হাসিনা ও তার দল কি আবার ফিরবে

বিকৃত মানসিক চিন্তায় এ ধরনের মানুষ আগেই তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন। এখন আওয়ামী লীগের পক্ষে দাঁড়াতে সুস্থ মস্তিষ্কের আর কেউ অবশিষ্ট নেই।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা |সংগৃহীত

পৃথিবীর নিকৃষ্টতম স্বৈরাচারী ছিলেন ফেরাউন। তিনি নিজেকে সর্বশ্রেষ্ঠ স্রষ্টা (আনা রাব্বুকুমুল আলা ৭৯/২৪) বলে দাবি করেছিলেন। তাকে পানিতে চুবিয়ে চরম লাঞ্ছনা দিয়ে প্রাণ হরণ করা হয়। আল্লাহ তার দেহ পচতে দেননি। সূরা ইউনুসের ৯২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘এখন আমি তোমাকে রক্ষা করব তোমার দেহে, যেন হতে পার পরবর্তী মানুষদের জন্য নিদর্শন। আর যদিও বেশির ভাগ মানুষ আমার নিদর্শন (খেয়ালই করে না) নিয়ে উদাসীন।’ মিসরের জাদুঘরে ফেরাউনের দেহ অবিকৃত রয়েছে। অথচ সেই মিসরে একের পর এক স্বৈরাচারের আবির্ভাব হচ্ছে।

বাংলাদেশে এক নারী স্বৈরাচারের আবির্ভাব ঘটে। তিনি কোনো অংশে ফেরাউনের চেয়ে কম ছিলেন না। তার নিষ্ঠুরতার কাছে বেশির ভাগ স্বৈরাচার নস্যি। ফেরাউনের সাথে শেখ হাসিনার বহুক্ষেত্রে সাদৃশ্য রয়েছে। সূরা কাছাছের ৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘কার্যত ফেরাউন পৃথিবীতে শক্তি প্রদর্শন করে তার দেশের জনগণকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করেছিল, তাদের মধ্য থেকে একটি দলকে (অত্যন্ত) দুর্বল করে রাখতো, তাদের পুত্রসন্তানদের হত্যা করতো, কন্যাসন্তানদের বাঁচিয়ে রাখতো। নিশ্চিতভাবে সে ছিল (বড় মাপের) বিপর্যয় সৃষ্টিকারী’।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সমাজ বিভক্ত করে এক চরম অস্বস্তিকর পরিবেশ কায়েম করেছিলেন। তার আমলে স্বাধীনতাবিরোধী, জঙ্গি ও রাজাকার, এসব ট্যাগ দিয়ে বহু নাগরিকের মানবাধিকার পুরোপুরি হরণ করা হয়। তাদের সম্পদ, সম্মান ও প্রাণের কোনো মূল্য ছিল না। বাড়িঘর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে তাদের উচ্ছেদ করা হয়। এমনকি বিচার পাওয়ার অধিকার হরণ করা হয়। ফেরাউন যেমন পুত্রসন্তানদের হত্যা করতেন ঠিক তেমনি শেখ হাসিনা ট্যাগ দিয়ে মানুষকে বিচারবহির্ভূত হত্যা করতেন। বরং ফেরাউনকে ছাড়িয়ে গিয়ে গুম সংস্কৃতির প্রচলন করেন। এটা কাউকে প্রকাশ্যে হত্যার চেয়েও বেশি ভয়াবহ। গুম হওয়া ব্যক্তির পরিবার তার ব্যাপারে কোনো খবর পেতো না।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় লোকজন গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারকে সর্বস্বান্ত করে দিত। ছাড়িয়ে দেয়ার কথা বলে সহায় সম্পদ লুটে নিত। এ দিকে গুপ্ত কারাগারে রেখে গুমের শিকার ব্যক্তির ওপর চালান হতো সীমাহীন অত্যাচার। চোখ বেঁধে হাতে কড়া লাগিয়ে রাখা হতো দিন-রাত। বছরের পর বছর তাদের অন্ধকার ঘরে আটকে রাখা হতো। তারা শুতে পারতেন না, বসতে পারতেন না এতটা সঙ্কীর্ণ জায়গায় রাখা হতো। সেই সঙ্কীর্ণ জায়গায় প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে হতো। সারা দেশে শেখ হাসিনা এমন বহু গুপ্ত কারাগার বানিয়েছিলেন। এর মধ্যে সবচেয়ে কুখ্যাত গুপ্ত কারাগার ছিল আয়নাঘর। শেখ হাসিনাকে কেউ লেডি ফেরাউন নাম না দিলেও নির্যাতনে ফেরাউনের নিষ্ঠুরতাও ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

দম্ভ প্রদর্শনে শেখ হাসিনা নজির সৃষ্টি করেন। মুসা আ:কে লক্ষ্য করে ফেরাউন বলেছিলেন, কোথায় তোমার স্রষ্টা। তিনি তার মন্ত্রী হামানকে নির্দেশ দিয়েছিলেন উঁচু সিঁড়ি নির্মাণ করতে। তাতে চড়ে আকাশে উঠে উঁকি মেরে দেখতে চেয়েছিলেন মুসা আ:-এর খোদাকে। দাবি করেছিলেন, মিসরের কৃষিব্যবস্থার জনক তিনি। নীলনদের অববাহিকায় জালের মতো ছড়ানো ছিটানো নদী ও খাল যার মাধ্যমে মিসরে বিপুল শস্য উৎপাদন হতো। এর জন্য একক কৃতিত্ব দাবি করতেন ফেরাউন। এ ক্ষেত্রেও শেখ হাসিনা ফেরাউনকে টেক্কা দেন। একবার তিনি বলেন, আমি ষোলো কোটি মানুষকে খাওয়াই। আবার দাবি করেন, দেশের মানুষকে তিনি ভাত মাছ খাওয়াচ্ছেন। তিনি কখন স্রষ্টার আসনে বসে গেছেন সে বোধ তার ছিল না। তার বক্তব্যে ‘আমি’ শব্দটি অত্যন্ত দৃষ্টিকটুভাবে বহুল ব্যবহার হয়েছে। স্তুতি অত্যন্ত পছন্দ করতেন শেখ হাসিনা।

প্রত্যেক অন্যায়কারীর জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি সুযোগ রাখা হয়। সেজন্য মুসা আ:কে পাঠিয়ে ফেরাউনকে সংশোধনের আহ্বান করা হয়েছিল। আল্লাহর বার্তাবাহক মুসা আ:-এর ডাকে সাড়া দেয়নি ফেরাউন। শেখ হাসিনাকে বহুভাবে সতর্ক করা হয়েছে। এ ধরনের একটি চূড়ান্ত সতর্কীকরণ ছিল মঞ্চভেঙে দলটির দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি ওবায়দুল কাদেরের ভূপাতিত হওয়া। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, দলীয় ক্যাডার এবং ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় ক্ষমতার নিরঙ্কুশ ব্যবহার করেছেন শেখ হাসিনা। শুধু শক্তি প্রয়োগে সাড়ে পনের বছর ক্ষমতায় আঁকড়ে ছিলেন। যখন কোনো সঙ্কট হয়েছে, প্রাণঘাতী অস্ত্র দিয়ে তা মোকাবেলা করেছেন। একটি আপ্ত বাক্য হলো- বন্দুকের নল শক্তির উৎস। এর প্রয়োগে শেখ হাসিনা চরম সফল্য পান। কিন্তু এর শেষপ্রান্তে কী আছে তা ভাবেননি। প্রতিটি সঙ্কট মোকাবেলা করেছেন আগের চেয়ে বেশি নিষ্ঠুরতায়। তিনি মানুষ হত্যা করে আনন্দ পেতেন।

এ ধরনের অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডের শেষে এক বিরাট অন্ধকার গহ্বর যে তার জন্য অপেক্ষা করছিল ওবায়দুল কাদেরের মঞ্চ ভেঙে পড়ার মধ্যে তার ইঙ্গিত ছিল। ঘটনাটি ঘটে ২০২৩ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে। তৃতীয় মেয়াদের শেষে আওয়ামী লীগের প্রচারণার বিষয় ছিল ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠন। মঞ্চে উঠে যথারীতি বক্তব্য আরম্ভ করেন। শুরুতে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ বলতে গিয়ে মঞ্চ ভেঙে পড়ে গেলেন। তিনি ‘স্মার্ট’ শব্দটি বলার পর ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি আর বলতে পারেননি। এর মধ্যে বিশাল মঞ্চ কয়েক ডজন নেতানেত্রীসহ অদৃশ্য হয়ে গেল। মুহূর্তে ক্যামেরায় নীলআকাশ ভেসে ওঠে। ওবায়দুল কাদের তার পার্টিসহ হারিয়ে গেছেন অতল গহ্বরে। ২০২৩ সালে ৬ জানুয়ারি নিয়তি সবাইকে জানিয়ে দিলো ওবায়দুল কাদের ও তার নেত্রী হাসিনাসহ সাঙ্গপাঙ্গের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে। নির্বোধ শেখ হাসিনা ও কাদের বিন্দুমাত্র তা অনুমান করতে পারেননি।

৫ আগস্ট পরবর্তী হাসিনার কিছু আওয়াজ পাওয়া গেলেও ভাঁড় কাদেরের টুঁ শব্দ শোনা যায় না।

জুলাই বিপ্লবের আগাম ইঙ্গিত ছিল ৬ জানুয়ারি। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের মধ্যে কেউ এমন ছিলেন না তাদের পরিণতি আগাম আঁচ করতে পারবেন। ফলে দিনে দিনে বেড়েছে দেনা। এখন দেনার দায় এতই ভারী হয়েছে যে, সে দেনা শোধের ন্যূনতম সক্ষমতাও তাদের আর অবশিষ্ট নেই।

ঐক্যবদ্ধ জাতি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। রাজনৈতিক দলের বিচারের অধিকার পাচ্ছেন আদালত। তবে দলটি এখনো নিষিদ্ধ করা হয়নি। অন্য দিকে কিছু মানুষ ক্ষুব্ধ কেন দলটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পথ তৈরি করা হচ্ছে। এরা সেসব মানুষ যারা সাড়ে পনের বছরে হাসিনার নেতৃত্বে জাতির ওপর সংঘটিত ভয়াবহ অন্যায়-অনিয়ম দুর্নীতি অপরাধের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেননি। এরা সেই সব ব্যক্তি, যারা জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে একটি বাক্যও ব্যয় করেননি। সেই এরা এখন বলছেন, এভাবে নিষিদ্ধ করা হলে আওয়ামী লীগ বিপুল শক্তি নিয়ে ফিরে আসবে। উদাহরণ হিসেবে জামায়াত শিবিরের কথা উল্লেখ করছেন।

বাস্তবতা এর সম্পূর্ণ বিপরীত হলেও এ গোষ্ঠী তা মানতে নারাজ। স্বাধীন বাংলাদেশে জামায়াত শিবির দলগতভাবে কোনো অপরাধ সংঘটন করেছে এমন নজির নেই। অন্য দিকে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে এবং ক্ষমতার বাইরে থেকে দেশের জনগণের বিরুদ্ধে ভয়াবহ সব অপরাধ করেছে। শেখ মুজিব নিজে এবং তার দলীয় লোকজন ’৭৫ সালের আগে একই অপরাধ করেছিলেন। শেখ হাসিনা কোনো অপরাধের প্রমাণ হাজির না করে গত বছর জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ করতে গিয়েছেন। বিপরীতে বিগত সাড়ে পনের বছরে পাহাড়সম অপরাধ করেছে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। ব্যাংক লুটে নেয়া, উন্নয়নের নামে বড় বড় প্রকল্প তৈরি করে সাগর চুরি, ঘুষ দুর্নীতি ও সীমাহীন সন্ত্রাসসহ হেন কোনো অপরাধ নেই করেরনি। অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ পাচারের মাধ্যমে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি শেখ হাসিনার শাসনকে চোরতন্ত্র বলে আখ্যা দিয়েছে। মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা স্তব্ধ করে দেয়া হয়। পরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচনে একচেটিয়া জবরদস্তি করা হয়েছিল, স্থানীয় নির্বাচন সম্পূর্ণ প্রহসনে পরিণত করা হয়। গুম, খুন বিচারবহির্ভূত হত্যা ও আয়নাঘর তৈরি করে দেশকে একটি নরকে পরিণত করা হয়েছে।

বিগত সাড়ে ১৫ বছরে করা অপরাধের তীব্র বোঝায় শেখ হাসিনা ও তার দল চিরতরে হারিয়ে যেতে ছিল যথেষ্ট। স্বাভাবিক ক্ষমতার পালাবদলে এসবের সুষ্ঠু বিচার হলে শেখ হাসিনা ও তার দলের তৃণমূল পর্যন্ত যে চক্র গড়ে উঠেছিল প্রায় সবাই বড় শাস্তির মুখে পড়তো। শীর্ষ নেতারা গুম খুনের দায়ে অভিযুক্ত হতেন বাকিরাও নানা অপরাধে শাস্তি পেয়ে কারাগারে জীবন কাটাতেন। দলের কোনো সদস্য অবশিষ্ট থাকতেন না দল পুনরুজ্জীবিত করতে। ’৭৫ সালের আগে দলটির কৃত অপরাধের বিচার না হওয়ার যে ভুল জাতি করেছে তার পুনরাবৃত্তির সুযোগ হতো না এবার। জুলাই বিপ্লবে হাসিনা ও তার সহযোগীরা মিলে যে গণহত্যা চালিয়েছেন তা ছিল তাদের অপরাধের বোঝার ওপর শাকের আঁটি। বোঝা এতটা ভারী যা বহনের ক্ষমতা তাদের নেই। সেখানে এ শাকের আঁটি তার চেয়ে আরো বেশি ওজন নিয়ে তাদের ঘাড়ে আপতিত হয়েছে।

