একটি সফল গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। নির্বাচনের রোডম্যাপ, দিনক্ষণ, সংস্কার, স্থানীয় সরকার নির্বাচন ইত্যাদি নিয়ে তর্ক লেগেই আছে। এই বিতর্কে নতুন করে যুক্ত হয়েছে নির্বাচন পদ্ধতি। আসলে গত তিনটি নির্বাচনে ইতিহাসের ব্যাপক কলঙ্কময় ঘটনাগুলো ঘটায় মানুষের মনে নির্বাচনের ব্যাপারে অনাগ্রহ, অনাস্থা, বিতৃষ্ণা ইত্যাদি বাসা বেঁধেছে। ফলে বিগত ৫৩ বছরের একই পদ্ধতির নির্বাচনের বিষয়ে নাগরিকরা সন্দিহান হয়ে পড়েছেন। যে পদ্ধতির নির্বাচন হাসিনাকে দানবে পরিণত করেছিল, ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র কায়েমের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল সেই একই নির্বাচন কিভাবে নির্বাসনে যাওয়া গণতন্ত্রকে পুনর্বাসিত করবে? কাজেই আমাদের আসন্ন নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও যুক্তিতর্ক হওয়া জরুরি।
বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে দুই ধরনের নির্বাচন পদ্ধতি চালু রয়েছে। সেগুলো হলো- সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্ধতি বা মেজরিটি সিস্টেম (এমএস) নির্বাচন। এটিকে ‘এফপিটিপি’ বা ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট পদ্ধতি বলা হয়। আবার এটিকে উইনারস টেক অল (ডব্লিউটিএ) পদ্ধতিও বলা হয়। দ্বিতীয় প্রকার নির্বাচন পদ্ধতি হলো- সংখ্যানুপাতিক বা প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতির নির্বাচন। আমাদের দেশে বর্তমানে মেজরিটি সিস্টেম বা ‘এমএস’ পদ্ধতির নির্বাচন অনুসরণ করা হয়। স্বাধীনতা পর থেকে আমরা এ পদ্ধতিতেই নির্বাচন করে আসছি। প্রতিটি নির্বাচনেই পরাজিত দল সহজভাবে পরাজয় মেনে নিতে পারেনি। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভালো নির্বাচন হয়েছিল বলে ধরা হয়- ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনকে। সেই নির্বাচনগুলোর প্রতিটিতেই পরাজিত দল হয় সূক্ষ্ম অথবা স্থূল কারচুপির অভিযোগ উত্থাপন করেছিল। আর ২০০৮ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এক কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচার ক্ষমতায় এসে পরবর্তী নির্বাচনগুলোকে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় পরিণত করেছিল। গত ১৬ বছর হাসিনা দলীয় এমপিদেরকে যার যার নির্বাচনী এলাকার জমিদারি ইজারা দিয়েছিলেন। সেসব জমিদার প্রাইমারি স্কুলের দফতরি থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বাণিজ্য করেছেন। অন্যান্য স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি কাজের আর্থিক সংশ্লিষ্টতার কথা নাই বা উল্লেখ করলাম। আসলে এ চলমান পদ্ধতির নির্বাচনের (উইনারস টেক অল) নাম বলে দিচ্ছে এই পদ্ধতির নির্বাচনের চরিত্র; অর্থাৎ যে জিতে সেসব নিয়ে নেয়। গাছেরটাও, তলারটাও!
এমন একটি বাস্তবতায় ‘পিআর’ পদ্ধতির নির্বাচনের দাবি সামনে এসেছে। পিআর পদ্ধতি নতুন কোনো ধারণা নয়। বর্তমানে বিশ্বের ১৭০টি দেশের মধ্যে শতাধিক দেশে কোনো না কোনোভাবে এই পিআর পদ্ধতির চর্চা হচ্ছে। আর সরাসরি চালু রয়েছে ৯১টি গণতান্ত্রিক দেশে। ১৮৫৫ সালে ডেনমার্কে এ পদ্ধতি প্রথম চালু হয়। জানা যায়, ব্যারিস্টার থোমাস হ্যার ১৮৫৯ সালে ‘The Election of Representative : Parliamentary and Municipal’ নামে একটি বই লিখেছিলেন। তাকেই আধুনিক পিআর নির্বাচন পদ্ধতির জনক বলা হয়। এরপর সুইজারল্যান্ডে ১৮৯০-এর দিকে এবং বেলজিয়ামে ১৮৯৯ সালে পিআর পদ্ধতি চালু হয়। বর্তমানে পশ্চিম ইউরোপের ২৮টি দেশের মধ্যে ২১টিতেই এ পদ্ধতি চালু রয়েছে।
তবে ‘পিআর’ পদ্ধতি কোনো রকেট সায়েন্স নয়। ব্যক্তিপর্যায়ে ভোটারদের এটিকে নতুন করে বোঝার কিছু নেই। আগের মতো ব্যালট পেপারেই সিল মারতে হবে। ভোটাররা যেভাবে ভোট দেবেন হুবহু সেভাবেই ফলাফল হবে এবং সবাই তা গ্রহণ করতে পারবেন। শুধু আনুপাতিক হিসাবটা হবে জাতীয় পর্যায়ে। যেখানে নির্বাচন কমিশন, দলীয় নেতা, ওয়াচডগ পর্যবেক্ষকরা ভোট গণনা করে আনুপাতিক ফলাফলটি বুঝে নেবেন।
পিআর পদ্ধতি তিনটি প্রক্রিয়ায় হতে পারে- ১. পার্টি লিস্ট পদ্ধতি : পিআর পদ্ধতি অনুসরণকারীদের ৮০ শতাংশ দেশই এ পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। এ পদ্ধতিতে ভোটাররা কোনো প্রার্থীকে নয়; বরং পার্টি বা মার্কায় ভোট দেন। মোট প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাত বা কোন দল কত শতাংশ ভোট পেল তা হিসাব করা হয়। সেই প্রাপ্ত ভোটের শতাংশ হারে সংশ্লিষ্ট দলগুলো থেকে সরবরাহকৃত তালিকানুযায়ী প্রার্থীদেরকে অগ্রগণ্যতার ক্রমানুসারে এমপি ঘোষণা করা হয়। এমপি ঘোষণা দেয়ার জন্য পার্টি কর্তৃক নির্বাচন কমিশনে সরবরাহকৃত এই তালিকা প্রকাশিত বা গোপন দুই রকমেরই হতে পারে। তবে প্রকাশিত তালিকা ব্যবহৃত হলে ভোটাররা ব্যালেট পেপারে প্রার্থীর তালিকা থেকেই পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে থাকেন। প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট সংশ্লিষ্ট দলের মোট প্রাপ্ত ভোটে যোগ হয় এবং তার সংখ্যানুপাত করা হয়। এখানে প্রাপ্ত ভোটে অধিকাংশ বিজয়ী প্রার্থীকেই এমপি ঘোষণা করা হয়। পরে দলের সব প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট দলের মোট প্রাপ্ত ভোট হিসাবে যোগ করে সংখ্যানুপাত করা হয়। বিভিন্ন দলের সংখ্যানুপাতিক হারে প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে বাকি আসনগুলোতে সংশ্লিষ্ট দল থেকে এমপি নির্বাচিত হবেন। এ ক্ষেত্রে সরবরাহকৃত তালিকা থেকে অগ্রগণ্যতার ক্রমানুসারে প্রার্থীদেরকে এমপি ঘোষণা করা হয়।
২. মিক্সড মেম্বার প্রপোরশন পদ্ধতি (এমএমপি) : এ পদ্ধতিই হলো সর্বাধুনিক পিআর নির্বাচন পদ্ধতি। ১৯৪৯ সালে এ পদ্ধতি শুরু হলেও নিউজিল্যান্ডে ১৯৯৬ সাল থেকে এটি একটি আদর্শ নির্বাচন পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ পদ্ধতিতে একজন ভোটার দু’টি ব্যালট পেপারে ভোট দেবেন। একটি দলের জন্য এবং অন্যটি পছন্দের প্রার্থীর জন্য। এখানে মোট সিটের অর্ধেক সরাসরি বিজয়ী প্রার্থীদেরকে এমপি ঘোষণা করা হয় এবং বাকি অর্ধেক দলের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে সদস্য নির্বাচিত হবেন।
৩. সিঙ্গেল ট্রান্সফারেবল ভোট বা (এসটিভি) : এ পদ্ধতির ভোটের হিসাব একটু জটিল বিধায় এটি কম অনুসরণ করা হয়ে থাকে।
তবে উপরের তিনটির যেকোনো প্রক্রিয়ায়ই হোক না কেন, পিআর পদ্ধতির সুবিধাগুলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকেই সুসংহত করে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এটি মূলত পরিপূর্ণ প্রতিনিধিত্বকে নিশ্চিত করে, যা একটি পুরোপুরি অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি। গণতন্ত্রের লক্ষ্যই হলো সংখ্যাধিক্যের নয়; বরং সবার শাসন। এই সবার শাসন পিআরের মাধ্যমেই সম্ভব; যেখানে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীও সংসদে প্রতিনিধিত্ব পায়। এখানে প্রতিটি ভোটেরই মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে, ফলে কোনো ভোটই নষ্ট হয় না। এতে ভোটাররা উৎসাহিত হয় এবং অংশগ্রহণ বহুগুণ বৃদ্ধি পেতে পারে। গণতন্ত্রকে আরো সুন্দর ও কার্যকরী করার মাধ্যেমে একটি প্রতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। কারণ এখানে কোনো এক দলের একক বিজয়ের মাধ্যমে সরকার গঠিত হয় না; বরং অন্যান্য দলের সাথে নেগোসিয়েশন, আলোচনা, বোঝাপড়া ও আপসরফা করে জোট সরকার গঠনের প্রয়োজন পড়ে। ফলে কোনো ছোট দলেরই অপাঙ্ক্তেয় হয়ে পড়ার সুযোগ থাকে না। সব জনগোষ্ঠীরই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সাধ্যমতো ভূমিকা রাখার সুযোগ সৃষ্টি হয়। সব দলই তাদের যোগ্যতম, সাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্য ও সমাজে খ্যাতি অর্জনকারী শিক্ষিত প্রার্থীদের তালিকা দিয়ে থাকে নির্বাচনের জন্য। দলগুলো এক ধরনের অভ্যন্তরীণ ও সামাজিক চাপ অনুভব করে এমন লোকদের তালিকা তৈরি করে যারা সংসদে বলিষ্ঠ অবদান রাখতে সক্ষমতা রাখেন। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে কোনো প্রার্থীই তার অনুসারীদের কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে দেবেন না নিজেদের সুখ্যাতি ধরে রাখার তাগিদে। কোনো প্রার্থীই মরিয়া হয়ে উঠবেন না এমপি হওয়ার জন্য। এতে নির্বাচনকেন্দ্রিক সন্ত্রাস একেবারেই কমে আসতে বাধ্য। অন্য দিকে মনোনয়নপত্র কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হওয়ার কারণে তা হবে খুবই সহজ একটি প্রক্রিয়া। ফলে নমিনেশনপত্র জমা দেয়ার বিপুল শোডাউন, দ্বন্দ্ব, মারামারি- সবই বন্ধ হয়ে যাবে। আর নির্বাচনের পর আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির অংশ হিসেবে পরাজিত দলের সূক্ষ্ম বা স্থূল কারচুপির অভিযোগ থাকবে না। সংসদ বয়কটের বা অধিবেশনে যোগদানের কোরাম সঙ্কট থাকবে না। সংসদ হয়ে উঠবে প্রাণবন্ত। কারণ সেখানে ছোট-বড় সব দলের, সব গোষ্ঠী বা গোত্রের প্রতিনিধি অংশ নেবেন ও অবদান রাখার সুযোগ পাবেন। এভাবে সংসদ সব দল, মত ও গোষ্ঠী নিয়ে বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠতে পারে। সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে বিনা ভোটে নির্বাচনের সুযোগ থাকবে না। ২০১৪ সালে এ দেশে একটি ভোট না পেয়েও আওয়ামী সরকারি দলের ১৫৩ জন প্রার্থী এমপি নির্বাচিত হয়েই ফ্যাসিজম কায়েমের সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল। এ পদ্ধতিতে নির্বাচিত কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে নিজেদের মতো করে সংবিধান সংশোধন করে জাতীয় সংবিধানকে ফ্যাসিবাদ কায়েমের দলীয় ম্যান্ডেটে পরিণত করার সুযোগ পাবে না।
