বহুল আলোচিত বাংলাদেশ-ভারত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের খলিল-দোভাল বৈঠকে উভয় পক্ষের আস্থা পুনর্গঠন, নিরাপত্তা সহযোগিতার সম্প্রসারণ, অভ্যন্তরীণ নীতিতে সতর্কতা, আঞ্চলিক ফোরাম শক্তিশালীকরণ, বিপর্যয়-প্রতিক্রিয়া ও মানবিক সহায়তা এবং রাজনৈতিক সঙ্কেত ও কূটনৈতিক স্বীকৃতিতে অগ্রগতি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সব কিছু ছাড়িয়ে এটি আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত করতে পারে বলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
বিশ্লেষকদের মতে- উভয় পক্ষের আস্থা পুনর্গঠন এবারের বৈঠকের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সঙ্কট বা দূরত্ব কমানোর জন্য এই এনএসএ স্তরের সংলাপ বেজ লাইন হিসেবে কাজ করতে পারে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ‘শীতল মুহূর্ত’ ছিল বলে সংবাদ ছিল।
গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে- ড. খলিলুর রহমান ভারতকে নিশ্চিত করেছেন যে, ‘বাংলাদেশ তার নীতি অনুযায়ী ভারতবিরোধী শক্তিগুলোর জন্য তার ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবে না।’ এই ধরনের আস্থা-সঙ্কেত ভবিষ্যতে কূটনৈতিক উত্তেজনা কমাতে এবং সংলাপ মডেলকে স্থিতিশীল করতে সহায়ক হবে।
নিরাপত্তা সহযোগিতার সম্প্রসারণও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে থাকতে পারে এবার। বৈঠকে সাইবার নিরাপত্তা, সাইবার যুদ্ধ, সীমান্ত নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। অফিসিয়াল বিবৃতি মতে, বাংলাদেশ-কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ ফোরামের মাধ্যমে ‘সাইবার নিরাপত্তা, ভুল তথ্য ও বিকৃত-তথ্য’ মোকাবেলায় যৌথ কার্যকর পদক্ষেপ চায়। এ ছাড়া, সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্থা দমন বিষয়েও আলোচনা করার কথা বলা হয়েছে।
এই নিরাপত্তা সহযোগিতা শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা নয়, বরং গোয়েন্দা, তথ্য ভাগাভাগি এবং ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টে নতুন ধরনের কনসোলিডেশন গড়ে তুলতে পারে।
অভ্যন্তরীণ নীতিতে স্ব-সতর্কতা এবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিণত হয়। খলিলুর রহমান জোর দিয়েছেন যে ‘অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে কোনো দেশের হস্তক্ষেপ হতে দেবে না।’ এটি রাজনৈতিক সঙ্কেত পাঠায় যে- ঢাকা তার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে দৃঢ় অবস্থানে আছে এবং বহিরাগত প্রভাবগুলোর বিরুদ্ধে সতর্কতা অবলম্বন করবে।
একই সাথে, এটি ভারতের উদ্বেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় হিসেবে কাজ করতে পারে, কারণ দিল্লি প্রায়ই প্রতিবেশী দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে সীমান্তে নিরাপত্তা ঝুঁকি হিসেবে দেখে।
আঞ্চলিক ফোরাম শক্তিশালীকরণ এবার একটি ইস্যু হিসাবে সামনে চলে আসে। এই বৈঠক কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ (সিএসসি) ফোরামের অংশ হিসেবে হয়েছে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ফোরাম হিসেবে গুরুত্ব বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশের এই ফোরামে সক্রিয় অংশগ্রহণ দেখায় তার আঞ্চলিক নিরাপত্তা কৌশলে একটি ‘সহযোগিতামূলক নিরাপত্তা’ মডেলের দিকে ঝোঁক রয়েছে।