জুলাইয়ের ৩৬ দিনে হাসিনা ও তার সহযোগীরা এমনসব অপরাধ করেছে, তা ক্ষমার অযোগ্য। শেখ হাসিনা সরাসরি প্রাণঘাতী অস্ত্র প্রয়োগের আদেশ দিয়েছেন সহযোগীদের। তার নির্দেশনা পেয়ে খুনি বাহিনী এমন বর্বরতা দেখিয়েছে, যা সমকালীন ইতিহাসে নিজরবিহীন। এরমধ্যে রয়েছে, স্নাইপার দিয়ে নিশানা বানিয়ে হত্যা, শরীরে ঠেকিয়ে গুলি করা, শিশুদের নিশানা বানানো, মৃত মানুষের সাথে আহত জীবিতদের পুড়িয়ে দেয়া, লাশ গুম করা। এ ধরনের আরো নানা নারকীয়তা ঘটানো হয়েছে। হাতে হাতে মোবাইল থাকায় শেখ হাসিনার করা গুরুতর সব অপরাধের ভিডিও পাওয়া যাচ্ছে। মোবাইলে তিনি যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন; সেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া গোপন সব সভায় তার অবৈধ আদেশও বেরিয়ে আসছে। তার সব অপরাধ দেশবাসীর কাছে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। এখানে অপরাধ প্রমাণে আলাদা কোনো যুক্তি তর্কের প্রয়োজন নেই। সব অপরাধের জ্বলন্ত প্রমাণ রয়েছে। বাড়তি হিসেবে হাজির জাতিসঙ্ঘের তদন্ত প্রতিবেদন। জাতিসঙ্ঘের এ প্রতিবেদন শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী নেতৃত্ব, দলীয় নেতাকর্মী এবং সহযোগী সংগঠনগুলো মানবতাবিরোধী অপরাধে অংশ নিয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারকাজ সম্পূর্ণ হলে শেখ হাসিনা ও তার সব সহযোগীর সর্বোচ্চ শাস্তি হবে। রাজনীতিতে তাদের কারো ফিরার কোনো সুযোগ থাকবে না। তৃণমূল পর্যন্ত অন্য নেতারাও অভিযুক্ত হয়ে রাজনীতির অধিকার হারাবেন নিঃসন্দেহে। দলটিকে শুদ্ধ করে সামনে আনার সুযোগ আর নেই বললে চলে। তবে আওয়ামী লীগ নামে দলটি অন্যরা চালু করতে পারবেন কি না তা দেখার বিষয়। এ ক্ষেত্রে দলটির যে রাজনৈতিক পুঁজি ছিল সেটা তারা ব্যবহার করতে পারবেন বলে মনে হয় না। মুক্তিযুদ্ধ, ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা এসব পুঁজি শেখ হাসিনা শতভাগ খেয়ে ফেলেছেন। এ আদর্শকে রীতিমতো মানুষ এখন ভয় পায়। কারণ এ বয়ান দিয়ে তারা মানুষের অধিকার হরণ করেছেন, জীবন সম্পদ সম্মান লুটে নিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধের পর পুরো বাংলাদেশে এর কোনো প্রতিবাদ দেখা গেল না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শক্ত কোনো অবস্থান না থাকার পরও সেটা হলো না। হাসিনাবিরোধীদের রাস্তায় গুলি করে লাশ ফেলার পরও বিএনপি-জামায়াতের প্রতিবাদ স্তব্ধ করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ চিরতরে হারিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত এতে পরিস্কার। তবে দলটির পক্ষে দেশের বাইরে থেকে সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। তাদের প্রচারণার উদ্দেশ্য মূলত পুরো জাতিকে ভয় দেখানো। বলতে চাইছেন আওয়ামী লীগ আবারো ভীষণ শক্তিতে ফিরবে। তখন সবার ওপর প্রতিশোধ নেয়া হবে। এখন পর্যন্ত তাদের পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন তছলিমা নাসরিন ও নিঝুম মজুমদারের মতো মানুষেরা। বিকৃত মানসিক চিন্তায় এ ধরনের মানুষ আগেই তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন। এখন আওয়ামী লীগের পক্ষে দাঁড়াতে সুস্থ মস্তিষ্কের আর কেউ অবশিষ্ট নেই।