জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি এক জটিল বাঁকে এসে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ মানুষ এই সঙ্কট সৃষ্টির জন্য কমবেশি সব রাজনৈতিক দলকেই দায়ী করছে। এই সঙ্কট সমাধানে তারা দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির অগ্রণী ভূমিকা দেখতে চায়। ছোট অনেক দলের অযৌক্তিক বড় কথার জুতসই জবাব না দিয়ে নীরব থাকা সুধীমহলও সন্তুষ্ট না। অন্য দলের সৃষ্ট জটিলতার দায় কমবেশি বিএনপিকেও বহন করতে হচ্ছে। নানা ঘাত-প্রতিঘাতে অভিজ্ঞ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি মধ্যপন্থার নীতি অনুসরণ করে চলছে। মধ্যপন্থার নীতি অনুসরণ করায় বিএনপির পতাকাতলে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, সমতল, পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ সব পক্ষের মানুষ ব্যাপকভাবে সমবেত হয়েছে। বিগত কয়েকটি নির্বাচনী ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি জয়লাভ করে।
দেশে এখন নির্বাচনী হাওয়া বইছে। নির্বাচনী মৌসুম শুরু হওয়ার সাথে সাথে রঙ-বেরঙের পীর, ফকির, ঠাকুর, গণক- এমনকি তাবিজ-কবজ পার্টির আবির্ভাব দেখা যাচ্ছে। এমনকি কিছু বিশেষজ্ঞ গবেষণা অফিস খুলে বসেছে। অনেকে মাঠ জরিপের নামে তথাকথিত পর্যবেক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দফতরে নিয়মিত আনাগোনা শুরু করেছে। আগাম নির্বাচনী জরিপ, নানা পীর-ফকির ও রাশিচক্রের গণকদের অতি তৎপরতার সাথে ওয়ান-ইলেভেনের রাজনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টির কুশীলবদের কোনো যোগসূত্র আছে কি না তা রাজনীতিকরা অনুসন্ধান করে দেখতে পারেন। দুর্জনের ছলের অভাব হয় না। নানা ছলে-কৌশলে দুর্জনেরা এখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অন্দরমহলে আনাগোনা শুরু করেছে। অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দানকারী রাজনৈতিক দলসহ সব গণতান্ত্রিক দলের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ ও প্রয়োজনীয় সমঝোতা থাকা জরুরি। রাজনৈতিক দলে বিভাজনের সুযোগ নিয়ে ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবদের অনুচররা নির্বাচনের মাঠে অর্থকড়ি বিতরণ ও মনগড়া মিথ্যা প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিচ্ছে। ওই সব মৌসুমি নেতার বানানো ও কাল্পনিক কথাবার্তায় সাধারণ মানুষ বিরক্ত ও ক্ষেত্রবিশেষে বিভ্রান্ত হচ্ছে।
মাঠ অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, দলীয় হাইকমান্ডের দৃষ্টি আর্কষণে প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়ার জন্য মহল বিশেষের নিয়োজিত মৌসুমি ও সুবিধাবাদী প্রার্থীরা ভোটের মাঠে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা ও গ্রুপিং সৃষ্টি করছে। ফলে দলের সম্ভাব্য জনপ্রিয় প্রার্থীরা অনেকাংশে অসম দলীয় গ্রুপিংয়ে জড়িয়ে যাচ্ছে। বিশেষ মহল কর্তৃক সুবিধাপ্রাপ্ত মৌসুমি পাখিরা এলাকার বেকার যুবক ও কিছু ভবঘুরে মার্কা লোকদের বিভ্রান্ত করতে পারলেও রাজনৈতিক দলের কর্মী ও সমর্থকদের এদিক ওদিক নিতে পারছে না। গত ১৭ বছরের দমন-পীড়নের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য দলীয় কর্মী-সমর্থকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
দুই.
মিষ্টি ফল পাকার গন্ধে যেমন দুধপোকা আসে, রাজনৈতিক দলের জনপ্রিয়তা দেখে তেমন প্রকৃতির সুবিধাবাদীদের দলে ভেড়ার চেষ্টা বেড়েছে। বিজয়ের সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়া পেতে মাদককারবারি, চাঁদাবাজ, হাটবাজারের ইজারাদার, বালু মহাল দখলদারও যেকোনো উপায়ে রাজনৈতিক দলে অনুপ্রবেশ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের অনেকেই ভোল পাল্টে বিএনপি-জামায়াত-এনসিপিসহ আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়া পেতে উন্মুখ। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির অনেকেই সুবিধামতো আশ্রয় পেতে মরিয়া।
দেশে প্রায় ৭০ লাখ কর্মহীন ও ভবঘুরে বেকার যুবক নেশাগ্রস্ত। এদের কোনো রাজনৈতিক ও দলীয় আনুগত্য নেই। সুযোগ-সুবিধা হাতিয়ে মধু খেয়ে পরিবেশ কলুষিত করাই হতাশাগ্রস্ত এই তরুণ যুবকদের কাজ। এই বেকার যুবকরা সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ গ্রুপ এবং কোনো নেতার ছত্রছায়ায় সন্ত্রাস ও গ্রুপবাজিতে লিপ্ত। হাটবাজার, ফুটপাথ, গার্মেন্ট ঝুট, বালুমহাল, ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিসের দখল নিতে চাঁদাবাজ নেতার হয়ে কাজ করে। মাঝে মধ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে দলীয় অন্তর্কোন্দল ও গ্রুপিং করাই তাদের প্রধান কাজ।
তিন.
দুর্নীতিগ্রস্ত গ্রুপবাজ নেতারা তাদের অনুগত কর্মীদের আয়োজিত সভায় ও মাঠঘাটের বক্তৃতায় কথার ফুলঝুরি ছোটায়। তারা নিজেদের জাহির করে জিয়া পরিবার, তারেক রহমানের আশীর্বাদপুষ্ট ও বিশ্বস্ত হাতিয়ার হিসাবে। মনগড়া ভাষণ দিয়ে দলকে অনেকাংশে বিতর্কিত করে। এই সুবিধাবাদীরা দলের নীতি আদর্শ ও শৃঙ্খলা কোনোটিই মানতে নারাজ। কথার ফুলঝুরি যতই ছুটাক ভোটের বাজারে সাধারণ মানুষের কাছে এদের কোনো দাম নেই। সাধারণ মানুষ মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও গ্রুপবাজদের ঘৃণা করে। দলের আদর্শে অনুপ্রাণিত মফস্বলের প্রকৃত দলীয় নেতাকর্মীদের সাধারণ মানুষ এখনো সমীহ করে। মফস্বল থানা ও জেলা পর্যায়ে রাজনৈতিক চর্চা বজায় রাখা সম্ভব হলে মফস্বল থানা ও জেলা পর্যায়ে থেকে ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে উঠবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তৃণমূলের রাজনীতি এখন সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসায়, চাঁদাবাজ, দখলবাজদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। মাদককারবারি সন্ত্রাসী চাঁদাবাজরা এখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা বনে গেছে। রাজনৈতিক দলের তৃণমূলে শৃঙ্খলা, গঠনতন্ত্র ও দলীয় আদর্শ চর্চার অভাবে ওয়ার্ড, থানা, জেলা ও গ্রামাঞ্চল থেকে নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে না।
চিন্তাশীল সমাজ বিশ্লেষকদের এই ভয়াবহ বিপদ সম্পর্কে গবেষণা করতে হবে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
আশার কথা, দেশে অতীতে ভয়াবহ রাজনৈতিক মহাদুর্যোগ ও সঙ্কটকালে সম্ভাবনাময় জাতীয় নেতৃত্ব গড়ে ওঠার ইতিহাস আছে। মওলানা ভাসানী, শেরেবাংলা, খাজা নাজিমুদ্দিন, সোহরাওয়ার্দী, মুজিব-তাজউদ্দিন, শহীদ জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়ার মতো নেতৃত্ব মহা তুফান মোকাবেলা করেই গড়ে ওঠেন। রাজনৈতিক মহাসঙ্কট ও দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে দেশের সাধারণ মানুষ তাদের নেতৃত্বের আসনে বরণ করেন। পরবর্তীতে তারাও সফলতার সাথে দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলা করে যোগ্যতা ও দক্ষতার সাথে নিজ নেতৃত্বের ভিত্তি রচনা করে গেছেন। কেউ কেউ ক্ষমতায় যাওয়ার পর নিজের কর্মে বিতর্কিত হয়েছেন।
দেশের বর্তমান চতুর্মুখী রাজনৈতিক সঙ্কটকালে তারেক রহমান দলে ও দলের বাইরে গ্রহণযোগ্যভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করছেন। দক্ষতা ও বিচক্ষণতার সাথে জটিল রাজনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা ও সমাধানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। নির্বাসনে থেকেও তারেক রহমান গোটা বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিতে সফল হচ্ছেন।
রাষ্ট্রক্ষমতায় অনেকে যাবে-আসবে। কিন্তু দেশের জন্য এখন প্রয়োজন একজন স্টেটসম্যান। দেশের সাধারণ মানুষ আশা করে শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়ার মতো তারেক রহমান এই জাতিকে নেতৃত্ব দিন; তাদের মতোই গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রাখুন। তাহলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারেক রহমানকে বাংলাদেশের গ্রহণযোগ্য নেতা হিসেবে বরণ করবে। তারেক রহমান শুধু বিএনপির নন, তিনি বাংলাদেশের আশা ও সম্ভাবনার সারথি।
চার.
বাংলাদেশে এখনো অনেক ভালো মানুষ আছেন। শত প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তারা দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেন। যদিও দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কমিটি গঠিত হয়েছে অনেক ক্ষেত্রে বিতর্কিত লোকদের দিয়ে। এক সময় রাজনৈতিক কর্মীরা শ্রমিকের মজুরির ন্যায্য দাবিতে সংগ্রাম করত, কৃষকদের সারের দাবিতে মাঠে কাজ করত, সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য সমবায় সমিতি, পাঠাগার ও ক্লাব প্রতিষ্ঠা করত, মাদক নিরাময় কেন্দ্র গড়ে তুলত। এক শ্রেণীর সুবিধাবাদী টাউট ব্যক্তি তাদের স্বার্থ আদায়ের জন্য বেকার যুবক ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে অপব্যবহার করছে। সুবিধাবাদী টাউটদের খপ্পরে পড়ে সম্ভাবনাময় অনেক রাজনৈতিক নেতার জীবন রঙমহলের মোহে জড়িয়ে সর্বস্বান্ত করেছে। গ্রুপরাজনীতি ও প্রশাসনের চামচামি আর সুবিধাবাদীদের আধিপত্যের কারণে আদর্শবাদী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা পদে পদে লাঞ্ছিত হচ্ছেন।
দুষ্টচক্রের প্রভাবে মফস্বল, থানা, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অসংখ্য আদর্শবান নেতার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অঙ্কুরে বিনষ্ট হচ্ছে। সুবিধাবাদী ও দুর্নীতিবাজ, গ্রুপবাজ নেতাদের দাপটে আদর্শবাদী নেতাকর্মীরা কোণঠাসা অবস্থায়। গ্রুপবাজ আগাছার দল রাজনীতিকে কলুষিত করে দলকে পাপ আর দুর্নীতিতে নিমজ্জিত করে রাখতে চায়। মফস্বলের কর্মী-সমর্থক ও তৃণমূলের প্রকৃত নেতাকর্মীরাই দলের প্রাণশক্তি।
তৃণমূল নেতাকর্মীদের শ্রম ঘামে দল আজো উজ্জীবিত। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সুবিধাবাদী অসাধু ও দুর্নীতিগ্রস্ত কোটারি একটি চক্রের হাতে রাজনীতি এখনো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অসাধু চক্রের সাথে জড়িত সব ব্যক্তির হাত থেকে সাংগঠনিক দায়িত্ব সরিয়ে নিতে হবে। সংগঠনে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ও দলীয় আদর্শ চর্চার উন্মুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি ও বিশৃঙ্খলার কারণে নিবেদিতপ্রাণ রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা নিদারুণ কষ্টে আছে। চিহ্নিত গ্রুপবাজ নেতৃত্ব সরিয়ে ধীরে ধীরে গণমানুষের নেতাদের নেতৃত্বে আসতে হবে।
পাঁচ.
সাম্প্রতিককালে প্রায় সব রাজনৈতিক দলের মধ্য গ্রুপিং নামক এক ভয়াবহ ক্যান্সার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গ্রুপিংয়ের ছত্রছায়ায় দুর্বৃত্তরা রাজনৈতিক আবরণে মাদক, চাঁদাবাজি, দখল-বেদখলে লিপ্ত হয়েছে- যা দমন করতে না পারলে রাজনীতি ও সংগঠন কল্যাণের চেয়ে অকল্যাণই ডেকে আনবে। দেশের অনেক জেলা ও উপজেলার পাড়া-মহল্লা এমনকি গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ পর্যন্ত কিছু কিছু জায়গায় রাজনৈতিক দলের বিষয়ে আতঙ্কিত বোধ করছে। এই ভয়াবহ নষ্ট রাজনীতির প্রবণতা রুখতে না পারলে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না। এ কাজ বিএনপির একার নয়। সব রাজনৈতিক দলকে একসাথে ঐকমত্যের মাধ্যমে সৃষ্টি করে ঐক্যবদ্ধভাবে সামাজিক বিপর্যয় ও নৈরাজ্যের অবসান ঘটাতে হবে। সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এসব সামাজিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এ ধরনের অন্যায় অপকর্মের বিরুদ্ধে দলের নেতাকর্মীদের বারবার সতর্ক করেছে। তারেক রহমান নিজে এ ধরনের দলীয় নেতাকর্মীদের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতির প্রয়োগ করছেন।
আগামী দিনে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকেই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে হবে। মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। দেশের মানুষ চায় সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষার বাইরে কোনো অন্যায়কে যেন প্রশ্রয় না দেয়। আগামী দিনের রাজনীতিতে প্রত্যেকটি দলকেই মনে রাখতে হবে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা কী ছিল। শহীদের আত্মত্যাগ এবং আহতদের শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার মূল্য পরিশোধ করার পথ শুধু একটিই- আর তা হচ্ছে দেশে পরিচ্ছন্ন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা। একা কোনো দল বা ব্যক্তির পক্ষে তা সম্ভব নয়। তবে নেতৃত্বের দায়িত্বটা বিএনপিকেই নিতে হবে। দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং ন্যায়বিচারের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারই পারে বাংলাদেশের রাজনীতির সংস্কৃতি পাল্টে দিতে। অনেক রক্ত আর জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশকে নতুন করে সাজানোর যে সুযোগ আমরা পেয়েছি তা কাজে লাগানো প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। এমন সুযোগ এবং সম্ভাবনা জাতীয় জীবনে আর নাও আসতে পারে। এই সুযোগ যেন আমরা কোনোভাবেই হাতছাড়া না করি।
লেখক : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী