নির্বাচনব্যবস্থার প্রথম ও প্রধান শর্ত হলো এর গোপনীয়তা, ন্যায্যতা, নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করা। যেকোনো নির্বাচনব্যবস্থায় তা হোক প্রাতিষ্ঠানিক কিংবা রাজনৈতিক। এসব শর্ত পূরণ করতে না পারলে সে নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ, অবিশ্বাস ও তিক্ততা সৃষ্টি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। গত কয়েক দিন আগে হয়ে যাওয়া ডাকসু নির্বাচন নিয়ে এখন একটু কানাঘুষা বা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসু নির্বাচনের ব্যালট পেপার নীলক্ষেতে অরক্ষিত অবস্থায় ছাপা হয়েছে- ফল ঘোষণার পর থেকে এমন অভিযোগ করে আসছিলেন প্রার্থীদের কেউ কেউ। কেউ কেউ কারচুপি ও অনিয়মের কথা বলেছেন। এ নিয়ে একদল শিক্ষার্থী ভিসির বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে পরাজিত প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেন। তারা অভিযোগ করেন, নীলক্ষেতের গাউছুল আযম মার্কেটের যে ছাপাখানায় ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছিল; সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো নজরদারি ছিল না। এ বিষয়ে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদনে বলা হয়, নীলক্ষেতের গাউছুল আযম মার্কেটের জালাল প্রিন্টিং প্রেসে ডাকসু নির্বাচনের ৯৬ হাজার ব্যালট ছাপানো হয়েছে। একই মার্কেটের মক্কা পেপার কাটিং হাউজ নামের আরেকটি দোকানে নির্ধারিত মাপে কাটা হয়েছে ৮৮ হাজার ব্যালট। প্রতিবেদনে আট হাজার ব্যালটের হিসাবের গরমিলের কথা উল্লেখ করা হয়। জালাল প্রিন্টিং প্রেসের মালিক ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ পেয়েছিলেন বলে স্বীকার করেন। ৯৬ হাজারের মতো ব্যালট ছেপেছেন। তিন দিনে কাজ শেষ করেছেন। পরবর্তীকালে প্রেসের মালিক কিছু না বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দোহাই দেন।
৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু ও হল সংসদের নির্বাচন হয়। ভোটার ছিলেন ৩৯ হাজার ৯৭৪ জন। নির্বাচনে ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে জয়লাভ করে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’। প্রচারের শুরু থেকে ভোটগ্রহণ ও ফল ঘোষণা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছিল। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর প্রার্থীরা কিছু অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। ব্যালট পেপারের বিষয়টি সামনে আসায় বিতর্কটি সামনে এসেছে। ডাকসু নির্বাচনের দুই দিন পর ১১ সেপ্টেম্বর ৯ জন পোলিং এজেন্ট প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। সেখানে ভোটকেন্দ্রে আগে থেকে পূরণ করা ব্যালট পেপার ও জাল ভোটারের উপস্থিতি, পোলিং এজেন্টদের দায়িত্ব পালনে বাধাদানসহ কিছু অভিযোগ করা হয়। এ ছাড়া ডাকসুর ভোট ম্যানুয়ালি অর্থাৎ- হাতে গণনা করার আবেদন করেন একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। পরাজিত প্রার্থীরা মনে করেন, ভোট গণনার মতো স্পর্শকাতর প্রক্রিয়াটির ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠলে সার্বিক নির্বাচন ঘিরে প্রশাসনের পেশাদারিত্বের ব্যাপারে সন্দেহ তৈরির সুযোগ থাকে।
ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান মনে করেন, নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে যদি প্রশ্ন থাকে সে ক্ষেত্রে তা ইতিহাসে বাজে নজির হয়ে থাকবে। তিনি প্রশ্ন করেন, গাউছুল আযম সুপার মার্কেটে যেসব ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে, সেগুলো যে নির্দিষ্ট প্যানেলের হাতে তুলে দেয়া হয়নি, তার প্রমাণ কী। একই প্রশ্নে অভিযোগ তোলেন আর একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তিনি অভিযোগ করেন, গাউছুল আযম সুপার মার্কেটে সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় ডাকসু নির্বাচনের ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে। এই ব্যালটে কোনো সিরিয়াল নম্বর ছিল না। প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছেও এ বিষয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ করেন।
২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করে- ‘প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রক্ষা করে ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ করা হয়েছে, তাতে এটি অরক্ষিত থাকার সুযোগ নেই। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে-পরে বা গণনার সময়ও সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট, পর্যবেক্ষক, সাংবাদিকসহ কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ উত্থাপন করেননি। নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর ব্যালট পেপারের মুদ্রণ নিয়ে অভিযোগের কোনো ভিত্তি আছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করে না।’ কিন্তু ব্যালট পেপার বিতর্ক নিরসন না হওয়ায় ২৫ সেপ্টেম্বর আরেক বিজ্ঞপ্তিতে ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন অতীব গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ ও তদন্তের জন্য বিষয়টি গ্রহণ করেছে। শিগগিরই একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তারিত উত্তর দেয়া হবে।’ স্মরণযোগ্য যে, ইতোমধ্যে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বাধীন ডাকসুর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তারা কার্যক্রমও শুরু করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে সে বিষয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নবনির্বাচিত জিএস এস এম ফরহাদ বলেন, ‘নির্বাচনের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কোনো ত্রুটি ছিল কি না, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে প্রশ্নগুলো আসা উচিত। ভোটগ্রহণ ও গণনার সময়ে প্রত্যেক প্যানেলের প্রার্থীর এজেন্ট, সাংবাদিক, শিক্ষক সবাই ছিলেন। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের শিক্ষকরা ছিলেন পর্যবেক্ষক হিসেবে। আরো ছিলেন শিক্ষক নেটওয়ার্কের শিক্ষকরা। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনো ত্রুটি থাকলে তারা সেটি বলতে পারেন। যথাযথ প্রশ্ন থাকলে প্রশাসনের উচিত সেগুলোর জবাব দেয়া। কিন্তু টু দ্য পয়েন্ট বা সুনির্দিষ্টভাবে প্রশ্ন না করে বিভিন্নভাবে শিক্ষকদের মতামতকে সম্মান না করার প্রবণতা আমরা একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখব।’ বিতর্কের অবসানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি গত রোববার নিজে একটি সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ব্যালট পেপার ছাপানোর স্থান বা সংখ্যা সুষ্ঠু নির্বাচনকে কোনোভাবে প্রভাবিত করে না। নীলক্ষেত প্রেসে ব্যালট পেপার ছাপানোর বিষয়ে তিনি একটি ব্যাখ্যা দেন। তাতে বলেন, মূলত তথ্যের ঘাটতির কারণে অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে এবং এর কারণে তাদেরও প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, দ্রুত ফল প্রস্তুত করার জন্য তারা মূল কন্ট্রাক্টের অধীনে একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানকে সহযোগী ভেন্ডর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। ওই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বলেছে, ব্যস্ততার কারণে তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নীলক্ষেতে ব্যালট ছাপানোর বিষয়টি জানাতে ভুলে গিয়েছিলেন। ভিসি তার বক্তব্যে নিশ্চিত করেন, ‘ব্যালট প্রস্তুতকরণ প্রক্রিয়ায় ও আনা-নেয়ার চুক্তি মোতাবেক সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ব্যালটের ক্ষেত্রে কমপক্ষে পাঁচ স্তর, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছয় স্তরবিশিষ্ট সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল। এসব স্তর পেরোনোর পর ব্যালট পেপার ব্যবহারযোগ্য হয়েছে। কেউ ব্যালট পকেটে নিয়ে কেন্দ্রে যাবেন বা ব্যবহার করবেন- সেরকম কোনো সুযোগ ছিল না। সংবাদ সম্মেলনে আর এক প্রশ্নের জবাবে ভিসি বলেন, নীলক্ষেতে ব্যালট ছাপানো ও কাটার তথ্যটি ওই সময় ২৪ সেপ্টেম্বর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানায়নি। পরে তলব করে ব্যাখ্যা চাওয়ার পর সেটি তারা লিখিতভাবে স্বীকার করেছে, ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। ভিসি সংবাদ সম্মেলনে জানান, ডাকসু ও ১৮টি হল সংসদে নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের কাছে ৪৮টি অভিযোগ এসেছে। নির্বাচনে কারচুপি বা অন্য কোনো অনিয়ম তদন্তে সিসি টিভির ফুটেজ দেখার নিশ্চয়তাও দেন তিনি। তিনি আরো অবহিত করেন, স্বাক্ষরযুক্ত ভোটার তালিকা পুনঃনিরীক্ষণ করা হয়েছে। পুনঃনিরীক্ষা করে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, কাস্টিং ভোট ও স্বাক্ষরযুক্ত ভোটার তালিকায় কোনোরকম অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি।
