ইরানগামী প্রথম নৌ-রুট চালু করল পাকিস্তান : আঞ্চলিক পর্যটন ও ধর্মীয় সফরে নতুন দিগন্ত

ইসলামাবাদ সরকার এই সিদ্ধান্তকে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছে, এই নৌ-রুট সাগর পথে আঞ্চলিক পর্যটন এবং মানুষে মানুষে সংযোগ বৃদ্ধিতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।

সৈয়দ মূসা রেজা
পাকিস্তানের নৌচলাচল-বিষয়ক মন্ত্রী আনোয়ার চৌধুরী (ডানে) এবং ইরানের সড়ক ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফারজানা সাদিক
পাকিস্তানের নৌচলাচল-বিষয়ক মন্ত্রী আনোয়ার চৌধুরী (ডানে) এবং ইরানের সড়ক ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফারজানা সাদিক |সংগৃহীত

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা ইরনা জানিয়েছে, পাকিস্তান তাদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি আন্তর্জাতিক নৌপরিবহন সংস্থাকে লাইসেন্স দিয়েছে। ফলে দেশটির সাথে ইরান ও পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা পিজিসিসিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সমুদ্রপথে যোগাযোগ স্থাপন করবে।

ইসলামাবাদ সরকার এই সিদ্ধান্তকে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছে, এই নৌ-রুট সাগর পথে আঞ্চলিক পর্যটন এবং মানুষে মানুষে সংযোগ বৃদ্ধিতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। সোমবার পাকিস্তানের নৌচলাচল-বিষয়ক মন্ত্রী মুহাম্মাদ জুনায়েদ আনোয়ার চৌধুরী ঘোষণা করেন, সি কিপারস নামের আন্তর্জাতিক নৌপরিবহন কোম্পানিকে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে লাইসেন্স দিয়েছে। এই লাইসেন্সের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পাকিস্তান থেকে ইরান এবং পিজিসিসি অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে যাত্রীবাহী নৌ-রুট চালু করতে পারবে।

এই সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয় একটি উচ্চপর্যায়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার পর। এ সভায় অংশ নেন পাকিস্তানের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স, প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা। সেই সাথে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তান ন্যাশনাল শিপিং করপোরেশন ও বিভিন্ন বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরাও।

পাকমন্ত্রী আনোয়ার চৌধুরী এই পদক্ষেপকে পাকিস্তানের জাতীয় নৌ-নীতি বা মেরিটাইম পলিসির এক ‘মাইলফলক’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক সংযোগ, ধর্মীয় পর্যটন এবং সামুদ্রিক বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য এটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

এই নতুন নৌ-রুটটি প্রতি বছর কয়েক লাখ যাত্রীর সেবা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন ইরান ও ইরাকগামী ধর্মীয় জিয়ারতকারীরা। পাশাপাশি উপসাগরীয় দেশগুলোর উদ্দেশ্যে যাওয়া শ্রমিক ও পর্যটকেরাও এই সেবা ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। এটি চালু হওয়ায় শুধু পাকিস্তানের ধর্মীয় জিয়ারতকারীদের জন্যই নয়, বরং সমগ্র অঞ্চলের জন্যই এক নতুন সমুদ্রপথের দুয়ার খুলে গেল। এর ফলে ভবিষ্যতে আঞ্চলিক পর্যটন, বাণিজ্য ও পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসতে পারে।