উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠন নয় কেন

উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠিত হলে অর্থনীতির এক-চতুর্থাংশ জিডিপি সরবরাহকারী উপকূলীয় অঞ্চলের যাবতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি থেকে উপকূল, সুন্দরবন ও লোকালয় রক্ষার সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়াস প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পরিগ্রহ করবে।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেক বড় বিষয়, দীর্ঘমেয়াদি এর প্রক্রিয়া ও প্রভাব; স্বল্প সময়ে এর স্বরূপ বিশ্লেষণ কঠিন। উন্নয়নের নামে উন্নয়ন বরাদ্দে আঞ্চলিক বৈষম্য কিংবা আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট প্রান্তরে বিভিন্নতা বিছিন্নতার প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। এ ব্যাপারে অনুযোগ-অভিযোগ প্রায়ই পাওয়া যায়। নানা পর্যালোচনা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, রাষ্ট্রের চেয়ে সরকারের ওপর নির্ভর করে উন্নয়ন প্রকল্প গৃহীত ও বাস্তবায়ন হচ্ছে, আঞ্চলিক উন্নয়ন হচ্ছে। সরকারের সময়সীমার মধ্যে বাস্তবায়নযোগ্য প্রকল্প নেয়া সরকারের পরিবর্তন ঘটলে জাতীয় উন্নয়ন প্রকল্পও পরিত্যক্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। লাগসই ও টেকসই উন্নয়ন পরিক্রমায় এটি বিব্রতকর পরিস্থিতি।

বলা বাহুল্য, স্রেফ রাজনৈতিক কারণে আঞ্চলিক তথা আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে মনুষ্যসৃষ্ট বৈষম্যে এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে পাকিস্তান থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম। তৎকালীন পাকিস্তানের নীতিনির্ধারক রাজনীতিক ও সামরিক-বেসামরিক প্রভাবশালী আমলার বেশির ভাগ ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানি। তাই ২৪ বছরের পাকিস্তানি জীবদ্দশায় পূর্ব এর তুলনায় পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়ন হয়েছিল অঞ্চলভিত্তিক। সে সময়ে বেশির ভাগ বৈদেশিক সাহায্য ব্যবহার ও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হতো পশ্চিম পাকিস্তানে। অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তান বা বর্তমানের বাংলাদেশ বরাবর ছিল বঞ্চিত। এ বৈষম্য থেকে পরিত্রাণ লাভে বাংলাদেশকে মহান মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয়েছিল। সে প্রেক্ষাপটে স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশে কেন্দ্রীভূত চিন্তাচেতনায় শক্তিশালী পরিকল্পনা কমিশন গঠন করা হয়। সব অঞ্চলের সমান সুবিধাপ্রাপ্তির কথা মাথায় রেখে এ কেন্দ্রীয় ভাবনার কমিশন গঠিত হয়। এসব কথা কাগজে-কলমে থাকলেও পরবর্তীকালে বাস্তবে দেখা গেল ভিন্নচিত্র। রাষ্ট্রীয় বা জাতীয় সুযোগ-সুবিধাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে পাকিস্তানের মতো বিশেষ দলীয় বিষয়, দল, মত, গোষ্ঠী, কর্মকর্তা বা অঞ্চল প্রাধান্য পেতে থাকছে। ফলে দেশের উত্তর দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জনপদ দীর্ঘ দিন অবহেলিত ছিল। যমুনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণে পর উত্তরবঙ্গে অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়ন বেশ দেরিতে হলেও শুরু করেছে। পদ্মা সেতু হওয়ার পর দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে উন্নয়ন এখনো অবহেলার শিকার। দেশের সংবিধানে লেখা আছে- জন্মস্থান, শিক্ষাগত যোগ্যতা, অর্থনৈতিক অবস্থান ও অঞ্চলভিত্তিক বিবেচনার পরিবর্তে সবার সমান মৌলিক অধিকার পাওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবে তার প্রয়োগে উদ্ভব হয়েছে নানান জটিলতা। রাষ্ট্রের সুবিধা ক্ষমতাসীন দল, সরকার মতাবলম্বী নেতাকর্মী ও কর্মকর্তাদের করায়ত্তে চলে যায় ভাগাভাগির অর্থনীতি।

বাংলাদেশের জিডিপির ২৫ শতাংশ আসে উপকূলীয় অঞ্চল থেকে। এখানে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, দু’টি প্রধান সমুদ্রবন্দর, আনব্রোকেন সি-বিচ। অথচ এ অঞ্চলের স্থায়ী উন্নয়নে কেন্দ্রীয়ভাবে কেউ বিশেষ মনোযোগী হননি। উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠনের কথা বলা হয়েছিল ল্যাগিং বিহাইন্ড কমিটির রিপোর্টে। তার পর কিছু কথাবার্তা হলেও আলোর মুখ দেখেনি সে পরিকল্পনা। তার মূল কারণ একটিই- সরকার পরিচালনায় যারা আসেন, তারা পুরো দেশের না হয়ে, কার্যকর সমাধানের উদ্যোগ না নিয়ে ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন না কারঅয়। ফলে সামষ্টিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারছেন না তারা।

