সাংবাদিক খালেদ মহিউদ্দিন পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার সাক্ষাৎকার নেয়ার কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন। এ সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে তাকে যদি জেলে যেতে হয়, তার ক্যারিয়ারের একটি রোমাঞ্চকর ঘটনা হিসেবে তিনি তা কবুল করে নেবেন। পেশাদার সাংবাদিকতার ভান করে খালেদের আওয়ামী ও হাসিনাপ্রীতি নতুন নয়; বিষয়টি সচেতন মহলের সবার জানা। এবার একটি বিশেষ সময়ে তা জানান দিতে তিনি সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিলেন। তার ওই বক্তব্য প্রচারের পরদিন তিনটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে একযোগে হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। বিপুল অর্থ ও প্রভাবের মালিক বৈশ্বিক আওয়ামী নেটওয়ার্কের কাজ এটি। খালেদ নিজে এ প্রচারণায় দলের সদস্য হয়ে থাকতে পারেন। এর আগেও আওয়ামী চক্রের পক্ষে নির্লজ্জ সেবা দিয়েছেন তিনি।
খালেদের সাংবাদিকতায় আওয়ামী পক্ষপাতদুষ্টতার বহু নজির আমরা খুঁজে পাবো। তার উদাহরণ তুলে ধরার আগে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স ও এএফপি এবং যুক্তরাজ্যে ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকায় প্রকাশিত হাসিনার সাক্ষাৎকারটি একটু দেখে নেয়া যাক। ইমেইলে নেয়া সাক্ষাৎকারে প্রশ্নের ধরন ও উত্তর সবগুলো আউটলেটে প্রায় একই। রয়টার্সের সাক্ষাৎকারটি প্রকাশের ধরন সাংবাদিকতার মানদণ্ডের মধ্যে পড়ে না। তিনি নিজের পক্ষে একাই সাফাই গাওয়ার সুযোগ নিলেন। শিরোনাম দেখে মনে হচ্ছে- তিনি একজন নির্বাসিত রাজনৈতিক নেতা। পীড়নের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তার দলকে রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
রয়টার্স শিরোনাম করেছে- ‘বাংলাদেশের শেখ হাসিনা ভোট বয়কটের হুমকি দিয়েছেন, যেহেতু তার দলকে ভোটের বাইরে রাখা হচ্ছে।’ সংবাদ সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা সাক্ষাৎকারে চারটি পয়েন্ট হাইলাইট করেছে : ১. হাসিনা বলেছেন, তার দলের লাখ লাখ সমর্থক নির্বাচন বয়কট করবেন। ২. হাসিনা প্রতিজ্ঞা করেছেন, ভারতে নির্বাসিত থাকবেন। ৩. তার দলের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো ধরনের সরকার গঠন প্রত্যাখ্যান করবেন তিনি। ৪. হাসিনা বলেন, তার দল বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরবে।
সাক্ষাৎকারে রয়টার্সের দেয়া চুম্বক অংশ হুবহু উল্লেখ করলাম এ কারণে যে, এতে বাংলাদেশে হাসিনা-সংক্রান্ত যে আলাপ-আলোচনা সেটিকে সংবাদ সংস্থাটি সম্পূর্ণ এড়িয়ে গেছে। তাদের সংবাদ উপস্থাপন দেখে বোঝার উপায় নেই, হাসিনা সদ্য বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছেন। নির্দয় এক ফ্যাসিস্ট ছিলেন। গুম-খুন করে দেশের মানুষকে অসহায় করে রেখেছিলেন। সর্বশেষ এক গণহত্যা চালিয়ে দুই হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছেন।
রয়টার্সের পক্ষে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দিল্লিø থেকে কৃষ্ণ দাশ এবং ঢাকা থেকে রুমা পাল। সংবাদ সংস্থাটি ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। কৃষ্ণ দাশ ও রুমা পাল মিলে যা করছেন, তাকে আর যাই হোক কোনোভাবেই সাংবাদিকতা বলা যায় না। এরা অনেকটা উগ্র সা¤প্রদায়িক গোষ্ঠীর পক্ষে লাঠিয়াল হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। বিজেপি ও তার শাখা সংগঠনগুলোর উদ্দেশ্য হাসিল করছেন সাংবাদিকতার আড়াল নিয়ে। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে বাংলাদেশ থেকে রুমা পাল সরাসরি ইসকনের পক্ষাবলম্বন করে খবর প্রকাশ করেছেন। সংগঠটির নেতা চিন্ময়কে আটকের সময় ইসকন চট্টগ্রামে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে হানা দেয়। তাদের আক্রমণে তখন আলিফ নামে এক তরুণ আইনজীবী প্রাণ হারান। তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আলিফকে ওই ইসকন নেতার পক্ষের আইনজীবী বলে চালিয়ে দেয় রুমা তার সংবাদ প্রতিবেদনে। অথচ তিনি ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান, উগ্র হিন্দুত্ববাদের বিপক্ষে সোচ্চার একজন মানুষ।
রুমা তার প্রতিবেদনের সমর্থনে ওই প্রতিবেদনে একজন পুলিশের বক্তব্য উদ্ধৃত করেন। আসলে ওই পুলিশ তাকে এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দেননি। চিন্ময়ের গ্রেফতারের সময় একটি ভুয়া ভিডিও ক্লিপ রয়টার্স ব্যবহার করে সূত্র হিসেবে। এটি ছিল পরিষ্কারভাবে ইসকনের প্রচারণা। মালয়েশিয়া সফরের সময় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে ভুয়া খবর তৈরি করে চালিয়ে দেন রুমা। বলা হয়, মালয়েশিয়া বাংলাদেশ মিলে মিয়ানমারে একটি যৌথ পিস মিশন পাঠাতে একমত হয়েছে। বাংলাদেশ এ ধরনের কোনো প্রস্তাব মালয়েশিয়াকে দেয়নি, এ ব্যাপারে তাদের সাথে একমত হওয়ার প্রশ্নই আসে না। আর এ খবর পাঠানো হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। সংবাদের উৎপত্তি কুয়ালালামপুর। সেখানে সংবাদ সংস্থাটির অফিস রয়েছে। প্রতিনিধি আছেন। এর আগেও রুমা বাংলাদেশ থেকে ভুয়া সংবাদ পাঠিয়েছেন। সে জন্য প্রতিবাদ করা হলেও সংবাদ প্রতিষ্ঠানটি এ জন্য কোনো ধরনের দুঃখ প্রকাশ করেনি।
হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রকাশে এটি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, রয়টার্স একজন খুনি ফ্যাসিস্টের বিচার চায় না। তারা তাকে বাংলাদেশের মাটিতে স্বাভাবিক রাজনীতি করতে দেয়ার ভারতীয় নীতির সমর্থক। রয়টার্সের বাংলাদেশ নিয়ে খবর প্রকাশে ভারতীয় নীতির ঝোঁক সা¤প্রতিক বছরগুলোতে বেশি করে দেখা গেছে। রয়টার্স একটি সংবাদ সংস্থা হয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে একপায়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঠিক ভারতীয় মিডিয়ার আচরণের সাথে যার মিল রয়েছে। এতে করে সংবাদ প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। বিগত কয়েক দশকে কিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের অধঃপতন দেখা গেছে। বিশেষত ভারতীয় উপমহাদেশের খবর প্রকাশে তা প্রতিফলিত হচ্ছে।
বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর ধীরে ধীরে এগুলো হিন্দুত্ববাদী নীতির প্রতি নমনীয় ও সমর্থক হয়ে উঠছে। নিউজ রুমগুলোতে সাংবাদিকের বদলে স্থান নিয়েছেন তাদের দলীয় প্রভাবদুষ্ট লোকেরা। হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রকাশকারী এএফপি ও দ্য ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকায় তার খানিকটা প্রভাব পড়েছে। একই দিন এভাবে সাক্ষাৎকার প্রকাশ কোনোভাবে কাকতালীয় হতে পারে না। রয়টার্সকে দেখা যাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে তারা যেন কোমরে গামছা পেঁচিয়ে নেমেছে।
রুমা একের পর এক অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভুল সংবাদ পাঠাচ্ছেন। এগুলো ছোটখাটো কোনো ভুল নয়। এ ধরনের একটি খবর প্রকাশের পর চাকরি চলে যাওয়ার কথা। অন্তত জবাবদিহির মধ্যে আসার কথা। যাতে পরবর্তীতে এমন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভুল না করেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত হাসিনার সব ধরনের বক্তব্য প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রকাশের পর রয়টার্সের বাংলাদেশ প্রতিনিধি রুমা পাল এই আদেশও লঙ্ঘন করেছেন। দেখা যাচ্ছে, তাকে কোনো ধরনের সামান্য নোটিশও করা হয়নি। সাংবাদিকতার নীতিমালা না মেনে উপর্যুপরি তিনি যে অপরাধ করে যাচ্ছেন, তাকে সীমাহীন স্বাধীনতা বলা যায়। এটি নিশ্চিতভাবে বলা যায়, কৃষ্ণ দাশ ও রুমা পালরা রয়টার্সকে ব্যবহার করে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা ভবিষ্যতে আরো জোরদার করবেন। সাংবাদিকতার স্বাধীনতার পোশাকে বরাবরের মতো তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবেন।
খালেদ প্রসঙ্গে ফিরে আসা যাক। তিনি বাংলাদেশের ‘একমাত্র নিরপেক্ষ সাংবাদিক’ যাকে হাসিনার আমলে কোনো চাপে পড়তে হয়নি। স্বাধীনভাবে সাংবাদিকতা করতে গিয়ে অনেকে যখন চরম পীড়নের শিকার হয়েছেন, তখন খালেদ ছিলেন বাংলাদেশে ভয়হীন সাংবাদিকতার উদাহরণ। তাকে যে কেউ চাপ দেয়নি এবং ভয় প্রদর্শন করেনি- এ কথা তিনি প্রায়ই বলতেন। বারবার এ কথা বলার একটি উদ্দেশ্য হলো- এ বিষয়টি প্রমাণ করা, হাসিনা স্বাধীন সাংবাদিকতা করতে দিয়েছেন। যা ছিল ফ্যাসিবাদের প্রতি সমর্থন তৈরির একটি কূটকৌশল। বাস্তবতা হচ্ছে- ওই সময় খবর প্রকাশ করতে গিয়ে বন্ধ হয়ে যায় ইসলামিক টিভি, দিগন্ত টিভি ও চ্যানেল ওয়ান। একুশে টেলিভিশনের মালিকানা কেড়ে নেয়া হয়। তাকে জেলে পোরা হয়। সংগ্রাম সম্পাদকের ওপর তার নিজ অফিসে হামলা চালানো হয়। তাকেও জেল দেয়া হয়।
দুই দফায় বন্ধ করে দেয়া হয় আমার দেশ। সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমানকে কুষ্টিয়ার আদালত প্রাঙ্গণে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে ৫০টির বেশি মানহানি মামলা দেয়া হয়। তাকে নজিরবিহীন রিমান্ডে নেয়া হয়, শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের এক ভয়াবহ স্টিমরোলার চালানো হয়। কয়েক দফায় কয়েক বছর জেল খেটেছেন তিনি। স্বাধীন সাংবাদিকতা করায় তাকে বড় ধরনের মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে। সেখানে খালেদ জায়গায় জায়গায় টকশোতে বলে বেড়াতেন, তার ওপর কোনো চাপ দেয়নি হাসিনা। এর অর্থ কী? তিনি কখনো বিডিআর হত্যা নিয়ে কথা বলেছেন, শাপলা গণহত্যা নিয়ে কিছু বলেছেন, লুট হয়ে যাওয়া ব্যাংক নিয়ে টকশো করেছেন, গুম খুন ভোটাধিকার হরণ নিয়ে সরকারের সমালোচনা করেছেন? বরং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে- বর্ষা বিপ্লবে হাসিনার বিপক্ষে দাঁড়াতে অস্বীকার করার। জার্মানির বন শহরে বাংলাদেশীরা হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিলেন। সামান্য কিছু মানুষ নগরের কেন্দ্রেও জড়ো হতেন। তারকা সাংবাদিক খালেদ তখন জার্মানির বনে ছিলেন। আন্দোলকারীরা তাকে বহু অনুরোধ করেও একবারের জন্য সেই সব জমায়েতে পাননি। আন্দোলনের স্পট ছিল তার অফিসের হাঁটা দূরত্বে।
এখনো তিনি হাসিনাকে অবলীলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন। আবার তাকে কেন খুনি বলা হবে, সেই প্রশ্নও করেন। তিনি দীর্ঘদিন কাজ করেছেন সালমান এফ রহমানের ইনডিপেনডেন্ট টিভিতে। দুর্নীতিবাজ আওয়ামী নেতা ও তাদের ফ্যাসিবাদী চক্রের সদস্যকে সৎ মানুষের সনদ দেয়ার জন্য ছিল হাসিনার দুদক। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে দুদক লোক দেখানো একটি তদন্ত করে এ সনদ দিতো। একই কাজ একটু অন্যভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে করতেন খালেদ। তার শোতে এনে দুর্নীতিবাজ নেতা, গুম-খুনের হোতা সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের সাফসুতরো করতেন। হাসিনার মাফিয়া চক্রের অন্যতম সদস্য আজিজকেও এ সুযোগ করে দেন তিনি। সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় আলজাজিরা তাকে ‘প্রাইমমিনিস্টারস ম্যান’ কুখ্যাতি দিয়ে একটি ডকুমেন্টারি বানায়। ডকুমেন্টারি পরে আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতে নিয়েছে। তাতে দেখানো হয়, হাসিনার একজন ভাড়াটে হিসেবে খাটছেন আজিজ।
কলঙ্কিত আজিজ বাংলাদেশের নিরাপত্তা মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়ার অন্যতম প্রধান কারিগর। তার পুরো পরিবার ছিল সন্ত্রাসী-খুনি। তার ভাইয়েরা নিজেদের নাম, বাবা-মায়ের নাম, ঠিকানা বদলে জন্ম সনদ, পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট বানায়। প্রেসিডেন্ট তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে খুনের দণ্ড মাফ করে দেন। তার ভাইরা রাষ্ট্রের বড় বড় সামরিক-বেসামরিক ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণকারী হয়ে যান। ওই ডকুমেন্টারিতে উঠে আসে সেনাপ্রধানের পদটি কিভাবে আজিজ অপব্যবহার করছেন। একটি ইন্টারভিউ নিয়ে এসব ব্যাপারে আজিজকে ডাহা মিথ্যা বলার সুযোগ করে দেন খালেদ। নিজের পক্ষে সাফাই গাওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে একে ব্যবহার করেন আজিজ। শাপলা গণহত্যাসহ বেশ কয়েকটি বড় রক্তপাতে যুক্ত আজিজের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের যখন প্রতিকার পাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না, আলজাজিরা যেন মজলুমের পক্ষে দাঁড়াল।
অন্য দিকে, খালেদ তাকে ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার সুযোগ করে দিলেন। এভাবে আওয়ামী লীগের বহু দুর্নীতিবাজকে তিনি তার টকশোতে নিজের ভাবমর্যাদা তৈরির সুযোগ করে দিয়েছেন। জুলাই বিপ্লবের পর পালিয়ে যাওয়া ছাত্রলীগ সভাপতিকে টকশোতে এনে প্রথম নরমালাইজ করার অপচেষ্টা চালান তিনি। সামাজিক মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়ায় তখন তিনি ওই টকশো বাতিল করতে বাধ্য হন। এবার তিনি একেবারে মাফিয়া রানীকে পাবলিক স্ফেয়ারে স্বাভাবিক করার কাজে দুষ্টচক্রের সাথে যুক্ত হলেন।
বাংলাদেশের সাংবাদিক সমাজের বড় অংশকে অনায়াশে আওয়ামীপন্থী বলা যায়। তাদের মধ্যে মোজাম্মেল বাবু, শাবান মাহমুদ, শ্যামল দত্ত, নাইমুল ইসলাম খান, ফারজানা রুপাদের মতো কয়েক ডজন আছেন, যারা হাসিনার পক্ষে লাঠি নিয়ে নামতেও দ্বিধাবোধ করেননি। এর বাইরে বিশাল একটি শ্রেণী আছে, যাদের পরিচয় সাংবাদিক হলেও প্রধানত আওয়ামী লীগের কর্মী তারা। তবে খালেদ এ দুই শ্রেণীর মধ্যে পড়েন না। তিনি আচরণে বেশ মার্জিত। সুশীল শ্রেণী গোত্রের। নিজের দলীয় পরিচয় আড়াল করতে বেশ পারদর্শী। বর্ণচোরা হয়ে সেবা দিতে পটু।
নীরবে এভাবে সেবা দেয়ার কী কারণ থাকতে পারে? বিনিময়ও কী আড়ালে নিয়ে থাকেন? তিনি ডয়েচেভেলে ছেড়ে কেন ঠিকানায় গেলেন, তা নিয়ে গুঞ্জন আছে। সাড়ে ১৫ বছরে হাসিনা ও তার মাফিয়াচক্র দেশের বিপুল সম্পদ হাতিয়ে নিয়েছে। সেটি তারা এখন পিআর কার্যক্রমে ঢালবে। বিখ্যাত তিনটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে একযোগে হাসিনার সাক্ষাৎকার ছাপানো তাদের পিআর কার্যক্রমের অংশ বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।



