কপোতাক্ষের কান্না

গত দুই তিন সপ্তাহে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে, উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরাতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে সাতক্ষীরার কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে।

গত দুই তিন সপ্তাহে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে, উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরাতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে সাতক্ষীরার কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে তালা উপজেলার ডুমুরিয়া, বালিয়া ও শাহজাদপুর এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল যেকোনো মুহূর্তে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, নদীর তীব্র স্রোতে তীরবর্তী বিশাল অংশ নদীতে বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে। দৈন্যদশায় সর্বস্বান্ত কপোতাক্ষ নদের এমন বিরূপ আচরণের প্রেক্ষাপট জানা দরকার। পদ্মার শাখানদী মাথাভাঙ্গা। মাথাভাঙ্গা থেকে উৎপত্তি হয় ভৈরবের। যশোরের চৌগাছার তাহেরপুর গ্রামে এই ভৈরব নদ থেকেই উৎপত্তি মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘দুগ্ধ ¯্রােতরূপী’ কপোতাক্ষ নদের, যার পানি একসময় কপোতের অক্ষির মতো স্বচ্ছ ছিল। তারপর এই নদ ঝিকরগাছা, মনিরামপুর, কেশবপুর, সাগরদাড়ী, পাটকেলঘাটা, তালা, কপিলমুনি, আগড়ঘাটা, রাড়ুলী, বড়দল, কয়রা হয়ে আড়পাঙ্গাসিয়া বা খোলপেটুয়ায় পড়ে।

একসময় কপোতাক্ষ ছিল খুবই খরস্রোতা। স্থানভেদে ৩০০ থেকে এক হাজার মিটার পর্যন্ত প্রশস্ত ছিল এর বুক। কপোতাক্ষ দিয়ে ১৯৫৩ সালেও স্টিমার চলাচল করত। এমনকি নব্বই দশকেও এই নদী দিয়ে অসংখ্য লঞ্চ, কার্গো, ট্রলার, নৌকা যাতায়াত করত। কপোতাক্ষ নদ ছিল মৎস্যসম্পদে পরিপূর্ণ। এর অববাহিকায় গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন প্রসিদ্ধ জনপদ যেখানে বসবাস শুরু করে নানা পেশার মানুষ। কিন্তু বর্তমানে নদটি ভরাট হয়ে পড়ার কারণে মৎস্যজীবীসহ নদীর ওপর নির্ভরশীল অন্যান্য মানুষের পেশা পরিবর্তন করতে হয়েছে। এ নদের কারণে পাঁচটি জেলার ১১টি উপজেলার প্রায় ৫০ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এর মধ্যে কেউ কেউ গৃহহারা, যারা নাড়ির টানে পৈতৃক ভিটামাটি আঁকড়ে ধরে আছেন তাদের বংশপরম্পরায় চলে আসা পেশা ছাড়তে হচ্ছে। একদা যে জেলে এ নদের বুকে নৌকা চালিয়ে মাছ শিকার করতেন, তাকেই আজ শুকিয়ে যাওয়া নদের দিকে তাকিয়ে হতাশার প্রহর গুনতে হচ্ছে।

এই নদের তীরে যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত, পাইকগাছার রাডুলী গ্রামে বিজ্ঞানী স্যার পিসি রায়, কপিলমুনিতে দানবীর রায় সাহেব বিনোদবিহারী সাধু, গদাইপুরে লেখক কাজী ইমদাদুল হক, আমাদি জায়গীরমহলে খান সাহেব কমরউদ্দীন আহমদ দানবীর, হাজী মেহের আলী শাহ প্রমুখ। এর পারে রয়েছে বুড়ো খা সাহেবের মাজার, কপিলমুনিতে পীর জাফর আলিয়া ও মাগুরায় পীর জয়েন উদ্দিনের মাজার। এখানে আছে হজরত খানজাহান আলীর কোনো সহযোদ্ধা নির্মিত কুড় মসজিদ। কিন্তু কপোতাক্ষের দুর্দশার সাথে এই প্রসিদ্ধ স্থান ও ব্যক্তিদের অবদানও আজ মলিন হতে বসেছে।

কপোতাক্ষের বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত করুণ ও হতাশাব্যঞ্জক। এর অপমৃত্যু এত ত্বরান্বিত হয়েছে যে, এই নদের পুনর্জীবন দান করতে গিয়ে বাংলাদেশের পরিকল্পনা কমিশনকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পোহাতে হচ্ছে অনেক দুর্ভোগ। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই নদকে এখনো বাঁচানো সম্ভব। প্রয়োজন শুধু সঠিক পরিকল্পনা ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন। তার প্রমাণ খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কের মধ্যে অবস্থিত খর্নিয়া ব্রিজের তলদেশ দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের ভরাট হয়ে যাওয়া নদীর জীবন ফিরিয়ে আনা। টিআরএম প্রকল্প বাস্তবায়ন করে এখানে এই নদের জীবন ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এখন পর্যায়ক্রমে একটার পর একটা বিলে টিআরএম প্রকল্প বাস্তবায়ন না করলে দীর্ঘদিন ধরে এই নদীর নাব্যতা টিকিয়ে একে বাঁচিয়ে রাখা যাবে না।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শিতা ও নদীর প্রবাহ সম্পর্কে সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে নদীর অবাধ প্রবাহে অপরিকল্পিত বিঘœ সৃষ্টির মাধ্যমে ভরাট হতে শুরু করে কপোতাক্ষ নদ। কপোতাক্ষ ভরাটের পেছনে বিভিন্ন জনে বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করেছেন। কিন্তু বিভিন্ন গবেষক, মনীষী এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, কপোতাক্ষ ভরাট ও জলাবদ্ধতার পেছনে একটিই প্রথম এবং প্রধান কারণ। সেটি হলো, মানবসৃষ্ট নদী বা পানি ব্যবস্থাপনা। ইতিহাসের পাতায় পাই, ১৭৯৪ সালে তাহেরপুরে ভৈরব থেকে কপোতাক্ষকে বিচ্ছিন্ন করে বাঁধ দেয়া হয়। এরপর অপরিকল্পিত বাঁধ, সেতু ও রেললাইন বসিয়ে কপোতাক্ষকে সঙ্কীর্ণকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১৮৬১ সালে কলকাতা থেকে কুষ্টিয়া পর্যন্ত রেললাইন বসানোর সময় ভৈরব নদের মুখে দর্শনায় সঙ্কীর্ণ রেলব্রিজ নির্মাণ করে কুমার, নবগঙ্গা ও চিত্রা নদীর মুখে বাঁধ দেয়া হয়। ১৮৮৩ সালে কলকাতা-খুলনা রেললাইন বসাতে গিয়ে ইছামতি, বেত্রাবতী, কপোতাক্ষ, হরিহর নদীতে ছোট ছোট ব্রিজ নির্মাণ করে নদীগুলোর গলাটিপে ধরা হয়। ১৯৩৫ সালে যশোরে ক্যান্টনমেন্ট প্রতিষ্ঠার সময় মুক্তেশ্বরী নদীতে গেট দিয়ে কপোতাক্ষ নদের পানি প্রত্যাহার করার ব্যবস্থা করা হয়। এর তিন বছর পর ১৯৩৮ সালে দর্শনায় ভৈরব নদের একটি বাঁক ভরাট করে নির্মাণ করা হয় কেরু কোম্পানির চিনিকল। এ সময় ভৈরবের অংশ বিশেষ ভরাট হওয়ায় মাথাভাঙ্গা থেকে ভৈরব বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ১৯৬০ সালে ক্রুগ মিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী ওয়াপদা গঠন, নদীশাসন, পোল্ডার, বেড়িবাঁধ, উপক‚লীয় বাঁধ ও ¯øুইস গেট নির্মাণ করে প্লাবনভ‚মি থেকে নদীকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। আর কপোতাক্ষ যখন মুমূর্ষু তখন এক শ্রেণীর মানুষ মরিয়া হয়ে তার জায়গা দখল করতে শুরু করে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক নদী ব্যবস্থাপনা আইন লঙ্ঘন করে ভারতের ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ ও ভারত বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ৫৪টি অভিন্ন নদীতে ভারত কর্তৃক বাঁধ নির্মাণের ফলে পদ্মার পানিপ্রবাহ থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সব নদী বঞ্চিত বা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এত অত্যাচারের পর কপোতাক্ষের বেঁচে থাকার আর কোনো কারণই ছিল না।

কপোতাক্ষ ভরাটের এসব মূল কারণ। এ ছাড়াও কিছু কারণ আছে, যেগুলো কপোতাক্ষের ভরাট হওয়া ত্বরান্বিত করেছে। তবে, উপরের ঘটনাগুলো না ঘটলে এই কারণগুলো ঘটতে পারত না- যেমন- ১. পোল্ডার এলাকায় বেড়িবাঁধ দিয়ে মৎস্যচাষ, সমস্ত বিল, জলাশয় আবদ্ধ করে মৎস্যচাষ এবং নদীর পানি নদীতে রেখে নদীর বুকে পলি জমার অবস্থা সৃষ্টি করা। ২. সমস্ত সংযোগ খালগুলোতে জাল, পাটা, কোমর দিয়ে মৎস্য শিকার বা আহরণ। ৩. স্লুইস গেটের সামনে পেছনে পলি জমে ভরাট হওয়া। ৪. সংযোগ ও নিষ্কাশন খালে পলি জমে ভরাট হওয়া। ৫. সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়া। ৬. ভ‚মির অবনমন। ৭. প্রয়োজনের তুলনায় প্রশস্ত কালভার্ট, পাইপগেট নির্মাণ। ৮. নদীর উপরে একের পর এক পিলার ব্রিজ নির্মাণ করে নদীর স্রোতে কমিয়ে দ্রুত পলি জমতে সহায়তা করা। ৯. স্লুইস গেটের ব্যবস্থাপনার সঙ্কট। ১০. নদীতে জেগে ওঠা চর দখল করে মৎস্যঘের তৈরি করে নদীকে সঙ্কুচিত করা এবং পলি ব্যবস্থাপনা থেকে বিচ্ছিন্ন করা। ১১. নদীগুলোতে শ্যাওলা ও আগাছা জন্মে নদীর স্রোত অবরুদ্ধ করা।

কপোতাক্ষ মরে যাওয়ার ফলে এই অঞ্চলের ভ‚-প্রকৃতি, পরিবেশ (ঊহারৎড়হসবহঃ) বা প্রতিবেশ (ঊপযড় ঝুংঃবস) সম্পূর্ণ বদলে যেতে শুরু করেছে। নদীর ওপর নির্ভরতা কমার ফলে ফসলি জমির ওপর চাপ বাড়ছে। ফলে এই অঞ্চলের প্রধান প্রাণশক্তি কৃষি চরম বিপর্যয়ে পড়েছে। মরুময়তা চলছে নীরবে কিন্তু তা সত্তে¡ও বেশ দৃশ্যমান। বদলে যাওয়া প্রকৃতি হয়তো খুব শিগগিরই মানুষের প্রতি চরম বৈরী আচরণ শুরু করবে। সে জন্য পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা সাঙ্ঘাতিকভাবে শঙ্কিত।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৫০ লাখ মানুষের জীবন ও আগামী প্রজন্মের অস্তিত্ব রক্ষা, জীববৈচিত্র্য রক্ষা, সুন্দরবন রক্ষা, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষদের অর্থনৈতিক দুরবস্থায় পতিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সুপরিকল্পিত উপায়ে কপোতাক্ষ খননের উদ্যোগ নিতে হবে। সর্বোপরি দেশের একটি অংশ বিলীন বা পঙ্গু হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কপোতাক্ষ খননকাজ এগিয়ে নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আর এ জন্য বাংলাদেশের মতো গরিব দেশের পক্ষে বারবার যেমন অর্থ জোগান দেয়া সম্ভব নয়, বারবার এই কর্মযজ্ঞের আয়োজন করাও সম্ভব নয়। সুতরাং সঠিক লোক দিয়ে সঠিক পরিকল্পনা করে সঠিক পদ্ধতিতে দ্রুত কপোতাক্ষকে কার্যকরভাবে খনন করা।

কপোতাক্ষ খনন না করায় বারবার রাস্তা-ঘাট, বাড়িঘর ও কৃষি জমিতে বিপর্যয় দেখা দিচ্ছে। ২৬২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হয়ে সেনা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নদীর অবৈধ দখলদারি উচ্ছেদ করে এটি খনন করার কথা। কিন্তু তা এখনো দৃশ্যযোগ্য হয়নি। শোনা যায়, পাখি মারার বিলে টিআরএম প্রকল্পের জটিলতায় কপোতাক্ষের খননকাজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। কপোতাক্ষ এভাবে পড়ে থাকবে, খনন শেষ হবে না। এ এলাকার মানুষ বারবার জলাবদ্ধ হয়ে আর এক পরাধীনতার শিকল পরে থাকবে। তাদের মুক্তির জন্য কোনো পথ দেখা যাবে না বা হবে না, এটি মানবিক বিপর্যয়ের নামান্তর।

