২০২৬ : মুসলিম উম্মাহ ও ফিলিস্তিন

নৈতিক অবস্থান থেকে উত্তরণের পরীক্ষা

যদি মুসলিম বিশ্ব এই মুহূর্তেও কার্যকর ঐক্য গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের স্মরণ করবে নীরব দর্শক হিসেবে। আর যদি সাহসী সিদ্ধান্ত নেয়- ২০২৬ ইতিহাসে লেখা থাকবে একটি মোড় ঘোরানো বছর নাম হিসেবে।

২০২৬ সাল মুসলিম উম্মাহর ইতিহাসে আরেকটি সাধারণ বছর নয়। এটি এমন সময়, যখন ফিলিস্তিন প্রশ্ন কেবল মানবিক সঙ্কট হিসেবে নয়; বরং আন্তর্জাতিক রাজনীতি, মুসলিম নেতৃত্ব ও বৈশ্বিক ন্যায়বিচারের বিশ্বাসযোগ্যতার লিটমাস টেস্ট হিসেবে হাজির হয়েছে। ২০২৩-২৫ সময়কালে গাজায় সংঘটিত ধ্বংসযজ্ঞ, লক্ষাধিক মানুষের বাস্তুচ্যুতি এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রকাশ্য লঙ্ঘন- সবকিছু মিলিয়ে ২০২৬ মুসলিম বিশ্বের সামনে একটি মৌলিক প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে : উম্মাহ কি কেবল নৈতিক প্রতিবাদে সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি কার্যকর রাজনৈতিক শক্তিতে রূপ নেবে?

ফিলিস্তিন : যুদ্ধ থেমেছে, সঙ্কট নয়

২০২৬ সালের শুরুতে এসে গাজায় পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান কিছুটা স্তিমিত; কিন্তু সঙ্কট শেষ হয়নি। বরং তা নতুন রূপ নিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের স্বপ্ন। অবরোধ, নিয়ন্ত্রিত ত্রাণ, পুনর্গঠনের নামে রাজনৈতিক শর্ত- সবমিলিয়ে ফিলিস্তিন এখন একধরনের স্থায়ী অস্থিরতার ল্যাবরেটরি।

পশ্চিমতীরে ইসরাইলি বসতি সম্প্রসারণ অব্যাহত, পূর্ব জেরুসালেমে জনতাত্তি¡ক পরিবর্তনের প্রচেষ্টা তীব্র। অর্থাৎ, ২০২৬ সালে ফিলিস্তিন প্রশ্ন আর শুধু যুদ্ধবিরতি বা মানবিক সহায়তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি সরাসরি রাষ্ট্রত্বের অস্তিত্ব সঙ্কট।

যুদ্ধপরবর্তী ভূ-রাজনীতি, শক্তির পুনর্বিন্যাস ও অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

২০২৬ সাল মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে একটি অভিঘাত-পরবর্তী (ঢ়ড়ংঃ-ংযড়পশ) পর্যায়। গাজা যুদ্ধ শুধু ফিলিস্তিনকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেনি; এটি পুরো মধ্যপ্রাচ্যের শক্তির ভারসাম্য, জোট কাঠামো ও কৌশলগত অগ্রাধিকারে গভীর ফাটল ধরিয়েছে। ফিলিস্তিন এখন আর কেবল একটি দ্বিপক্ষীয় বিরোধ নয়- এটি হয়ে উঠেছে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শক্তি-সঙ্ঘাতের কেন্দ্রীয় নোড।

২০২৬ সালে দাঁড়িয়ে প্রশ্নটি তাই শুধু ‘ফিলিস্তিনের ভবিষ্যৎ কী’ সেটি নয়; বরং প্রশ্ন হলো ফিলিস্তিনকে ঘিরে মধ্যপ্রাচ্য কোন পথে যাচ্ছে?

ফিলিস্তিন : আঞ্চলিক রাজনীতির ট্রিগার পয়েন্ট

২০২৬ সালে ফিলিস্তিন কার্যত একটি স্থায়ী অস্থিতিশীলতার উৎস। গাজা পুনর্গঠন প্রশ্নবিদ্ধ, পশ্চিমতীরে বসতি সম্প্রসারণ চলমান, আল-কুদসের স্ট্যাটাস আরো বিতর্কিত। এর ফলে ফিলিস্তিন হয়ে উঠেছে এমন একটি ইস্যু, যা-