উপকূলীয় অর্থনীতির সুষম উন্নয়নের অন্যতম অবলম্বন হচ্ছে টেকসই উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ। উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণে বিগত সরকারের উদ্যোগের সালতামামিতে উঠে আসে স্ববিরোধী, অসত্য ও বাগাড়ম্বরে পরিপূর্ণ, দায়দায়িত্বহীন ইতবিক্ষিপ্ত ও অমনোযোগী উদ্যোগের চিত্র- ১.উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণ সম্পর্কে সমকাল পত্রিকায় ১৫ জানুয়ারি ২০১৬ প্রকাশিত ‘বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হচ্ছে মার্চে’ শীর্ষক সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয় ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ¡াস ও বন্যা থেকে উপকূলীয় এলাকার জমি ও ঘরবাড়ি রক্ষায় ছয় জেলায় নির্মাণ করা হচ্ছে প্রায় ৬২৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। এ কাজে ব্যয় হবে তিন হাজার ২৮০ কোটি টাকা। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ প্রকল্পের তিন প্যাকেজের মধ্যে একটির টেন্ডার-প্রক্রিয়া শেষে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। আগামী মার্চ মাস থেকে বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে ‘উপকূলীয় বেড়িবাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প, ফেজ-১’। প্রকল্পের আওতায় খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার ১৭টি পোল্ডারে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের পরামর্শক নিযুক্ত করা হয়েছে নেদারল্যান্ডসের দু’টি প্রতিষ্ঠানকে। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ২০১৩ সালের জুন থেকে এতদিন খাতা-কলমের কাজ চললেও মাঠপর্যায়ের মূল্য কাজ শুরু হচ্ছে আগামী মার্চে।

২. ২০২০ সালের ১৪ জুলাই সংবাদমাধ্যম বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোর.কম পরিবেশিত ‘টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে আট হাজার কোটি টাকার প্রকল্প’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়- টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে সরকার আট হাজার কোটি টাকার চারটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম। চলতি অর্থবছরে এসব প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠনের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে। ১৪ জুলাই ‘উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে জরুরি করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। পানিসম্পদ উপমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে আট হাজার কোটি টাকার চারটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এসব প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হবে।

৩. এ বিষয়ে ২০১৯ সালের ১২ মে প্রথম আলোতে ‘মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে নজর দিন, ঝুঁকিতে উপকূলের বেড়িবাঁধ’ শীর্ষক সম্পাদকীয় স্তম্ভে বলা হয়- ‘ভয়ানক আতঙ্কের কথা হলো, দেশের উপকূলীয় এলাকার আট হাজার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডর ও ২০০৯ সালে আইলার পর উপকূল এলাকার এসব বাঁধের অনেক জায়গা ভেঙে গিয়েছিল, অনেক জায়গা বানের তোড়ে ভেসে গিয়েছিল; কিন্তু তার বড় অংশ এখনো যথাযথভাবে মেরামত হয়নি। তার মানে গোটা উপকূলীয় এলাকা এখন অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। বেড়িবাঁধ দিয়ে জলোচ্ছ¡াস ও বন্যা ঠেকিয়ে রাখা এলাকাগুলো যে কী মাত্রায় অরক্ষিত অবস্থায় আছে, তা কয়েক দিন আগে ঘূর্ণিঝড় ফনিতে সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২০১৭ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় মোরায় প্রায় ২২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর বাইরে ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, কোমেনের আঘাতে ১৯ হাজার কিলোমিটার বেড়িবাঁধের বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেগুলো মেরামত এখনো শেষ হয়নি। সরকারের হিসাবে দেশে ১৯ হাজার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর প্রায় অর্ধেকই উপকূলীয় এলাকায়। উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হলে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হয়। লবণাক্ত পানি ফসলি জমিতে চলে আসার পর টানা কয়েক বছর ফসল হয় না। মিঠাপানির মাছ ও অন্যান্য প্রকৃতিবান্ধব কীটপতঙ্গের বংশবিস্তার বাধাগ্রস্ত হয়। এ কারণে উপকূলের বেড়িবাঁধ সুরক্ষিত রাখায় অগ্রাধিকার দেয়া দরকার। উদ্বেগের বিষয়- বেড়িবাঁধের রক্ষণাবেক্ষণে বরাদ্দ সবসময়ই অপ্রতুল। পানি উন্নয়ন বোর্ড তাদের অধীনে থাকা বেড়িবাঁধের ওপর স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘেঁষতে দেয় না। কিন্তু অনেক জায়গাতেই দেখা গেছে, বাঁধে সামাজিক বনায়ন করা হলে কিংবা এলাকাবাসী ঘরবাড়ি তুললে বাঁধ অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকে। নিজেদের স্বার্থেই এলাকাবাসী বেড়িবাঁধকে সুরক্ষিত রাখতে উদ্যোগী হয়। এ কারণে বাঁধগুলোর সুরক্ষার সাথে স্থানীয় মানুষের ব্যক্তিস্বার্থের মধ্যে সম্পর্ক বাড়ানো যেতে পারে। আমাদের দেশে দুর্যোগের আগে নানা রকমের প্রস্তুতি নেয়া এবং দুর্যোগের পরপর সব ভুলে যাওয়ার সংস্কৃতি চালু আছে। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। এ ছাড়া সরকারি বরাদ্দের অর্থ নয়ছয়ের চেষ্টাও দেখা যায়। জোয়ারের পানি ঠেকানোর রিংবাঁধ নির্মাণ, বাঁধ মেরামত, সংস্কার প্রভৃতি নামে প্রতি বছর নেয়া হয় বিভিন্ন প্রকল্প। এসব প্রকল্পে অর্থ নয়ছয়ের ঘটনাও ঘটে। বর্ষা এলে বাঁধ ভেঙে যায়। নতুন প্রকল্পের নামে শুরু হয় নতুন বরাদ্দ। এভাবে বছরের পর বছর উপকূলীয় বাঁধের সংস্কারের নামে চলে অর্থের অপচয়। এই মনোভঙ্গিরও অবসান জরুরি।

৪. বেড়িবাঁধ নির্মাণ সম্পর্কে প্রকৃত অবস্থার চিত্র উঠে আসে বিবিসির ১৫ জুলাই ২০২০ প্রতিবেদনে- ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, বরগুনা ভোলাসহ ৯টি জেলার কয়েক শ’ গ্রাম প্লাবিত হয়ে গেছে। এসব জেলার পাশ দিয়ে যে নদীগুলো বয়ে গেছে সেগুলোর বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় মুহূর্তে তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা। অথচ প্রতি বছর বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং সংস্কার বাবদ বাজেটে মোটা অঙ্কের বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় এলাকাবাসী এবং মাঠপর্যায়ে যে কর্মীরা কাজ করেন তারা জানিয়েছেন, সেই বরাদ্দের কোনো বাস্তবায়ন তারা দেখেননি। যখন সরকারি কোনো চুক্তি হয় তখন সেটির বরাদ্দকৃত অর্থ অনেকভাবে ভাগাভাগি হয়ে যায় বলে তারা অভিযোগ করেছেন। বিদেশী দাতব্য সংস্থার কর্মকর্তা নাজমুন নাহার জানান, ‘বরাদ্দ অর্থগুলোর পুরোটা বাঁধ সংস্কার বাস্তবায়নে কাজে লাগে কিনা আমার সন্দেহ আছে। এমনো হয়েছে যে, কাগজ-কলমে দেখাচ্ছে যে কাজ হয়ে গেছে। আসলে কাজ হয়নি।’ প্রকৌশলীরা কাজ হয়ে গেছে বলে রিপোর্ট জমা দিয়ে দিলেও সরেজমিন দেখা গেছে- সেই কাজের কোনো অস্তিত্ব নেই, এমন অভিযোগ করেন মিসেস নাহার। এ সব প্রতিবেদনে লক্ষ করার বিষয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে যথাযথ তদারকি, গুণগতমান পরীক্ষা ও একে টেকসইকরণে দায়িত্বশীল বিভাগ ও সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং কারিগরি নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা রয়েছে, রয়েছে সমন্বিত উদ্যোগের অভাব। উপকূলীয় অর্থনীতির সার্বিক উন্নয়ন স্বার্থে বেড়িবাঁধ টেকসই আকারে নির্মাণসহ সুন্দরবন সুরক্ষা এবং উপকূলীয় জনপদ (যেমন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার মর্মান্তিক পরিস্থিতির কথা মিডিয়ায় উঠে এসেছে), জীবন-জীবিকা ও কৃষি অর্থনীতির দুর্দশা লাঘব উত্তর বিকাশকে গুরুত্ব দিতে হবে। স্বল্পমেয়াদি, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণসহ নিকট অতীতে (২০১৬-২৩) ঘোষিত উদ্যোগ ও নির্দেশনা যথাযথ বাস্তবায়নের ওপর কড়া নজরদারি, আগামীতে বিশেষ বরাদ্দ দান ও তা ব্যয়ন বাস্তবায়নে দায়িত্বশীলতা নিশিচত করা হবে জুলাই চব্বিশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আত্মত্যাগের কাছে দৃঢ় অঙ্গীকার ও তাদের প্রতি সম্মান জানানো।

এ পরিপ্রেক্ষিতে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে ‘উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড’ গঠন করা। উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠিত হলে অর্থনীতির এক-চতুর্থাংশ জিডিপি সরবরাহকারী উপকূলীয় অঞ্চলের যাবতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি থেকে উপকূল, সুন্দরবন ও লোকালয় রক্ষার সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়াস প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পরিগ্রহ করবে।

লেখক : অনুচিন্তক