আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘোষণা করা হয়েছে। মোটাদাগে এই নির্বাচন দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড স্থাপন করতে যাচ্ছে। তবে সম্প্রতি তিনজন নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে হওয়া সব নির্বাচনের মধে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হবে।’ (নয়া দিগন্ত, ৩০ আগস্ট ২০২৫) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল আশা প্রকাশ করেছেন, ‘এবারের নির্বাচন দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দরতম নির্বাচন হবে।’ অবশ্যই এবারের নির্বাচন ইতিহাসের সুন্দরতম নির্বাচন না হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। বিএনপি ও জামায়াতের বিগত ১৬ বছরের আন্দোলন, ফ্যাসিস্ট সরকারের সীমাহীন নির্যাতন, জেল-জুলুম, গুম-খুন ও শহীদের লম্বা সারি এবং সর্বশেষ ৩৬ দিনের ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের ফসল পেতে হলে হতে হবে একটি সুষ্ঠুতম নির্বাচন। এর বাইরে জাতি অসুন্দর কোনো নির্বাচনের ভার কোনোভাবেই বহন করতে পারবে না।
নির্বাচনের পরিবেশ : একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্নের জন্য বেশ কয়েকটি স্টেকহোল্ডার বা পক্ষ থাকে। সরকার, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রাজনৈতিক দলগুলো মিলে নির্বাচনী অংশীদার তৈরি হয়। সরকারের ‘স্ট্রংউইল’ বা কঠোর ইচ্ছাই হলো সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রধান উপাদান। কিছু ব্যত্যয় দেখা গেলেও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজনে অদ্যাবধি সরকারের ইচ্ছাশক্তিকে কঠোরই মনে হচ্ছে। কিন্তু সরকারের ইচ্ছাই যথেষ্ট নয়; সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমলাদের মনের উদ্দেশ্যও আরেকটি বড় উপাদান। তৃণমূলের কর্মকর্তারাই প্রশাসনের কেন্দ্রের উদ্দেশ্য সফল করে থাকেন। এই প্রশাসন সাধারণত বৃষ্টির দিকেই ছাতা ধরে। অর্থাৎ আমাদের সংস্কৃতি মোতাবেক প্রশাসন আগেই বুঝে ফেলে, কারা ক্ষমতায় আসতে পারে এবং সেভাবেই হেলে পড়ে। তবে নির্বাচন কমিশনকে এখনো যাচাই করার সুযোগ আসেনি। দু’-একটি ব্যত্যয় ছাড়া এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ভোটের আন্তরিকতা প্রকাশ করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর অনেকটা নির্ভর করে নির্ভেজাল নির্বাচন। তারা অবাধ ও নিরপেক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা চায় কি না তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের দেশে গত ১৬ বছরে তিনটি নির্বাচনে শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের জোর-জবরদস্তি করে নির্বাচনে জেতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। বর্তমানেও শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এখনো সেই পুরনো গায়ের জোরের সংস্কৃতি দেখা যাচ্ছে। সামনের ভোট নিয়ে তাদের শক্তি প্রদর্শনের হুমকি দেয়ার বিভিন্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। এমনকি এসব হুমকিতে কোনো কোনো কেন্দ্রীয় নেতাও জড়িত হয়ে পড়ছেন।
নির্বাচনে নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ : আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে মূল চ্যালেঞ্জ হবে- ক. কালো টাকার প্রভাব; খ. আওয়ামী দোসরদের সুযোগ-সন্ধানী উৎপাত; গ. ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা এবং ঘ. তথ্য-সন্ত্রাস। যে রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রতিবাদে সংঘটিত হয়েছিল চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান। যে জন্য প্রায় দেড় হাজার ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছেন এবং ২০ সহস্রাধিক মানুষ আহত হয়েছেন, পঙ্গু হয়েছেন; সেই রাজনীতির পরিবর্তনের কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। চাঁদাবাজি, হাট-ঘাট দখলদারি, টেন্ডারবাজি, স্কুল-কলেজের গভর্নিং বডি দখল, দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বে খুন-খারাবি ইত্যাদি সবই আগের মতোই চলছে। শুধুই দলের নাম ও মানুষের পরিবর্তন ঘটেছে। আগের মতোই শুধু নিজ দলের পোস্টার সেঁটে অন্যান্য দুর্বল দলের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, নিজের পোস্টারে একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা-নেত্রীর ছবি প্রদর্শন করে সাঁটা, একাধিপত্য বিস্তারে পেশিশক্তি নিয়োগ করা, ইত্যাদি সবই চলছে। স্থানীয় পর্যায়ে নিজ দলের রাজনৈতিক প্রোগ্রাম চালানো অথচ দুর্বল দলের প্রোগ্রামে হামলা, ভাঙচুর করা বা নিজেরা শোডাউন করলেও অন্য দলকে শোডাউন করতে না দেয়াÑ এসব অহরহই ঘটছে। এ ছাড়াও মনোনয়ন-বাণিজ্য, অর্থের বিনিময়ে থানা-পুলিশ ম্যানেজ করা, বুদ্ধিজীবীদের বিবৃতি কেনা বা পক্ষে নেয়া- এগুলোর সব কিছুই আজ স্বৈরাচার পতনের বছর ঘুরতেই পুনরায় আমাদের রাজনীতিতে ফিরে এসেছে। সেই সাথে রয়েছে ফ্যাসিস্টের দোসর আমলা, বিভিন্ন বাহিনীর আওয়ামী সুবিধাভোগী কর্মকর্তা এবং সমাজে মিশে থাকা লীগ সন্ত্রাসীরা। এরা নির্বাচনকে নষ্ট করার বা যেকোনো একটি দলকে জিতিয়ে নিয়ে আসার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ইতোমধ্যেই ছড়ানো হয়েছে বলে খবরে প্রকাশিত হয়েছে। অস্ত্র ও গোলাবারুদও ভারত থেকে চোরাপথে প্রবেশ করছে। সম্প্রতি সেনাবাহিনী ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে আটটি বিদেশী পিস্তল ও অ্যামুনিশন আটক করেছে। আর গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থেকে বিএনপির সাবেক নেতাকে অস্ত্রসহ আটকের ঘটনাও জানান দেয়- নির্বাচনকে ঘিরে সন্ত্রাসীরা প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাছাড়া গত অভ্যুত্থানের সময় থানা-পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র এখনো লুটেরাদের কাছে রয়েছে, সেগুলো নির্বাচনের সময় ব্যবহৃত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে! অর্থাৎ সব লক্ষণই বলছে, আসন্ন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে পেশিশক্তির ব্যবহারটাই ছুড়ে দেবে বড় চ্যালেঞ্জ। একই সাথে তথ্য-সন্ত্রাস একটি বড় হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে এবারের নির্বাচনে। গুজব, মিথ্যা তথ্য, অপতথ্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে তৈরি ছবি এবং ভিডিও প্রভৃতি নির্বাচনকে কলুষিত করতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে নেতিবাচক চিত্র ফুটে ওঠে। ‘হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি’ (এইচআরএসএস) সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে প্রকাশ করে, গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে ৬৯২টি রাজনৈতিক সঙ্ঘাতে ১০৭ জন নিহত হয় এবং পাঁচ হাজার ৫৭৯ জন আহত হয়েছে। এসব সঙ্ঘাতের বেশির ভাগই হয়েছে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে। এগুলো হয়েছে মূলত রাজনৈতিক আধিপত্য এবং আনুগত্য বিতর্ক ও কোন্দল, কমিটি গঠন, চাঁদাবাজি এবং বিভিন্ন স্থাপনা দখলকে কেন্দ্র করে। একই সময়ে ২০৯টি সন্ত্রাসের ঘটনায় ১০৩ জন নিহত এবং ২১২ জন আহত হয়। (ডেইলি স্টার, ১০ অক্টোবর ২০২৫) গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সময় পুলিশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। নৈতিকভাবে ভেঙে পড়ার পাশাপাশি প্রায় ৪৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছিলেন। গত ১৯ জুলাই আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী এখনো পুরোপুরি দক্ষতা ফিরে পায়নি।’ (ডেইলি স্টার, ১৬ আগস্ট ২০২৫)। অভ্যুত্থানের পর কমপক্ষে ৫০ জন পুলিশ অফিসারকে ২৫ বছর চাকরি সমাপনান্তে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। কমপক্ষে ২৩২ জন এএসপি এবং তদূর্ধ্ব পদবীয় অফিসার গ্রেফতার হয়েছেন। এএসপি থেকে অতিরিক্ত ডিআইজি পদবির মোট ৫৭ জন অফিসার ৬০ দিনের বেশি দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন বা পলাতক রয়েছেন। আরো প্রায় ১১৯ জন এসপি, অতিরিক্ত ডিআইজি ও ডিআইজি ‘ওএসডি’ হয়ে আছেন। আর বর্তমানে যারা কর্মরত আছেন তাদের মধ্যেও নানাবিধ ভয় এবং শঙ্কা কাজ করছে। গত এক বছরে পুলিশের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনায় ৫৬০টি মামলা হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মব সৃষ্টি করে পুলিশের ওপর অন্তত ২২৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। (প্রথম আলো, ১৬ আগস্ট ২০২৫)
অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার একটি বড় হুমকি হলো গত অভ্যুত্থানের সময় থানা-পুলিশ থেকে লুট হওয়া বা খোয়া যাওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ। গত ৭ অক্টোবর পর্যন্ত লুট হওয়া এক হাজার ৩৫০টি অস্ত্র এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। (প্রথম আলো, ১১ অক্টোবর ২০২৫) বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী পাকড়াও করে তাদের কাছ থেকে জানা যায়, পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্রগুলো সন্ত্রাসীরা ক্রয় করে অথবা ভাড়া নিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