-আঞ্চলিক জোটকে বিভক্ত করে

-অভ্যন্তরীণ জনমতকে উসকে দেয়

-আন্তর্জাতিক শক্তিকে মধ্যপ্রাচ্যে আরো গভীরভাবে জড়ায়

ফিলিস্তিন এখন সঙ্ঘাতের কারণের চেয়েও বড় সঙ্ঘাতের অনুঘটক।

ইসরাইল : সামরিক আধিপত্য, কৌশলগত একাকিত্ব

২০২৬ সালে ইসরাইল সামরিকভাবে শক্তিশালী থাকলেও কূটনৈতিকভাবে আরো বিচ্ছিন্ন। গাজা যুদ্ধের পর-

-আন্তর্জাতিক জনমত ইসরাইলের বিরুদ্ধে

-পশ্চিমা সমর্থন শর্তসাপেক্ষ

-আঞ্চলিক স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়া স্থবির

ইসরাইল এখন নিরাপত্তাকেন্দ্রিক রাষ্ট্রে রূপ নিচ্ছে, যেখানে দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সমাধানের বদলে নিয়ন্ত্রণই মুখ্য কৌশল। এই বাস্তবতা মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির সম্ভাবনাকে আরো দূরে ঠেলে দিচ্ছে।

ইরান ও ‘রেজিস্ট্যান্স এক্সিস’

২০২৬ সালে ইরান ফিলিস্তিন ইস্যুকে ব্যবহার করছে কৌশলগত লিভারেজ হিসেবে। হামাস, হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুথি- এই নেটওয়ার্ক ইরানকে দিয়েছে একটি বহুমাত্রিক চাপ সৃষ্টির ক্ষমতা।

তবে ইরানের কৌশল দ্বিমুখী-

-সরাসরি যুদ্ধ এড়ানো

-কিন্তু নিয়ন্ত্রিত উত্তেজনা বজায় রাখা

এর ফলে ফিলিস্তিন প্রশ্ন আঞ্চলিক সঙ্ঘাতে রূপ নেয়ার ঝুঁকি বহাল থাকছে, যদিও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ এখনো অনিশ্চিত।

আরব বিশ্ব : জনমত বনাম রাষ্ট্রীয় বাস্তবতা

২০২৬ সালে আরব বিশ্বে সবচেয়ে বড় বৈপরীত্য হলো- রাষ্ট্রীয় নীরবতা বনাম জনতার ক্ষোভ।

-মিসর : গাজা সীমান্তে কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ; কিন্তু রাজনৈতিক উদ্যোগ সীমিত

-জর্দান : আল-কুদস প্রশ্নে উদ্বিগ্ন, তবে নিরাপত্তানির্ভরতা বড় বাধা

-উপসাগরীয় দেশগুলো : অর্থনৈতিক রূপান্তরে ব্যস্ত, সঙ্ঘাত এড়াতে আগ্রহী

এই বাস্তবতায় ফিলিস্তিন ইস্যু আরব রাষ্ট্রগুলোর কাছে নৈতিক দায় হলেও কৌশলগত অগ্রাধিকার নয়, যা দীর্ঘ মেয়াদে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা বাড়াচ্ছে।

তুরস্ক : নৈতিক অবস্থান ও কৌশলগত হিসাব

২০২৬ সালে তুরস্ক নিজেকে ফিলিস্তিন প্রশ্নে নৈতিক কণ্ঠ হিসেবে উপস্থাপন করতে চায়; কিন্তু বাস্তবে ন্যাটো সদস্যপদ, অর্থনৈতিক চাপ ও আঞ্চলিক প্রতিদ্ব›িদ্বতা তাকে সীমাবদ্ধ করছে।

তুরস্কের ভূমিকা তাই দ্বৈত-

-বক্তব্যে কঠোর

-নীতিতে পরিমিত

এটি তুরস্ককে আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারী হিসেবে রাখলেও নেতৃত্বের জায়গায় পৌঁছাতে দেয় না।

যুক্তরাষ্ট্র : প্রভাব আছে, নিয়ন্ত্রণ কমছে

২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে এখনো প্রভাবশালী; কিন্তু একক নিয়ন্ত্রক নয়। ফিলিস্তিন প্রশ্নে-

-ইসরাইলকে সমর্থন অব্যাহত

-কিন্তু ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে

যুক্তরাষ্ট্র এখন সঙ্কট ব্যবস্থাপক, সমাধান-নির্মাতা নয়। এই শূন্যতা অন্য শক্তিকে জায়গা করে দিচ্ছে।

