জনপ্রশাসনকে এখন আর শুধু প্রশাসনিক কাজে নিবেদিত নিষ্ঠাবান প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র মূলত-মুখ্যত প্রশাসন ও অর্থব্যবস্থাপনার মিশেল, পারস্পরিক ও মিথস্ক্রিয়ার ব্যাপারটি তার বিভিন্ন ডিসকোর্সে ফুটে উঠে। সম্রাট অশোক বলি আর মুহাম্মদ বিন তুঘলক, শেরশাহ কিংবা মোগল সাম্রাজ্যে আবুল ফজলের বিদ্যা বাচস্পতিত্বে অর্থ ও প্রশাসনের সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গি ছিল বলে তাদের সময়কার প্রশাসনিক সাফল্যের চেয়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিষয়-আশয় প্রাধান্য পেয়েছে ইতিহাসের পাতায়। ১৭ জন অশ্বারোহীর আচমকা উপস্থিতিতে ল²ণ সেন পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন। তার প্রশাসন প্রাসাদ প্রশাসন, অভ্যন্তরে ছিল প্রচণ্ড দুর্নীতি ও দুর্বলতা। তুঘলকের যেসব কর্মকাণ্ড তার এবং তার প্রশাসনের ভরাডুবি ঘটিয়েছিল, তা তো তার পাগলামির উন্নয়ন ও রাজধানী দিল্লি থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতের দূরপ্রান্তে দেবগিরিতে স্থানান্তরের অতি উৎসাহী বিকেন্দ্রীকরণে ভূমিকার কারণে।
ভারতে ব্রিটিশ প্রশাসন অর্থনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারে ব্যতিব্যস্ত থাকলেও তারা আইনশৃঙ্খলা, বিচারব্যবস্থা ও জনকল্যাণ বা নাগরিক কল্যাণ কর্মকাণ্ডকে যতদূর সম্ভব পৃথকভাবে পরিপুষ্ট করতে পেরেছিল বলেই ১৯০ বছর এ দেশে শাসন শোষণ চালাতে পেরেছিল। আর যাই হোক, সে সময় একদলীয় শাসন, একদেশদর্শী প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি।
জালিয়ানওয়ালাবাগে জেনারেল ডায়ার নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল; কিন্তু তাকেও বিচারের সম্মুখীন করতে কসুর করেনি তদানীন্তন সরকার। বাংলাদেশকে অনেক রক্ত দিয়ে পাকিস্তানের সংসার থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছে সে-ও তো পশ্চিম পাকিস্তানিদের অর্থনৈতিক বৈষম্য, অন্তর্ভুক্তির পরিবর্তে বিচ্যুতির কাফফারার কারণে। অর্থাৎ যখন অর্থনীতি ও প্রশাসন বড্ড কাছাকাছি চলে এসেছে ভেদবুদ্ধির কারণে, দুর্নীতি যখন দুঃশাসনের প্রতিভূ হয়েছে তখন। মালয়েশিয়ার সংসার থেকে সিঙ্গাপুরকে তিন তালাক দিয়ে মিটিয়ে নিতে পেরেছে টিংকু আবদুর রহমান এবং লি কুয়াংয়ের দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে এক ফোঁটা রক্ত না ঝরিয়েই। কারণ তারা অর্থনীতিকে প্রধান্য দিলেও প্রশাসনকে তার সাথে গলাগলি করতে দেননি।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডেপুটি কমিশনারের কিংবা ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টরকে বাংলায় যখন ‘জেলা প্রশাসক’ বলা সাব্যস্ত হলো, তখন থেকে বোঝা গেল, ডাল মে কুচ কালা হ্যায়। অর্থাৎ, জেলা প্রশাসক তার প্রশাসনিক গাম্ভীর্য বৃদ্ধির জন্য অন্য সব দফতরের ওপর দাপট দেখানোর পথ নিলেন এ সুবাদে যে, তাহলে জেলার উন্নয়নে তিনিই নেতৃত্ব দেবেন, তিনিই অধিকারী এবং এ সুবাদে তিনি উচ্চপর্যায়ের কর্তাব্যক্তিদের সরাসরি দৃষ্টিতে আসতে পারেন এবং পরস্পর স্বার্থ ভাগাভাগিতে কিংবা গদিনশিন রাখতে সাহায্য-সহযোগিতায় আসতে পারেন।
বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে প্রফেসর মুজাফফর আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস রি-অর্গানাইজিং কমিটি (এএসআরসি) ও মূল ফোকাস ছিল সার্ভিস স্ট্রাকচার, ১৯৭৬ (১৯৭৭) সালে এম এ রশীদের নেতৃত্বে পে অ্যান্ড সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) দায়িত্ব ছিল সার্ভিস স্ট্রাকচার অ্যান্ড পে ইস্যুজ; ১৯৮২ সালে ব্রিগেডিয়ার এনামুল হকের নেতৃত্বে (এনাম কমিটি) বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভাগ ও দফতরের সাংগঠনিক কাঠামো পরীক্ষা-পর্যালোচনা করে, ১৯৮৩ সালে রিয়ার অ্যাডমিরাল এম এ খানের নেতৃত্বে কমিটি ফর অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ রি-অর্গানাইজেশন/রিফর্ম (সিআরআর) রি-অর্গানাইজেশন অব সাব ন্যাশনাল লেভেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সম্পর্কে প্রতিবেদন পেশ করে। ১৯৯৩ (১৯৯৫) সালে কর্নেল (রিটায়ার্ড) ওয়ালী আহমেদ এমপির নেতৃত্বে কেবিনেট কমিটির অ্যাডমিনিস্ট্র্রেটিভ রিফর্ম, ১৯৯৮ সালে (সামসুল হক কমিটি) প্রশাসক সংস্কারের প্রতিবেদন প্রণয়ন ও পেশ করেছিল। ১৯৭০-৮৪ সময়কালে প্রশাসনিক সংস্কার ১৯৭৩ ও ১৯৭৬ সালে গৃহীত সরকারি/উপদেষ্টা পরিষদে গৃহীত সংস্কার অনুযায়ী অনুসৃত হয়েছিল। ১৯৮৪ সালে রি-অর্গানাইজেশন ল’ এনাম কমিটির সংস্কার ছিল মূলত লোকবল প্রমিতীকরণ, মন্ত্রণালয়গুলোর সাংগঠনিক স্তম্ভ নির্মাণ ও প্রক্রিয়াকরণের কাজ। এটি যথাযথভাবে অনুসৃত হয়েছিল ১৯৯৯-২০০০ সাল অবধি। কিন্তু শামসুল হক কমিটির না প্রতিবেদন, না কার্যক্রম ও তার দর্শন পরবর্তীকালে অনুসরণের উদ্যোগ দেখা যায়নি।
১৯৯৬ সালে জনতার মঞ্চ গঠন, যেখানে কর্মরত সিভিল সার্ভিসদের সশরীরে ও ভাবগতভাবে উপস্থিতির মাধ্যমে সিভিল সার্ভিসের তথ্য জনপ্রশাসনের ‘ঘরের বাহির’ হওয়ার সংস্কৃতির উদ্ভব ঘটে। এখান থেকে প্রশাসন দলীয়করণের খপ্পরে পড়া শুরু হয়। শুরু হয় একেক সরকারের আমলে হিরো ও জিরোকরণ প্রক্রিয়া। ১৯৯৬-২০০৬ সাল পর্যন্ত সময়ে সরকার ও সরকারবিরোধীপন্থী হওয়ার প্রতিযোগিতা ও পরস্পরের অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০০১-০৬ সালে বিরোধী পক্ষের কর্মকর্তাদের ওএসডি ও বাধ্যতামূলক অপসারণ, অবসর দেয়ার পরিমাণ আকার ও ব্যাপ্তিতে বাড়তে থাকে।
২০০৯-২৪ সালে একটানা ১৫ বছর এক সরকার ক্ষমতায় থাকায়, এ সময় প্রায় এক হাজার ৪০০ উচ্চ-মধ্যপর্যায়ের কর্মকর্তাকে বিপক্ষীয় ট্যাগ লাগিয়ে ওএসডি, অবসর দেয়া হয়। তাদেরকে বসিয়ে বসিয়ে বেতন দেয়া হয় এবং ওএসডি হিসেবে ১০-১১ বছর চাকরিকাল শেষ করে তারা অবসরে যান। এ সময়ে প্রায় ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি বঞ্চিত রাখা হয়। জনপ্রশাসনে মেধাশূন্য করার ক্ষেত্রে সুকৌশলে প্রণীত এই প্রথা সম্ভবত ইতিহাসে বিরল। ওএসডি, বাধ্যতামূলক অবসর ও পদোন্নতি বঞ্চিত করে দলীয় অফিসারদের মুহুর্মুহু পদোন্নতি ও পুনর্বাসন করা হয়।
স্থলাভিসিক্তকরণসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সব ঊর্ধ্বতন পদগুলোর স্ট্রেংথ চার-পাঁচগুণ বাড়িয়ে পদোন্নতির পথ সুগম করা হয়। কিন্তু কাজের পরিধি একই থাকায় অধিকাংশ অফিসারকে ইনসিটো করা হয়। উপসচিবের ডেস্কে যুগ্ম সচিব, এমনকি অতিরিক্ত সচিবকে বসে কাজ করতে হয়। কাজের মান না বাড়লেও তাদেরকে শুদ্ধাচার ও সুশাসন পদক দিয়ে হালাল করা হয়। মন্ত্রণালয় এবং বিভাগগুলোর কাজ ও দায়িত্ব রুলস অব বিজনেসে লেখা থাকে ও প্রতি বছর সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সাথে মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোর মধ্যে কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। সচিব বিভাগীয় কমিশনারদের সেরা কর্মসম্পাদনকারী হিসেবে পদক ও সনদ দেয়া হয়। অনুগত ও বশংবদ পুলিশ বাহিনী কর্মকর্তাদের পুলিশ পদক বিতরণের হিড়িক পড়ে। সরকারের দুর্নীতি দমন সহায়তাকারী মন্ত্রণালয় প্রধানদের প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এমনকি বিদেশী ভালো/লোভনীয় পদে এমনকি তাদেরকে সংসদে ঠাঁই দিয়ে মন্ত্রী মর্যাদায় আনার টোপ বিলানো হয়। এমনকি ট্যাগ লাগিয়ে অফিসারদের ওএসডি করে কর্মরতদের সামনে অযৌক্তিকভাবে হলেও সরকারের আনুগত্য প্রকাশে বাধ্য করা হয়। জনপ্রশাসনের মধ্যে আনুগত্য প্রদর্শন, অন্ধ অনুসরণ ও তোষামোদির এক অদ্ভুত অভিনব ও অদম্য সংস্কৃতি চালু হয়। যা জনপ্রশাসনের ভাবগাম্ভীর্য, নিরপেক্ষতা ও নিষ্ঠাকে প্রশ্নের সম্মুখীন করে। খোদ জনপ্রশাসনে বিভেদ, বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করে।
বিগত বছরগুলোতে দেশে ব্যাংক ও ব্যাংকের শাখা অনেক বেড়েছে। আর্থিক সেবা প্রদানের হার বেড়েছে দুই-তিনগুণ। তবে দেশের মোট জনসংখ্যা ও পরিধির তুলনায় আর্থিক সেবা প্রদানের হার পর্যাপ্ত নয়। ক্ষুদ্রঋণের সাথে সম্পৃক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিধি কিছুটা বাড়লেও ব্যাংকিং কাঠামোয় মানুষকে সেবা দেয়া পুরোপুরি সম্ভব হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে সব আর্থিক খাতকে ব্যাংকিং কাঠামোয় সেবা বাড়াতে মনোযোগী হওয়া দরকার ছিল বা আছে।
যদিও সবার ধারণা, আমাদের আর্থিক সেবা প্রদানের হার অনেক বেড়েছে। কিন্তু দেশে পাঁচ হাজারের অধিক ইউনিয়নের তুলনায় ৫৫টি ব্যাংকের মোট শাখা ৯ হাজার। শহরকেন্দ্রিক ব্যাংকের শাখা বেশি হওয়ায় অনেক ইউনিয়নে কোনো ব্যাংকের শাখা নেই। প্রতিটি ইউনিয়নে ৭০০-৮০০ পরিবার বাস করলেও একটি বা দু’টির বেশি ব্যাংকের সেবা তারা পাচ্ছে না।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম পূর্বশত হলো অর্থায়নের প্রবৃদ্ধি। ঋণ, সঞ্চয় ও বীমার মাধ্যমে আর্থিক সেবা বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থায়নের প্রবৃদ্ধি ঘটাতে হয়। দেশে ব্যাংকের সংখ্যা ও শাখা বাড়লেও ব্যাংকের সাথে সামগ্রিক জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা বাড়ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং, পথশিশুদের ব্যাংক হিসাব, মোবাইল ব্যাংকিং ও ১০ টাকায় কৃষকের ব্যাংক হিসাব খোলার মাধ্যমে নতুন নতুন পদক্ষেপ নিলেও তা খুব একটা সফলতা দেখাতে পারেনি। দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার মধ্যে মাত্র ৯ শতাংশ ব্যাংক থেকে ঋণসেবা নেয়, সঞ্চয় ও অন্যান্য সেবাসহ যা ৫৪ শতাংশ। এর মধ্যে অধিকাংশই পেশাজীবী, উচ্চবিত্ত ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠী। শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে মাত্র ২৫ শতাংশ ব্যাংকিং সেবার সাথে যুক্ত। তবে গ্রামীণ ব্যাংকসহ ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে মানুষের যোগাযোগ বাড়ছে।
ক্ষুদ্রঋণে বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় এগিয়ে। তবে ক্ষুদ্রঋণের কাঠামোগত পরিবর্তন জরুরি। একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীর পক্ষে ঋণ নিয়ে তা দিয়ে ব্যবসায় করে এক বছরের মধ্যে পরিশোধ করা সম্ভব নয়। ক্ষুদ্রঋণের পরিমাণ ও তা পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো উচিত।
দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূল ধারায় নিয়ে আসার জন্যই অর্থায়ন আবশ্যক। এ ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতাদের কাজের ক্ষেত্র, ব্যবসায় প্রসারের কৌশল ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ জরুরি। আমাদের এখানে আর্থিক সেবা সম্প্রসারণের আরো সুযোগ রয়েছে। আর্থিক সেবায় নতুন নতুন পণ্য অর্থাৎ, পরিষেবার বৈচিত্রায়নে নজর দেয়া দরকার। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, আর্থিকভাবে সচ্ছল অঞ্চলে ব্যাংক হিসাবধারীর সংখ্যা বেশি এবং অপেক্ষাকৃত দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকায় তা আরো কম। এ অবস্থায় ব্যাংকগুলোকে নতুন গ্রাহক বাড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিস্তৃতি ঘটাতে হবে অপেক্ষাকৃত দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকায়। ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও তাদের কার্যক্রমে আর্থিক সেবা গ্রহণের হার তেমন বাড়ছে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানামুখী পদক্ষেপের ফলে আর্থিক অন্তুর্ভুক্তিতে সাফল্য দাবি করা হলেও সেবার বিস্তৃতি কাক্সিক্ষত মাত্রায় হচ্ছে না। অধরা সাফল্য ছুঁতে নানা উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ আসছে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে। ব্যাংকগুলোর শহর ও গ্রামে শাখা খোলার নিয়ম অনেক সময়ই মানা হচ্ছে না। তৃতীয় প্রজন্মের ব্যাংকগুলোও এ অনুপাত মানছে না। কেন অধিক সংখ্যক মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনা যাচ্ছে না বা এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর দুর্বলতা কোথায়, তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। আর্থিক খাতের সুফল ও সংশ্লিষ্ট সেবা সমাজের পিছিয়ে পড়াদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া গেলে সম্পদ বণ্টন থেকে শুরু করে অন্যান্য কাজও দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। এতে অর্থনীতির গতি বাড়বে, যা প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর আর্থিক পরিস্থিতি ক্রমেই যেভাবে অবনতি হচ্ছিল তা থামানো যাচ্ছে না। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অনাদায়ী ও খেলাপি ঋণ আদায় হচ্ছে না। ফলে মূলধন ঘাটতিসহ নানামুখী সমস্যায় পড়ছে সোনালী, রূপালী, বেসিক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-বিডিবিএলসহ সরকারি মালিকানার সব ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো শীর্ষ ঋণখেলাপির কাছ থেকে ঋণ আদায় করতে পারছে বলে মনে হয় না। ব্যাংকগুলোর লোকসানি শাখা বেড়েই চলেছে।
অন্য দিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সাথে পারফরম্যান্স কন্ট্রাক্টে দেয়া প্রতিশ্রুতিও অর্জন করতে পারছে না অধিকাংশ ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ফলে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক থেকে টাকা উধাও হয়ে যাওয়া, সাগর চুরি শুধু ব্যাংকগুলোকে নয়, গ্রাহক, শিল্পোদ্যোক্তাসহ গোটা অর্থনীতিকে পথে বসিয়েছে।
লেখক : উন্নয়ন অর্থনীতির বিশ্লেষক