দৃশ্যত এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন-সাদা দল। সংগঠনটি বলেছে, অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে নির্বাচনের ফল স্থগিত করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। সাদা দলের বিবৃতিতে বলা হয়, একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ডাকসু নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি ও অনিয়মের তথ্য প্রমাণ উঠে এসেছে, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যবাহী সুনামকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ করেছে।
সাদা দলের নেতারা দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয় বা বাইরে থেকে মনোনীত সদস্যদের নিয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুততম সময়ে এর প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে। তদন্তে কারচুপি ও জালিয়াতি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্য দিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসু নির্বাচনে ‘জালিয়াতি ও অনিয়ম’ নিয়ে জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের বিবৃতিকে ‘দ্বিচারিতা ও দ্বিমুখী আচরণ’ হিসেবে অভিহিত করেছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিঙ্ক-ইউটিএল। সংগঠনটি বলেছে, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত ছোটখাটো ত্রুটি ছাড়া নির্বাচনকে বা ভোটারকে প্রভাবিত করতে পারে- এমন কোনো ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিঙ্কের নজরে আসেনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইউটিএলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো: আতাউর রহমান বিশ্বাস বলেন, ‘গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করেছি যে, জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল ডাকসু নির্বাচন নিয়ে হতাশাজনক বিবৃতি দিয়েছে। নির্বাচন পরিচালনায় অধিকাংশ দায়িত্ব যখন সাদা দলের শিক্ষকদের হাতে ছিল, তখন নিজেদের বিবৃতিতে নির্বাচনে ‘জালিয়াতি ও অনিয়ম’ হয়েছে দাবি করা- এটি দ্বিচারিতা ও দ্বিমুখী আচরণের পর্যায়ে পড়ে। এতে করে বিবৃতি দানকারী শিক্ষকদের নৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।’ তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। অথচ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার দুই সপ্তাহ পর কিছু ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষকদের ফোরাম বা সংগঠন নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা শুরু করেছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর স্বাধীন রায়কে অসম্মান ও গণতান্ত্রিক অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটি সুপরিকল্পিত প্রয়াস।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরাজয় সহজে স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয়ার কোনো দৃষ্টান্ত নেই। রাজনীতিকরা সূক্ষ্ম অথবা স্থূল কারচুপি দ্বারা নির্বাচন চিহ্নিত করেন। রাজনীতিকদের সেই উত্তরাধিকার ছাত্রসমাজকেও প্রভাবিত করবে, অপ্রিয় সত্যকে গ্রহণ করতে তারা কৃপণ হবে, এটি নতুন প্রজন্মের চেতনাবিরোধী। বিশেষ করে ডাকসুর মতো মর্যাদাশীল প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন নিয়ে শিক্ষকদের এ দ্বিধাবিভক্তি যেকোনো সচেতন নাগরিক সাধারণকে বিচলিত করবে। শিক্ষকদের যার যার দলীয় অবস্থান থাকতে পারে; কিন্তু কোনো একটি সত্য ও সঠিক বিষয়ের ন্যায্যতা নিয়ে বিপরীতমুখী অবস্থান কাঙ্ক্ষিত নয়।
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বিশেষত পত্রপত্রিকায় যে প্রতিবেদন ও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত হয়েছে, তা নির্বাচনের সত্যতা ও ন্যায্যতা প্রমাণে যথেষ্ট। জয়-পরাজয় একটি সাধারণ বিষয়। একে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ বুদ্ধিমানের কাজ। ডাকসুর বিজয়টি প্রকৃতপক্ষে কোনো দল বা মতাদর্শের বিজয় নয়; বরং বাংলাদেশের জেন-জির ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ফসল। প্রতিটি পরাজয়ের মধ্যে বিজয়ের বীজ নিহিত থাকে। একটি পরাজয় আরেকটি বিজয়কে নিশ্চিত করবে না, এরকম কোনো চির সত্য নেই। গভীরভাবে নিরীক্ষণ করে নতুন প্রজন্ম, মন ও মানসকে বোঝার মধ্যে ভবিষ্যতের সার্থকতা নিহিত।
লেখক : অধ্যাপক (অব:), সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়