সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে নিয়ে একটি বড়সড় প্রচারণা চালাল বিবিসি। পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুভজ্যোতি ঘোষের করা দীর্ঘ প্রতিবেদনটি ব্রিটিশ সংবাদ প্রতিষ্ঠানটির ইউটিউব চ্যানেল ও ওয়েবসাইটে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। সদ্য সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে এতে রূপায়ণ করা হয়েছে আদর্শ দরদি মা হিসেবে। বিবিসির টোন হচ্ছে হাসিনা জীবন সায়াহ্নে যখন অবসর নিচ্ছেন সোনার টুকরা ছেলে-মেয়েকে বসিয়ে দিচ্ছেন দেশসেবার জন্য তার ছেড়ে দেয়া রাজনীতির সর্বোচ্চ পদে।
একসময় বিবিসি বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ছিল। মানুষ দিন শেষে অপেক্ষা করত বিবিসির খবরের জন্য। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্রিটিশদের পেশাদারিত্বের উচ্চ মান খবর প্রকাশেও প্রতিফলিত হতো। সেই বিবিসি হাসিনার ফ্যাসিবাদী আমলে পুরোটাই সরকারের অনুকূলে সংবাদ রচনা করে গেছে। বাংলা বিভাগে কর্মরত টিমটি অনেকটাই হিন্দুত্ববাদের সমর্থক। হাসিনার অপকর্ম নিয়ে যেমন তারা চুপ তেমনি ভারতের ভয়াবহ সংখ্যালঘু নিধন নিয়েও গুরুত্ব দিয়ে খবর প্রকাশ করতে দেখা যায় না। যখন লুটপাট, গুম খুন গণহত্যার দায়ে হাসিনা বাংলাদেশের আদালতে একজন ফেরারি আসামি তখন বিবিসি তাকে হাজির করছে মমতাময়ী শাসক ও মা হিসেবে।
উপমহাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক পরিবার নেহরু গান্ধী পরিবারকে বিবিসি পুরোপুরি মিলিয়ে দিয়েছে স্বৈরাচারী পিশাচ হাসিনা পরিবারের সাথে। বিগত শতকের মাঝামাঝি ক্যামব্র্রিজে পড়া রাজিব গান্ধীর পুত্র হার্ভার্ডে পড়ুয়া রাহুল গান্ধীকে সমতুল্য করে দিয়েছে জয়ের। সনদ জালিয়াতির অভিযোগে বিশ্বসংস্থার আঞ্চলিক পরিচালকের পদ থেকে ছিটকে পড়া পুতুলকে করেছে প্রিয়াঙ্কার সাথে তুলনা। নিজের দেশকে নরক বানিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া হাসিনা ও তার সন্তানদের নেহরু পরিবারের সাথে মিলিয়ে দিয়ে বিবিসি ও শুভজ্যোতি ঘোষরা আসলে কার স্বার্থ হাসিল করতে চায়! নাকি এতে অন্য কোনো প্রাপ্তিযোগ আছে! এই প্রশ্ন জুলাই অভ্যুত্থানে প্রাণ হারানো পরিবারের সদস্যরা করতে পারেন। বিবিসির ওয়েবসাইটে থাকা ওই বিশাল প্রতিবেদনে হাসিনা, জয় ও পুতুলকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বোঝার কোনো উপায় নেই, তাদের তিনজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি জালিয়াতির মামলা বাংলাদেশের আদালতে চলমান। সেগুলো উল্লেখ করার কিংবা সে বিষয়ে ইঙ্গিত দেয়ার কোনো প্রয়োজন সংবাদ প্রতিবেদক মনে করেননি। মনে হয়েছে, একজন উপকারী শাসক দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পর বয়সের শেষপ্রান্তে এসে গেছেন। তিনি আর পারছেন না, তাই এখন তাকে তার উত্তরাধিকার নির্বাচন করতে হচ্ছে।
পুতুলকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে সরিয়ে দেয়ার পেছনে দুর্নীতি অনিয়মের একটি যোগসূত্র আছে বিবিসির প্রতিবেদন দেখলে তা বোঝার সুযোগ নেই। এমনভাবে বিবিসি এটিকে পোর্ট্রে করেছে যেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পদ থেকে তিনি সরে গেছেন। এখন তিনি আরো গুরুত্বপূর্ণ কাজে যুক্ত হচ্ছেন। বিবিসি বলছে, পুতুল এখন মা শেখ হাসিনার মুখপাত্র। চাকরি থেকে সরে আসায় তিনি অনেক বেশি সময় দিতে পারছেন। তিনি মায়ের দেয়া ভাষণের খসড়া তৈরি ও প্রতিনিয়ত তার কর্মসূচি ঠিক রাখছেন।
হাসিনা যেসব ভাষণ বাংলাদেশের জনগণের উদ্দেশে দিচ্ছেন সেগুলো একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ দিতে পারে না। এখন পর্যন্ত তিনি শুধু হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। কাকে হত্যা করতে হবে, কার ঘর পুড়িয়ে দিতে হবে, ড. ইউনূসের পরিণতি কী হবে, এসব। আদালতকে কিভাবে শায়েস্তা করবেন সেই হুমকিও তিনি দিচ্ছেন। দেশবাসীর ওপর পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ চালানোর জন্য সামান্যতম অনুশোচনা তিনি প্রকাশ করেননি। এতে প্রমাণ হয়, পুতুলও হাসিনার অমানবিক জঘন্য শাসনের সহযোগী ও সমর্থক। হাসিনার ওইসব বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় ঝটিকা মিছিল বের হচ্ছে। মিছিলে ধ্বংসাত্মক স্লোগান দিচ্ছে। পুলিশের দুর্বলতার সুযোগে তারা রাস্তায় নামতে পারছে। তবে জনগণের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এখনো তারা সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে পারছে না। তবে সুযোগ পেলেই তারা হাসিনার সন্ত্রাসী রাজনীতি বাস্তবায়ন করবে। মিছিলকারীদের ধরিয়ে দিতে পারলে পাঁচ হাজার টাকার পুরস্কার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। মাইকিং করে এই নাশকতাকারীদের ঢাকায় বাসা ভাড়া না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে নগরবাসীকে। বিবিসি যখন বলছে পুতুল হাসিনার বক্তৃতার খসড়া লিখে দিচ্ছে তখন আসলে তিনি কী লিখছেন সেটি কি বিবিসির টিম নিজেরা বুঝতে পারছে!
৮ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বিবিসি লিখেছে, ‘শেখ হাসিনা তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এ দু’জনকেই নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে আনার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছেন। পাশাপাশি এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিরও। এ ক্ষেত্রে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস তাদের দলীয় নেতৃত্বে রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে নিয়ে যে ‘মডেল’টা অনুসরণ করছে, আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রেও নিজের ছেলেমেয়েকে নিয়ে ঠিক সেটিই করতে চাইছেন দলীয় সভানেত্রী।’ এই ববির বিরুদ্ধেও আদালতে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুই কোটি ৮৯ লাখ টাকা আয়বহির্ভূত অর্জন, সাড়ে ১২ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন ও পূর্বাচল থেকে প্লট বাগিয়ে নেয়ার তথ্য প্রমাণ হাজির করেছে দুদক। তার মা রেহানার বিরুদ্ধে অভিযোগ আরো বড়, তার বিরুদ্ধে হাসিনার সহযোগী গুম খুন ও লুটপাটের অভিযোগে বেশ ক’টি মামলা রয়েছে। বিবিসির ঢাউস প্রতিবেদনের কোথাও এই মা-ছেলে রেহানা-ববির দুর্নীতি নিয়েও কোনো আলাপ নেই।
বিবিসির এ সংবাদের একমাত্র উৎস সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আরাফাত। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ জুলাইতে ক্র্যাকডাউন চালানোর অন্যতম উসকানিদাতা হিসেবে। তিনি মন্ত্রী হিসেবে গোয়েবলসের ভূমিকায় ছিলেন। যেকোনো মিথ্যাকে তিনি সত্য বানাতে ছিলেন উস্তাদ। তার ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথাবার্তা বিবিসি অবলীলায় উদ্ধৃত করেছে। তিনি বলছেন, ‘আমাদের এখন প্রধান লক্ষ্য গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা।’ তার এই উদ্ধৃতি দিতে বিবিসি সামান্য লজ্জাবোধ করল না। অথচ বিশ্বের কোন মানুষ না জানে জুলাইতে গণতন্ত্র উদ্ধারে দুই হাজার প্রাণ গেছে। পঙ্গু খোঁড়া চোখ অন্ধ ও গুরুতর অঙ্গহানি ঘটেছে আরো ৩০ হাজার মানুষের। সরাসরি হত্যাযজ্ঞ চালিয়েও টিকতে না পেরে হাসিনা ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা শেষে পালিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন। বিডিআর হত্যা, গুম খুন ও আয়নাঘর নিয়ে হাসিনার আমলে কোনো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন রচনার প্রয়োজন বোধ করেনি বিবিসি। ছাত্র-জনতা জুলাইতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার পরও বিবিসি তাকে সম্মান জানাতে পারছে না। স্বৈরাচারীদের ভাষায় গণতান্ত্রিক বিপ্লবী শক্তিকে তারা অভিযুক্ত করছে।
‘কংগ্রেসের রাহুল-প্রিয়াঙ্কা মডেলটি ঠিক কি?’ এমন একটি উপশিরোনাম দিয়ে বিবিসি লিখেছে, বয়সজনিত কারণে ও শারীরিক অসুস্থতার জন্য সোনিয়া গান্ধী যতই সক্রিয় রাজনীতি থেকে আড়ালে যাচ্ছেন, ততই নেতৃত্বের হাল ধরছেন তার ছেলেমেয়ে, রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। বিবিসি বুঝতে পারছে না, কার সাথে কার তুলনা তারা করছে। সোনিয়া ভারতের পরিচ্ছন্ন একজন জাতীয় নেতা। তার বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের সামান্য অভিযোগ নেই।
ইতালিয়ান বংশোদ্ভ‚ত এই মহীয়সী নারী ক্ষমতার খুব কাছাকাছি থেকেও নিজে প্রধানমন্ত্রী না হয়ে মনমোহন সিংকে সুযোগ করে দিয়েছেন। চরম ক্ষমতালোভী দুর্নীতিবাজ নিপীড়ক যাকে দেশের মানুষ তাড়িয়ে দিয়েছে সেই হাসিনাকে বিবিসি সোনিয়ার সাথে তুলনা করছে। যেখানে সোনিয়া এখন রাজ্যসভার এমপি নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন দলকে। অন্যদিকে, হাসিনা পালিয়ে আছেন ভারতে। মাথায় পাহাড়সম অভিযোগ নিয়ে দলের নিয়ন্ত্রণ হারানোর ভয়ে ভীত হাসিনাকে প্রিয়াঙ্কার সাথে তুলনা বড় ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক অসততা।
জয়-পুতুল বনাম রাহুল-প্রিয়াঙ্কা
২০২৩ সালে নভেম্বরে জয়ের সম্মানে ঢাকায় আয়োজিত তরুণদের এক সম্মেলনে তিনি বলেন, আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরে বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াত বলে কোনো দল টিকে থাকবে না। যখন এই জঙ্গিবাদী মৌলবাদী শক্তির চিহ্ন বাংলাদেশ থেকে মুছে যাবে, তখন দেশে শান্তি আসবে।’ জয় মুখ খুললে তার মায়ের মতো ঘৃণা বিদ্বেষ উগরে বের হয়। অসংলগ্ন, অযৌক্তিক ভিত্তিহীন কথা তিনি অহরহ বলে থাকেন। হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তার সেই রোগ আরো বেড়েছে। অসংখ্য এলোমেলো অসংলগ্ন কথা ইতোমধ্যে তিনি বলেছেন। প্রথমে তিনি মন্তব্য করেন, শেখ হাসিনা আর রাজনীতিতে ফিরবে না। এমনকি তার পরিবারের কেউ আর রাজনীতিতে ফিরবে না- এই ঘোষণা দেন সে সময়। এর কয়েক দিন পরে আবার তিনি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যেভাবে হামলা হচ্ছে, এ পরিস্থিতিতে আমরা হাল ছেড়ে দিতে পারি না। এর কিছু দিন পর দেখা গেল, তিনি আমেরিকার নাগরিকত্ব গ্রহণ করলেন। তার কথাবার্তা চলাফেরায় কোনোভাবে একজন রাজনৈতিক নেতার চরিত্র পাওয়া যায় না। গুজব মিথ্যা ভুল অপতথ্য ছড়াতে তিনি সামান্য লজ্জাবোধ করেন না। ৫ আগস্টের পর তিনি ক্রমাগত তা করে যাচ্ছেন। তার পড়াশোনা নিয়েও নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তার মায়ের মতো তিনি বিভিন্ন বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন, এমন দাবি করে থাকেন।
