জুলাই সনদ

বাস্তবায়ন, বৈধতা ও ভবিষ্যৎ

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পথে খসড়া আইনটি নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো যদি এর বাস্তবায়ন নিয়ে অর্থহীন বিতর্কে লিপ্ত থাকে, কিংবা প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে অহেতুক প্রশ্ন তুলতে থাকে, তবে তারা নিজেরাই বিপ্লবের ভিত্তি দুর্বল করে ফেলবে।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর, ২০২৫ সালের ২৮ অক্টোবর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রকাশ করল সেই খসড়া আইন, যার মাধ্যমে বাস্তব রূপ পেতে পারে জুলাই সনদ। ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ-২০২৫’ শীর্ষক প্রস্তাবিত আইনটি প্রকাশের সাথে সাথে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পর্যালোচনা ও মতামত জানতে পাঠানো হয়। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জন্য এটি একটি বিরাট অর্জন, কারণ দলটি আগে থেকে দাবি করে আসছিল, এ সনদ বাস্তবায়নে একটি সুস্পষ্ট আইনগত কাঠামো ছাড়া সনদে স্বাক্ষর করবে না। তাদের অনেক প্রস্তাব আইনটির খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- খসড়া আদেশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, এটি সংবিধানের ৯৩ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির আদেশের মাধ্যমে নয়; বরং জনগণের সাংবিধানিক ক্ষমতার ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক প্রণীত হবে। পার্থক্যটি তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এর ফলে আদেশটির বৈধতা পুরনো সাংবিধানিক কাঠামোর পরিবর্তে জনগণের বিপ্লবী ম্যান্ডেটের ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে, যা বিদ্যমান সাংবিধানিক কাঠামোর বাইরে এবং এ সংস্কার জুলাই সনদের লক্ষ্য। এনসিপি আরো একটি দিককে স্বাগত জানিয়েছে, তা হলো- জুলাই সনদ-সংক্রান্ত গণভোটে কোনো রাজনৈতিক দলের সংযোজিত ভিন্নমত বা আপত্তি অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। গণভোটে জনগণকে কেবল জিজ্ঞাসা করা হবে- তারা জুলাই সনদ অনুমোদন করেন কি না। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও এ খসড়া আইন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তবে সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি উৎসবমুখর নয়। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) স্পষ্টভাবে খসড়া আদেশের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, যুক্তি হিসেবে তারা তুলে ধরেছে, রাজনৈতিকভাবে যেসব বিষয় নিয়ে ঐকমত্য হয়েছিল, এ খসড়া আদেশ তার সীমা লঙ্ঘন করেছে। এ নিবন্ধে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার মূল সঙ্ঘাতের ক্ষেত্রগুলো ব্যাখ্যা করব এবং একই সাথে বিশ্লেষণ করব জুলাই সনদে প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো ভবিষ্যতের আইনি চ্যালেঞ্জ থেকে কিভাবে সুরক্ষিত রাখা যায়।

স্বয়ংক্রিয় বাস্তবায়ন ধারা

জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দু’টি ভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে- সংবিধান সংস্কার পরিষদকে ৯ মাসের (২৭০ দিন) মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে খসড়া আইনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানের অংশ হয়ে যাবে। এর অর্থ হলো- ৯ মাসের সময়সীমা বাধ্যতামূলক, কারণ প্রস্তাবটিতে স্পষ্টভাবে বলা আছে- সময়সীমা অতিক্রম হয়ে গেলে কী পরিণতি ঘটবে। দ্বিতীয় প্রস্তাবটি ভিন্নধর্মী। এটিতেও ৯ মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে এ ক্ষেত্রে যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সনদ বাস্তবায়ন না হয়, তার কোনো পরিণতি উল্লেখ করা হয়নি। তাত্তি¡কভাবে, এ প্রস্তাব বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে সংসদের পূর্ণ পাঁচ বছর মেয়াদ পর্যন্ত দীর্ঘায়িত করার সুযোগ সৃষ্টি করে। এ ধরনের সময়সীমা কেবল পরামর্শ বা নির্দেশমূলক হিসেবে বিবেচিত হয়, অর্থাৎ- এটি একটি দিকনির্দেশনা মাত্র, বাধ্যতামূলক নিয়ম নয়। গত রোববারের প্রবন্ধে আমরা যৌক্তিকভাবে ব্যাখ্যা করেছিলাম, আগামী নির্বাচনের পর যেই রাজনৈতিক দল সরকার গঠন করুক না কেন, তারা জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বিলম্ব করবে বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। কারণ এ সংস্কারগুলো নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা হ্রাস করবে। সে কারণে ৯ মাসের সময়সীমা লঙ্ঘনে একটি সুস্পষ্ট ও কার্যকর পরিণতি নির্ধারণ অপরিহার্য হয়ে ওঠে।

