বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ভারতের বাংলা ভাষাভাষীদের পুশইন, ভারতীয় কতিপয় নেতার বাংলাদেশে হামলার হুমকি, মিডিয়ার অপপ্রচার এই অঞ্চলে জটিল এক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
প্রতিবেশী সীমান্তবর্তী রাষ্ট্র হিসেবে ভারত-বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান ও চীনের মধ্যে ব্যবসায়-বাণিজ্য, অর্থনীতি, আন্তঃনদী সংযোগ, কানেক্টিভিটি পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় বিদ্যমান সত্তে¡ও ভারতের চাণক্য কূটনীতির কারণে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সম্পর্ক আজ তলানিতে। এরই ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিক সময়ে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক ক্রমেই জটিল ও টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে প্রতিবেশী সম্পর্কে আরো অবনতি ঘটেছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) তাদের কোনো স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কোনো ধরনের পোশাকজাত পণ্য ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। একই সাথে ফল, ফলের-স্বাদযুক্ত পানীয় ও কার্বোনেটেড ড্রিংকস; বেকারি, চিপস, ¯ø্যাকস এবং কনফেকশনারিতে তৈরি প্রক্রিয়াজাত খাবার; তুলা ও সুতার ঝুট; পিভিসিসহ বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্য এবং কাঠের তৈরি আসবাবপত্র আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম এবং পশ্চিমবঙ্গের চেংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ী দিয়ে ভারতের আমদানি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চাপে রাখার কৌশলের অংশ হিসেবে ভারত সাম্প্রতিক সময়ে তাদের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে বসবাসরত বাংলা ভাষাভাষী নাগরিক এবং ভারতে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পুশইন করে চলেছে।
গত ২২ মে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, মৌলভীবাজার, ফেনী, কুমিল্লা ও খাগড়াছড়ি সীমান্ত দিয়ে ১০৪ জন নারী-শিশুসহ পুশইন করেছে। ২৫ মে মৌলভীবাজার, বড়লেখা, সিলেটের বিয়ানীবাজার ও মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে ১৭২ পুশইন করেছে। গত ২৭ মে মেহেরপুরের মুজিবনগর, কুড়িগ্রাম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর সীমান্ত দিয়ে ৬১ জনকে রাতের আধারে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ। তারপর থেকে প্রতিদিন দেশের কোনো না কোনো সীমান্তে তারা বাংলাদেশে পুশইন অব্যাহত রেখেছে। ভারতের এই একতরফা পুশইনের ঘটনার প্রতিবাদে বাংলাদেশ কূটনৈতিক পত্র দিয়েছে। কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি। ভারত কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছে না।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, আরো দুই হাজার ৩৬৯ বাংলাদেশীকে ফেরত পাঠাতে ভারত প্রস্তুত রেখেছে। এদিকে ভারতের আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা ২১ মে দেরগাঁওয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ্যে বাংলাদেশের দুটো চিকেনস নেকে হামলার হুমকি দিয়ে বলেছে ভারতের একটি চিকেনস নেক আছে, আর বাংলাদেশের দুটো চিকেনস নেক আছে। বাংলাদেশ যদি আমার একটি চিকেনস নেকে হামলা করে তাহলে আমরা তাদের দুটো চিকেনস নেকে হামলা করে দেবো। তাদের মেঘালয়তে একটি চিকেনস নেক। আরেকটি চিকেন নেক তাদের চট্টগ্রাম বন্দরের ওখানে। সেটি আমাদের চিকেনস নেক থেকেও সঙ্কীর্ণ। চট্টগ্রামের চিকেনস নেক তো এতটাই সঙ্কীর্ণ যে, সেটি মাত্র একটি ঢিল মারার দূরত্ব। যদিও কিছু দিন আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেন, একটি দেশ হিসেবে, আমাদের (ভারতের) চেয়ে বেশি অন্য কোনো দেশ বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করে না। কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন, এটি তাদের ডিএনএতে আছে। এস জয়শঙ্করের এমন হিতাকাক্সক্ষীসুলভ বক্তব্যের মাত্র কয়েক দিন আগে ভারত তাদের নিজেদের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে পণ্য রফতানির জন্য বাংলাদেশকে দেয়া দীর্ঘদিনের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে দেয়।
