পত্রিকার পাতায় চোখ পড়তে দেখি, ‘দেওয়ানিতে নিত্য দীর্ঘশ্বাস, বিচারাধীন ১৭ লাখ ৬৯ হাজার মামলা। স্বত্ব ও ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে ১২ লাখ মামলা।’ (২৭ আগস্ট ২০২৫ দেশ রূপান্তর) প্রায় একই পরিমাণ মামলা রয়েছে ফৌজদারি আদালতেও। এক বছর আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ৪৫ লাখের বেশি দেওয়ানি ও ফৌজদারি মোকদ্দমা বিচারাধীন ছিল। ২০২২ সালের মার্চ মাসে ছিল ৪২ লাখ মোকদ্দমা। মামলা কমছে গাণিতিক হারে, আর বাড়ছে জ্যামিতিক হারে। জমির দামের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মামলার সংখ্যা।
চার দশকের বেশি সময় ধরে আইন পেশায় রয়েছি। শুরু করেছিলাম ফৌজদারি নিয়ে। নিজের স্বভাব আমাকে দেওয়ানিতে নিয়ে আসে। চুক্তি, সম্পত্তি, পারিবারিক, দাম্পত্য, খোরপোষ ইত্যাদি অধিকার ও দায়-দায়িত্বের বিরোধ নিয়ে সিভিল পেশা। পারিবারিক সমস্যার মধ্যে বিয়ে, বিচ্ছেদ, অভিভাবকত্ব, উত্তরাধিকার, উইল, ওছিয়ত, হেবা, খোরপোষ, মোহরানা- এসব নিয়ে সিভিল আদালতের ৯০ শতাংশ মোকদ্দমা। বিশেষ করে, এসব নিয়ে আত্মার বন্ধন ছিন্ন হওয়াসহ গড়ায় খুন-খারাবি পর্যন্ত। ফৌজদারি আদালতের অধিকাংশ মামলা পারিবারিক সম্পর্ক ও সম্পত্তি থেকে উদ্ভব হয়। মুসলিম জাহানের বেশির ভাগ অশান্তির মূলে ইসলামী আইন না জানা কিংবা লোভের বশবর্তী হয়ে না মানা।
ঐশী প্রদত্ত ইসলামী আইন জানাসহ পালন করলে রক্তের বন্ধন দৃঢ়সহ একদিকে সমাজে সুখের জোয়ার বইতে শুরু করবে, অন্যদিকে আদালত থেকে কমে যাবে অধিকাংশ মোকদ্দমা। এসব পারিবারিক সমস্যায় পেশাজীবীরা যে বইটি সামনে রাখেন, সেটি ডি এফ মুল্লার ‘মুসলিম আইনের মূলনীতি’। ‘মুসলিম আইনের মূলনীতি’ বইটি পড়তে গিয়ে বারবার রেফারেন্স হিসেবে সামনে আসে পবিত্র কুরআনুল কারিমের ৪ নং সূরা আন নিসা। নিসা আরবি শব্দ, এর অর্থ- নারী বা মহিলা। এতে মোট ১৭৬টি আয়াত রয়েছে। যার অন্যতম, ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব, পরিবার গঠন ও সুরক্ষা, সামাজিক ন্যায়বিচার ও আত্মসংযম।
জীবনের অতি প্রয়োজনীয় সমস্যাগুলোর সমাধান হয়েছে ৪ নং সূরার ১৭৬টি আয়াতে। নিম্নে বিশেষ বিশেষ কয়েকটি আয়াত উল্লেখ করা হলো। পারিবারিক জীবনের প্রতিটি সমস্যার সমাধান রয়েছে ১৭৬টি আয়াতে। ঐশী প্রদত্ত নির্দেশ ইনসানের সুখ-শান্তির জন্য। ঐশী নির্দেশ জানলে ও মানলে ৯০ শতাংশ মামলা কমে গিয়ে সমাজে বইবে সুখের জোয়ার। সূরা নিসার অতিপ্রয়োজনীয় কয়েকটি আয়াত নিম্নে উল্লেখ করা হলো- ‘হে মানবসমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় করো, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গিনীকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। আর আল্লাহকে ভয় করো, যাঁর নামে তোমরা একে অপরের কাছে ঝাঞা করে থাকো এবং আত্মীয় জ্ঞাতিদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করো। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ব্যাপারে সচেতন রয়েছেন।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-১)
‘এতিমদের তাদের সম্পদ বুঝিয়ে দাও। খারাপের সাথে ভালো মালামালের অদল-বদল করো না। আর তাদের ধন-সম্পদ নিজেদের ধন-সম্পদের সাথে সংমিশ্রিত করে তা গ্রাস করো না। নিশ্চয় এটি বড় মন্দ কাজ।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-২) ‘আর তোমরা স্ত্রীদের তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশিমনে। তারা যদি খুশি হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ করো।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-৪)
