আইন ও রাষ্ট্র : মানুষের ইচ্ছা বনাম কসমিক অর্ডার

মানুষ আইন সৃষ্টি করে না, মানুষ আইন আবিষ্কার করে। মানবীয় আইন তখনই বৈধ, যখন তা মহাজাগতিক ন্যায়নীতির প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে।

পশ্চিমা রাজনৈতিক দর্শনের এক প্রধান ভিত্তি হলো সামাজিক চুক্তি। যার দাবি হলো রাষ্ট্রের বৈধতা মানুষের পারস্পরিক সম্মতি, যুক্তি ও ইচ্ছার ওপর প্রতিষ্ঠিত। ব্যক্তিই রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের উৎস। ব্যক্তি এখানে স্বয়ম্ভু; তার স্বাধীনতা ও ইচ্ছার মূল্য চূড়ান্ত। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে মানুষের জ্ঞান, ইচ্ছা, যুক্তি ও দাবিকে রাজনৈতিক বিধান তৈরির চূড়ান্ত মানদণ্ড।

মানুষ এক অদ্ভুত দ্বৈততার ধারক। এক দিকে সে যুক্তিবান, অনুসন্ধিৎসু, সৃষ্টিশীল। অন্য দিকে একই মানুষের জ্ঞান সীমাবদ্ধ, ত্রুটিপূর্ণ, বিভ্রান্তিকর। এই দ্বৈততার ভেতরেই আইনের উৎস, নৈতিকতার ভিত্তি ও রাজনৈতিক কর্তৃত্ব নিয়ে মানব সভ্যতার দীর্ঘ বিতর্ক।

মানুষের জ্ঞান সীমাবদ্ধ- এটি কেবল ধর্মতাত্তি¡ক নয়, বরং দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক ও ঐতিহাসিক সত্য।

মানুষ সংস্কৃতির সন্তান, সময়ের সন্তান, অভিজ্ঞতার সন্তান। তার বোধ তাই প্রসঙ্গনির্ভর ও সীমায় আবদ্ধ। তার ইচ্ছাও নিয়ত পরিবর্তনশীল। মানবীয় জ্ঞানের এই আপেক্ষিকতা তিনটি মৌলিক সমস্যার জন্ম দেয়-

১. আইন প্রণয়নে অসম্পূর্ণতা

আইন মানুষের হাতে তৈরি হলে তা পক্ষপাত বহন করে, ক্ষমতার কাছে নতি স্বীকার করে। সে প্রায়ই সংখ্যাগরিষ্ঠের সুবিধাকে ‘ন্যায়’ বলে ঘোষণা করে। ফলে আইন অসম্পূর্ণ হয়।

২. নৈতিক সিদ্ধান্তে অনিশ্চয়তা

মানুষ নিজের স্বার্থের চশমা দিয়ে ন্যায় বা অন্যায়ের বিচার করে। এক যুগে যা উত্তম, অন্য যুগে তা নিকৃষ্ট বিবেচিত হতে পারে।

৩. ন্যায়বিচারের সঙ্কট

যখন ন্যায়বিচার মানুষের মতামতের ওপর নির্ভরশীল হয়, তখন তা টেকে না। বর্ণবাদ, নাজিবাদ, শ্রেণিশোষণের মতো বিষয়গুলো একসময় গণসম্মতির আইন হিসেবে বৈধ হয়েছিল।

তাই মানবীয় সম্মতি নৈতিকতার নির্ভরযোগ্য ভিত্তি নয়।

মানুষের অস্তিত্ব কোনো স্বতন্ত্র, স্বয়ম্ভু ঘটনা নয়। মহাবিশ্বের সব সত্তাই পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিটির অস্তিত্ব পূর্ববর্তী কোনো কারণ দ্বারা নির্ধারিত। কার্যকারণ-শৃঙ্খল অসীম হতে পারে না। অতএব, যৌক্তিকভাবে প্রয়োজন হয় এমন এক সত্তার, যার অস্তিত্বের জন্য আর কোনো কারণ লাগে না।

এই অপরিহার্য সত্তা-পরম উৎস, মহাবিশ্বের শৃঙ্খলার প্রথম ভিত্তি। মানুষের অস্তিত্ব যেহেতু এই উৎসের ওপর নির্ভরশীল, তাই মানুষের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সীমাবদ্ধ এবং ওই উৎসের অধীন।

মানুষ রাজনৈতিকভাবে যতই স্বাধীনতার দাবি করুক, অস্তিত্বগত অর্থে সে নির্ভরশীল। আর এই অস্তিত্বগত নির্ভরশীলতা নৈতিকতার ভিত্তি।

অস্তিত্ব পরম উৎস থেকে নির্ধারিত বলে মানুষের কল্যাণও সেই উৎসের বিধান অনুযায়ীই যুক্তিসঙ্গত। এই বিধান এক শাশ্বত নৈতিক আইন। এখানে নৈতিকতার উৎস জনগণের সম্মতি নয়; বরং সেই ঐশী বিধান, যা মানুষের স্বভাব ও মহাবিশ্বের মধ্যে সামঞ্জস্য রচনা করে।

মানবীয় আইন তখনই বৈধ, যখন তা এই শাশ্বত নৈতিক আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আর যখন মানবীয় সম্মতি এই ভিত্তি থেকে বিচ্যুত হয়, তখন আইন ন্যায্যতা হারায়। সুতরাং প্রয়োজন এমন এক শাশ্বত নৈতিক ভিত্তি, যা মানুষের পছন্দ বা স্বার্থের ঊর্ধ্বে। এই শাশ্বত নীতি হচ্ছে আল্লাহর ফিতরাত বা সহজাত প্রকৃতিতে নিহিত আইন, যা মানুষের সত্তাগত সত্যেও বহমান। এগুলোই মানুষের সত্যিকারের মুক্তি ও সামাজিক স্থিতির পথ নির্মাণ করে।

রাষ্ট্র এই নীতি ও শৃঙ্খলা থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। সে নিছক কৃত্রিম মানবচুক্তি নয়। মানব সমাজে শাশ্বত নৈতিক বিধানের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে রাষ্ট্র। সরকার জনগণের মাধ্যমে নির্বাচিত হতে পারে; কিন্তু তার চূড়ান্ত বৈধতা জনগণের সম্মতির হাতে নয়; বরং শাশ্বত নৈতিক আইনের আনুগত্যে।

পশ্চিমা রাজনৈতিক তত্ত¡ এই অন্তলোজিক্যাল ও এথিক্যাল মাত্রাকে পুরোপুরি অবহেলা করে। সে রাষ্ট্রকে ব্যক্তির ইচ্ছার বাণিজ্যিক চুক্তিতে রূপ দেয়। যেখানে নাগরিক যেন গ্রাহক, আর সরকার সেবাদাতা। এতে সমাজ ভেঙে পড়ে নৈতিকতার অভাবে; ব্যক্তিবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আসাবিয়্যাহ (কৌমসংহতি) ও মহাজাগতিক শৃঙ্খলা থেকে।

যে দর্শন মহাজাগতিক শৃঙ্খলা অস্বীকার করে, সেই দর্শনে রাজনৈতিক সঙ্কট অবধারিত। একই সাথে অবধারিত অস্তিত্বগত সঙ্কট। পশ্চিমা সামাজিক চুক্তিতত্ত¡ ব্যক্তিকেন্দ্রিক মুক্তির যে প্রতিশ্রুতি দেয়, তা শেষ পর্যন্ত মানুষকে তার সত্যিকারের উৎস ও নৈতিক সত্য থেকে বিচ্ছিন্ন করে।

অতএব, প্রকৃত বৈধতা, ন্যায় ও রাজনৈতিক শৃঙ্খলার জন্য চাই অস্তিত্বের সত্যের স্বীকারোক্তি এবং শাশ্বত নৈতিক আইনের প্রতি আনুগত্য।

মহাবিশ্ব কোনো বিশৃঙ্খল, আকস্মিক, ইচ্ছাবিহীন বাস্তবতা নয়। এর গভীরে আছে এক ধারাবাহিক, অপরিবর্তনীয়, আরোপহীন শৃঙ্খলা। আছে পদার্থবিজ্ঞানের আইন, কারণকার্য সম্পর্ক, রাসায়নিক সামঞ্জস্য, জীববৈচিত্র্যের সূ² বিন্যাস।

এগুলো মানুষের সম্মতিতে তৈরি হয়নি; মানুষ এগুলো পরিবর্তনও করতে পারে না।

মহাবিশ্বের এই বিধানগুলো-মানবপূর্ব, মানবঊর্ধ্ব ও মানবাতীত। মানুষের জীবন, সমাজ, রাজনীতি- সবই অনিবার্যভাবে এই শৃঙ্খলার ওপর নির্ভরশীল।

যখনই মানবীয় আইন মহাজাগতিক শৃঙ্খলার বিপরীতে যায়, তখন পরিবেশ ধ্বংস হয়, মানব মর্যাদা বিপন্ন হয়, স্থিতি নস্যাৎ হয়।

তখন সেই আইন ভালোর শিরোনামে মন্দের বাহক হয় এবং নিজস্ব কারণে ও নিজের গঠনেই সে বৈধতা হারায়।

মানুষ যে মহাবিশ্বের একটি ক্ষুদ্র অংশ- এ সত্য রাজনৈতিক দর্শনের গভীর ফলাফল বহন করে। যদি জীবন হয় বৃহত্তর শৃঙ্খলার অধীন, তবে কেন রাজনৈতিক কর্তৃত্ব সেই শৃঙ্খলার অধীন হবে না? রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য তাই মহাজাগতিক শৃঙ্খলার ন্যায়নীতিকে সমাজে প্রতিফলিত করা। রাষ্ট্রের নৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়- সেসব মূলনীতির প্রতি আনুগত্যে, যেগুলো মানুষের পক্ষপাতের ঊর্ধ্বে।

শাসকের কাজ- এই শৃঙ্খলার প্রতিফলন। সমাজে ন্যায় ও ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে বজ্র কঠোরতা। এখানে শাসক কোনো মানবীয় চুক্তির দাস নন; বরং তিনি মহাজাগতিক ন্যায়বিধানের রক্ষক।

জনগণের সম্মতি রাজনৈতিক প্রয়োজন বটে। কিন্তু এটি কি চূড়ান্ত মানদণ্ড? সংখ্যাগরিষ্ঠ যদি অনৈতিক হয়? সম্মতি যদি অজ্ঞতাপূর্ণ হয়? তখন রাষ্ট্র কি নৈতিকতা ত্যাগ করবে? আমাদের সংক্ষিপ্ত ও বিস্তারিত জবাব হলো- না।

অতএব, এই প্রেক্ষাপটে আইনের উৎস সম্পর্কে একটি মৌলিক পুনর্গঠনের প্রস্তাব পেশ করব। প্রস্তাবটি সরল, কিন্তু গভীর। সেটি হলো আইন মানবীয় ইচ্ছার সৃষ্টি নয়; বরং তা মহাবিশ্বের মৌলিক শৃঙ্খলা থেকে উদ্ভূত। মানুষ কেবল সেই শৃঙ্খলাকে আবিষ্কার করে এবং সামাজিক কাঠামোয় প্রতিফলিত করে।

প্রস্তাবটির দ্বারা আসলে কী বোঝাতে চাইছি? বোঝাতে চাইছি যে, ক. আইন হচ্ছে কসমিক অর্ডার। মহাবিশ্ব বিশৃঙ্খল নয়। এতে আছে ভারসাম্য (এ’তেদাল), পরিমিতি (তাসবিয়্যা), কারণ-পরিণাম (আসবাব-নতিজা), সুসামঞ্জস্য (তাওয়াফুক)। এই শৃঙ্খলা অস্তিত্বের সত্য।

মহাবিশ্বের কসমিক অর্ডার আবিষ্কারের একটি মাধ্যম হচ্ছে মানবসভ্যতা। মানুষ যেসব কসমিক সত্য খুঁজে পায়, তার সামাজিক রূপ হচ্ছে নীতি ও আইন। যেমন- জীবনের মর্যাদা, ন্যায়ের সমতা, দায়বদ্ধতা, ত্যাগ ও সংযম এবং সামগ্রিক কল্যাণ (ফালাহ)। এসব নীতিকে বলা যায় এক আদি-নৈতিক কাঠামো। এসব নীতিও মানবীয় বৌদ্ধিক সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে।

ক. আইন আবিষ্কৃত হয়, নির্মিত হয় না। এটি বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের মতো। যেমন নিউটন মধ্যাকর্ষণ আবিষ্কার করেছেন, সৃষ্টি করেননি।

তেমনি সমাজের ন্যায়নীতি মানুষের খেয়ালখুশি থেকে আসে না, বরং তা উঠে আসে গভীর ড়হঃরপ ড়ৎফবৎ থেকে। অস্তিত্বের জগতে যেসব বস্তু, ঘটনা, গুণ বা বাস্তবতা সরাসরি রয়েছে এবং কার্যকর সেগুলোর স্বরূপগত বিন্যাস বা ক্রমই হচ্ছে অনতিক অর্ডার। এখানে প্রকৃতির নিয়ম কেবল ফিজিক্যাল রুল নয়; এটি মেটাফিজিক্যাল হুকুম। মানুষ তাই আইনের স্রষ্টা নয়। মানুষ মূলত আইনকে রহঃবৎঢ়ৎবঃ করে। যে সমাজ মহাবিশ্ব ও মানবজীবনের ফিতরাত ও শরিয়তকে যত অন্তর্দৃষ্টিতে পড়তে পারে, ধারণ করতে পারে, সেখানে আইন তত বেশি সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে, ন্যায়পরায়ণ হয়।

খ. নৈতিক দর্শনে ন্যায় ও সৎ-এর একটি অবজেক্টিভ কাঠামো আছে। সুন্দর-সৎ-ন্যায় মানুষের মতের ওপর নির্ভরশীল নয়। এটি এমন বাস্তবতা, যা মানুষ দেখলেও বাস্তব, না দেখলেও; বিশ্বাস করলেও বাস্তব, না করলেও, অনুভব করলেও বাস্তব, না করলেও। এই বাস্তবতা সামাজিক মতামতের ওপর নির্ভরশীল নয়, আপেক্ষিক নয়। সে সংখ্যাগরিষ্ঠের পছন্দ দ্বারা নির্ধারিত নয়। যদি আইন সত্যিই মানুষের ইচ্ছা হতো তাহলে সংখ্যাগরিষ্ঠ যা চাইত, সেটিই হতো আইন। অধিকাংশ মানুষ যা-ই বলত, তা-ই হতো ভালো বা খারাপ। এতে ন্যায় বা সত্যের কোনো স্থিরতা থাকত না।

কিন্তু বাস্তবে তা নয়; কারণ চুরি স্বভাবগতভাবে অন্যায়। হত্যা স্বভাবগতভাবে অপরাধ। ন্যায়, দয়া স্বভাবগতভাবে ভালো। এসব সত্য মানুষের ভোটে নির্ধারিত হয়নি। এগুলো প্রতিটি সভ্যতার আগেও ছিল, শেষ সভ্যতার শেষেও এমনই থাকবে।

গ. মানুষ দুই ধরনের কিতাব পড়ে। এক. কিতাব আল-কাউন (মহাবিশ্ব)। এতে আছে গণিত, গঠন, অনুপাত, সামঞ্জস্য, ছন্দ, কারণ-পরিণাম, ভারসাম্য, প্রতীক, ইশারা, পারস্পরিকনির্ভরতা। এগুলোর মাধ্যমে প্রতিফলিত হয় কসমিক ভাষা। মহাবিশ্ব যে ভাষায় যোগাযোগ করে বা নিজেকে প্রকাশ করে- এটি হচ্ছে সেই ভাষা। দুই. কিতাবুল ওহি (আসমানী বাণী)। এতে আছে শব্দ, বাক্য, অর্থ, নৈতিকতা, বিধান, নিষেধাজ্ঞা, পরিচালনার ব্যবস্থা, ব্যাখ্যা, বাস্তব নমুনা প্রভৃতি। এটি মানুষকে দেয় নৈতিক-আইনি ভাষা ও রূপরেখা।

উভয় কিতাব ভিন্ন নয়; উভয়ই একই সত্যকে দুই ভাষায় প্রকাশ করে। কসমিক ভাষা তার গঠনগত সত্য দিয়ে কথা বলে। সে বলে, মহাবিশ্বে শৃঙ্খলা আছে, নিয়ম আছে, ভারসাম্য আছে। এতেই সে টিকে আছে; অর্থাৎ মহাবিশ্বের পাঠ মানুষকে অস্তিত্বগত অর্ডার শেখায়। ওহির ভাষা একে সমর্থন করে। ওহি মানুষকে মোরাল অর্ডারও শেখায়। মহাবিশ্ব দেখে মানুষ বুঝতে পারে- ভারসাম্য ভালো, বিশৃঙ্খলা খারাপ। কিন্তু এতে থাকে অস্পষ্টতা।

দুই ভাষা একই গন্তব্যে যায়। একটি দেখায় শৃঙ্খলা কিভাবে কাজ করে। আরেকটি শেখায় শৃঙ্খলা কিভাবে বজায় রাখতে হয়। মহাবিশ্ব ও ওহি- দু’টিই এক উৎস থেকে এসেছে। তাই কসমসের অর্ডার ও ওহির অর্ডার পরস্পরবিরোধী হতে পারে না। মানুষ দুটো কিতাবের পাঠক। সভ্যতা দুটো কিতাবের ব্যাখ্যা। আইন হবে দুটো কিতাবের সমন্বিত অনুবাদ।

ঘ. যদি আইন চিরন্তন অর্ডারের ওপর দাঁড়ায়, তাহলে রাষ্ট্র স্বেচ্ছাচারী হতে পারে না। আইন কেবল শক্তিশালীর ইচ্ছাপত্র হবে না। নৈতিকতা আইন থেকে কোনোভাবে বিচ্ছিন্ন হবে না। এর ফলে স্বৈরাচারী আইন সত্তাগতভাবে হবে অনৈতিক ও অবৈধ।

ঙ. জেরেমি বেন্থাম বা হান্স কেলসেন বলতেন- রাষ্ট্র যা বলে, যা চায়, সেটিই আইন। আমরা এর বিপরীতে আছি। কারণ আমাদের মতে, আইন রাষ্ট্র বানায় না; বরং রাষ্ট্র সেই কসমিক আইনকে সামাজিক প্রতিষ্ঠানে প্রতিফলিত করে। রাষ্ট্রের কাজ হবে সত্য আবিষ্কার করা ও যথাপ্রয়োগ নিশ্চিত করা। সত্য বানানো রাষ্ট্রের কাজ নয়। মানুষ আইন সৃষ্টি করে না, মানুষ আইন আবিষ্কার করে। মানবীয় আইন তখনই বৈধ, যখন তা মহাজাগতিক ন্যায়নীতির প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে।

লেখক : কবি, গবেষক