চীন ও রাশিয়া : সুযোগের রাজনীতি

চীন ২০২৬ সালে মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিন ইস্যুকে ব্যবহার করছে কূটনৈতিক ভারসাম্যের হাতিয়ার হিসেবে- বিশেষত আরববিশ্বের সাথে সম্পর্ক গভীর করতে। রাশিয়া, ইউক্রেন যুদ্ধের চাপ সত্ত্বেও নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী ন্যারেটিভের অংশ হিসেবে তুলে ধরছে। ফলে ফিলিস্তিন প্রশ্ন এখন মাল্টিপোলার শক্তির প্রতিযোগিতার মঞ্চ।

জ্বালানি, সমুদ্রপথ ও নিরাপত্তা

গাজা যুদ্ধের পর লোহিত সাগর, সুয়েজ রুট ও পূর্ব ভূমধ্যসাগরে নিরাপত্তাঝুঁকি বেড়েছে। ২০২৬ সালে-

-জ্বালানি পরিবহন ঝুঁকিপূর্ণ

-বীমা ও বাণিজ্য ব্যয় বাড়ছে

-সামরিক উপস্থিতি বাড়ছে

ফিলিস্তিন তাই শুধু মানবিক নয়; এটি বিশ্ব-অর্থনীতির ঝুঁকিও।

সম্ভাব্য তিনটি দৃশ্যপট (২০২৬-পরবর্তী)

১. নিয়ন্ত্রিত অস্থিরতা : যুদ্ধ নেই, শান্তিও নেই

২. আঞ্চলিক বিস্তার : লেবানন বা লোহিত সাগরে সঙ্ঘাত

৩. আংশিক রাজনৈতিক রিসেট : আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সীমিত সমাধান

সবচেয়ে সম্ভাব্য প্রথমটি, যা মধ্যপ্রাচ্যকে দীর্ঘমেয়াদি অনিশ্চয়তায় আটকে রাখবে।

মুসলিম উম্মাহ : ঐক্যের স্লোগান, বিচ্ছিন্ন কর্মপন্থা

মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা ২০২৬ সালে এসে আরো প্রকট-রাজনৈতিক বিভাজন। জনমত স্পষ্টভাবে ফিলিস্তিনের পক্ষে; কিন্তু রাষ্ট্রীয় নীতিতে সেই প্রতিফলন অসম্পূর্ণ।

ওআইসি, আরব লীগ বা আঞ্চলিক জোটগুলো ধারাবাহিক বিবৃতি দিলেও বাস্তব চাপ তৈরিতে ব্যর্থ। কেউ নিরাপত্তাচুক্তির কথা ভাবছে, কেউ জ্বালানি বাজারের, কেউ আবার পশ্চিমা অর্থনৈতিক নির্ভরতার হিসাব কষছে। ফলে উম্মাহর প্রতিক্রিয়া হয়ে উঠছে খণ্ডিত, প্রতীকী ও বিলম্বিত।

২০২৬ সালে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো- মুসলিম বিশ্ব কি ফিলিস্তিনকে আবারো কেবল একটি ‘ম্যানেজড ক্রাইসিস’ হিসেবে মেনে নেবে?

মধ্যপ্রাচ্যের পুনর্বিন্যাস ও ফিলিস্তিন

২০২৬ সাল মধ্যপ্রাচ্যের জন্যও একটি পুনর্বিন্যাসের বছর। ইরান-সৌদি সম্পর্কের নতুন বাস্তবতা, তুরস্কের আঞ্চলিক উচ্চাকাক্সক্ষা, উপসাগরীয় দেশগুলোর অর্থনৈতিক রূপান্তর- সবকিছুর মাঝখানে ফিলিস্তিন কখনো অগ্রাধিকার, কখনো দরকষাকষির হাতিয়ার।

এটাই সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রবণতা- ফিলিস্তিন ইস্যুর স্বাভাবিকীকরণ। যখন গণহত্যা খবরের শিরোনাম থেকে সরে যায়, তখন দখলদারিত্ব আরো গভীর হয়।

গ্লোবাল সাউথ ও নতুন সম্ভাবনা

তবে ২০২৬ পুরোপুরি হতাশার নয়। লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়ার অনেক দেশ ফিলিস্তিন প্রশ্নে স্পষ্ট অবস্থান নিচ্ছে। এটি একটি নতুন কূটনৈতিক জানালা খুলে দিয়েছে।

মাল্টিপোলার বিশ্বব্যবস্থায় মুসলিম দেশগুলো চাইলে জোটভিত্তিক চাপ তৈরি করতে পারে- রাষ্ট্র স্বীকৃতি, অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্যিক সীমাবদ্ধতা। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন সমন্বিত কৌশল, যা এখনো অনুপস্থিত।