এ কথা প্রণিধানযোগ্য যে, আইলায় ক্ষতিগ্রস্ত কয়রা, শ্যামনগর ও দাকোপের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পুনর্বাসন ও জলমগ্ন ভ‚মি উদ্ধার করে তাদের কৃষি কাজে ফিরিয়ে আনার বিকল্প যেমন নেই, তেমনি কপোতাক্ষ খননের ব্যাপারে এলাকার সব মানুষের সচেতন ও সোচ্চার হওয়ার অবকাশ অবশ্যই আছে। মনে রাখতে হবে, কপোতাক্ষ বাঁচলে খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা বাঁচবে। নাহলে এই তিনটি জেলা পঙ্গু ও দুর্বল হয়ে পড়বে। কপোতাক্ষ নিয়ে ব্যবসায় বা রাজনীতি করা মানে নিজের অস্তিত্ব অস্বীকার করা। আপাতদৃষ্টিতে এটি লাভজনক মনে হলেও আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এটি ভয়ঙ্কর ক্ষতির কারণ। সেটি কমপক্ষে দু’টি কারণে হতে পারে- ১. আমাদের সন্তানরা আমাদের নীতিহীনতা বা অনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখে সেভাবে গড়ে উঠতে পারে, অমানুষ হতে পারে। ২. এভাবে কপোতাক্ষ নদের চর এবং বুক দখল করে একে সমতল করে ফেললে এ এলাকায় সর্বদা জলাবদ্ধতা থাকবে। ফসল বা ব্যবসায়-বাণিজ্য কিছুই হবে না। ফলে এলাকার মানুষ দরিদ্র থেকে নিঃস্ব হবে।

কপোতাক্ষকে বাঁচাতে হলে যেসব ব্যবস্থাগুলো বিবেচনায় নেয়া যায় তা হলো- ১. প্রয়োজনে লুপ কাটের মাধ্যমে (লুপ কাট হলো নদীর বাঁকগুলো কেটে পানিপ্রবাহের পথ সহজ করে দেয়া) কপোতাক্ষের উৎপত্তিস্থল তাহিরপুরের কাছাকাছি বা পাটকেলঘাটা, সাগরদাড়ীর উজানে বা ঝাপার বাঁওড়ে টিআরএম প্রকল্প বাস্তবায়ন করে কপোতাক্ষ খনন করা।

২. আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় নদী ব্যবস্থাপনা আইন কার্যকর করে ৫৪টি অভিন্ন নদীসহ ও ফারাক্কা বাঁধ থেকে পানিপ্রবাহ বাড়িয়ে পদ্মার সাথে মাথাভাঙ্গা, ভৈরব ও কপোতাক্ষের সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া। ৩. কপোতাক্ষ তীরের সব খাল-বিল, হাওর, মৎস্য চাষমুক্ত করে মুক্ত জলাশয়ে পরিণত করা। ৪. উন্নত ব্যবস্থাপনায় যেকোনো পদ্ধতিতে কপোতাক্ষ খনন করে মাটি অনেক দূরে ফেলা। ৫. সব দখলদারকে উৎখাত করে কপোতাক্ষের সীমানা পিলার স্থাপন করা। ৬. সব সংযোগ খাল, স্লুইস গেট থেকে জাল, পাটা, কোমর, পলি অপসারণ করা। ৭. সব সংযোগ খাল, স্লুইস গেটের ব্যবস্থাপনা স্বার্থান্বেষী মহলের দৌরাত্ম্যমুক্ত করা। ৮. সব স্লুইস গেট যান্ত্রিক ত্রুটিমুক্ত রাখা। ৯. কপোতাক্ষের পার্শ্ববর্তী সব নদী- বেতনা, মরিচ্চাপ, শালিখা, হাড়কুমড়া, শৈলমারী, হরি, চিত্রা, কুমার, নবগঙ্গা, বেত্রাবতী, ফুটকী, মুক্তেশ্বরীসহ পার্শ্ববতী সব নদী খনন করে সেগুলোর প্রবহমানতা নিশ্চিত করা। ১০. নদী ও খালের ওপর নির্মিত সব বাঁধ ও বাঁশের সেতু, পিলার ব্রিজ অপসারণ। ১১. নদীর ওপর ঝুলন্ত ব্রিজ নির্মাণ করা।

লেখক : সাবেক সচিব এবং এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান