আব্দুর রশিদ
সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী জনপদ জকিগঞ্জের একমাত্র সরকারি হাসপাতাল-উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। তিন লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে উঠলেও এই হাসপাতালের বাস্তব চিত্র ভয়াবহ। চিকিৎসক সঙ্কট, নোংরা পরিবেশ, স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব এবং কর্মচারীদের অবহেলায় সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। হাসপাতালটি বর্তমানে ৫০ শয্যার অনুমোদন পেলেও চলছে পুরনো ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে। এই অদ্ভুত বৈপরিত্যে পরিষ্কার বোঝা যায় সেবার মান কতটা ভঙ্গুর। হাসপাতালে রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। যেগুলো রয়েছে, তার অনেকগুলোই অচল হয়ে পড়ে আছে বছরের পর বছর। এক্স-রে মেশিন, প্যাথলজি টেস্টিং ইকুইপমেন্ট কিংবা আল্ট্রাসনোগ্রাফি- সবই হয় বিকল, নয়তো চালানোর মতো প্রশিক্ষিত জনবল নেই। ফলে রোগীদের সামান্য রক্ত পরীক্ষা কিংবা ইউরিন টেস্টের জন্যও ছুটতে হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে, যা তাদের জন্য অর্থনৈতিকভাবে কষ্টকর ও মানসিকভাবে হতাশাজনক। হাসপাতালের নোংরা পরিবেশ, দুর্গন্ধময় শৌচাগার এবং অপরিচ্ছন্ন ওয়ার্ডের শোচনীয় দৃশ্য। এমন পরিবেশে রোগীর সাথে থাকা ও দেখতে আসা সুস্থ স্বজনরাও অসুস্থ হয়ে পড়েন। বেডের চাদর নোংরা, রোগীদের বসার জায়গাও পর্যাপ্ত নয়। ওয়ার্ডের ফ্লোরে কিংবা বারান্দায় হাঁটার জায়গায় যত্রতত্র রোগীদের আহাজারি যেকারো চোখকে অশ্রুসিক্ত করবে। এই দুরবস্থা থেকে উত্তরণে এখনই প্রয়োজন পূর্ণাঙ্গ জনবলসহ ৫০ শয্যার হাসপাতাল কার্যকরভাবে চালু করা। এ ছাড়াও নষ্ট যন্ত্রপাতি মেরামত ও প্রয়োজনে নতুন যন্ত্রপাতি সরবরাহ ও নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
জকিগঞ্জ, সিলেট
[email protected]