জুলাই চব্বিশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক উন্নয়নে দীর্ঘদিনের বিরাজমান ও বাড়ন্ত বৈষম্য (অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ উন্নয়ন, বৈদেশিক কর্মসংস্থান, কৃষি অর্থনীতি, আর্থসামাজিক রাজনৈতিক অর্থনীতি) দূরীকরণরে দাবি উঠছে। ওঠাটাই স্বাভাবিক। দেহের সব অংশ সমান সবল না হলে সুস্থ দেহমন বলিষ্ঠ হয় না। বৈষম্য বঞ্চনার বিবরেই কিন্তু পাকিস্তানের সংসার ২৪ বছরের বেশি টেকেনি। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর আজ স্বাধীন বাংলাদেশেও আঞ্চলিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে মানববন্ধন হচ্ছে। প্রতিবাদ হচ্ছে মিডিয়ায় বৈষম্যের প্রচার প্রচারণায়। জাতীয় রাজনীতিতে আঞ্চলিক বৈষম্য নিরসনের চেষ্টা প্রচেষ্টাকেও ভিন্ন আঙ্গিকে দেখা হচ্ছে। এটি সার্বিকভাবে দুঃখজনক। পীড়াদায়ক।
নিজের এলাকার উন্নতি কে না চায়? উন্নতি মানে সার্বিক উন্নতি। শিক্ষা-স্বাস্থ্য-যোগাযোগ ব্যবস্থায়, আইনশৃঙ্খলায়, কৃষিতে, সাহিত্যে সংস্কৃতিতে সর্বোপরি সবার জীবনযাপন প্রণালীতে উন্নত-অবস্থা নিশ্চিত হোক- এটি সবাই চায়। সভ্যতার বিকাশ ও এর ক্রমবর্ধমান আঙ্গিক রূপায়ণে মানুষের এই সহজাত প্রবণতা সবসময় কাজ করে। মানুষ মাত্রেই চায় তার অবস্থা ও অবস্থানের উন্নতি হোক। তার আকাক্সক্ষা ও আগ্রহ থাকে উন্নত পরিবেশের প্রতি, নিজের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, পূরণ করা হোক তার সাংবিধানিক অঙ্গীকার, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের প্রস্তাবনায় যেমনটি বিধিবদ্ধ হয়ে আছে ‘...আমরা আরো অঙ্গীকার করিতেছি যে, আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা- যেখানে সব নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার ও রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে।’
ব্যষ্টির বৈষম্যবিহীনতার আকাক্সক্ষা সমষ্টির আকাক্সক্ষায় পরিণত হয় এবং সবাই মিলে নিজেদের সার্বিক অবস্থার উন্নয়নে ব্রতী হয়। নানাভাবে, পদ্ধতি ও উপলক্ষে এই প্রত্যাশা পূরণ হয়। উদাহরণস্বরূপ সম্প্রতি সাতক্ষীরা জেলার সার্বিক উন্নয়নে মানববন্ধন, উন্নয়ন সমাবেশ আয়োজিত হয়েছে। সে সবের নির্মোহ মূল্যায়নে বোঝা যায়, আঞ্চলিক উন্নয়নে বৈষম্য দূরীকরণের দাবি জাতীয়পর্যায়ে ভাব-ভাবনার বিচার-বিশ্লেষণের বিষয়ে পরিণত করা হোক। সর্বজনীন উন্নয়ন প্রশ্নে জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে স্বচ্ছতা সুশাসন ও জবাবদিহির পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়াস সফল হোক।
নিজের মর্যাদা ও সাফল্যের প্রতি সকৃতজ্ঞ আস্থা ও শ্রদ্ধাবোধ থেকেই আসবে জাতীয় উন্নতিতে ব্রতী হওয়ার প্রেরণা। এ নিরিখে বলা যায়, দেশের আর্থসামাজিক পরিবেশ প্রেক্ষাপটে সুন্দরবনবেষ্টিত সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরার আঞ্চলিক উন্নয়নের ব্যাপারে জাতীয়পর্যায় থেকে উপেক্ষা, বঞ্চনার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর প্রয়াস জাতীয় উন্নয়ন উন্নতির স্বার্থেই প্রয়োজন। অফিস-আদালতে, ব্যবসায়, স্বাস্থ্যসেবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সর্বত্র বৈষম্য সৃষ্টির যে প্রয়াস তার বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ প্রতিবাদ যশোর-খুলনা-সাতক্ষীরাবাসীর মধ্যে জেগে ওঠার অনিবার্যতা লক্ষণীয় হয়ে উঠছে ’২৪ জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর। আগে থেকে চলে এলেও আঞ্চলিক বৈষম্য বঞ্চনা অবসানের অদম্য রাজনৈতিক অভিলাষের বিকাশ ঘটেছিল মুখ্য বিগত দেড় দশকেই (২০০৯-২৪)। এ কারণে এখন দিব্যজ্ঞানে দেখা যাচ্ছে, আঞ্চলিক উন্নয়নে ব্রতী হওয়ার দাবি-দাওয়া পেশ ও আদায়ে সোচ্চার হওয়ার যথেষ্ট অবকাশ উপস্থিত। যদিও অতি মাত্রায় আঞ্চলিকতার বশবর্তী হওয়া অবশ্যই একটি গ্রহণীয় ও নীতিসঙ্গত প্রবণতা নয়, তবে নিজ এলাকার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্য ও উপায় হিসেবে এ জাতীয় প্রয়াস প্রচেষ্টা এখন সাংবিধানিক অধিকার অর্জনের পর্যায়ে পৌঁছেছে; বরং প্রতিযোগিতার দেশে এবং বিশ্বে সম্মানজনকভাবে টিকে থাকার জন্য তা আজ প্রয়োজনীয় সত্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আঞ্চলিক সহযোগিতার আন্তর্জাতিক ফোরামগুলো গড়ে উঠেছে সেই দর্শনের ভিত্তিতেই। পশ্চাৎপদকে টেনে তুলতে হবে, অন্ধকে আলোর সন্ধান দিতে হবে, অসহায়কে সহায়তার বাণী শোনাতে হবে- এসব মহৎ বাণী ও বাক্য বাস্তবে রূপায়ণে বাধা কেন? তবে অবশ্যই তা অন্যের অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে নয়, অন্যায়ের প্রশ্রয়দানের ক্ষেত্রে নয়, বিবেক ও মনুষত্বের অবমাননা করে নয়, শ্রেয়োবোধ ও সবল কাণ্ডজ্ঞান জাগ্রত রেখে সবার সহায়তায় ব্রতী হওয়া। লক্ষ্য হওয়া উচিত উদগ্র আঞ্চলিকতা যেন দৃষ্টিকটু হয়ে না পড়ে।
২০০৭-০৮ সালে সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকার দেশের পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের উন্নয়নের সমস্যা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে একটি বিশেষ পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে। সেই কমিটির গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও পদ্মার দক্ষিণ-পশ্চিম পাড়ের জনগণ নানা কারণে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়েছে। পদ্মার অপর পারে বিশেষত, বরিশাল ও খুলনায় উন্নয়নের ছোঁয়া পড়েছে অনেক কম। এমনকি বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রেও এই অঞ্চলের লোকেরা সুযোগ-সুবিধায় অনেক পিছিয়ে। অন্য দিকে চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকার মুন্সীগঞ্জ ও বিক্রমপুরের মানুষ বিদেশযাত্রায় এগিয়ে। ফলে, খুলনা বা বরিশালের চেয়ে এসব অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, জিডিপির ২৫ শতাংশ আসে উপকূলীয় অঞ্চল থেকে। এখানে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, দু’টি প্রধান সমুদ্র বন্দর, আনব্রোকেন সি-বিচ। অথচ এই অঞ্চলের স্থায়ী উন্নয়নে কেন্দ্রীয়ভাবে কেউই বিশেষ মনোযোগী হননি। উপকূলী উন্নয়ন বোর্ড গঠনের কথা বলা হয়েছিল ল্যাগিং বিহাইন্ড কমিটির রিপোর্টে। তারপর কিছু কথাবার্তা হলেও আলোর মুখ দেখেনি সে পরিকল্পনা। তার মূল কারণ একটিই। সরকারি প্রশাসনে এই অঞ্চলের প্রতিনিধিত্বকারীদের অংশগ্রহণ শক্তিশালী ভূমিকায় ছিল না বা নেই। তাই এই অঞ্চল বরাবরই বঞ্চিত হয়ে এসেছে। আইলা বা সিডরের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষকে সীমাহীন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বোঝা যায়, এতদঞ্চলের মানুষ প্রকৃতি ও রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার দৃষ্টিতে কতটা উপেক্ষিত। সিডর ও আইলায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত ক্ষতিপূরণ পেতেও অনেক তালবাহানা, মামলা-মোকদ্দমার সমস্যা হয়েছে। সব কিছুর মূলে রয়েছে, কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা, দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি ও অঞ্চলভিত্তিক উন্নয়ন-বৈষম্য।
সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের প্রাক্কালে পরিকল্পনা কমিশন থেকে পিছিয়ে পড়া জেলার উন্নয়ন (খধমমরহম উরংঃৎরপঃং উবাবষড়ঢ়সবহঃ, ইধপশমৎড়ঁহফ ঝঃঁফু চধঢ়বৎ ভড়ৎ চৎবঢ়ধৎধঃরড়হ ড়ভ ঃযব ঝবাবহঃয ঋরাব-ণবধৎ চষধহ, চৎবঢ়ধৎবফ নু ইধুষঁষ ঐধয়ঁব কযড়হফশবৎ ধহফ গড়ড়মফযড় গরস গধযুধন) সম্পর্কে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। তার ভিত্তিতে পরিকল্পনা দলিলে বাগাড়ম্বরপূর্ণ বাক্য-বয়ানে যা বলা হয়েছিল তা অরণ্যে রোদনে পরিণত হয়েছিল তদানীন্তন সরকারের রাজনৈতিক অর্থনীতির দুর্নীতিপরায়ণতার কারণে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়- সম্প্রতি সাতক্ষীরার বৈষম্যবিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে যেসব দুষ্টক্ষত ও দূষিত দৃষ্টিভঙ্গিকে দোষারোপ করা হয়েছে তার তালিকায় প্রধানতম কয়েকটি হলো- ১. বিগত দেড় দশকে সাতক্ষীরাকে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করতে পাঁচটি সংসদীয় আসন থেকে একটি আসন ছেঁটে দেয়া হয়েছে। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এখন দু’টি উপজেলাকে একত্র করে সংসদীয় আসন করতে হয়েছে দুর্যোগপ্রবণ এই উপকূলীয় জেলায়। ২. অঞ্চলের অধিবাসীদের বিশেষ তকমা লাগিয়ে চাকরি বাকরি, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে, পদায়ন-প্রমোশন ক্ষেত্রে ন্যায্য অধিকার বঞ্চিত করা হয়েছে। ৩. দলীয় রাজনীতির দুর্বৃত্তপরায়ণতায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষাসহ অধিকাংশ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প পঙ্গু করা হয়েছে, যার কারণে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে সক্ষমতা ও সম্ভাবনার অপমৃত্যু ঘটেই চলেছে। অতীতে সাতক্ষীরায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মসূচিতে এলজিইডি, শিক্ষা অবকাঠামো নির্মাণে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পানি উন্নয়ন দফতরগুলোর যে দক্ষতা ও কার্যকারিতা ছিল ২০০৯ সালের পর বিগত দেড় দশকে তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে জানানো হয়েছে, ‘সাতক্ষীরায় মোট সড়কের দৈর্ঘ্য ১১ হাজার কিলোমিটার, যার মধ্যে পাকা রাস্তা মাত্র দুই হাজার ২৩০ কিলোমিটার বা ২০.২৭ শতাংশ। অর্থাৎ প্রায় ৮০ শতাংশ সড়ক এখনো কাঁচা। এ ছাড়া সাম্প্রতিক বাজেটে চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ না দেয়ার বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে- ‘২০২২-২৩ অর্থবছরে ১০৬.৪৬ কোটি টাকার চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৪১.৪৩ কোটি টাকা (৩৯.০৫ শতাংশ); ২০২৩-২৪ সালে ১১৮.৭৬ কোটি টাকার বিপরীতে ৪১.১৮ কোটি টাকা (৩৪.৬৭ শতাংশ); ২০২৪-২৫ সালে ১২৮.৭৬ কোটি টাকার বিপরীতে ৪৪.১২ কোটি টাকা (৩৪.২৭ শতাংশ); ২০২৫-২৬ সালে ১৪৩.৯৭ কোটি টাকার বিপরীতে মাত্র ৪০.৫১ কোটি টাকা (২৮.১৪ শতাংশ) বরাদ্দ দেয়া হয়।’ বরাদ্দকৃত অর্থও সাতক্ষীরার মাটিতে পড়েনি। অবকাঠামো উন্নয়ন বিভাগগুলো থেকে জানা যায়, জাতীয় ও আঞ্চলিক গড ফাদারদের নির্দেশনায় ২৫ টাকার প্রকল্পকে ৭৫ টাকায় বানানো হতো এবং এসব কাজে ঠিকাদাররা কাজ না করেও, কাজে ফাঁকি দিয়ে, তাদের হয়ে টাকা আগাম উঠিয়ে নিয়ে যেত। ব্র্যাক সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখিয়েছে, নব্বইয়ের দশক থেকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল কিংবা প্রভাবশালী মন্ত্রীরা শুধু নিজেদের এলাকার উন্নয়ন করেছেন। দুঃখের সাথে উল্লেখ করেছে বৈষম্যবিরোধী সুধি সমাবেশ- ‘সাতক্ষীরার জনপ্রতিনিধিরা নিজের এলাকার সার্বিক উন্নয়নে ব্যক্তি স্বার্থের বাইরে তেমন কোনো ভূমিকা বা অবদান রাখেননি; বরং নিজেরাই নিজেদের শত্রু সেজে ট্যাগ লাগিয়ে সম্ভাবনার ঠ্যাং ভেঙে দিয়েছেন। প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে বলা হয়েছে, সাতক্ষীরার উন্নয়ন ঠেকানোর জন্য বারবার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। অথচ সাতক্ষীরা থেকে সরকার যে পরিমাণ আয় করে সেই পরিমাণ ব্যয় তো দূরের কথা ধারে কাছেও করে না। শিক্ষার দিক থেকে সাতক্ষীরা অনেকটা এগিয়ে থাকলেও ইমেজ সঙ্কটে তাদের ন্যায্য কর্মসংস্থান হয় না। অবকাঠামোয় মারাত্মক বেহাল অবস্থা। সাতক্ষীরার উন্নয়নে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
এ চিত্র শুধু সাতক্ষীরার নয়; দেশের পিছিয়ে পড়া অনেক জেলার অবস্থাও তথৈবচ। ইদানীং এসব অঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষ করে অবকাঠামো উন্নয়নে ব্রতী হওয়ার অনিবার্যতা দেখা দিয়েছে। দেশের অপরাপর অঞ্চলে সুচিত উন্নয়ন কর্মপ্রয়াসে পারস্পরিক সহযোগী হওয়ার প্রয়োজনীয়তাও দেখা দিয়েছে।
সক্ষম ও সামর্থ্যবানকে এ দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেয়ার বিষয়টিও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। নিজ এলাকার কারো সফল ও উন্নতি হওয়ার পথ বাধাগ্রস্ত হয় এমন কোনো অবস্থার সৃষ্টি করা আত্মঘাতী আচরণের শামিল। গাছ বড় না হলে কিংবা তা আদৌই না বাঁচলে তা থেকে উন্নত তথা বেশি ফল প্রত্যাশা করা চলে না। প্রতিভার বিকাশ ও স্থিতিতে সহায়তা দেয়া দরকার যাতে সেই প্রতিভার দীপ্তি দীপান্বিত করতে পারে অনেক বেশি হৃদয় ও আঙ্গিনাকে। দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাধা আসে নিজেদের মধ্য থেকে। ষড়যন্ত্রের বীজ উপ্ত থাকে নিজের গৃহেই। ফলে প্রতিভার বিকাশ হয় নানা অপবাদ, বিরূপ সমালোচনা ও যড়যন্ত্রের শিকার। পরশ্রীকাতরতা, অহঙ্কার, আত্মকলহ, নীচতা ও হীনতাই এসব আচরণের কারণ। এগুলো অবশ্যই পরিতাজ্য- উদার, উন্মুক্ত, সহনশীল ও সহায়তাপ্রবণ মানসিকতা বিকাশের প্রয়োজনে।
লেখক : অনুচিন্তক