কোরবানির ঈদ গেলেও জৈন্তাপুরে বহাল ‘অস্থায়ী’ পশুর হাট

অবৈধ হাটগুলো থেকে প্রতিদিন রশিদের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকার হাসিল তোলা হয়। এখানে ভারত থেকে চোরাই পথে আনা গরু-মহিষ অবলীলায় ক্রয়-বিক্রয়ের কাজ চলে।

Printed Edition
জৈন্তাপুর উপজেলায় দরবস্ত বাজারে বহাল থাকা অস্থায়ী পশুর হাট
জৈন্তাপুর উপজেলায় দরবস্ত বাজারে বহাল থাকা অস্থায়ী পশুর হাট |নয়া দিগন্ত

শোয়েব উদ্দিন জৈন্তাপুর (সিলেট)

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় কোরবানির ঈদের জন্য অনুমোদিত দু’টি অস্থায়ী পশুর হাট এখন পর্যন্ত সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোরবানির পশু বিক্রির জন্য ঈদের সময় মাত্র এক সপ্তাহের জন্য ওই হাট ইজারা দেয়া হলেও হাট দু’টি এখনো চলমান রাখা হয়েছে। সেই সাথে এই হাটে চোরাই পথে আসা ভারতীয় পশু বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে।

গত মে মাসে জৈন্তাপুর উপজেলা প্রশাসন ঈদুল আজহা উপলে ১ জুন থেকে ৭ জুন পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য দরবস্ত ও চিকনাগুল বাজারে অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা দেয়। কিন্তু সেই সময়সীমা পার হয়ে চার মাস অতিবাহিত হলেও হাট দু’টি এখনো সক্রিয় রয়েছে।

দরবস্ত বাজারের ইজারাদার মৌলানা আবু হানিফ দাবি করেন, পশুর হাট এক সপ্তাহের জন্য ইজারা দেয়া হলেও পরবর্তীতে পুনরায় নতুন করে এক বছরের জন্য ইজারা নিয়েছেন তিনি। ইজারা নেয়ার সব ডকুমেন্ট তার কাছে আছে বলে দাবি করেন তিনি।

অন্যদিকে চিকনাগুল বাজারের ইজারাদার জহির উদ্দিন বলেন, তারা বেশ কয়েকজন মিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে পশুর হাট কোরবানির ঈদের সময় এক সপ্তাহের জন্য ইজারা নিয়ে ছিলেন। যেটি এখনো চলমান আছে এবং ইজারা সম্পর্কে প্রশাসন অবগত আছে।

স্থানীয় পশু ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই অবৈধ হাটগুলো থেকে প্রতিদিন রশিদের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকার হাসিল তোলা হয়। এখানে ভারত থেকে চোরাই পথে আনা গরু-মহিষ অবলীলায় ক্রয়-বিক্রয়ের কাজ চলে।

গোয়াইনঘাট উপজেলার আলীরগাও ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল জলিল বলেন, এসব বাজার মহাসড়কের সাথে যুক্ত থাকায় সহজে ভারতীয় গরু-মহিষ এখানে এনে বিক্রয় করা যায়। তবে ইজারা না থাকায় এ বাজারটি বৈধ নয়।

দরবস্ত ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার বলেন, দরবস্ত পশুর হাট থেকে ইজারাদার নিয়মিতভাবে টাকা উত্তোলন করছেন। এই পশুর হাট অবৈধ কি বৈধ এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে কিছু জানাননি।

এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জর্জ মিত্র চাকমা বলেন, অস্থায়ী পশুর হাট কোরবানি উপলে এক সপ্তাহের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছিল। এখন চালমান থাকলে তা অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে এবং অবিলম্বে প্রশাসন কঠোর পদপে গ্রহণ করবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অবিলম্বে এই হাট দু’টিকে সরকারি নীতিমালায় এনে আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, প্রশাসনের নীরবতা এই অবৈধ কার্যক্রমকে আরো উৎসাহিত করছে।