অসুস্থ সংস্কৃতির বেড়াজালে সুস্থ সংস্কৃতি

Printed Edition
অসুস্থ সংস্কৃতির বেড়াজালে সুস্থ সংস্কৃতি
অসুস্থ সংস্কৃতির বেড়াজালে সুস্থ সংস্কৃতি

সাদমান হাফিজ শুভ

একজন বন্ধু কি আরেকজন বন্ধুকে গালি দিতে পারে? হোক তা মজার ছলে। বর্তমানে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আমরা এ শিক্ষাই পাচ্ছি। বিশেষ করে অশ্লীল ও অনৈতিক কথা-বার্তার মাধ্যমে সম্বোধন করা হয়। এ ছাড়া নাটক, সিনেমা, টিকটক, কন্টেন্ট ইত্যাদি থেকে এসব হচ্ছে। এ চর্চা যদি বন্ধ করা সম্ভব না হয়, তবে একটি সভ্য সমাজ গঠনের যে স্বপ্ন তা স্বপ্নই রয়ে যাবে।

ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোনো একটি বিষয় যখন দীর্ঘদিন ধরে সমাজে চলমান থাকে, তখন তা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় এবং সমাজের মানুষকে প্রভাবিত করে। অর্থাৎ, মানুষ তা দেখতে দেখতে বা শুনতে শুনতে নিজেরাও একই আচরণ করতে থাকে। বর্তমানে ঠিক একইভাবে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন আমাদের মূল্যবোধের এমনই অবক্ষয় করেছে যে, গালিদাতার কোনো অনুশোচনা তো নেই-ই, এমনকি যে গালি শোনে, সেও কিছুই মনেই করে না।

যে মাধ্যমগুলো আমাদের গালি চর্চা শেখায় বা গালি শোনার মতো পরিবেশ তৈরি করে, সেসব মাধ্যম থেকে বিনোদন নেয়াটা কতটুকু যৌক্তিক? আমাদেরও তো স্ব-স্ব ধর্মীয় সুস্থ সংস্কৃতি রয়েছে। রয়েছে ঐতিহ্যবাহী দেশীয় সংস্কৃতি। অসুস্থ সংস্কৃতির রোষানলে আমরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ভুলে যাচ্ছি না তো? যে জাতি নিজেদের সংস্কৃতি ভুলে গিয়ে অসুস্থ সংস্কৃতিকে গ্রহণ করে নেয়, তাদের দ্বারা কি একটি নৈতিক সমাজ গঠন করা সম্ভব?

সুতরাং, নিজে গালি পরিহার করুন, গালি চর্চার মাধ্যমগুলো পরিহার করুন, গালিদাতাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। আপনার শুভাকাক্সক্ষী কখনো আপনাকে গালি দিতে পারে না, মজার ছলে হলেও। প্রকৃত বন্ধু তো সেই, যে আলোর পথ দেখায়। বন্ধু নির্বাচনে ন্যূনতম এতটুকু হলেও সতর্ক থাকা উচিত- উপকার না হলেও, অন্তত অপকার যেন না হয়।

তাই বলে মানুষের নেতিবাচক গুণাবলির দোহাই দিয়ে একদম অসামাজিক হয়ে যাওয়াটাও কাম্য নই। সবাই যদি অসামাজিক হয়ে যায়, তাহলে পথহারা মানুষদের সঠিক পথের দিশা দেবে কে? আলোর পথ দেখানোর জন্য হলেও তো মানুষের সাথে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিয়মতান্ত্রিক সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। আসুন, স্বচ্ছ, সুন্দর ও নৈতিক সমাজ গঠনের প্রত্যেয়ে আজই দীপ্ত কণ্ঠে শপথ নিই নতুন উদ্যমে পথচলার।