অর্থনীতি ও শক্তির রাজনীতি

২০২৬ সালে মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় অব্যবহৃত অস্ত্র হলো অর্থনৈতিক শক্তি। জ্বালানি, বাণিজ্য রুট, বিনিয়োগ- সবমিলিয়ে মুসলিম দেশগুলোর সম্মিলিত ক্ষমতা বিপুল। কিন্তু এই শক্তি রাজনৈতিক নীতিতে রূপ নেয় না। ফিলিস্তিন প্রশ্নে অর্থনৈতিক লিভারেজ প্রয়োগ না করে কেবল মানবিক ত্রাণে সীমাবদ্ধ থাকা মানে হলো, লক্ষণ উপশম করা, রোগ নয়।

গণ-কূটনীতি ও তথ্যযুদ্ধ

২০২৬ সালে যুদ্ধের আরেকটি বড় ময়দান হলো তথ্য ও ন্যারেটিভ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফিলিস্তিন প্রশ্নে জনসমর্থন শক্তিশালী হলেও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সমন্বিত মিডিয়া কৌশল নেই।

ডকুমেন্টেশন, আর্কাইভ, অ্যাকাডেমিক গবেষণা, আন্তর্জাতিক জনমত গঠন- এই ক্ষেত্রগুলোতে মুসলিম উম্মাহ এখনো প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে।

২০২৬ : সিদ্ধান্তের বছর

সবকিছু মিলিয়ে ২০২৬ সাল মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি সিদ্ধান্তের বছর। এটি নির্ধারণ করবে-

আমরা কি বক্তব্যভিত্তিক নৈতিক অবস্থানে আটকে থাকব নাকি কৌশলগত ঐক্যে রূপান্তর ঘটাব।

ফিলিস্তিন প্রশ্নে নিরপেক্ষতা বলে কিছু নেই। হয় ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়ানো, নয় ইতিহাসের ভুল পাশে থাকা।

আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা : আইন আছে, প্রয়োগ নেই

২০২৬ সালে দাঁড়িয়ে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা স্পষ্ট- আন্তর্জাতিক আইন শক্তিশালীদের বিরুদ্ধে কার্যকর নয়। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নানা পর্যবেক্ষণ ও প্রক্রিয়া শুরু করলেও বাস্তবতা হলো, ভেটো রাজনীতি ও কৌশলগত মিত্রতা ন্যায়বিচারকে স্থবির করে রেখেছে।

এই বাস্তবতায় ফিলিস্তিন প্রশ্ন মুসলিম উম্মাহর জন্য শুধু একটি আবেগী ইস্যু নয়, এটি একটি সভ্যতাগত প্রশ্ন- আমরা কি এমন একটি বিশ্বব্যবস্থা মেনে নেব, যেখানে মুসলিম জীবনের মূল্য শর্তসাপেক্ষ?

উপসংহার

২০২৬ সালে ফিলিস্তিন মধ্যপ্রাচ্যের হৃদস্পন্দন। এই স্পন্দন যত অস্থির, পুরো অঞ্চল তত অস্থির। ফিলিস্তিন প্রশ্নের ন্যায়সঙ্গত সমাধান ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে কোনো টেকসই নিরাপত্তাকাঠামো সম্ভব নয়।

আজ ফিলিস্তিনকে উপেক্ষা করা মানে আগামী দিনের আরো বড় সঙ্ঘাতের বীজ বপন করা। ২০২৬ সাল তাই শুধু একটি বছর নয়- এটি মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ পথরেখা নির্ধারণের সময়।

২০২৬ সালে ফিলিস্তিন শুধু একটি ভূখণ্ড নয়; এটি মুসলিম উম্মাহর রাজনৈতিক পরিণতিকে প্রতিফলিত করছে। এই বছরই প্রমাণ হবে, উম্মাহ কেবল আবেগী জনসমষ্টি নাকি একটি সচেতন বৈশ্বিক শক্তি।

যদি মুসলিম বিশ্ব এই মুহূর্তেও কার্যকর ঐক্য গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের স্মরণ করবে নীরব দর্শক হিসেবে। আর যদি সাহসী সিদ্ধান্ত নেয়- ২০২৬ ইতিহাসে লেখা থাকবে একটি মোড় ঘোরানো বছর নাম হিসেবে।

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, দৈনিক নয়া দিগন্ত