কোনো প্রকার পূর্ব নোটিশ বা আলোচনা ছাড়াই হঠাৎ করে ভারতীয় স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশের রফতানি পণ্য তৃতীয় দেশে পাঠানোর সুবিধা বাতিল করে। যা বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার সাধারণ শুল্ক ও বাণিজ্য চুক্তির ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। এই আইন অনুযায়ী সব সদস্য রাষ্ট্রকে স্থলবেষ্টিত দেশের পণ্যের জন্য মুক্ত ট্রানজিট সুবিধা দিতে বাধ্য। এ ছাড়া, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যাগ্রিমেন্টের ১১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ট্রানজিট ব্যবস্থাকে আরো আধুনিক ও স্বচ্ছ করার কথা বলা হয়েছে। অবশ্য ভারতের এ ধরনের আচরণ এই প্রথম নয়। এর আগেও বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের সময় ভ্যাকসিন দেয়ার চুক্তি করে ৫০০ কোটি টাকা অগ্রিম নিয়ে চুক্তি অনুযায়ী ভারত সরকার বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন দেয়নি। ২০১৪ সালে কোনো কারণ ছাড়াই সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে গরু প্রবেশ নিষিদ্ধ করে ভারত। ২০১৯ সালে হঠাৎ করেই ভারত-বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়। এতে আমাদের দেশে পেঁয়াজের দাম ২০০ টাকা কেজিতে পৌঁছে।
নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেয়াকে ভালো চোখে দেখেনি ভারত। দায়িত্ব গ্রহণের আগেই গত বছরের ৭ আগস্ট ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশ অস্থিতিশীল হয়ে পড়লে এটি মিয়ানমার, সেভেন সিস্টার্স, পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলাদেশের চারদিকে ছড়িয়ে যাবে। তিনি বলেন, যদি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ না থাকে, তবে আশপাশের কেউই স্বস্তিতে থাকতে পারবে না। বাংলাদেশ যদি বিপদে থাকে, সবাই বিপদে পড়বে। সম্প্রতি চীন সফরে গিয়েও ড. ইউনূস বলেছেন, ভারতের সেভেন সিস্টার্স ল্যান্ডলকড বা স্থলবেষ্টিত একটি অঞ্চল এবং ওই অঞ্চলে সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক বাংলাদেশ, যেটিকে কাজে লাগিয়ে চীন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রসারের কথা ভাবতে পারে। চীনে ডক্টর ইউনূসের এই বক্তব্যে ভারতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। যদিও ড. ইউনূস সেভেন সিস্টার্স এবং সমুদ্রের প্রসঙ্গ টেনে এই অঞ্চলের কানেক্টিভিটির মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড জোরদার করার কথা বুঝতে চেষ্টা করছেন।
বিজেপি সরকারের বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছিল পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগের সাথে। বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের সাথে ভারতের শাসকগোষ্ঠীর সম্পর্ক কখনো সম্পর্ক গড়ে তোলেনি। যতবারই আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে ততবারই ভারত বিভিন্ন চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও প্রটোকলের মাধ্যমে একচেটিয়া সুবিধা আদায় করে নিয়েছে। স্বাধীনতা-উত্তর সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে চাপে ফেলে ১৯৭২ সালে ২৫ বছর মেয়াদি ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষর করে নেয়। এই চুক্তিকে অনেকেই গোলামির চুক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন। সর্বশেষ হাসিনার শাসনামলে ভারত বাংলাদেশের সাথে একের পর এক চুক্তি করে সমুদ্রবন্দর, ট্রানজিট, রেলপথ, নৌপথ, করিডোর সব কিছুই উজাড় করে নিয়েছে। বিনিময়ে ভারতের কাছ থেকে হাসিনা সরকার কোনো কিছুই আদায় করার চেষ্টা করেননি। হাসিনার সরকার ভারতকে খুশি রাখতে নিজ থেকেই সচেষ্ট ছিল। হাসিনা মনে করত- ভারত সরকার তাদেরকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে এবং ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে। অবশ্য এর প্রমাণও মেলে। বাংলাদেশের বিগত তিনটি নির্বাচনের সময়- ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের বিনা ভোট, রাতের ভোট ও ডামি নির্বাচনের সময় ভারত বিভিন্নভাবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনকে বৈধতা দিয়েছে। ভারত বাংলাদেশে স্বৈরশাসন টিকিয়ে রাখতে সরাসরি প্রভাব বিস্তার করেছে। এখন ভারত যেভাবে বাংলাদেশের ইনক্লুসিভ নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক সরকারের কথা বলছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ভুলেও ইনক্লুসিভ নির্বাচনের কথা বলেনি, বরঞ্চ ভোটের অধিকার আদায়ে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন, আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতন, গণগ্রেফতার, গুম, গায়েবি মামলা, ভোটারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় উল্লেখ করে পাশ কাটিয়ে অবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের পলায়নকে ভারত সহজভাবে গ্রহণ করতে পারেনি। ভাবখানা এমন, যেন বাংলাদেশের জনগণ দেশের ওপর চেপে বসা দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে যেন বিশাল এক অপরাধ করে বসেছে। বাংলাদেশের গণ-অভ্যুত্থানকে ভারতের বাংলাদেশ নীতিতে নিজেদের ব্যর্থতা হিসেবে বিবেচনা করছে। আশ্রয় দেয়ার মধ্য দিয়ে ভারত হাসিনার প্রতি তাদের এক ধরনের ঋণ পরিশোধ করছে।
