দেশের পার্বত্যাঞ্চলে গত কয়েক দিন ধরে গুজব ছড়ানো ও স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা তৈরির নানা ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, এটি বাইরের ষড়যন্ত্রের অংশ, যার লক্ষ্য হলো পাহাড়ি ও বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে বাংলাদেশের সামরিক নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর চাপ সৃষ্টি করা। এরই মধ্যে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর বেশ কিছু সদস্য আহত হয়েছেন।
প্রতিরোধমূলক কৌশল
এ ধরনের ঘটনা রোধের জন্য যা করা দরকার তা হলো, তাৎক্ষণিকভাবে (২৪-৭২ ঘণ্টা) রিয়েল-টাইম ফ্যাক্ট-চেকিং হাব- অফিসিয়াল বিবৃতি প্লাস ছবি/ভিডিও ফরেনসিক যাচাই করা। কমিউনিকেশন টেমপ্লেট- সেনাবাহিনী ও পুলিশের জন্য পূর্বনির্ধারিত তথ্য ও প্রেস রিলিজ দেয়া। সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং ও টেকডাউন রিকোয়েস্ট, ভুয়া তথ্য চিহ্নিত করা ইত্যাদি।
মধ্যম মেয়াদে (সপ্তাহ-মাস) সন্দেহভাজন তহবিল ও ফান্ডিং চ্যানেল পরীক্ষা করা, যাতে অপশক্তি কোনোভাবে অর্থের জোগান না পেতে পারে। স্থানীয়দের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা তৈরি করা। কমিউনিটি সভার আয়োজন করা। স্থানীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ করা। সাইবার-ইন্টেলিজেন্স বট ব্যবহার করে ফেক অ্যাকাউন্ট শনাক্ত ও বøক করার পদক্ষেপ নেয়া। অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদি (মাস-বছর) মিডিয়া ও তথ্য সচেতনতা বাড়ানো। এর জন্য স্কুল, কমিউনিটি ও সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে তথ্য যাচাই প্রশিক্ষণ দেয়ার কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। আঞ্চলিক কূটনীতি প্রতিবেশী ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে যৌথ কর্মকৌশল তৈরি করা জরুরি।
দ্রুত প্রয়োগযোগ্য অপারেশনাল চেকলিস্ট : ঘটনার অফিসিয়াল রুম খোলা। রিয়েল টাইম স্টেটমেন্ট ও ছবি-ভিডিও যাচাইয়ের পর প্রকাশ করা। কমিউনিটি লিডারদের সাথে হটলাইন-মিটিং করা। সোশ্যাল মিডিয়া রিপোর্টিং ও ট্যাগিং করা। সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো। আইনি টিমকে বট-ফেইক তথ্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া।
সাত দিনের রিপোর্ট : ন্যারেটিভ কিভাবে ছড়াল, প্রতিক্রিয়া কী ছিল। বহিঃশত্রুর ষড়যন্ত্রের ধরন- সামাজিক মিডিয়া, মেসেজিং অ্যাপ ও স্থানীয় মিডিয়ায় অতিরঞ্জিত বা ভ্রান্ত তথ্য প্রচার। জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক সৃষ্টি, সামরিক বাহিনীর উপর আস্থা কমানো। একই তথ্য একাধিক চ্যানেলে একই সময়ে ছড়ানো। বিদ্রোহী বা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর জন্য সীমান্তপাড়ে আশ্রয় বা লজিস্টিক সাপোর্ট। বিদেশী উৎস থেকে গোপন অর্থ প্রবাহ বা এনজিও-ডায়াসপোরা চ্যানেল ব্যবহার। অনিয়মিত তহবিল প্রবাহ বা অজানা স্পন্সর। দাঙ্গা বা সন্ত্রাসী হামলার খবর অতিরঞ্জিত করে প্রদর্শন।
আন্তর্জাতিক-স্থানীয় মিডিয়ায় একই ধরনের একপক্ষীয় রিপোর্ট। সশস্ত্র গোষ্ঠীর জন্য সীমান্তপাড়ে আশ্রয়স্থল, রিফিউজি ক্যাম্প বা লজিস্টিক কোরিডোর সক্রিয় করা- যেখানে তারা শিক্ষা, পুনর্গঠন ও স্টোরেজ পায়। সীমান্তপাড়ে অস্বাভাবিক মানুষের যাতায়াত, আশ্রয়স্থলে অনুপ্রবেশের রিপোর্ট, বসতি-চলাচলে অদ্ভুত প্যাটার্ন।
সন্ত্রাসী বাহিনীর পুরনো পর্যায়ে সীমান্ত-ভিত্তিক আশ্রয় ও সহায়তার অভিযোগ রয়েছে; এ ইতিহাসকে বর্তমান সন্দেহের প্রেক্ষাপট হিসেবে দেখা হয়। নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে হাতিয়ার, বিস্ফোরক বা মাঠে ব্যবহারের উপকরণ সরবরাহ এবং সীমিত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা- সীমান্তপাড়ে অস্ত্র-খোঁজ, সশস্ত্র গ্রুপ পুনরায় সক্রিয় হওয়া, সীমান্তে অস্ত্র-বহন গ্রেফতার।
স্থানীয় নেতৃত্ব বা সংগঠনগুলোর কাছে গোপনে তহবিল পৌঁছে দেয়া- কখনো সিভিল সোসাইটি বা এনজিও ব্যবহার করে, কখনো ডায়াসপোরা চ্যানেল ব্যবহার করে। অস্বাভাবিক দান-গ্র্যান্ট, বিদেশী উৎসের অপ্রতুল রিপোর্টিং, স্থানীয় নেতাদের কাছে অজানা স্পন্সরশিপ। বহিরাগত আর্থিক সহায়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে; সিএইচটিতে বহুবার তহবিল-সোর্স ট্র্যাকিংয়ের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক ফোরামে মানবাধিকার/নাগরিক ইস্যু তুলে দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা বা কূটনৈতিকভাবে একতরফা চাপ সৃষ্টি করা। বহুজাতিক রিপোর্টে ধারাবাহিক সমালোচনামূলক টোন, দূতাবাস-স্তরে কার্যক্রম বা আন্তর্জাতিক মিডিয়া ক্যাম্পেইন। সিএইচটি ইস্যু নিয়ে বহু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বা এনজিও রিপোর্ট ও আলোচনা দেখা যায়; এগুলো কখনো স্বতন্ত্র প্রমাণ নয়, তবে বয়ান পাল্টানোর অংশ হতে পারে। কিছু স্থানীয় নেতৃত্বকে অংশীদার করে অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ম্যানিপুলেটিভ নীতি গড়ে তোলা (বিভাজন নীতি)। স্থানীয় নেতৃত্বের আচরণে হঠাৎ ধন-লাভ, অস্বাভাবিক রাজনৈতিক তৎপরতা বা সমাজভিত্তিক বিভাজনের খোঁজ।
‘পাহাড়ে অশান্তি নেপথ্যে ষড়যন্ত্র’ প্রসঙ্গটি মূলত একটি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক আলোচনার বিষয়। বাংলাদেশে বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের অশান্তি অনেক সময় ভারতীয় স্বার্থের সাথে সম্পর্কিত বলে আলোচিত হয়।
ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট : পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারতের ত্রিপুরা, মিজোরাম ও আসাম সীমান্তঘেঁষা এলাকা। এ অঞ্চল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের করিডোর হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভারত চায় পাহাড়ে নিজের প্রভাব বজায় রাখতে, যাতে ওই অঞ্চলে কোনো বিরূপ শক্তি দাঁড়াতে না পারে। আশির দশকে শরণার্থী শিবির ও বিদ্রোহীদের জন্য ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহারের অভিযোগ বহুবার ওঠে।
কিভাবে বিভাজন সৃষ্টি করা হয় : প্রচারণা ও তথ্যযুদ্ধ; ঘটনাকে ভিন্ন রঙে উপস্থাপন, সামাজিক মিডিয়া ও স্থানীয় মাধ্যম ব্যবহার করে ভীতি বাড়ানো, কে কোথায় আকস্মিক হিংসার জন্য দায়ী তা ছড়িয়ে দেয়া। এতে ছোটখাটো ব্যাপার বড় ঘটনার মতো লাগতে থাকে এবং পারস্পরিক আস্থা ভেঙে পড়ে।
কাঠামোগত বা আচরণগত প্ররোচনা- মাঠে তৎপর ‘কঠোর’ বা চরমপন্থী ছোট গোষ্ঠীকে সমর্থন বা প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রোভোকেশনস। হামলা-প্রতিবাদের পরে দোষ চাপানো সহজ হয়।
ঐতিহাসিকভাবে এমন অভিযোগ ওঠে যে, শান্তি বাহিনী প্রভৃতি সংগঠনের ক্ষেত্রে সীমান্ত-আধারিত সহায়তা ছিল। সশস্ত্র ও অনানুষ্ঠানিক উপকরণ, প্রশিক্ষণ, চিকিৎসা-সহায়তা সীমান্তপাড়ের গোপন ঠিকানায় সরবরাহ করা; এতে সংগঠনগুলো স্থায়ীভাবে সক্রিয় থাকে। কুচক্রী দলের কাছে অর্থ, ভ্যান, সরঞ্জাম, বিদেশী দাতব্য চ্যানেল বা নন-গভর্নমেন্টাল সংস্থার মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য। এর ফলে স্থানীয় সঙ্ঘাত ‘টেকসই’ হয়। কিছু স্থানীয় নেতা বা গোষ্ঠীকে সুবিধা দিয়ে অন্য গোষ্ঠীর সাথে তাদের দূরত্ব বাড়ানো নেতাদের মাধ্যমে ‘বিভাজন’ চালানো।
ভারত চায় কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ : চট্টগ্রাম হলো বাংলাদেশের প্রধান ডিপওয়াটার বন্দর। এ অঞ্চলের মাধ্যমে দক্ষিণ চীনসাগর ও মহানন্দা/বন্দর-রুট নিয়ন্ত্রণে পরোক্ষ ভূমিকা থাকতে পারে; তাই প্রতিবেশী শক্তির জন্য এটি কৌশলগতভাবে মূল্যবান। এ নিয়ন্ত্রণ অর্থনৈতিক, সামরিক ও লজিস্টিক ডোমেনে প্রভাব ফেলে।
ভারত কৌশলগত প্রভাব বাড়াতে কেমন কৌশল ব্যবহার করেছে (পোর্ট অ্যাক্সেস ও ট্রানজিট চুক্তি) বাণিজ্যিক/ট্রানজিট-অ্যাক্সেস পেয়ে ভারত নিজের অসামরিক লজিস্টিক সুবিধা করেছে (মাল পরিবহন, দ্রুত পণ্য-নদী)। গত বছরগুলোতে চট্টগ্রাম-মোংলা ব্যবহারের বিষয়ে চুক্তি/অ্যাক্সেস নিয়ে আলোচনা/চুক্তি ছিল। ইনফ্রা-ইনভেস্টমেন্ট ও কনকেশন (সফট পাওয়ার ইকোনমিকস) -রেল, রোড, বিদ্যুৎ বা টার্মিনাল উন্নয়নে বড় বিনিয়োগ করে প্রভাব তৈরি করা, স্থানীয় অর্থনীতির সাথে ঘন জোড়া লাগিয়ে রাজনৈতিক ও কূটনীতিক-বলয় তৈরি করা সম্ভব। ভারতের কিছু রেল/পাওয়ার/কানেক্টিভিটি প্রোজেক্টের অংশীদারিত্ব উদাহরণ হিসেবে আছে। কেলোগিস্টিক/সামরিক সহযোগিতা (পরোক্ষ সামরিক উপস্থিতি) যোগাযোগ সুবিধা, কো-অপারেটিভ নৌ-বহুরা/এক্সারসাইজ ও বিত্তায়িত বহুপাক্ষিক ট্রান্সশিপমেন্ট অ্যারেনায় উপস্থিতি বাড়িয়ে প্রভাব রাখা যায়। (বহুপক্ষীয় নকশা ব্যবহার করে কৌশলগত সুযোগ তৈরি করা হয়)। ডিপ্লোম্যাটিক/অঞ্চলীয় ফোরাম ব্যবহার বিমসটেক, ইত্যাদির মতো আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্মে ল্যান্ড-কন্টিগুয়িটি ও পোর্ট-ক্যাপাসিটি নিয়ে অগ্রাধিকার নিয়ে এসে অঞ্চলে অ্যাকেস বাড়ানো। ট্রানজিট/কাস্টমস সুবিধা নিয়ে পরিবর্তনগত সিদ্ধান্ত-হটানো (যেমন ট্রানজিট সুবিধা বন্ধ/খোলা) যা বাণিজ্যিক গতি সম্পর্কে বড় প্রভাব ফেলে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের ট্রানজিট-সুবিধা সম্পর্কিত সিদ্ধান্তগুলো বাণিজ্য প্রভাবিত করেছে। আঞ্চলিক কূটনৈতিক ন্যারেটিভে বারবার সিকিউরিটি ‘রিস্ক’ বা ‘অ্যাক্সেস-থ্রেট’ তুলে ধরা- সাম্প্রতিক কয়েকটি নতুন মিডিয়া/পলিসি দলিল ও প্রবন্ধে-চট্টগ্রাম বা বঙ্গোপসাগরীয় অবস্থান নিয়ে ভারতীয় নিরাপত্তা চর্চার উদ্বেগও প্রকাশ পেয়েছে (সরবরাহ লজিস্টিক সুরক্ষার দিক থেকে)। তৎপরতার দিক থেকে এগুলো সম্ভবত রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ন্যারেটিভের অংশ।
ভারত চায় আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণœ হওয়া- আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা দুর্বল হলে ঢাকাকে কূটনৈতিক চাপ বা বহুপক্ষীয় সমর্থন কমানো সহজ হয়। একই সাথে ন্যারেটিভ বদলে দেশের অভ্যন্তরীণ সহিংসতা বা মানবাধিকার ইস্যুকে আন্তর্জাতিক ফোরামে বড় করে তোলা যায়, যা উন্নয়ন সহযোগিতা বা বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
কী কৌশলে আন্তর্জাতিক ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা হয়
১. মিডিয়া-ন্যারেটিভ ও ডিসইনফরমেশন : আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক মিডিয়ায় ধরে-ধারে নেতিবাচক গল্প ছড়ানো; ফ্যাক্টচেক না করে অপপ্রচার গ্রহণযোগ্য করে তোলা।
২. কনসোলিডেটেড লবিং/অ্যাক্টিভিজম (প্রক্সি ক্যামপেইনস) : বিদেশী সিভিল-সোসাইটি, মিডিয়া অথবা ডায়াস্পোরা-নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ইস্যু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরা।
৩. ডিপ্লোম্যাটিক-প্রেসার ও পাবলিক ডিসকোর্স কন্ট্রোল : হাইকমিশন/দূতাবাস পর্যায়ে নেতিবাচক ইস্যু সামনে আনা বা মার্চ/প্রদর্শন ও সংবাদমাধ্যম ব্যবহার করে ইমেজিংয়ে চাপ দেয়া। সাম্প্রতিককালে কিছু কনসুলেট/মিশন-সংক্রান্ত ঘটনার পর কূটনীতিক তিক্ততা বেড়েছে।
৪. ওপেন-সোর্স/ফ্যান্ড-দ্য-মেসেজ : ফরেন-ফান্ডিং বা স্বনামধন্য কিছু এনজিও/ থিং-ট্যাঙ্ক দিয়ে রিপোর্ট-বেস কাগজ তৈরি করে আন্তর্জাতিক ন্যারেটিভ কন্ট্রোল করা।
ব্যবহারযোগ্য প্রতিরোধমূলক নীতিগত সুপারিশ (তাৎক্ষণিক মধ্যম দীর্ঘমেয়াদি)
১. স্বচ্ছতা ও কনসেশন-রেগুলেশন-পোর্ট-অপারেশন, টার্মিনাল কনসেশন ও ভূমি-লিজে স্বচ্ছ নিয়ম-কানুন, পাবলিক-ডাটা প্রকাশ। (উচ্চ অগ্রাধিকার)
২. বহুপক্ষীয় ব্যালান্সিং ডিপ্লোম্যাসি- একক দেশসমর্থন না বাড়িয়ে একাধিক আন্তর্জাতিক অংশীদার (জাপান, ইউএস, অইএনজি, চীন) সাথে তাল মিলিয়ে কৌশলগত বিকল্প রাখা। (মধ্যম)
৩. লোকাল কমিউনিটি ইনক্লুশন ও রেভিনিউ শেয়ারিং সুরক্ষা- যেকোনো বড় প্রকল্পে স্থানীয়দের স্বার্থরক্ষা আইনগতভাবে জোরদার করা। (উচ্চ)
৪. ইন্টেলিজেন্স-ভিত্তিক ইকোনমিক মনিটরিং বিদেশী বিনিয়োগ/ফান্ডিং-চ্যানেল ট্র্যাকিং ও ট্রানজিট-ফ্যাসিলিটি কনসিকোয়েন্স বিশ্লেষণ। (উচ্চ)
৫. বায়ো-ব্যাপসিক ইনফ্রা ও ন্যাশনাল লজিস্টিক রেজিলিয়েন্স- নিজস্ব লজিস্টিক ও পোর্ট-সক্রিয়তা বাড়ানো; যাতে কোনো কিছুর ওপর একতরফা নির্ভরতা কমে। (মধ্যম-উচ্চ)
প্রভাব-অর্থনীতি : বিনিয়োগ হ্রাস, পর্যটন ও রফতানি বাধাগ্রস্ত, ভাঙচুর/ চাহিদা হ্রাস- জিডিপি ও স্থানীয় কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব। গবেষণা দেখায় সঙ্ঘাত-অস্থিরতা দেশের উন্নয়নশীলতা ও অর্থনৈতিক গতি উল্লেøখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
সামরিক সক্ষমতা : নিরাপত্তা-দায়িত্ব ভেতরে সরে গেলে সীমান্তগত আধুনিকায়ন ও লজিস্টিক বাজেট কমে; রিসোর্স সেভিংয়ের নামে রক্ষণশীলতা দেখা দেয় সামরিক মডার্নাইজেশন ধীর হয়।
রাজনৈতিক-সামাজিক : জাতীয় সংহতি দুর্বল হয়, দুর্নীতির সুযোগ বেড়ে যায় এবং বিরোধী রাজনৈতিক ধারাগুলো বাড়ে দীর্ঘমেয়াদে নীতি-নির্ধারণে ধাক্কা লাগে।
প্রতিরোধ ও নীতিগত সুপারিশ
১. দক্ষ, ট্রান্সপারেন্ট ইনফো-অপারেশন- স্থানীয় মানুষকে দ্রুত এবং নিরপেক্ষ তথ্য (ফ্যাক্ট চেকস, কমিউনিটি বুলেটিন) পৌঁছানো।
২. সীমান্ত নজরদারি ও ইন্টেলিজেন্স শেয়ারিং- দু’পক্ষীয় যোগাযোগ বাড়িয়ে সেফ-হ্যাভেন রোধ।
৩. লোকাল ডায়ালগ ও ক্ষমতা-বণ্টন বাস্তবায়ন- ভূমি, প্রশাসন ও সংবিধানগত দাবিগুলো বাস্তবভাবে সমাধান করা হলে সন্ত্রাস-প্ররোচনা দুর্বল হয়।
৪. আর্থিক চ্যানেল পর্যবেক্ষণ সন্দেহভাজন তহবিলগুলোর উৎস খতিয়ে দেখা।
৫. সামাজিক সংহতি উদ্যোগ- শিক্ষাবাতিকা, যৌথ উন্নয়ন প্রকল্প, সংস্কৃতি বিনিময় ইত্যাদি থেকে পারস্পরিক আস্থা বাড়ানো।
৬. রিয়েল-টাইম ইনফো- ভেরিফিকেশন হাব, স্থানীয় ভাষায় দ্রুত, ফ্যাক্ট চেকিং ও ভিন্ন দিকের তথ্য পৌঁছে দেয়া; সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং ও কমিউনিটি রিট্রাস্ট বিল্ডিং। (উচ্চ অগ্রাধিকার)।
৭. সীমান্ত-ইন্টেলিজেন্স ও বহুপক্ষীয় যোগাযোগ।
৮. লোকাল অর্থনৈতিক-ইনক্লুশন প্রকল্প- ভূমি ও বসতি ইস্যু নিয়ে স্বচ্ছ ও দ্রুত সমাধান; ক্ষুদ্র-অর্থায়ন ও পরিবহন অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে ভ্রাতৃত্ব পুনর্নির্মাণ। (মধ্যম-উচ্চ)
৯. আর্থিক ফলো-দ্য-মানি (এএমএল) ও ট্র্যাকিং- সন্দেহজনক বিদেশী তহবিল ও চ্যানেলগুলোর উৎস খুঁজে বের করা ও বন্ধ করা। (উচ্চ)
১০. সংবেদনশীল ইস্যুতে ন্যায়বিচার ও গণ-অভিযোগ মীমাংসা প্ল্যাটফর্ম- স্থানীয় নেতাদের স্বচ্ছতায় জড়িত করে বিভাজনের কৌশল দুর্বল করা। (মধ্যম)
লেখক : সিনিয়র ফেলো, এসআইপিজি, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি



