বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, শোষণ, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ঘুষ, ধর্ষণমুক্ত দেশ গড়তে চাইলে ইসলামী শাসনব্যবস্থার বিকল্প নেই। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে সৎ যোগ্য দেশপ্রেমিক নেতার প্রয়োজন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মানুষের একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আপ্রাণ সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। সৎ যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে দেশ বারবার পথ হারাচ্ছে। যে দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির অভিযোগ নেই সেই দলই পারবে জাতির প্রত্যাশিত রাষ্ট্র গঠন করতে। এ জন্য সোনার বাংলা গড়তে হলে চাই সোনার মানুষ। আর এই সোনার মানুষই রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে ডুমুরিয়ার ১নং ধামালিয়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে বরুনা বাজার ঈদগাহ ময়দানে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ধামালিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাস্টার মো: মোস্তাক আহম্মেদের সভাপতিত্বে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা এমরান হোসাইন, জেলা সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন জেলা সহ-সেক্রেটারি মুন্সী মঈনুল ইসলাম, সহ-সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবু ইউসুফ, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মুক্তার হোসাইন, উপজেলা নায়েবে আমির গাজী সাইফুল্লাহ, জামায়াতের উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা হিন্দু শাখার সহসভাপতি ডা: হরিদাস মণ্ডল, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য মো: আমান উল্লাহ, মাওলানা ফয়েজ উদ্দীন, মাওলানা মুজিবুর রহমান, মাওলানা মোফাজ্জেল হোসাইন, মাওলানা বায়েজীদ হোসাইন, মো: মশিউর রহমান, মাওলানা হাবিবুল ইসলাম প্রমুখ।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরো বলেন, ৫৩ বছরে দেশের মানুষ অনেক সরকারের শাসন দেখেছে। এখন দেখতে বাকি জামায়াতের শাসন। নতুন বাংলাদেশ গড়তে বর্তমান অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারকে জামায়াত সহযোগিতা করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেকে আছে এখনই নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় বসতে চায়। কিন্তু আমরা বলেছি, যেসব জায়গায় বিগত পনেরো বছরের জঞ্জাল রয়েছে সেগুলো আগে পরিষ্কার করে, সংস্কার করে তারপর নির্বাচন দিতে হবে।
দেশবাসী আর ২০১৪, ২০১৮ আর ২০২৪ এর মতো কোনো নির্বাচন দেখতে চায় না। বিগত তিনটি নির্বাচনে আ’লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, পুলিশ লীগ মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। আর কোনোদিন তেমন নির্বাচন এ দেশের মানুষ দেখতে চায় না। দেশবাসী চায় একটি পরিচ্ছন্ন, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। তা না হলে ছাত্র আন্দোলন ব্যর্থতায় পরিণত হবে। ৫ আগস্টের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি স্বৈরাচারের বিনাশ হয়েছে। আমরা একটি দুঃসময় অতিক্রম করে একটা নতুন সুসময়ের যাত্রা শুরু করেছি। এখন আমাদের একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।
এর আগে ৩ নং রুদাঘনা সমাজকল্যাণ পরিষদের আয়োজনে ছাগল বিতরণ ও করজে হাসানা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। নজরুল ইসলাম সরদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন খুলনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি, মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা জামায়াতের মজলিসে শূরা সদস্য অ্যাডভোকেট আবু ইউসুফ, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মুক্তার হুসাইন, উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা মোস্তফা কামাল প্রমুখ।
প্রধান অতিথি তার বক্তৃতায় বলেন, মানুষের রচিত আইনকানুনের কারণে যে বৈষম্য, জুলুম ও শোষণ সৃষ্টি হয়েছে এগুলো থেকে সমাজকে বের করে এনে সুন্দর স্বাচ্ছন্দ্য জীবন এবং ভারসাম্যপূর্ণ অর্থব্যবস্থা নিশ্চিত করে জাকাত। সে কারণে জাকাত ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। বাংলাদেশে যত ধনী আছে তারা যদি জাকাত দেন তাহলে আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশে একজনও দরিদ্র থাকবে না। সবাই জাকাতদাতা হয়ে যাবে। আমাদের সমাজ জাকাতকে বর্জন গণতান্ত্রিক পুঁজিবাদী, তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তাচেতনার ওপর গড়ে ওঠার কারণে সমাজের মানুষের শোষণ বঞ্চনা দূর হচ্ছে না। জাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থা চালু না হলে এটা দূর করা সম্ভবও হবে না।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জাকাতভিত্তিক অর্থনীতি চালু না হলে এ দেশে অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান হবে না। জাকাতভিত্তিক অর্থনীতি চালু করতে হলে ইসলামী রাষ্ট্র ছাড়া সম্ভব না। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তিনি সংগঠনের বিত্তবান ব্যক্তিদের সঠিক নিয়মে জাকাত ও উশর প্রদান করার আহ্বান জানান।