একই সঙ্গে ভারতজুড়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সংখ্যালঘু নির্যাতনের কল্পকাহিনীসহ বাংলাদেশবিরোধী নানা অপপ্রচার শুরু করে যা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরো খারাপ করে। ভারতের এসব সংবাদমাধ্যম ও ইউটিউবার ৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে অপপ্রচার, বিষোদ্গার, কল্পকাহিনী প্রচার করে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মন বিষিয়ে তোলে। শেখ হাসিনা নিজেও ভারতের মাটিতে বসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে উসকানিমূলক বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির প্রয়াস চালাচ্ছে।
সীমান্ত হত্যা, অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান নিয়ে দুই দেশের জনগণের মধ্যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও অস্বস্তি বিদ্যমান। এই উপলব্ধি থেকেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা তৎপর ছিলেন নরেন্দ্র মোদির সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করতে। কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। গত সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময়ও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দুই সরকারপ্রধানের বৈঠকের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরের আগেও নরেন্দ্র মোদির সাথে বৈঠকের চেষ্টা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে করা হয়েছিল, কিন্তু ভারত তাতে সাড়া দেয়নি। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে নাটকীয়ভাবে প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং অধ্যাপক ইউনূসের মধ্যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে মুহাম্মদ ইউনূস ভারতে আশ্রয় নেয়া শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে বলেছেন, সীমান্তে হত্যা বন্ধ, গঙ্গার পানি ভাগাভাগি চুক্তির নবায়ন ও তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। অপরদিকে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের সেই পুরনো অভিযোগ, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছেন। আমরা লক্ষ করেছি, দুই নেতার বৈঠকে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া ব্যতীত আলোচনায় নতুন কোনো ইস্যু ছিল না। দীর্ঘ দিনের পুরনো ইস্যুতে এই পর্যায়ে আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ার সম্ভাবনা খুব একটা থাকে না। তবুও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই বৈঠকের আগ্রহের কারণ ছিল গণ-অভ্যুত্থানে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দু’দেশের সরকারের মধ্যে যে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়েছিল তা কমিয়ে আনা। যা কার্যত সফল হয়নি।
প্রতিবেশী পরিবর্তনের সুযোগ নেই। কাজেই আমরা মনে করি, দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র তথা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও অখণ্ডতা, অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভারত-বাংলাদেশ পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সমমর্যাদার ভিত্তিতে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে। বড় দেশ, বিশাল অর্থনীতি, বৃহৎশক্তি এই অহমিকায় বড়ভাইসুলভ আচরণ করলে পারস্পরিক কল্যাণ ও স্বার্থ বিঘ্নিত হয়। এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে বড় দেশ হিসেবে তাদের দায়িত্ব পালনে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসবে। আমরা মনে করি, ভারতকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, পানি সমস্যার সমাধান, বাণিজ্য বৈষম্য দূর, সীমান্ত হত্যা ও পুশইন বন্ধ করতে হবে।
লেখক : আইনজীবী