‘আর এতিমদের প্রতি বিশেষভাবে নজর রাখবে, যে পর্যন্ত না তারা বিয়ের বয়সে পৌঁছে। যদি তাদের মধ্যে বুদ্ধি-বিবেচনার উন্মেষ আঁচ করতে পারো, তবে তাদের সম্পদ তাদের হাতে অর্পণ করতে পারো। এতিমের মাল প্রয়োজনাতিরিক্ত খরচ করো না বা তারা বড় হয়ে যাবে মনে করে তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলো না। যারা সচ্ছল তারা অবশ্যই এতিমের মাল খরচ করা থেকে বিরত থাকবে। আর যে অভাবগ্রস্ত সে সঙ্গত পরিমাণ খেতে পারে। যখন তাদের হাতে তাদের সম্পদ প্রত্যর্পণ করো, তখন সাক্ষী রাখবে। অবশ্য আল্লাহই হিসাব নেয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-৬)
‘মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজনদের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষদেরও অংশ আছে এবং মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজনদের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীদেরও অংশ আছে; অল্প হোক কিংবা বেশি। এ অংশ নির্ধারিত।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-৭) যারা এতিমদের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে খায়, তারা নিজেদের পেটে আগুন ভর্তি করেছে এবং সত্ত¡র তারা অগ্নিতে প্রবেশ করবে।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-১০)
আল্লাহ তোমাদের নিজেদের সন্তানদের সম্পর্কে আদেশ করেন- ‘একজন পুরুষের অংশ দু’জন নারীর অংশের সমান। অতঃপর যদি শুধু নারী হয় দু’-এর অধিক, তবে তাদের জন্য ওই মালের তিন ভাগের দুই ভাগ যা ত্যাগ করে মরে এবং যদি একজন হয়, তবে তার জন্য অর্ধেক। মৃতের মা-বাবার মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্য ত্যাজ্য সম্পত্তির ৬ ভাগের ১ ভাগ, যদি মৃতের পুত্র থাকে। যদি পুত্র না থাকে এবং মা-বাবাই ওয়ারিশ হয়, তবে মা পাবে ৩ ভাগের ১ ভাগ। অতঃপর যদি মৃতের কয়েকজন ভাই থাকে, তবে তার মা পাবে ৬ ভাগের ১ ভাগ ওছিয়তের পর, যা করে মরেছে কিংবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের জন্য অধিক উপকারী তোমরা জানো না। এটি আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত অংশ, নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, রহস্যবিদ।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-১১)
আর, তোমাদের হবে অর্ধেক সম্পত্তি, যা ছেড়ে যায় তোমাদের স্ত্রীরা যদি তাদের কোনো সন্তান না থাকে। যদি তাদের সন্তান থাকে, তবে তোমাদের হবে এক-চতুর্থাংশ ওই সম্পত্তির, যা তারা ছেড়ে যায়; ওছিয়তের পর, যা তারা করে এবং ঋণ পরিশোধের পর। স্ত্রীদের জন্যে এক-চতুর্থাংশ হবে ওই সম্পত্তির, যা তোমরা ছেড়ে যাও যদি তোমাদের কোনো সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে, তবে তাদের জন্য হবে ওই সম্পত্তির ৮ ভাগের ১ ভাগ, যা তোমরা ছেড়ে যাও ওছিয়তের পর, যা তোমরা করো এবং ঋণ পরিশোধের পর। যে পুরুষের, ত্যাজ্য সম্পত্তি, তার যদি পিতা-পুত্র কিংবা স্ত্রী না থাকে এবং এই মৃতের এক ভাই কিংবা এক বোন থাকে, তবে উভয়ের প্রত্যেকে ছয়-ভাগের এক পাবে। আর যদি ততোধিক থাকে, তবে তারা এক-তৃতীয়াংশ অংশীদার হবে ওছিয়তের পর, যা করা হয় অথবা ঋণের পর এমতাবস্থায় যে, অপরের ক্ষতি না করে। এ বিধান আল্লাহর। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-১২) যে কেউ আল্লাহ অর্থাৎ তাঁর রাসূলের অবাধ্যতা করে এবং তাঁর সীমা লঙ্ঘন করে তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সে সেখানে চিরকাল থাকবে। তার জন্যে রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-১৪)
‘আর তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচারিণী তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য থেকে চারজন পুরুষকে সাক্ষী হিসেবে তলব কর। অতঃপর যদি তারা সাক্ষ্য প্রদান করে তবে সংশ্লিষ্টদের গৃহে আবদ্ধ রাখ, যে পর্যন্ত মৃত্যু তাদের তুলে না নেয় অথবা আল্লাহ তাদের জন্য অন্য কোনো পথ নির্দেশ না করেন।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-১৫) ‘তোমাদের মধ্য থেকে যে দু’জন সেই কুকর্মে লিপ্ত হয়, তাদের শাস্তি প্রদান করো। অতঃপর যদি উভয়ে তওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে, তবে তাদের থেকে হাত গুটিয়ে নাও। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, দয়ালু।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-১৬) অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন, যারা ভুলবশত মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরা হলো সেসব লোক যাদের আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, রহস্যবিদ।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-১৭) আর এমন লোকদের জন্য কোনো ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতে থাকে, এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকে, আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরি অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-১৮) তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতা, তোমাদের কন্যা, তোমাদের বোন, তোমাদের ফুফু, তোমাদের খালা, ভ্রাতৃকন্যা; ভগিনীকন্যা তোমাদের সে মাতা, যারা তোমাদের স্তন্যপান করিয়েছে, তোমাদের দুধ-বোন, তোমাদের স্ত্রীদের মাতা, তোমরা যাদের সাথে সহবাস করেছ সে স্ত্রীদের কন্যা যারা তোমাদের লালন-পালনে আছে। যদি তাদের সাথে সহবাস না করে থাকো, তবে এ বিয়ে তোমাদের কোনো গোনাহ নেই। তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রী এবং দুই বোনকে একত্রে বিয়ে করা; কিন্তু যা অতীত হয়ে গেছে। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাকারী, দয়ালু।’ (সূরাা-৪, আয়াত নং-২৩)
‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। আর যে কেউ সীমালঙ্ঘন কিংবা জুলুমের বশবর্তী হয়ে এরূপ করবে, তাকে খুব শিগগির আগুনে নিক্ষেপ করা হবে। এটি আল্লাহর পক্ষে খুব সহজসাধ্য।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-২৯ ও ৩০) ‘মা-বাবা এবং নিকটাত্মীয়রা যা ত্যাগ করে যান সে সবের জন্য আমি উত্তরাধিকারী নির্ধারণ করে দিয়েছি। আর যাদের সাথে তোমরা অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছ তাদের প্রাপ্য দিয়ে দাও। আল্লাহ তায়ালা নিঃসন্দেহে সব কিছুই প্রত্যক্ষ করেন।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-৩৩)
‘যদি তাদের মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ার মতো পরিস্থিতিরই আশঙ্কা করো, তবে স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিশ নিযুক্ত করবে। মা-বাবার সাথে সৎ ও সদয় ব্যবহার করো এবং নিকটাত্মীয়,এতিম-মিসকিন, প্রতিবেশী, অসহায় মুসাফির এবং নিজের দাস-দাসীর প্রতিও। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক-গর্বিতজনকে।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-৩৫ ও ৩৬) ‘আর সে সমস্ত লোক যারা ব্যয় করে স্বীয় ধন-সম্পদ লোকদেখানোর উদ্দেশে এবং যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনে না, ঈমান আনে না কিয়ামত দিবসের প্রতি এবং শয়তান যার সাথী হয় সে হলো নিকৃষ্টতর সাথী।