবাদী সময়ে আমরা দেখেছি বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলো কিভাবে বিভক্ত ছিল। খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের প্রশ্রয়ে কিছু হলুদ সাংবাদিকতা সংবাদমাধ্যমের পরিচয়কে কলঙ্কিত করেছে। ২০১৩ সালে শাহবাগ আন্দোলনের মাধ্যমে বিচারিক হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা হয়েছিল; গুম, খুন, আয়নাগরসহ নানান হত্যাকা- এবং অবৈধ নির্বাচনকে বৈধ করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। সেই সময়ে প্রতিবাদী অবস্থানে থাকা পত্রিকাগুলোর মধ্যে নয়া দিগন্ত ছিল সাহসী কণ্ঠস্বর। নানা বাধা, অবরোধ ও বৈষম্যের মধ্যেও তারা টিকে থেকেছে পাঠকদের ভালোবাসা ও আস্থার কারণে। গত ১৬ বছরে সরকার থেকে কোনো অনুদান বা বিজ্ঞাপন না নিয়েও নয়া দিগন্ত পাঠকদের সমর্থনে তাদের পথচলা অব্যাহত রেখেছে- এটাই তাদের সবচেয়ে বড় অর্জন।