দীর্ঘমেয়াদে, এটি ভারত, বাংলাদেশ এবং অন্যান্য কলম্বো সিকিউরিটি দেশগুলোর মধ্যে এক ধরনের আঞ্চলিক নিরাপত্তা আর্কিটেকচার গঠনে অবদান রাখতে পারে।
সংবাদ অনুযায়ী, দুই দেশ বিপর্যয়কালীন ত্রাণ এবং পরিকল্পনার ধারাবাহিকতা বিষয়েও বা অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বাকি আঞ্চলিক দেশগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশ-ভারত পারস্পরিক বিপর্যয় প্রতিক্রিয়া কাঠামো গড়তে পারে, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, স্বাস্থ্য সঙ্কট বা অন্য ইমার্জেন্সিতে সহায়ক হবে।
রাজনৈতিক সঙ্কেত ও কূটনৈতিক স্বীকৃতি এবারের বৈঠকের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল। এই বৈঠক একটি স্ট্র্যাটেজিক পলিটিক্যাল সিগন্যালও পাঠায় যে- অন্তর্বর্তী সরকার আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে বৈধতা ও সংলাপের পথ খুঁজছে। দোভালকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের একটি সরল কিন্তু শক্তিশালী উপাদান। এটি দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি কূটনৈতিক রুটিন ও মিথ-ভরসার ভিত্তি গড়তে পারে।
এসব কিছুর পরও সফর নিয়ে ঝুঁকি এবং সীমাবদ্ধতার বিষয়ও রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তথ্য ভাগাভাগির চ্যালেঞ্জ। সাইবার ও গোয়েন্দা সহযোগিতা বাড়লেও, উভয় দেশের মধ্যে তথ্য ভাগাভাগি সৎ ও কার্যকর হবে কি না- এটি সাধারণ চ্যালেঞ্জ।
নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি বনাম সাধারণ বিবৃতির মধ্যে পার্থক্য থাকার বিষয়ও গুরুত্বপূর্ণ। এনএসএ স্তরের বৈঠকে সাধারণভাবে নীতিগত বিবৃতি বেশি হয়; কিন্তু বাস্তবায়ন অনেক সময় ধীর বা সীমিত হতে পারে।
রাজনৈতিক পরিবর্তনও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যদি বজায় না থাকে, তাহলে এই ধরনের আঞ্চলিক নিরাপত্তা আর্কিটেকচার গড়ে তোলা কঠিন হবে।
এছাড়া তৃতীয় পক্ষের প্রভাব একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্ণায়ক হিসাবে আবির্ভূত হতে পারে। অন্য সাধারণ শক্তি (যেমন- চীন, যুক্তরাষ্ট্র) আঞ্চলিক নিরাপত্তা কাঠামোর ক্ষেত্রে প্রভাব রাখতে পারে, যা ভারত-বাংলাদেশ ও সিএসসি ফোরামের গতিকে প্রভাবিত করতে পারে।
সার্বিক মূল্যায়ন অনুযায়ী এই এনএসএ-স্তরের সংলাপ নিরাপত্তা এবং কূটনৈতিক পুনরায় সংহতির দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যেতে পারে। এটি বিশেষত ‘নিরাপত্তা-সহযোগিতার স্থিতিশীল কাঠামো’ গড়ার দিকে ইঙ্গিত দেয়, যা শুধু দেশ দুটির মধ্যেই নয়, পুরো আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
একই সাথে, এটি রাজনৈতিক ভরসা ও বিশ্বাস গঠনের একটি সুযোগ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। দুই দেশ একে অপরকে নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা মেনে চলার আশ্বাস দিচ্ছে (যেমন অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার প্রতিশ্রুতি)। যদি এই প্রক্রিয়া সাফল্যমণ্ডিতভাবে এগোতে পারে, তাহলে ভবিষ্যতে সীমান্ত নিরাপত্তা, সাইবার চ্যালেঞ্জ, দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া এবং আঞ্চলিক মিত্রতায় আরও গভীর সমন্বয় হতে পারে।
দোভাল-খলিল আলোচনা ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে?