পরামর্শ : সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, ১৩ কোটি (আমার দেশ, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) ভোটার ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্রে ভোট দেবেন। প্রায় ৯ লাখ সামরিক-অসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারী এই নির্বাচন কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। এর মধ্যে সামরিক বাহিনীর সদস্য প্রায় এক লাখ, পুলিশ-র্যাব দেড় লাখ এবং ছয় লাখ আনসার সদস্য নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকবেন। অর্থাৎ- হিসাব মতে, প্রতিটি কেন্দ্রে বড়জোর তিন-চারজন সদস্য বিশুদ্ধ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে মোতায়েন থাকতে পারবেন। এই তিন-চারজনও আবার ‘ডিউটি ঘণ্টা’ ভাগ করে কাজ করবেন। ফলে ভোটকেন্দ্র নিরাপত্তায় নিয়োজিতদের সংখ্যা হয়ে উঠবে খুবই অপ্রতুল। অথচ ভোটকেন্দ্রের প্রধান দায়িত্বই হবে পেশিশক্তির ব্যবহারকে রোধ করা। অন্যথায় জোর করে ভোট দেয়া, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর ভোটারকে কেন্দ্রে আসতে না দেয়া, কেন্দ্র দখল ইত্যাদি ঠেকানো সম্ভব হবে না। মোট ৬৭ শতাংশ অর্থাৎ- ২৮ হাজার ৬৬৩টি ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে আট হাজার ২২৬টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। (প্রথম আলো, ১০ নভেম্বর ২০২৫) দেশের মোতায়েনযোগ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আনুপাতিক হার প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম হওয়ায় সর্বপ্রথম নিরাপত্তা পদক্ষেপই হবে সারা দেশে একযোগে একদিনে ভোট সম্পন্ন না করা; বরং পুরো দেশকে আটটি অঞ্চলে ভাগ করে ভিন্ন ভিন্ন দিনে ভোট সম্পন্ন করা যেতে পারে। এতে প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন করা সম্ভব হবে। দ্বিতীয়ত, প্রতিটি কেন্দ্রে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ১০ সদস্যের নিরাপত্তা টিম মোতায়েন করতে হবে। মোতায়েনকৃত সেনাসদস্যরা ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসম্পন্ন থাকতে হবে। প্রতিটি কেন্দ্র নিরাপত্তা টিমে সেনা নেতৃত্বে সামরিক, পুলিশ ও আনসার সদস্য রাখতে হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে বিভাগীয় সদরে নির্বাচন অফিসের তত্ত্বাবধানে একটি ‘মনিটরিং ও কো-অর্ডিনেশন সেল’ গঠন করা যেতে পারে। এই সেলে একজন নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দলগুলোর প্রতিনিধি, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক, সামরিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতিনিধি সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করবেন। বিভিন্ন সংবাদ চ্যানেল এবং ড্রোনের মাধ্যমে এই মনিটরিং সেল যখন যে কেন্দ্রের পরিস্থিতি তাৎক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা দরকার তা দেখবেন। প্রতিটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সেলের নজরদারিতে থেকে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের নিরাপত্তা টিম তাৎক্ষণিক আইনগত সুরাহা করবে। ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হলে কেন্দ্র নিরাপত্তা টিমের প্রহরায় ব্যালট বাক্সগুলো বিভাগীয় সদরে প্রতিষ্ঠিত স্ট্রংরুমে স্থানান্তরিত করা হবে। বিশেষ সেনা প্রহরায় সেগুলো ভোট গণনার দিন-ক্ষণ পর্যন্ত রাখা হবে। সব বিভাগের নির্বাচন সম্পন্ন হলে পূর্বঘোষিত একটি দিনে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিনিধির উপস্থিতিতে একযোগে গণনাকার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।
নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া এবং আইনের দ্রুত ও নিরপেক্ষ ব্যবহার প্রদর্শন করতে হবে। যেন কোনোভাবেই কোনো দল বা প্রার্থী অর্থবিত্ত অথবা বাহুবলের প্রভাব খাটাতে না পারে। আর কেউ যেন ‘এআই’ ভিত্তিক তথ্যসন্ত্রাস চালাতে না পারে। সে জন্য বিভাগ সদরগুলোতে ফ্যাক্ট চেকিং এবং গুজব প্রতিরোধের লক্ষ্যে ‘আইটি সেল’ স্থাপন করতে হবে। তবে ভোটকেন্দ্রের ‘রিয়েল টাইম’ নিরাপত্তাই হলো সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়। কারণ, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রবণতার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে অসাধু উপায় অবলম্বনের ঝুঁকিও প্রবল হতে পারে।
মনে রাখতে হবে, হাজারো শহীদের রক্তে কেনা এই নির্বাচন দেশের ইতিহাসে একটি মাইলফলক তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সরকার, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যত আন্তরিকই হোক না কেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো নিরপেক্ষ-সুষ্ঠু নির্বাচনের ইচ্ছা পোষণ না করে তবে তা কিছুতেই সম্ভব নয়। তাই রাজনীতিকদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে- কেমন বাংলাদেশ আমরা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে রেখে যেতে চাই।
লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক



