চরাঞ্চল : কৃষি অর্থনীতির অবারিত সম্ভাবনা

এস এম মুকুল

দেশে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে অপারসম্ভাবনা জাগিয়েছে চরাঞ্চলের কৃষি। কুমড়া, মরিচ, বাদাম, স্কোয়াশসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষে সবচেয়ে উপযুক্ত ভূমি হলো চরাঞ্চলের জমি। অর্গানিক সবজির অন্যতম ভাণ্ডার হিসেবেও সম্ভাবনা জাগিয়েছে চরাঞ্চল। এখানকার জমিগুলোয় এখন ভেষজ চাষও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ ছাড়া পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন জাতের ডাল ও বাড়ির আঙিনায় সবজি আবাদের মাধ্যমে দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণে চরাঞ্চল ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। গবাদিপশু পালন এবং দুধের চাহিদা পূরণেও এখন সবচেয়ে সম্ভাবনাময় জায়গাগুলোর অন্যতম চরাঞ্চল।

সরকারি-বেসরকারি সহায়তায় ও কৃষকদের উদ্যোগে চরের কৃষির অগ্রযাত্রার নতুন নতুন সংবাদ এখন দারুণ আশার সঞ্চার করছে। পদ্মা, যমুনা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী উত্তরজনপদের ৮০০ চরে এখন সবুজের সমারোহ। যেদিকে চোখ যায়, সেই দিকেই সবুজ আর সবুজ। ধু-ধু বালুচরে সবুজ ফসল ফলিয়ে জীবিকার সন্ধান পেয়েছেন চরাঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষও। অন্যান্য ফসল ফলানো খুব কঠিন হলেও ব্যাপকহারে আলু, বাদাম ও মিষ্টিকুমড়া চাষে কৃষিতে ঘটে গেছে নীবর বিপ্লব।

চরাঞ্চলে মানুষের জীবন-জীবিকার প্রধান অবলম্বন কৃষি। বেশির ভাগ চরে ধান, ভুট্টা, পাট, গম, বাদাম, পেঁয়াজ, মরিচ, কুমড়া, টমেটোসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি উৎপাদিত হয়। চরাঞ্চলে গো-পালনে খরচ অন্যান্য এলাকার তুলনায় অনেক কম বলে এখানে গরু পালনের হার বেশি। চর এলাকার শস্যবিন্যাস মূলত মাটির গঠন, বৃষ্টিপাত, সেচব্যবস্থা, পরিবহন ও বাজারব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল। চরে ফসল উৎপাদনে যেসব ঝুঁকি রয়েছে, তা মোকাবেলা করতে শস্যের বহুমুখীকরণ খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই চরে যে সীমিত সম্পদ রয়েছে তার সুষ্ঠু ব্যবহার জরুরি। চরের প্রধান প্রধান শস্যবিন্যাস হচ্ছে ভুট্টা-পাট-রোপা আমন, মরিচ-পাট-পতিত, সরিষা-বোরো, বোরো-পতিত-রোপা আমন, বাদাম-পতিত, গম-পাট-রোপা আমন, আলু-বাদাম-রোপা আমন ইত্যাদি। দেশের বিভিন্ন চরে পরিবেশ সম্মতভাবে সবজি চাষ বর্তমানে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাণিজ্যিকভিত্তিতে চরের জমিতে সবজি চাষ করে কৃষকদের অভাব দূর হচ্ছে। প্রতি বিঘা জমিতে বিভিন্ন সবজি উৎপাদন করে বছরে ২৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা, ক্ষেত্রবিশেষে আরো বেশি লাভ হচ্ছে। সবজি উৎপাদন চরের কৃষকদের মধ্যে নতুন এক উদ্দীপনা তৈরি করেছে। কৃষকরা সবজি বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে আগের চেয়ে অনেক বেশি লাভবান হচ্ছেন।

সিরাজগঞ্জ ও পাবনার সব চর এখন গরু পালনে আদর্শ জায়গায় পরিণত হয়েছে। কুড়িগ্রামে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর অববাহিকার চার শতাধিক চরে বাদাম চাষ হচ্ছে।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলগুলোয় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে চিনাবাদামের চাষ হয়। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর ও কালিহাতী উপজেলায় যমুনায় গড়ে ওঠা বালুচরে চীনাবাদাম চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন চাষি। এ চরের প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হচ্ছে। বাদাম ছাড়াও চরের এসব জমিতে অন্যান্য ফসল আবাদের উপায় খুঁজতে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গবেষণা চালু রয়েছে। রংপুর ও কুড়িগ্রামের তিস্তাপাড়ে মিষ্টি কুমড়া আবাদের উপায় বের হয়েছে। এ ছাড়া পদ্মা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় গড়ে ওঠা ছোট-বড় বিভিন্ন চরে এখন বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আকারে গরু, ছাগল, ভেড়া ও হাঁস-মুরগির অসংখ্য খামার গড়ে উঠেছে। এসব কার্যক্রম থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষ। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ছাড়াও দেশের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান চরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করছে। পলি দিয়ে গঠিত চরাঞ্চল আবাদের জন্য খুব উপযোগী ভূমি। এ ছাড়া সমতল ভূমি পলি মাটির ফলে পুরো হরিরামপুর উপজেলার চরাঞ্চল কৃষির এক অপার সম্ভাবনার ক্ষেত্র। এখানে এক দিকে ফসলে নিবিড়তা যেমন বেশি, তেমনি শস্যের বৈচিত্র্য রয়েছে সমানভাবে।

২০২৩ সালের জুন থেকে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে প্রায় ২০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে ‘বাংলাদেশের চর এলাকায় আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি সম্প্রসারণ’ প্রকল্প। এতে ৩৫ জেলার ১২১টি উপজেলায় চিহ্নিত তিন হাজার ৮৪৬টি চরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে এক হাজার ৪২৭টিকে চাষের উপযোগী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সব চরে কৃষিকাজ সম্ভব হবে বলে আশাবাদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।

এক সময় চর নিয়ে দখলবাজদের ক্ষমতার লড়াইয়ের অন্ধকার পথ পাড়ি দিয়ে চরাঞ্চলে এখন দেখা দিয়েছে আশার আলো। চরাঞ্চলের উৎপাদিত সবজি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে পরীক্ষামূলক আবাদ করা কয়েকটি সবজির ফলনে আশাতীত সাফল্য পাওয়ায় দেশের চরাঞ্চল নিয়ে কৃষি অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে।

চর সাধারণত দুই ধরনের- দ্বীপচর এবং সংযোগ। দ্বীপচর হলো নদীর মধ্যে শুধু বালুরাশির দ্বীপ, যার চারপাশে সারা বছর পানি থাকে। আর সংযোগ চর হলো সাধারণ প্রবাহে নদীতীরের সাথে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ থাকে। এক হাজার ৭২২ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত নদীর হাইড্রো-মরফোলজিক্যাল গতিশীলতার উপজাত হিসেবে অথবা নদীতীরের ভূমি ক্ষয় ও ভূমি তৈরির ফলে চর সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের সাতটি অঞ্চলের ৩১টি জেলার ১১০টি উপজেলায় ১৬ শতাংশের ওপর এবং ১০৬টি উপজেলায় ৮-১৫ শতাংশে আংশিক চরাঞ্চল। জানা গেছে, বাংলাদেশের মোট ভূমির প্রায় ১৬ শতাংশ চরভূমি। এসব চরভূমিতে প্রায় কোটি মানুষের বসবাস। বাংলাদেশ শত শত নদী অববাহিকার দেশ। জোয়ার-ভাটার স্বাভাবিক নিয়মে এসব নদীতে অসংখ্য চর জেগে উঠে। কারণ বাংলাদেশের নদীগুলো উত্তরের হিমালয় থেকে দক্ষিণের বঙ্গোপসাগর অবধি প্রতি বছর কোটি কোটি টন বালি ও কাদা বয়ে নিয়ে আসে। প্রাকৃতিকভাবে প্রবাহিত এসব বালি-কাদায় উঁচু হয়ে ওঠে নদ-নদীর তলদেশ। আর মোহনায় জেগে ওঠে নানা আকৃতির চর।

গত কয়েক দশকে নদীভাঙন ও অন্যান্য কারণে সর্বস্ব হারানো মানুষরা অবস্থান নিয়েছেন চরাঞ্চলে। শুধু বেঁচে থাকার তাগিদে নির্জন ধু-ধু বালুচরে দলে দলে গড়ে তুলেছেন মাথাগুঁজার ঠাঁই। সেখানে অনেক প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যদিয়ে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয় তাদের। নেই রাস্তাঘাট, সুপেয় পানি ও সেচের পর্যাপ্ত সুবিধা। পরিবার পরিজন নিয়ে টিকে থাকার সংগ্রামে বসবাসের সুযোগ পেলেও সেখানে তাদের জীবন যেন দুর্বিষহ সংগ্রামের। এক সময় চরের কৃষকেরা মনে করলেন, চরে যদি কাশফুল জন্মে তাহলে শস্যও ফলানো যাবে। শুরু হলো সবজি ও ফসল ফলানোর পরীক্ষা-নীরিক্ষা। পরীক্ষা সফল প্রমাণিত হওয়ার পর প্রথম চরে বোনা হলো সরিষা, পরে ভুট্টা, ধনিয়া ও মরিচসহ বিভিন্ন সবজি শস্য ও মসলা। এভাবে কৃষকের প্রচেষ্টায় দেশের একেকটি চর এখন যেন একেকটি শস্যভাণ্ডার।

বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার দেশের চরগুলোতে কৃষির উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ক্ষুদ্র ঋণ, কৃষিঋণ, বীজ ও সার সহায়তা পাচ্ছেন চরের কৃষকরা। এভাবে গত প্রায় দুই দশকে সেসব চরাঞ্চলবাসী নিজেদের প্রয়োজনে চরের দৃশ্যপট এখন অনেকটা পাল্টে দিয়েছেন। অথচ একদশক আগেও চরের মানুষ বলতে অতি দরিদ্রদের বোঝাত। কারণ, তখন তারা ছিলেন ত্রাণনির্ভর। এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গেছে। চরাঞ্চলের জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে বিভিন্ন জাতের ফসল। জেগে উঠা পলিমাটি, বালুচর কিংবা চরের অনাবাদি ভূমি এখন সুষ্ঠুভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে কৃষির অবারিত ক্ষেত্র হিসেবে। সারা বছর কোনো না কোনো ফসল ও সবজির আবাদ হচ্ছে। এখন চরের মানুষদের জীবনধারায় এসেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। জমি তৈরি, বীজ বপন, পরিচর্যা কিংবা ফসল তোলার ব্যতিব্যস্ততা চরাঞ্চলের নৈমিত্তিক চিত্র। এর ফলে বেশির ভাগ চরে দেখা দিয়েছে কর্মচাঞ্চল্য। চরাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে শাক সবজির চাষ করে বহু পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে। শুধু ধান চাষের উপর নির্ভরশীল কৃষিতে শাক সবজির আবাদ এনে দিয়েছে নতুন গতি। কৃষকদের জীবন জীবিকার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে কৃষির এ সফল বিবর্তন।

দেশের প্রায় সব চরাঞ্চলে সবজি ও ফসলের উৎপাদন বেশ ভালো। কিছু ফসলের প্রচুর ফলন এবং প্রচলিত ফসলের বাইরে নতুন ধরনের সবজি যেমন- ক্যাপসিকাম, স্কোয়াশ চাষে দারুণ সাফল্যে নতুন আশায় দিনবদলের স্বপ্ন দেখছেন চরাঞ্চলের জনগণ। ফলে নদী অববাহিকায় জেগে ওঠা চর এখন কৃষি অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনার ক্ষেত্র হিসেবে আবিভর্ূত হয়েছে। ফলে চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষের জীবনমান ক্রমে উন্নতি হচ্ছে।

এখন চরে তেমন অভাবী মানুষ নেই। চাষাবাদ করে চরের বাসিন্দারা স্বাবলম্বী হচ্ছেন। চরবাসীর এ উন্নয়নে কৃষিসংশ্লিষ্ট কর্মসূচি বিশেষ ভূমিকা রাখছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে দেশের সব চরাঞ্চলের উপযোগী ফসল চাষাবাদে সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য-কর্মসংস্থান ও অবকাঠামো উন্নয়নের প্রকল্প।

চরাঞ্চলের কৃষকদের মতে, চরাঞ্চলের জমি অসমতল ও বালির পরিমাণ বেশি হওয়ায় ইরি-বোরোর পরিবর্তে ছয়-সাত ধরনের ফসল চাষ করা যায়। চরের জমিতে আখ চাষের পর লাল শাক, পাট, কলমি শাক চাষ করা যায়। এসব সবজি রোপণের ১৫ দিন পর বাদাম, মরিচ, ঢেঁড়স ও পুঁইশাকের বীজ বপন করা যায়। এক মাসের মধ্যে সবজি বাজারে বিক্রি করা সম্ভব হয়। সব মিলিয়ে চরাঞ্চলে বিশেষত সবজি উৎপাদনে বিরাট সুযোগ রয়েছে।

চরের কৃষিতে অধিক হারে বিনিয়োগ করা হলে দেশের খাদ্য চাহিদার বিরাট অংশ পূরণ করা সম্ভব। পরিকল্পনা মাফিক অগ্রসর হলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির নতুন ক্ষেত্র হিসেবে বিরাট ভূমিকা রাখবে চরাঞ্চল। তবে বাস্তবতা হলো- চরাঞ্চলের জমি এবং কৃষকসমাজ অনেক ক্ষেত্রে অবহেলার শিকার। আধুনিক চাষবাস সুবিধা না থাকায় চরাঞ্চলে কৃষি উৎপাদন আশানুরূপ নয়। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর তাই চরের কৃষিজমি এবং কৃষকের প্রতি আরো নজর দেয়া এবং পরিকল্পনা নেয়া প্রয়োজন। কৃষিতে চরের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে আরো যা যা করণীয় হতে পারে-

১. লবণাক্ত এলাকার চরগুলোতে পাটসহ লবণাক্ততাসহিষ্ণু ফসল উৎপাদনের চিন্তাভাবনা করা দরকার। ২. চরাঞ্চলে ছাগল, মহিষ, ভেড়া ও উন্নত জাতের গরু পালনের উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। ৩.এনজিওর মাধ্যমে কুটির শিল্পভিত্তিক উৎপাদনশীল কাজের ব্যবস্থা করা। ৪. একটি চর একটি কো-অপারেটিভ সোসাইটি গঠন করা। ৫. দেশের চরাঞ্চলে কৃষকদের ভূমির মালিকানা লিজভিত্তিক করা। ৬. চরাঞ্চলের কৃষকদের জন্য আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ দেয়া। ৭. চরাঞ্চলের গ্রামে যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি করা। ৮. কৃষককে উদ্বুদ্ধ করতে চরাঞ্চলে কৃষি প্রদর্শনী প্লট করা যেতে পারে। যাতে কৃষকরা চরবান্ধব ফসল চাষবাস করতে আগ্রহী হন। ৯. কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের চরের কৃষকদের সাথে সভা-সমাবেশ বাড়াতে হবে। ১০. চরাঞ্চলে আরেকটি সম্ভাবনার জায়গা হলো- পশুপালন।

কিন্তু বাস্তবতা হালো- দেশের সব চরে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা এবং উৎপাদিত পণ্যের বিপণন প্রক্রিয়ায় এখনো নানাবিধ সমস্যা বিদ্যমান। ফলে চরে যে বিস্তীর্ণ আবাদি জমি রয়েছে সেখানে সেই মাত্রায় অধিক ফসল ফলানো সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, চরাঞ্চলে নতুন নতুন কৃষিপ্রযুক্তির অভাব, উন্নতমানের বীজের সঙ্কট, উন্নত জাতের ফসল চাষের প্রচলন না থাকা, সেচ সঙ্কট এবং কৃষকদের দ্রুত ঋণ সহায়তা পাওয়ার ব্যবস্থা না থাকা। বিদ্যমান এসব সমস্যায় চরের কৃষি অর্থনীতিতে কাক্সিক্ষত গতি আসছে না।

লেখক : সাংবাদিক