পাখি। মানবসভ্যতার কাহিনীতে সে কেবল প্রাণী নয়। পাখিদের পালকে আছে মানুষের মানসজগতের প্রতীক-সংকেতবাহী বিশেষ ভাষা। প্রতিটি সংস্কৃতি পাখিদের মাধ্যমে নিজের বিশ্বাস, ভয়, আর আশাকে ব্যাখ্যা করেছে। চীনের প্রাচীন ধারণায় সারসকে অমরত্বের প্রতীক হিসেবে দেখা হতো; এটি ছিল জীবনের সীমানা অতিক্রমের আধ্যাত্মিক চিহ্ন। ভারতের দ্রাবিড় সংস্কৃতিতে ময়ূরকে বলা হতো পৃথিবীর মা। যা প্রকৃতি-চক্র ও উর্বরতার প্রতীকী ব্যাখ্যা বহন করে।
দক্ষিণ আফ্রিকার লোকবিশ্বাসে হ্যামারকপের বাসা ভাঙা ছিল মহাজাগতিক শাস্তির সম্ভাব্য সূচনা। বজ্রাঘাতে মৃত্যুর আশঙ্কা। মেক্সিকোর আজটেকরা ঈগলকে সূর্যের প্রতীক হিসেবে সম্মান করত। ইউরোপীয় পুরাণে পাখির প্রতীক আরো বৈচিত্র্যময়। কবুতরকে মৃত আত্মার প্রতিভূ হিসেবে দেখা হয়েছে; পেঁচা জ্ঞানের অন্ধকারে অনুসন্ধানী দৃষ্টি; কাককে ধরা হয়েছে অশুভ সঙ্কেতের বাহক। এসব উদাহরণে স্পষ্ট, পাখিদের প্রতীকী ভূমিকা ছিল সভ্যতার ভেতরকার গভীর মানসিক ও সাংস্কৃতিক কাঠামোর অংশ।
মানুষের পাখি-নিরীক্ষণ থেমে নেই; বরং আধুনিক যুগে নতুন মাত্রা পেয়েছে। বার্ডওয়াচিং এখন কেবল শখ নয়, তাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বিশাল শিল্প সম্প্রদায়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় পঞ্চাশ মিলিয়ন মানুষ এই শখে যুক্ত; এতে বছরে ব্যয় হয় প্রায় ৪১ বিলিয়ন ডলার। সেখানে প্রায় দুই কোটিরও বেশি মানুষ বিশেষভাবে পাখি দেখার উদ্দেশ্যে ভ্রমণে যায়। মানুষের এই আগ্রহ- প্রকৃতির সাথে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপনের সমসাময়িক প্রয়োজনকে কি ব্যাখ্যা করছে না?
জীববৈচিত্র্যে পাখি পৃথিবীর অন্যতম বিস্তৃত প্রাণীসমষ্টি। এই প্রাণীরা সাতটি মহাদেশেই বাস করে। পাখি প্রজাতির সংখ্যায় শীর্ষে আছে কলম্বিয়া। সেখানে আছে ১,৮২৬ প্রজাতি। তারপরে পেরুর ১,৮০৪ এবং ব্রাজিলের ১,৭৫৩ প্রজাতি।
উত্তর আমেরিকার উদাহরণও অনুসন্ধানযোগ্য। কানাডার অন্টারিও প্রদেশে এপ্রিল ২০১৭ পর্যন্ত ৪৯৫টি প্রজাতির পাখি নথিবদ্ধ হয়েছে, যার মধ্যে ২৯১টি সেখানে প্রজনন করে। সবমিলিয়ে দেখা যায়, পাখিরা মানুষের কল্পনা, গবেষণা, ধর্ম ও পরিবেশ দৃষ্টিতেও প্রভাব রাখছে। পৃথিবীতে প্রায় ১০ হাজার জীবিত পাখি প্রজাতি রয়েছে, যার অর্ধেকের বেশি গায়ক পাখি বা ঢ়ধংংবৎরহবং।
পাখিদের জীবনশক্তি পরিমাপ করা যায় কার্বন জৈবভরের মাধ্যমে। চমকপ্রদ সত্য হলো, বন্য পাখির মোট জৈবভর মাত্র ০.০০২ এঃ ঈ, যেখানে মানুষের ০.০৬ এঃ ঈ, মাছের ০.৭ এঃ ঈ, উদ্ভিদের ৪৫০ এঃ ঈ। অন্য দিকে গৃহপালিত মুরগির কার্বন ভর বন্য পাখির চেয়ে প্রায় আট গুণ বেশি।
পাখিদের শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যবস্থা চমকপ্রদভাবে জটিল। যখন তারা তাজা বাতাস গ্রহণ করে, ৭৫ শতাংশ বাতাস সরাসরি ফুসফুসের সাথে যুক্ত পেছনের বায়ুথলিতে যায়। তা হালকা কঙ্কাল গঠনের হাড়েও পৌঁছে। বাকি ২৫ শতাংশ বাতাস সরাসরি ফুসফুসে প্রবেশ করে। অক্সিজেন শোষণ ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও পাখিরা অসাধারণ। তাদের গ্যাস-বিনিময়ের পৃষ্ঠতল স্তন্যপায়ীদের তুলনায় দশ গুণ বেশি এবং রক্তনালীর সংখ্যা প্রতি একক আয়তনে অনেক বেশি। এই ব্যবস্থা তাদের উচ্চ শক্তি চাহিদা পূরণে সক্ষম করে।
পাখিদের পরিপাকতন্ত্র স্বল্প দৈর্ঘ্যরে। কিন্তু তা অতিরিক্ত পুষ্টি শোষণ ক্ষমতা রাখে। টিয়া ও কাকজাতীয় কিছু পাখি অদ্ভুত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেয়। তারা উপকরণ তৈরি করতে পারে, তা ব্যবহার করতে পারে। এমনকি বংশধরদের কাছে এই জ্ঞান হস্তান্তর করে। সামাজিক জীবনেও তারা অসাধারণ প্রজনন, শিকার, দলবদ্ধ উড্ডয়ন, প্রতিরক্ষা- সবকিছুতে তারা একে অপরের সাথে সমন্বয় করে।
তাদের সৌন্দর্যও কম নয়। রঙিন পালক, গান, নৃত্যভঙ্গি- সবকিছুই পাখিদের যোগাযোগের মাধ্যম। আমাদের অগোচরে আছে আরো এক জগৎ- অতিবেগুনি রঙের জগৎ। মানুষ তা দেখতে পারে না, কিন্তু পাখি পারে। কাক বা র্যাভনের (ৎধাবহ) চোখে অন্য রঙে ফুটে ওঠে, আমাদের চোখে সবই কালো দেখায়। যদি আমরা অতিবেগুনি দেখতে পারতাম, হয়তো আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হতো ভিন্ন, প্রকৃতির সাথে আমাদের সম্পর্ক হতো আলাদা।
পাখি শুধু প্রাণী নয়। তারা প্রকৃতির জীবন্ত প্রতিফলন, আমাদের দার্শনিক শিক্ষক। তারা আমাদের শেখায়- স্বাধীনতা মানে শুধু উড়তে পারা নয়। একই সাথে তা সামাজিক সংহতি, দক্ষতা, সৌন্দর্য এবং সময়ের সাথে খাপখাওয়ানো।
পাখির খাদ্যাভ্যাস প্রজাতি অনুযায়ী ভিন্ন। পাখিদের পরিপাকতন্ত্র এমনভাবে গঠিত যে, তারা খাবার সম্পূর্ণ গিলে হজম করতে পারে। পূর্ব অন্টারিওর মতো যেসব অঞ্চলে ঋতুভেদে আবহাওয়া ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়, সেখানে অনেক পাখি প্রজাতি বছরে নির্দিষ্ট সময়ে অভিবাসন করে। দিনের দৈর্ঘ্য ও আবহাওয়ার পরিবর্তন এই বিশাল যাত্রার মূল প্রেরণা। অভিবাসনের আগে পাখিরা দেহে অতিরিক্ত চর্বি সঞ্চয় করে এবং কিছু অঙ্গের আকার ছোট করে, যাতে দীর্ঘ সফর সহজ হয়।
উড়ালের দূরত্ব প্রজাতি অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। স্থলজ পাখি সাধারণত প্রায় ২,৫০০ কিমি., তীরবর্তী পাখি প্রায় ৪,০০০ কিমি. পর্যন্ত ওড়ে। বার-টেইলড গডউইট একটানা ১০,২০০ কিমি. পর্যন্ত উড়ে যেতে সক্ষম। সমুদ্রপাখির মধ্যে সুটি শিয়ারওয়াটার বছরে প্রায় ৬৪ হাজার কিমি. দূরত্বে যাতায়াত করে, যা অভিবাসনের সর্বোচ্চ সীমা হিসেবে বিবেচিত।
অভিবাসী পাখির বেশির ভাগের একটি সুসংহত উড্ডয়নপথ (ভষুধিু) থাকে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, তাদের ভেতরে একটি অন্তর্নিহিত জিপিএস (রহঃবৎহধষ এচঝ) থাকে, যা একই পথ ধরে ফিরে আসতে সাহায্য করে। সূর্য ও নক্ষত্রের অবস্থান পাঠ, ভূচিহ্ন চিনে নেয়া- এভাবেই তারা অভ্যন্তরীণ মানচিত্র তৈরি করে।
পাখির রঙিন পালক বা মধুর সুর মানুষকে মুগ্ধ করে সভ্যতার প্রথম প্রহর থেকেই। তাদের শারীরবৃত্তীয় জটিলতা, সহনশক্তি এবং চমৎকার ক্রীড়ানৈপুণ্যও মানুষের বিস্ময়ের কারণ। কিন্তু মুগ্ধতা ও বিস্ময়ের অধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, পাখিরা কি প্রকৃতির জটিল জীবনজালে সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে?
পাখিরা উদ্ভিদের বীজ বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনেক প্রজাতির পাখি ফল খেয়ে বীজগুলো হজম না করে তাদের শরীরের মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানে ছড়িয়ে দেয়।
ফলখাদক পাখিরা (ভৎঁমরাড়ৎবং) বনাঞ্চলের নতুন গাছ জন্ম দিতে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়ার কারণে বনাঞ্চল পুনর্গঠন হয় এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, পোকাভোজী পাখিরা প্রতি বছর সম্মিলিতভাবে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন টন পোকা (ধৎঃযৎড়ঢ়ড়ফং) খায়। এতে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং কীটনাশকের ওপর মানুষের নির্ভরতা কমে।
পাখিরা খাদ্য চক্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা খাদ্য জালের ভারসাম্য বজায় রাখে। নাইট হক, ঈগল ইত্যাদি শিকারিরা ছোট স্তন্যপায়ী ও অন্যান্য প্রাণী খায়, নিয়ন্ত্রণে রাখে। শিকারি পাখিদের খাদ্য সরবরাহ প্রাকৃতিক চক্রে সমন্বয় আনে।
শকুন, কাকের খাদ্যরুচি আমাদের পরিবেশ রক্ষা করে। তারা মৃতদেহ বা অবশিষ্ট পদার্থ খেয়ে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখে। যা জীবাণু ও রোগের বিস্তার কমায়। তারা পরিবেশে প্রাকৃতিক পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করে।
পাখির উপস্থিতি বা সংখ্যা পরিবেশের স্বাস্থ্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ। অতীতে এই গুরুত্ব ছিল, আজ বেড়েছে বহুগুণ। পাখির প্রজাতি ও তাদের আচরণ পরিবেশের দূষণ, বননিধন বা জলাশয়ের অবস্থা মাত্রা নির্দেশ করে। ডানা বিস্তৃত পানিচর পাখি জলাশয়ের দূষণ সম্পর্কে প্রাথমিক সতর্ক সঙ্কেত দেয়।
কবুতর ও কাকের মতো কিছু পাখি অত্যন্ত অভিযোজনক্ষম; তারা পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। অন্য দিকে কিছু প্রজাতি তাদের আবাসস্থল ও খাদ্যাভ্যাসে অত্যন্ত বিশেষায়িত। একই বনেও দেখা যায়-কিছু পাখি গাছের চূড়ায় খাদ্য সংগ্রহ করে, কেউ চূড়ার নিচে, আবার কেউ বনভূমির মাটিতে। তাদের খাদ্যাভ্যাসেও বৈচিত্র্য লক্ষ করা যায়; কিছু পাখি শুধুই পোকামাকড় খায়, কেউ শুধু ফল বা মধু। এই ভিন্নতা তৃণভূমি, মরুভূমি, জলাভূমি, তুন্দ্রা এবং সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলের পাখিদের মধ্যেও বিদ্যমান।
পাখিদের বহু প্রজাতি এখন বিপন্ন। ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সঙ্ঘের (ওটঈঘ) তত্ত¡াবধানে ‘বার্ডলাইফ পার্টনারশিপ’ বিশ্বব্যাপী সব পাখি প্রজাতির একটি পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন সম্পন্ন করে। এতে দেখা গেছে, প্রায় ১০,৩০০ জীবিত প্রজাতির মধ্যে প্রায় ১,৪৩০টি প্রজাতি বিপন্ন। যা পাখিদের মোট সংখ্যার ১৪% এর বেশি। ১৪৫ থেকে ১৬৩টি প্রজাতি বিলুপ্ত বা বন্য পরিবেশে বিলুপ্ত। প্রায় ৮,৮০০টি প্রজাতি বর্তমানে বিপন্ন নয়।
পাখিদের বহু প্রজাতির অবক্ষয় বা বিলুপ্তির মূল কারণ মানুষ। মানুষের কর্মকাণ্ড অন্তত ১২ হাজার বছর আগে থেকেই পাখি বিলুপ্তির সূত্রপাত ঘটায়। আনুমানিক ২৫টি পাখি প্রজাতি খ্রিষ্টপূর্ব ১০ হাজার সাল থেকে খ্রিষ্টীয় ১৫০০ সালের মধ্যে বিলুপ্ত হয়। ১৫০০ থেকে ১৯০০ সালের মধ্যে আরো ১২টি প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটে।
২০০ শতকে পাখি বিলুপ্তি ভয়াবহভাবে বেড়ে যায়- প্রায় ৫০০ প্রজাতি বিলুপ্ত হয়। দুই দশকেরও কম সময়ের মধ্যে বিলুপ্তির হার আরো আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১৫০ প্রজাতি এবং আরো প্রায় ১,৪৩০টি প্রজাতি বিলুপ্তির মুখে।
তাহলে প্রশ্ন হলো- এত অসাধারণ অভিযোজন ক্ষমতা থাকা সত্তে¡ও পাখিরা কেন প্রজাতি ও সংখ্যায় কমে যাচ্ছে? কিছু গবেষক দায়ী করছেন ‘অম্লবৃষ্টি’কে, যা পরিবেশে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি ঘটায় এবং ফলে পাখির ডিম দুর্বল হয়ে পড়ে। এই অম্লবৃষ্টি, যাতে নাইট্রিক ও সালফিউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি থাকে, মূলত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, কলকারখানা এবং যানবাহনের নির্গমন ইত্যাদি থেকে সৃষ্টি হয়। বাতাসে ভেসে এই অ্যাসিডযুক্ত যৌগগুলো শত শত কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। যখন এটি বৃষ্টি, তুষার বা কুয়াশার মাধ্যমে মাটিতে পড়ে, তখন তা মাটি ও পানিকেও দূষিত করে।
আরেকটি বড় কারণ হলো খাদ্য সরবরাহের অনিশ্চয়তা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অনেক পাখির খাদ্য, বিশেষত কীটপতঙ্গের জীবনচক্র, তাদের অভিবাসনের সময়সূচির সাথে মিলছে না। কীটপতঙ্গ এখন অনেক আগেই ডিম ফাটিয়ে বেড়ে উঠছে, ফলে দূরপথ পাড়ি দিয়ে আসা পাখিদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য থাকে না। অনেক প্রজাতি এই পরিবর্তনের সাথে খাপখাওয়াতে পারছে না। উদাহরণস্বরূপ, গত ৪০ বছরে চিমনি সুইফট পাখির খাদ্য তালিকা বদলে গেছে। আগের প্রোটিনসমৃদ্ধ পোকামাকড় ও বিটল থেকে এখন তারা তুলনামূলক কম পুষ্টিকর মাছি খাচ্ছে, যা তাদের সংখ্যাগত হ্রাসের অন্যতম কারণ হতে পারে।
মানুষের আরেক কার্যক্রমও প্রভাব ফেলেছে-যখন পুরনো খোলা চিমনিগুলো বদলে নতুন ধাতব ঢাকনাযুক্ত চিমনি তৈরি করা হলো, তখন পাখিদের বাসার জায়গাও হারিয়ে গেল। প্রতি বছর নতুন রাসায়নিক কীটনাশক তৈরি হচ্ছে, যা শেষ পর্যন্ত পাখি ও মানুষসহ লক্ষ্যবিহীন প্রাণী প্রজাতিকেও প্রভাবিত ও হত্যা করছে।
পাখি শুধু প্রকৃতির সদস্য নয়; তারা মানুষের কল্পনা, সংস্কৃতি, ধর্ম, বিজ্ঞান ও পরিবেশচেতনায় গভীর প্রভাব ফেলে। মানবসভ্যতার প্রতিটি পর্যায়ে পাখিরা প্রতীক হয়েছে, দার্শনিক শিক্ষক ও প্রাকৃতিক নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করেছে।
মানব কার্যক্রম-বাসস্থান ধ্বংস, রাসায়নিক দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং খাদ্য সরবরাহের অনিশ্চয়তা- পাখির সংখ্যা ও বৈচিত্র্য হ্রাস করছে। পাখিদের বিলুপ্তি কেবল জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নয়; এটি প্রাকৃতিক ভারসাম্য, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও পরিবেশগত স্থিতিশীলতার ওপরও ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে, ফেলবে। পাখিদের সংরক্ষণ শুধু পরিবেশ রক্ষার বিষয় নয়; এটি আমাদের দার্শনিক, সাংস্কৃতিক এবং জৈবিক দায়িত্বও বটে।
লেখক : কবি, গবেষক