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-৩৮) নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দেন যে, তোমরা যেন প্রাপ্য আমানতসমূহ প্রাপকদের কাছে পৌঁছে দাও। আর যখন তোমরা মানুষের কোনো বিচার-মীমাংসা করতে আরম্ভ করো, তখন মীমাংসা করো ন্যায়ভিত্তিক। আল্লাহ তোমাদের সদুপদেশ দান করেন। নিশ্চয় আল্লাহ শ্রবণকারী, দর্শনকারী।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-৫৮) ‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য করো, নির্দেশ মান্য করো রাসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। তারপর যদি তোমরা কোনো বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়ো, তাহলে তা আল্লাহ অর্থাৎ তাঁর রাসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ করো- যদি তোমরা আল্লাহ ও কিয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটি কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-৫৯)
‘যে লোক সৎকাজে কোনো সুপারিশ করবে, তা থেকে সেও একটি অংশ পাবে। আর যে লোক সুপারিশ করবে মন্দ কাজের জন্য, সে তার বোঝারও একটি অংশ পাবে। বস্তুত আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-৮৫) ‘যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাক্রমে মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতে সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-৯৩) ‘যখন তোমরা কোনো দেশ সফর করো, তখন নামাজে কিছুটা হ্রাস করলে তোমাদের কোনো গোনাহ নেই, যদি তোমরা আশঙ্কা করো যে, কাফেররা তোমাদের উত্ত্যক্ত করবে। নিশ্চয় কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-১০১) ‘যদি কোনো নারী স্বীয় স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশঙ্কা করে, তবে পরস্পর কোনো মীমাংসা করে নিলে তাদের উভয়ের কোনো গুনাহ নেই। মীমাংসা উত্তম। মনের সামনে লোভ বিদ্যমান আছে। যদি তোমরা উত্তম কাজ করো এবং খোদাভীরু হও, তবে আল্লাহ তোমাদের সব কাজের খবর রাখেন।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-১২৮) ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকো; আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্যদান করো, তাতে তোমাদের নিজের বা মা-বাবার অথবা নিকটবর্তী আত্মীয়-স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তবু। কেউ যদি ধনী কিংবা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ তাদের শুভাকাক্সক্ষী তোমাদের চাইতে বেশি। অতএব, তোমরা বিচার করতে গিয়ে রিপুর কামনা-বাসনার অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে কথা বলো কিংবা পাশ কাটিয়ে যাও, তবে আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ কর্ম সম্পর্কে অবগত।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-১৩৫)
‘মানুষ তোমার কাছে জানতে চায় অতএব, তুমি বলে দাও, আল্লাহ তোমাদের কালালাহের মিরাস-সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নির্দেশ বাতলে দিচ্ছেন, যদি কোনো পুরুষ মারা যায় এবং তার কোনো সন্তানাদি না থাকে এবং এক বোন থাকে, তবে সে পাবে তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধেক অংশ এবং সে যদি নিঃসন্তান হয়, তবে তার ভাই তার উত্তরাধিকারী হবে। তা দুই বোন থাকলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ। পক্ষান্তরে যদি ভাই ও বোন উভয় থাকে, তবে একজন পুরুষের অংশ দু’জন নারীর সমান। তোমরা বিভ্রান্ত হবে আল্লাহ তোমাদের সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিচ্ছেন। আর আল্লাহ হচ্ছেন সর্ব বিষয়ে পরিজ্ঞাত।’ (সূরা-৪, আয়াত নং-১৭৬)।
‘অতএব, তোমরা উভয়ে তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অবদান অস্বীকার করবে?’ (সূরা-৫৫, আয়াত-৩৪)
লেখক : আইনজীবী ও কথাসাহিত্যিক



