- উজবেকিস্তান গেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা, ফিরবেন ৯ নভেম্বর
- ছুটিতে যুক্তরাষ্ট্র গেছেন এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান
- ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাউশির ডিজি
- আজ অবসরে যাচ্ছেন এনসিটিবির চেয়ারম্যান
শিক্ষা প্রশাসনের বেশিরভাগ শীর্ষ পদে নেই কোনো কর্মকর্তা। ফলে নিয়মিত কাজেও এখন নেমে এসেছে স্থবিরতা। কিছু দিন ধরেই বিদেশে আছেন শিক্ষা উপদেষ্টা। ফলে নিয়মিত তদারকির মাধ্যমে বিভিন্ন দফতর বা অধিদফতরের রুটিন কাজও এখন ঠিকঠাকমতো চলছে না। শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার বর্তমানে উজবেকিস্তানে রয়েছেন। তিনি দেশে ফিরবেন ৯ নভেম্বর। ফলে নীতিনির্ধারণী অনেকে সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছে না। অনেক ফাইল প্রস্তুত থাকলেও উপদেষ্টা দেশে না থাকায় এগুলোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসছে না। এ দিকে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যের ৩০ কোটি পাঠ্যবই ছাপার কাজেও চলছে ধীরগতি। এর মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার চাকরির মেয়াদ শেষ করে অবসরে চলে যাচ্ছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী।
অথচ পাঠ্যবই মুদ্রণের এই সময়টাতে কাকে এনসিটিবির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হবে, সে বিষয়েও এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। ফলে চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে পাঠ্যবই মুদ্রণ ও বিতরণের কাজ।
অন্য দিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালকের পদেও এখনো কাউকে পদায়ন করা হয়নি। কলেজ প্রশাসনের পরিচালক অধ্যাপক মো: আবদুল হান্নানকে মাউশির ডিজি হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান মো: আমিনুল ইসলামও দীর্ঘ এক মাসের ছুটিতে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। তিনি ফিরবেন আগামী ৩০ নভেম্বর।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষা প্রশাসনে এভাবে একযোগে অধিকাংশ শীর্ষ পদ খালি থাকার নজির নিকটাতীতে নেই। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে শিক্ষার মতো এমন গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের অধিকাংশ পদ খালি থাকাও স্বস্তিদায়ক নয়। বছরের এ সময়ে এনসিটিবির বড় দায়িত্ব হলো ৩০ কোটির বেশি বিনামূল্যের পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে সঠিক সময়ে অর্থাৎ বছরের শুরুর দিনে তুলে দেয়াও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ফলে বই মুদ্রণ চলমান অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ এই পদটি খালি থাকা বা অন্য কাউকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়াও সমস্যার সমাধান করবে না। ফলে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নতুন বই হাতে তুলে দেয়া কতটুকু সহজ বা স্বস্তিদায়ক হবে, সেটিও বিবেচনার দাবি রাখে।
শিক্ষার মূল কেন্দ্রবিন্দু মাউশির স্বাভাবিক কাজেও গত কয়েক সপ্তাহ থেকেই চলছে ধীরগতি। নিয়মিত ডিজি না থাকায় কলেজ প্রশাসনের পরিচালককে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে কোনো রকমে কাজ চালানো হচ্ছে। যদিও নীতিনির্ধারণী কিংবা নতুন বদলি কিংবা নতুন পদায়নসংক্রান্ত অনেক কাজেই স্থবিরতা নেমে এসেছে। সারা দেশের কয়েক লাখ সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নানা সমস্যা নিয়ে মাউশিতে এসেও তারা ডিজি না থাকায় অনেক কাজের সমাধান পাচ্ছেন না। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছেন অনেক শিক্ষক। তারাও চান দ্রুত মাউশির নিয়মিত ডিজি হিসেবে কাউকে পদায়ন করা হোক।
অন্য দিকে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগদানকারী প্রতিষ্ঠান এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান মো: আমিনুল ইসলাম গত ২০ অক্টোবরের পর থেকে ব্যক্তিগত ছুটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। তিনিও দেশে ফিরবেন ৩০ নভেম্বর। এ দিকে নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রস্তুতিও নেয়া শুরু হয়েছে। এ সময়ে চেয়ারম্যান ছাড়া সামগ্রিক কাজ সঠিকভাবে পরিচালনা কিংবা দেখভাল করা কষ্টকর বলেও জানান অন্য কর্মকর্তারা। সব মিলে এনটিআরসিএতেও স্থবিরতা বিরাজ করছে।