পুতুলকে জয়ের মতো অসংলগ্ন কথাবার্তা চিন্তাভাবনা করতে দেখা যায়নি। তবে একজন নির্ভরশীল নেতা হয়ে ওঠার জন্য যে ধরনের পারিবারিক ঐতিহ্য দরকার সেটি জয়ের মতো পুতুলেরও নেই। জয় একজন ইহুদি নারী বিয়ে করেছেন। এরপর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। তিনি আমেরিকাতে অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবন কাটান। কিন্তু তার কোনো পেশা বা চাকরি আছে এমনটি জানা যায় না। পুতুলের ক্ষেত্রেও দেখা যায় একই ধরনের নড়বড়ে পারিবারিক অবস্থা। উইকিপিডিয়ায় তার ‘দাম্পত্য সঙ্গীর’ খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি বুদ্ধিজীবী ডাক্তার জাহেদের কথিত স্ত্রী ‘দাম্পত্য সঙ্গী’ শব্দজোড়া ব্যবহার করেন। স্বামী স্ত্রীর পরিবর্তে এ ধরনের জোড়া শব্দের ব্যবহার নতুন দেখা যাচ্ছে, যেখানে দু’জনে স্বামী স্ত্রী পরিচয় দিচ্ছেন না। পুতুলের পরিচয়ে লেখা রয়েছে- ‘দাম্পত্য সঙ্গী : খন্দকার মাশরুর হোসেন মিতু’।
এদিকে বহু বছর মিতুর কোনো খোঁজ নেই। হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন মুদ্রাপাচারের অভিযোগে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে গ্রেফতার হন। তিনি সেদেশে এখন কারাভোগ করছেন। এ ধরনের খবর বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। মায়ের পরিচয় ব্যবহার করে পুতুল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়েন। শেষে প্রতিষ্ঠানটির আঞ্চলিক পরিচালক হওয়ার জন্য হাসিনার প্রশাসন একযোগে সারা বিশ্বে কাজ করে। এতে মোদি সরকারের প্রভাবও কাজে লাগানো হয়। তার বিভিন্ন ডিগ্রি নিয়ে সেই সময় বিতর্ক হয়। অত্যন্ত যোগ্য অভিজ্ঞ প্রার্থীদের বঞ্চিত করে বিতর্কিত পুতুলকে আঞ্চলিক পরিচালক পদে নিয়োগ দেয়ায় সংস্থাটির বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা হয়। রাহুল ও প্রিয়াঙ্কার চরিত্রে কালিমা আরোপ করার মতো কোনো খবর জানা যায় না। তারা সৎ শুদ্ধ ও সাদামাটা জীবন যাপন করেন।
জয়-পুতুলের সাথে রাহুল প্রিয়াঙ্কার একটি জায়গায় মিল আছে, তারা কাছাকাছি বয়সের। জয়ের বয়স ৫৪ পুতুলের ৫২ বছর। রাহুলের বয়স ৫৫, প্রিয়াঙ্কার বয়স ৫৩ বছর। রাহুল ইতোমধ্যে তার বয়সের বড় অংশ কাটিয়েছেন ভারতের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের নেতৃত্ব দিয়ে। তিনি দলটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন লোকসভার বিরোধী দলের নেতা। ভারতজোড় নামের একটি আন্দোলন করে ইতোমধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। প্রায় একই বয়সের হয়ে জয়ের নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতা শূন্য।
রাহুল যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দ্বারপ্রান্তে জয়ের বিরুদ্ধে তখন অনিয়ম-দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিপুল অভিযোগে মামলা চলমান। প্রিয়াঙ্কাও লোকসভার নির্বাচিত সদস্য। ভাইয়ের পেছনে থেকে বুদ্ধি-পরামর্শ ও সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে পুতুল লিখছেন উত্তপ্ত মস্তিষ্কের এক নারীর বক্তব্যের স্ক্রিপ্ট। বিবিসির সাংবাদিকরা উদ্ভট গল্প লিখে দুই পরিবারকে সমান মর্যাদার বানানোর অসম্ভব মিশনে নেমেছেন।