গাজীপুর-৪ কাপাসিয়া আসন

নেতার বিতর্কে ধুঁকছে বিএনপি জামায়াতের প্রার্থী মাঠে সক্রিয়

Printed Edition
নেতার বিতর্কে ধুঁকছে বিএনপি জামায়াতের প্রার্থী মাঠে সক্রিয়
নেতার বিতর্কে ধুঁকছে বিএনপি জামায়াতের প্রার্থী মাঠে সক্রিয়

মো: আজিজুল হক গাজীপুর মহানগর

গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ চোখে পড়ার মতো। জামায়াতের প্রার্থী প্রচারে এগিয়ে আছেন। ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও গাজীপুর মহানগর জামায়াতের সদর থানা আমির মু: সালাউদ্দিন আইউবী এই আসনে প্রার্থী হচ্ছেন। ‘দুর্নীতিমুক্ত, আধুনিক, সমৃদ্ধ, আলোকিত, ইনসাফ ও শান্তির কাপাসিয়া’ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে মাঠে নেমেছেন তিনি।

অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থিতা নিয়ে দলের ভিতরেই চলছে অসন্তোষ। নেতার বিতর্কে দলটি ধুঁকছে। দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মরহুম ব্রিগেডিয়ার (অব:) আ স ম হান্নান শাহর ছেলে রিয়াজুল হান্নান, সাবেক উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, ড. হাসেম চৌধুরী ও সাবেক এমপি মরহুম ডা: মো: সানাউল্লাহর ছেলে মেজর (অব:) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ মিঠু।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, রিয়াজুল হান্নান নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে ইতোমধ্যে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। ১/১১-তে তার বাবার অবদানের কারণে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে কিছু বিবেচনা থাকলেও, স্থানীয় পর্যায়ে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

গত বছর আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কাপাসিয়ায় তার নির্দেশে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বাড়ি জ্বালিয়ে না দেয়ায় টোক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবু সাঈদ মাহমুদুল হক বুলবুলকে দল থেকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

সম্প্রতি সনমানিয়া ইউনিয়নে একটি সরকারি রাস্তা পাকাকরণ কাজের ঠিকাদারকে চাঁদার দাবিতে অপহরণের অভিযোগে বিএনপি ও যুবদলের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে মামলা নিতে পুলিশ বিশেষ তদবিরে গড়িমসি করছে বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় বিএনপির নেতাকর্মীদের অন্তর্কলহ ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে এ আসনে দলটির সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়েছে। তবে অন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের তুলনায় কাপাসিয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক এমপি মরহুম ডা: সানাউল্লাহর ছেলে শফিউল্লাহ প্রার্থী হলে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসতে পারেন এবং হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। অন্য কাউকে প্রার্থী করা হলে এই সম্ভাবনা ক্ষীণ। অন্য প্রার্থীদের তুলনায় তার রয়েছে ক্লিন ইমেজ, সেটা তাকে প্রার্থী করার ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেয়া হতে পারে বলে অনেকে মনে করেন।

এদিকে জামায়াত প্রার্থী মু: সালাউদ্দিন আইউবীর শান্তিপূর্ণ গণসংযোগ, উন্নয়নভিত্তিক বার্তা ও তরুণ প্রজন্মের সাথে ইতিবাচক যোগাযোগ তাকে অগ্রাধিকার অবস্থানে রেখেছে। স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, প্রায় সোয়া তিন লাখ ভোটারের এই আসনে নারী ও তরুণ ভোটাররাই এবারের নির্বাচনের মূল নিয়ামক। আর এই শ্রেণীর ভোটারদের বড় অংশ জামায়াতপ্রার্থীর প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত, বিএনপি নেতাদের অনিয়ম, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগের বিপরীতে জামায়াত প্রার্থীর পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি এ আসনে তাকে এগিয়ে রেখেছে। ফলে কাপাসিয়া এখন ‘বিএনপির নয়, জামায়াতের সম্ভাবনার আসন’ হিসেবেই আলোচিত হচ্ছে। তিনি টানা কয়েক মাস ধরে তৃণমূল পর্যায়ে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।