সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্য সাড়ে ১৭ লাখ টন কমবে ভোজ্যতেল আমদানি ব্যয়

এস এম রহমান, পটিয়া-চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম)
Printed Edition

চলতি রবি মৌসুমে (২০২৫-২৬) সারা দেশে সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ লাখ ৫২ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। এ লক্ষ্যে সারা দেশে সরিষার চাষ হচ্ছে ১১ লাখ ৭০ হাজার ৪৯৩ হেক্টর জমিতে, যা গত মৌসুমের তুলনায় এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর বেশি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, দেশে প্রতি বছর ভোজ্যতেলের চাহিদা থাকে প্রায় ২৫-২৭ লাখ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে উৎপাদন হয় মাত্র পাঁচ-ছয় লাখ টন। ফলে ঘাটতি পূরণে আমদানি করতে হয় কয়েক লাখ টন ভোজ্যতেল। এতে প্রতি বছর ব্যয় হয় ২৫-২৬ হাজার কোটি টাকা। সরকারের নির্দেশনায় তেলজাতীয় ফসলের চাষ সম্প্রসারণে চলমান উদ্যোগের ফলে গত মৌসুমে (রবি ২০২৪-২৫) সরিষার উৎপাদন বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ১৭৯ মেট্রিক টন। চলতি মৌসুমে সেই উৎপাদন আরো বাড়িয়ে ১৭.৫ লাখ টনে নেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনার উদ্যোগ : দেশে প্রতি বছর হাওর, উপকূলীয়, পাহাড়ি ও চরাঞ্চলে বোরো ও রোপা আমনের পর ৭০-৮০ লাখ হেক্টর জমি পতিত থাকে। কৃষি বিভাগ বলছে, এই পতিত জমির অর্ধেকেও যদি তেলজাতীয় ফসল আবাদ করা যায়, তাহলে দেশে ভোজ্যতেলের ঘাটতি অনেকটাই কমে যাবে এবং আমদানি ব্যয় সাশ্রয় হবে হাজার কোটি টাকা। গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিনার তথ্যানুযায়ী, বিনা সরিষা-৪, ৯, ১১ এবং সর্বশেষ উদ্ভাবিত বিনা সরিষা-১২ জাতগুলো হেক্টরপ্রতি গড়ে ১.৬ মেট্রিক টনের বেশি ফলন দেয়। পাশাপাশি বারি সরিষা-১৪, ১৫, ১৭ ও ১৮-এর মতো উচ্চফলনশীল জাতও মাঠে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তাদের প্রত্যাশা, এসব নতুন জাত সরিষা উৎপাদন অন্তত ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে সহায়ক হবে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের সরিষা ও অন্যান্য তেলবীজ উৎপাদন কয়েক বছরের মধ্যে দ্বিগুণ করা সম্ভব। এতে একদিকে যেমন দেশের ভোজ্যতেল আমদানি নির্ভরতা কমবে, তেমনি কৃষক লাভবান হবেন এবং সরকারেরও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।