তবে পিআর পদ্ধতিতে সুবিধাগুলোর পাশাপাশি অসুবিধাও রয়েছে। সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো- এটি অনেক সময় ঝুলন্ত পার্লামেন্ট সৃষ্টি করতে পারে। ফলে সরকার দুর্বল হয়ে উঠতে পারে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতার পাশাপাশি রাষ্ট্রযন্ত্রের গতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু এই দুর্বলতা অকাট্য নয়। দলগুলোর পারস্পরিক বোঝাপড়া, আপসরফা ও সমঝোতার মাধ্যমে গণতন্ত্র চর্চা করতে পারলে এই দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তবে সরকার সাময়িকভাবে দুর্বলতার জটিলতায় পড়লেও দেশের সব দল, গোত্র, গোষ্ঠীর প্রতিনিধি সংসদে থাকায় সামগ্রিকভাবে জাতীয় ঐক্য শক্তিশালী থাকবে। এটি ছাড়াও আরো কিছু কিছু ছোটখাটো দুর্বলতা দেখা দিতে পারে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে। তবে সেগুলো ততটা জটিল নয়।
আমাদের দেশে বর্তমানে প্রচলিত ‘মেজরিটি সিস্টেম’ নির্বাচন পদ্ধতিরও অনেক সুবিধা রয়েছে। এ পদ্ধতিতে নির্বাচিত নেতৃত্ব বা সংসদ খুব গতিশীল ও সুস্পষ্ট জবাবদিহিতার সংসদ হতে পারে। শক্ত স্থানীয় নেতৃত্ব গড়ে ওঠার সাথে সাথে সরকারও খুব স্থিতিশীল হতে পারে। এই নির্বাচন পদ্ধতিটি খুব সরল প্রকৃতির এবং সংসদের দক্ষতা আনতে সহায়ক হতে পারে।
আমরা গত ৫৩ বছর ধরে আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বর্তমান প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতির অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি- এ পদ্ধতির সুবিধাগুলো কাজে লাগানোর চেয়ে অসুবিধাগুলোর অপব্যবহার বেশি হয়েছে। যার কারণেই প্রথম আওয়ামী লীগ সরকার একদলীয় শাসনের বাকশালী ব্যবস্থা কায়েম করতে সক্ষম হয়েছিল। স্বৈরাচার এরশাদ বন্দুকের মুখে ক্ষমতা দখল করে ৯ বছরের স্বৈরতন্ত্র কায়েমের সুযোগ পেয়েছিল। সবশেষে হাসিনা সুদীর্ঘ ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদ চর্চা করতে সুযোগ পেয়েছিল। সেই বাকশাল থেকে স্বৈরতন্ত্র হয়ে ফ্যাসিবাদ এবং সর্বোপরি ভারতের আধিপত্যবাদ- এগুলোর সবই সম্ভব হয়েছিল বর্তমান পদ্ধতির নির্বাচনের মাধ্যমে। পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে হয়তো বা অস্থিতিশীল সরকার গঠিত হতে পারে। কিন্তু গণতান্ত্রিক চর্চার পরিক্রমায় ঝুলন্ত সংসদীয় অবস্থার মধ্য দিয়েই শক্তিশালী সরকার কাঠামোর উন্মেষ ঘটার সব সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হয়ে থাকে। স্বৈরতন্ত্র, ফ্যাসিবাদ ও একনায়কী কর্তৃত্ববাদকে চিরতরে বিদায় করার পথও থাকে খোলা।
আমাদের নির্বাচনের এখনো ছয় মাসের বেশি সময় রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে আমাদের স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে বিস্তর আলাপ-আলোচনা করা দরকার। একটি সর্বজনস্বীকৃত বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে আমাদের দেশে পিআর পদ্ধতির সম্ভাব্যতা এবং কোন পদ্ধতি সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ এবং দেশ ও জাতির জন্য উত্তম হবে, সেটি নিরূপণ করা দরকার। আমাদের সবাইকে দলীয় বা গোষ্ঠীগত সঙ্কীর্ণতার ঊর্ধ্বে ওঠে দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণময় পদ্ধতিতেই নির্বাচন করতে হবে; অন্যথায় আবার সেই ফ্যাসিবাদ, কর্তৃত্ববাদ, গুম, খুন, আয়নাঘর, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের জগদ্দল পাথর চেপে বসতে পারে জাতির বুকে।
লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক
[email protected]