বাংলাদেশ এবং ভারতের এনএসএ পর্যায়ে দোভাল-খলিল বৈঠক সরাসরি বা পরোক্ষ নানাভাবে প্রভাবিত করতে পারে আগামী ফ্রেব্রুয়ারির নির্বাচনকে। কূটনৈতিক স্বীকৃতি ও আস্থার শক্তি সঙ্কেত এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। দোভাল-খলিল বৈঠককে রাজনৈতিক বিরোধীদের মধ্যেও কূটনৈতিক স্বীকৃতি হিসেবে দেখা যেতে পারে। এটি দেখায় যে অন্তর্বর্তী সরকার (যেমন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান) আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মঞ্চে সক্রিয় এবং প্রতিবেশী শক্তি বিরোধিতার বদলে সংলাপ এবং সহ-নিরাপত্তার পথ বেছে নিচ্ছে।
এমন একটি কূটনৈতিক মানচিত্র ভোটারদের মধ্যে ‘নিরাপদ এবং দায়িত্বশীল অন্তর্বর্তী প্রশাসন’ হিসেবে আস্থা বাড়াতে পারে, বিশেষ করে মধ্য বা বড় রাজনৈতিক দলগুলোর ভাগে যারা দেশের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দেয়।
নিরাপত্তা চক্রান্ত এবং আশঙ্কা সব সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে বিবেচিত হয়। কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠী ইতোমধ্যেই দোভাল-খলিল বৈঠককে রাজনৈতিক চক্রান্ত হিসেবে দেখার কথা বলেছে এবং ‘গোপন তথ্য ফাঁস হওয়ার’ সম্ভাবনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
যদি নির্বাচনের সময় এই ধরনের দৃষ্টিকোণ জনপ্রিয় হয়, তাহলে কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠী বা ভোটাররা বলবে, অন্তর্বর্তী সরকারের ‘ভারত-বান্ধব নিরাপত্তা নীতিমালা’ ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে বা এমন নীতি আনতে পারে যেগুলো এক ধরনের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ হিসেবে কাজ করবে।
নির্বাচনের তারিখ ও প্রক্রিয়ার দৃঢ়করণের একটি বার্তা রয়েছে। খলিলুর রহমান ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নিয়ে ‘কোনো জটিলতা নেই’ এবং তারা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করতে প্রস্তুত।
দোভালের সাথে নিরাপত্তা উপদেষ্টা স্তরের বৈঠক এবং তাকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ একটি স্ট্র্যাটেজিক বার্তা পাঠায় যে অন্তর্বর্তী সরকার শুধু সেনাবাহিনী বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নয়, প্রতিবেশী শক্তি ভারতকে নিজের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রণোদিত করছে। এটি ভোটারদের মধ্যে ‘নিরাপত্তা নিশ্চয়তার’ অনুভূতি জাগাতে পারে, যা নির্বাচনের দিকে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে পারে।
খলিল-দোভাল বৈঠক এবং কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ-ফোরামে অংশগ্রহণ, অন্তর্বর্তী সরকারকে আঞ্চলিক স্বীকৃতি ও কার্যকর নিরাপত্তা ভূমিকা প্রদানে শক্তিশালী প্রমাণ দিতে পারে। এটা নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে- বিশেষ করে ‘বাংলাদেশ শুধু নিজের স্বার্থে নয়, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার অংশ’ হিসেবে কাজ করছে এবং অস্থিতিশীলতা কমাতে ভারতের সাথে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় অংশ নিচ্ছে।
সমালোচনা ও প্রতিপক্ষের অস্ত্র হিসেবেও এটি সামনে আসতে পারে। প্রতিপক্ষ (বিরোধী দল, নাগরিক সংগঠন, মিডিয়া) এই বৈঠককে নির্বাচনের ‘মিথ্যা করিডোর’ হিসেবে দেখাতে পারে, তারা বলতে পারে যে নিরাপত্তা নীতির বদলে রাজনৈতিক পূর্বনির্ধারণ বা প্রভাব সৃষ্টির কৌশল চলছে।
সার্বিক মূল্যায়নে দেখা যায়, দোভাল-খলিল বৈঠকের প্রভাব সাধারণ ভোটারদের মধ্যে সরাসরি প্রভাব সীমিত থাকতে পারে। কারণ অনেক ভোটার নিরাপত্তা-নীতি বা এনএসএ-স্তরের বৈঠকের গভীর কূটনৈতিক অর্থ পুরোপুরি বুঝতে নাও পারে। তবে মধ্যম ও রাজনৈতিক সচেতন ভোটার-গোষ্ঠীর জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সঙ্কেত হতে পারে। এই বৈঠক এবং আমন্ত্রণ রাজনৈতিক স্বীকৃতি এবং কূটনৈতিক কার্যকারিতার দৃষ্টিকোণ থেকে নির্বাচনকে আরো ‘লিজিটিমেট’ (বৈধ) হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে। যদি প্রতিপক্ষ এই ধরনের বৈঠককে জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে, তাহলে এটি রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে এবং নির্বাচনকে বিতর্কিত বানাতে পারে- যেটি ভোটার আস্থা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা হুমকিতে ফেলতে পারে।
দোভাল-খলিল বৈঠক বনাম আগের ‘ভারত-সম্পর্কিত’ নির্বাচন প্রেক্ষাপট
প্রশ্ন উঠতে পারে এবার নতুন কী? এর জবাব হলো- আগের নির্বাচনগুলোতে: সম্পর্ক ছিল রাজনৈতিক স্তরে বা পরোক্ষ (দূতাবাস, ট্র্যাক-২ ডায়ালগ) কিন্তু এবারের ক্ষেত্রে: জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা স্তরের সরাসরি সংলাপ; সরাসরি সীমান্ত, গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা কাঠামো নিয়ে আলোচনা; অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধির মাধ্যমে যোগাযোগ; এটি আগের যেকোনো নির্বাচনের তুলনায় অধিক গভীর নিরাপত্তা-রাজনৈতিক স্তরের সমন্বয়।
তুলনামূলক রাজনৈতিক প্রভাবের ম্যাপ সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ নির্বাচনের মডেলের ওপর আলোকপাত করে তিনটি সম্ভাব্য দৃশ্যপটের কথা উল্লেখ করেছেন। তার মতে-
২০০৮ নির্বাচন মডেল : তখন : ‘বিদেশী সমর্থন = নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়ার হাতিয়ার’ আর এখন : দোভাল-খলিল বৈঠক আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বৈধতার বেস তৈরি করতে পারে।
২০১৪ ও ২০১৮ মডেল : তখন : ‘ভারতের সমর্থন = ক্ষমতাসীন কাঠামোর সুরক্ষা’ এখন : বিরোধীরা প্রচার করতে পারে- ভারত নতুন অন্তর্বর্তী ব্যবস্থার সাথেও সমন্বয় করছে’। ফলে সন্দেহ, বিতর্ক, অপপ্রচার বাড়তে পারে।
সম্ভাব্য তিনটি ‘ইলেকশন-সিনারিও’
দৃশ্যকল্প ১: ইতিবাচক স্থিতিশীলতার মডেল
- দোভাল-খলিল বৈঠক ? সীমান্ত নিরাপত্তা ও স্থিতিশীল পরিবেশ
- তাতে? সহিংসতা কম, অংশগ্রহণ বেশি
- ফল? নির্বাচন তুলনামূলক গ্রহণযোগ্য
দৃশ্যকল্প ২: আখ্যান যুদ্ধের মডেল
- বিরোধীরা প্রচার করবে “ভারত প্রভাব বিস্তার করছে”
- সামাজিক মাধ্যমে ‘সার্বভৌমত্ব বিক্রি’ টাইপ বয়ান
- ফল ? নির্বাচন নিয়ে আস্থার সঙ্কট
দৃশ্যপট ৩ : প্রক্সি প্রভাব উদ্বেগ মডেল
- গুজব/প্রোপাগান্ডা : ‘ভারত নির্বাচনের ফল প্রভাবিত করছে’
- নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা সন্দেহের চোখে দেখা
- ফল? ভোটার উপস্থিতি কমে যাওয়া / সহিংসতা ঝুঁকি
বাস্তবসম্মত মূল্যায়ন : আগের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে : বিদেশী শক্তির ভূমিকা ভোটারের চূড়ান্ত ভোটের উপর খুব সরাসরি না, কিন্তু এটি নির্বাচনের বৈধতা বিতর্কের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। দোভাল-খলিল আলোচনা সম্ভবত ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের নিরাপত্তা পরিবেশে বড় প্রভাব ফেলবে, কিন্তু মানুষের ভোট আচরণে সীমিত প্রভাব ফেলবে। দোভাল-খলিল আলোচনা ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের ফলাফলের চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে- নির্বাচন কতটা ‘বৈধ’ বলে বিবেচিত হবে, ভিতরের রাজনৈতিক আখ্যান কীভাবে তৈরি হবে এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি কতটা নিয়ন্ত্রিত থাকে- এই তিন জায়গায়।



