জবির উদ্ভিদবিজ্ঞান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন প্রতিবাদ লিপি

অ্যালামনাইরা এত উচ্চপর্যায়ে থাকা সত্ত্বেও তাদেরকে বাদ দিয়ে এমন একটি কর্মসূচি কোনোভাবেই কারো কাম্য নয়। সাবেক অ্যালামনাইরা ১৮ জুলাই প্রোগ্রামকে সম্পূর্ণরূপে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে অনুষ্ঠানটি বন্ধের জোর দাবি বন্ধের জানাচ্ছি।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) |সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) একটি ব্যতিক্রমী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটাকে কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালে সাবেক ছাত্রদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ওই সময় তাদের জোর আন্দোলনের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া জগন্নাথ কলেজকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা দেন এবং পরবর্তীতে সরকারের বিভিন্ন দফতরের কালক্ষেপণের কারণে ২০০৪ সালে সাথে ছাত্রদের আবারো তীব্র আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এটিকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করেন।

সাবেক সেই ছাত্রদের এই প্রাণের বিদ্যাপীঠ, যার আলো বাতাসে তাদের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা, যাদের শিরা ও উপশিরায় মিশে আছে বিশ্ববিদ্যালয় ধুলিকনা মাটি, শরীরের প্রতিটি রক্ত বিন্দুর সাথে বহমান এই বিশ্ববিদ্যালয়, সেই সাবেক ছাত্র-ছাত্রীদেরকেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন থেকে অবাঞ্চিত ও বিতাড়িত করার মূল প্রক্রিয়ায় বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের শুধুমাত্র উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্রলীগের কুচক্রি ছাত্র মহল মিলে মূল ছাত্র সংগঠনের নাম উল্টে দিয়ে উদ্ভিদবিজ্ঞান জবি. বিভাগ নামে একটি বিতর্কিত অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে রাতের আঁধারে গভীর নীলনকশার মাধ্যমে মূল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। প্রকৃত অ্যালামনাইদের সম্মানহানিকর কার্যাবলী একের পর এক সম্পন্ন করে যাচ্ছে, যা অত্যন্ত ঘৃণিত, নিন্দনীয় ও গর্হিত অপরাধ বলে মূল অ্যালামনাইরা মনে করে। যার ধারাবাহিকতায় আগামী ১৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে প্রথম পুনর্মিলনী নামক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে।

সাবেক এই ছাত্রদের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ডিরেক্টর, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি কলেজের প্রফেসর, দেশের বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের জি এম, এজিএম, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী সাংবাদিক, ব্যাংকার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অতিউচ্চপর্যায়ে অবস্থানরত ব্যক্তিরা আছেন।

অ্যালামনাইরা এত উচ্চপর্যায়ে থাকা সত্ত্বেও তাদেরকে বাদ দিয়ে এমন একটি কর্মসূচি কোনোভাবেই কারো কাম্য নয়। সাবেক অ্যালামনাইরা ১৮ জুলাই প্রোগ্রামকে সম্পূর্ণরূপে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে অনুষ্ঠানটি বন্ধের জোর দাবি বন্ধের জানাচ্ছি। সকলকে নিয়ে একসাথে একটি অ্যালামনাই গঠনের মূল প্রয়াসে প্রকৃত অ্যালামনাইরা একাধিকবার নিজ বিভাগের সম্মানিত চেয়ারম্যানের কাছে দারস্ত হয়েও তার দেখা পায়নি এবং সর্বশেষ অনেকবার যাওয়ার পর একবার দেখা পাওয়ার পরে তাকে কোনোভাবেই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয়ে একটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠনে রাজি করাতের সম্পূর্ণরূপ ব্যর্থ হয়।

সর্বশেষ মূল অ্যালামনাইরা ভিসিকে দিয়ে ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যানকে চিঠি ও আহ্বান জানালেও ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান কর্ণপাত করেনি। এই সংবাদের ভিত্তিতে সম্মানিত ভিসি মহোদয়, ট্রেজারার, রেজিস্টার ও শিক্ষক সমিতির নেতারা ভিসিকেকে ওই প্রোগ্রামটি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়ার জন্য অ্যালামনাইদের পক্ষ থেকে বিনীত অনুরোধ করছি এবং আজীবন আমাদের হৃদয়ে আপনাদের প্রতি যে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার জায়গা আমাদের অন্তরে সেটা অটুট রেখে আপনাদের পাশে আমাদেরকে রাখবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

লেখা : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অ্যালামনাইবৃন্দ।