একটি বিকল্প প্রস্তাব গ্রহণ করা যেতে পারে, খসড়া আদেশে এমন একটি ধারা যুক্ত করা, যেখানে বলা থাকবে- পরবর্তী জাতীয় সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে তার দায়িত্ব সম্পন্ন না করা পর্যন্ত সাধারণ আইন প্রণয়নের কাজ করতে পারবে না। অর্থাৎ- জুলাই সনদের সংস্কারগুলো সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সাধারণ আইন প্রণয়নের বিষয়ে অগ্রসর হতে পারবেন না। এ বিধান সংসদ সদস্যদের ওপর সাংবিধানিক সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয়ে একটি কার্যকর প্রাতিষ্ঠানিক চাপ সৃষ্টি করবে।

সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বহুদিন ধরে সতর্ক করে আসছেন, যখন একটি সংসদ একই সাথে আইনসভা ও সংবিধান-প্রণয়ন পরিষদ হিসেবে কাজ করতে চায়, তখন প্রক্রিয়াটি জটিল, ধীরগতি ও রাজনৈতিকভাবে আপসপূর্ণ হয়ে পড়ে। এ ধরনের দ্বৈত ভূমিকার ফলে পাকিস্তান ও নেপালে সাংবিধানিক সংস্কার প্রক্রিয়া জটিল ও দীর্ঘায়িত হয়েছিল। সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি এড়াতে হলে অত্যন্ত জরুরি হলো- দুই ভূমিকার মধ্যে একটি স্পষ্ট বিভাজন রাখা এবং নিশ্চিত করা যে, পরবর্তী সংসদ প্রথমে জুলাই সনদের সাংবিধানিক সংস্কারগুলো সম্পন্ন করবে এবং এরপর সাধারণ আইন প্রণয়নের কাজে অগ্রসর হবে।

আনুগত্যের শপথ : জুলাই সংস্কার সুরক্ষার অঙ্গীকার

জুলাই সনদের প্রকৃত সাফল্য (যদি এবং যখন এটি শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়) নির্ভর করবে এটি আদালতে যাচাই-বাছাইয়ের সময় কতটা টিকে থাকতে পারে তার ওপর। বিপ্লবের গর্ভে জন্ম নেয়া আইন কেবল তখন টিকে থাকবে, যদি তা রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তনের মধ্যেও দৃঢ় থাকে এবং ভবিষ্যতের বিচারবিভাগীয় চ্যালেঞ্জ প্রতিহত করতে পারে। বিচার বিভাগ আবারো রাজনৈতিক প্রভাবের শিকার হতে পারে, যেমনটি হয়েছিল আওয়ামী লীগের শাসনামলে।

পক্ষপাতদুষ্ট আদালতের হাতে সাংবিধানিক সংস্কার কতটা অনিশ্চিত হতে পারে, তা আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি। এর একটি উদাহরণ হলো সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সেই ঐতিহাসিক রায়, যেখানে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করা হয়েছিল। এ সংশোধনীর মাধ্যমে অরাজনৈতিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়েছিল। রায়টি দেশজুড়ে বিস্ময় সৃষ্টি করে, কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা তখন ছিল জনগণের ব্যাপক সমর্থনপ্রাপ্ত একটি সাংবিধানিক কাঠামো। এটি প্রবর্তিত হয়েছিল এমন একসময়ে, যখন তীব্র গণ-আন্দোলনের চাপে জাতীয় সংসদকে বাধ্য করা হয় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে। পরে বহু সংবিধানবিদ এ মর্মে মতামত ব্যক্ত করেন, এ সংশোধনী কেবল একটি প্রথাগত পরিবর্তন নয়; বরং এটি জনগণের সাংবিধানিক ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ, অর্থাৎ- একটি প্রত্যক্ষ গণ-ইচ্ছার সাংবিধানিক রূপ। এর ফলে সংবিধানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে বিধান (যা ১৯৯৬ সালে যুক্ত হয়েছিল) তা ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের সমমর্যাদা লাভ করে। অর্থাৎ- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানগুলো প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা সনদের মতো নৈতিক ও রাজনৈতিক বৈধতা অর্জন করেছিল। তবু প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক তা অসাংবিধানিক ঘোষণা করতে দ্বিধা করেননি, যা বাংলাদেশের সাংবিধানিক ইতিহাসে সবচেয়ে বিতর্কিত ও আইনি বিচারে দুর্বল রায়গুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হয়। ঘটনাটিকে তাই ভবিষ্যতের জন্য একটি স্পষ্ট সতর্কবার্তা হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।

‘জুলাই সংস্কারের’ অধীনে প্রস্তাবিত প্রধান সাংবিধানিক পরিবর্তনগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে, সংবিধানের সব সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিদের (বিচারকরাসহ) জুলাই সনদকে বিশেষভাবে উল্লেখ করে সংস্কারকৃত সংবিধানের প্রতি নতুন করে আনুগত্যের শপথ নেয়া প্রয়োজন হতে পারে। এমন পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতের কোনো আদালত এ সংস্কারগুলোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করতে পারে, এ যুক্তিতে যে, এগুলো পূর্ববর্তী সাংবিধানিক কাঠামোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

যদি বিচারক ও অন্য সাংবিধানিক পদাধিকারীরা জুলাই সনদ দ্বারা পুনর্গঠিত সংস্কার করা সংবিধান রক্ষার শপথ নেন, তাহলে তা সংস্কারগুলোর আইনি ভিত্তি আরো শক্তিশালী করবে। এর মাধ্যমে তারা প্রকাশ্যে সেই বিধানগুলো রক্ষার অঙ্গীকার করবেন, অন্যথায় যা আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়তে পারত। ফলস্বরূপ, যিনি নতুন সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়েছেন, তার পক্ষে পরবর্তী সময়ে এর কোনো অংশকে অবৈধ ঘোষণা করা কঠিন হবে। কারণ এমন পদক্ষেপ তার নিজের শপথের পরিপন্থী হবে।

আইনি বয়ান নির্ধারণ

জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া-সংক্রান্ত আইনগত প্রশ্নে সংবিধানবিদদের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন স্পষ্ট। একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠ আইন বিশেষজ্ঞরা অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা ও তার কার্যক্রমের আইনগত ভিত্তি নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি। তাদের আনুষ্ঠানিক অবস্থান হলো- অন্তর্বর্তী সরকারের নেয়া সব পদক্ষেপ পরে জাতীয় সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে, তাহলে সেগুলো আইনগতভাবে বৈধতা পাবে।

মূলত, সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলটি অন্তর্বর্তী সরকারকে একটি সীমিত ক্ষমতাসম্পন্ন, অস্থায়ী প্রশাসনিক কাঠামো হিসেবে বিবেচনা করে, যার পূর্ণ সাংবিধানিক বৈধতা অনুপস্থিত। তাদের যুক্তি- যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকার প্রচলিত সংবিধানের আওতায় গঠিত হয়নি, তাই তার সব কার্যক্রম পরবর্তী সংসদের মাধ্যমে অনুমোদিত হতে হবে, অন্যথায় তা আইনত বৈধতা অর্জন করবে না। এ অবস্থান রাজনৈতিকভাবে সতর্কতামূলক হলেও, এর মাধ্যমে একটি গভীরতর টানাপড়েন প্রকাশ পায়- কিছু দলের মধ্যে জুলাই বিপ্লব এবং পরবর্তী সংস্কারের জন্ম দেয়া জনগণের সাংবিধানিক ক্ষমতা স্বীকার করার ক্ষেত্রে অনিচ্ছা বা দ্বিধা রয়েছে।

তবে অধিকতর যুক্তিসঙ্গত ও আইনত সুসংহত মত হলো- অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা জনগণের সাংবিধানিক ক্ষমতা থেকে উৎসারিত, যা জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। এ দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকারের কর্তৃত্ব পরবর্তী সংসদীয় অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল নয়; বরং তা জনগণের প্রত্যক্ষ ইচ্ছার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত, যা একটি অধিকতর শক্তিশালী সাংবিধানিক ভিত্তি প্রদান করে। যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকারের ভিত্তি জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা দ্বারা সংবলিত, সুতরাং তার কাছে সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাবনা ও বাস্তবায়নের অধিকার যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে একটি নৈতিক ও সাংবিধানিক দায়িত্ব। এ বৈধতার তাত্তি¡ক ব্যাখ্যাকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিকভাবে সমর্থন দিয়েছে।

এ বৈধতার প্রশ্নে সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছানো অত্যন্ত জরুরি। যদি মতভেদ অব্যাহত থাকে, তবে তা ভবিষ্যতে নানা আইনি চ্যালেঞ্জের পথ উন্মুক্ত করবে, বিশেষত সেই জুলাই সনদের বিরুদ্ধে, যা অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে প্রবর্তিত ও বাস্তবায়ন হচ্ছে। এমন বিতর্ক ও বিভাজন কেবল সংস্কার প্রক্রিয়া দুর্বল করবে না; বরং জুলাই বিপ্লবের অর্জনকেও বিপন্ন করে তুলতে পারে।

উপসংহার : জুলাইয়ের চেতনা অটুট রাখতে হবে

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পথে খসড়া আইনটি নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো যদি এর বাস্তবায়ন নিয়ে অর্থহীন বিতর্কে লিপ্ত থাকে, কিংবা প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে অহেতুক প্রশ্ন তুলতে থাকে, তবে তারা নিজেরাই বিপ্লবের ভিত্তি দুর্বল করে ফেলবে। এখন সময় এসেছে দলগুলোর আত্মপর্যালোচনার- কিভাবে জুলাই সনদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হয়, তা নিয়ে তাদের গুরুত্বসহকারে চিন্তা করতে হবে। অন্যথায়, যে আদর্শ ও আত্মত্যাগ জুলাই বিপ্লবকে অনুপ্রাণিত করেছিল, তা ক্রমে ম্লান হয়ে যাবে, আর বিপ্লবের সেই ত্যাগ পরিণত হবে ব্যর্থতা ও হতাশার দীর্ঘশ্বাস হিসেবে।

লেখক : বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এবং হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের নিবন্ধিত কৌঁসুলি