ড. ইউনূস-তারেক রহমান বৈঠক

গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে বাংলাদেশ

দূরত্বের মূলে ছিল নির্বাচন প্রশ্নে অবিশ্বাস। দু’পক্ষের মাঝে জমে ছিল ঘন কালো মেঘ। কিছু লোক সরকার ও বিএনপি’র স্বাভাবিক সম্পর্ককে বিষিয়ে তুলছিল পরিকল্পিতভাবে। তাদের টার্গেট ঘোলা পানিতে মাছ শিকার!

মোস্তাফিজুর রহমান
লন্ডনে বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান
লন্ডনে বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান |সংগৃহীত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার নয় মাসের মাথায় দেশের পরিস্থিতি অনেকটা ঘোলাটে, টালমাটাল অবস্থায়। স্বার্থের দ্বন্দ্ব আর অবিশ্বাস রাজনৈতিক দলগুলোকে পাল্টাপাল্টি অবস্থানে নিয়ে গেছে। বহুল প্রত্যাশিত একটি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা সর্বত্র। অভ্যুত্থানের শক্তিগুলো বিভক্ত, বিভাজিত। পরিবর্তন আর সংস্কারের মধ্যদিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার আপামর মানুষের প্রত্যাশা অনেকটা ছাই চাপা পড়েছে।

এমন অবস্থায় দুনিয়াজোড়া পরিচিত ব্যক্তিত্ব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকার প্রধান হিসেবে ক্ষুব্ধ-হতাশ। পরিবর্তনের প্রত্যাশা পূরণে জাতিকে দেয়া ওয়াদা রক্ষা করতে পারবেন কিনা এ নিয়ে সংশয়ে পড়েন এই বিশ্ব বরেণ্য অর্থনীতিবিদ। এমন একটা কঠিন পরিস্থিতিতে পদত্যাগের কথা জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সবকিছু সামাল দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ জানানোয় রাজনৈতিক সংকট আরো ঘনীভূত হতে থাকে। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির সাথে সরকারের দূরত্ব প্রকাশ্যে চলে আসে।

এই দূরত্বের মূলে ছিল নির্বাচন প্রশ্নে অবিশ্বাস। দু’পক্ষের মাঝে জমে ছিল ঘন কালো মেঘ। কিছু লোক সরকার ও বিএনপি’র স্বাভাবিক সম্পর্ককে বিষিয়ে তুলছিল পরিকল্পিতভাবে। তাদের টার্গেট ঘোলা পানিতে মাছ শিকার! এ জন্য সেনা নেতৃত্বকেও পক্ষভুক্ত করার অপেচেষ্টা হয়।

সব মিলে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে। যার প্রভাব পড়ে সরকারের কাজকর্মে-গতিতে। পুরো বিষয়টিকে বেশ জটিল রূপ দিতে সক্ষম হয় দুরভিসন্ধিতে মত্ত স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী।

কিন্তু না, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপি’র শীর্ষ নেতৃত্ব অর্থাৎ দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিচক্ষণতায় যড়যন্ত্রকারীদের কূটকৌশল আপাতত শেষ হয়ে গেছে। গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে হাঁটা শুরু করেছে বাংলাদেশ।

সরকারপ্রধান এবং বিএনপি’র শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলোর দাবি- এক ঘণ্টার বেশি সময় স্থায়ী হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তারেক রহমানের মধ্যকার শুক্রবারের একান্ত বৈঠকটি। তার আগে কয়েক মিনিট ছিল দু’পক্ষের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ফটোসেশন। তাতে ক্যামেরার সামনেই তাদের আন্তরিকতাপূর্ণ বাক্য বিনিময় হয়।

আনুষ্ঠানিক বৈঠকে পারস্পরিক জানা-বোঝার সুযোগ হয়েছে জানিয়ে উভয়ের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলছে- ড. ইউনূস এবং তারেক রহমানের মধ্যকার শুক্রবারের বৈঠকের সিদ্ধান্তটি ‘হুমজিক্যাল’ ছিল না। এটি আয়োজনে অনেককে কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।

যদিও ঐতিহাসিক ওই বৈঠক পরবর্তী যৌথ বিবৃতি প্রচারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে বিএনপি’র এক সময়ের জোট সঙ্গী জামায়াতসহ অভ্যুত্থানের পক্ষের অনেক রাজনৈতিক দল। একটি বিশেষ দলের সঙ্গে রাষ্ট্রের যৌথ বিবৃতিতে বিষ্ময় প্রকাশ করে তারা বলছে- এটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য মোটেও অনুকূল নয়, বরং এটা নৈতিকতা বিরুদ্ধ। এটি একটি দলের প্রতি সরকারপ্রধানের অনুরাগের বহিঃপ্রকাশ বলেও মন্তব্য এসেছে।তাদের অভিযোগ লন্ডন বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ এগিয়ে আনার তুলনায় সংস্কার ও বিচার গুরুত্ব পায়নি।’

ইউনূস-তারেক বৈঠক নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যাই হোক লন্ডন বৈঠক সরকার ও বিএনপি’র মধ্যে সদ্ভাব নিয়ে এসেছে। কারণ ওই বৈঠকের আগে সরকার এবং বিএনপি’র নিজেদের মধ্যে অনেক আলোচনা হয়েছে। যেখানে আত্মসমালোচনার সুযোগ পেয়েছে উভয়ে।

সূত্র মতে, বৈঠকে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন উভয়ে। তারা নতুন বাংলাদেশ গঠনের এই সুযোগকে কোনো অবস্থাতেই নষ্ট না হওয়ার ওপর জোর দেন। তারেক রহমান বাংলাদেশ নিয়ে তার আকাঙ্খার কথা তুলে ধরেন। ড. ইউনূসও নিজের রাজনৈতিক অভিলাস না থাকার বিষয়টি স্পষ্ট করেন।

পরবর্তী নির্বাচিত সরকারে থাকার কোনো ইচ্ছা নেই মর্মে ড. ইউনূস চ্যাথাম হাউসে যে বক্তৃতা করেছেন সে প্রসঙ্গও আসে আলোচনায়। ড. ইউনূস খোলাসা করেই বলেন- তিনি জাতিকে একটি নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চান। এ নিয়ে জাতির কাছে তার কমিটমেন্ট রয়েছে। কোনো অবস্থাতেই বিশেষত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় যেন নির্বাচনী পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটি নিশ্চিত করতে দল হিসাবে বিএনপি’র ইতিবাচক ভূমিকা আশা করেন।

সূত্র এটা নিশ্চিত করেছে যে, দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রশ্নে সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে তারেক রহমান তার প্রশংসা করেন। গ্রহণযোগ্য এক্সপার্টদের নিয়ে কমিশনগুলো গঠনের জন্য সাধুবাদ জানান।

তারেক রহমান সংস্কার প্রশ্নে তার দল ঘোষিত ৩১ দফার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, মানুষ যদি তাদের ম্যান্ডেট দেয় তবে তারা সংস্কারকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। বিচার প্রশ্নেও তারা ইতিবাচক থাকবেন।

ড. ইউনূস মানুষের ক্ষমতায়নের ওপর জোর দেন। বলেন, যেনতেন নির্বাচন মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটায় না। এজন্য সুন্দর নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে।

পবিত্র ঈদুল আজহার আগের দিন সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ১০ মাসে তার নেতৃত্বাধীন সরকারের নানাবিধ কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে সংস্কারের ফিরিস্তি তুলে ধরার পাশাপাশি এই সময়ের রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ও প্রত্যাশিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একটি মোটামুটি ‍চূড়ান্ত সময়সীমার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, 'আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে।'

নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় তারেক রহমান এপ্রিলের প্রথমার্ধে কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন। সেই যুক্তিতেই তিনি রমজানের আগে নির্বাচনের প্রস্তাব করেন। তখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেন, চলমান সংস্কার কার্যক্রম এবং বিচার প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি সাপেক্ষে প্রস্তাবিত সময়ে নির্বাচন হতে পারে।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে এ পর্যন্ত যে ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে, তার মধ্যে একটিও এপ্রিল মাসে হয়নি। বরং গত ১২টি নির্বাচনের মধ্যে জানুয়ারিতে দুটি, ফেব্রুয়ারিতে তিনটি, মার্চে দু’টি, মে, জুন ও অক্টোবরে একটি করে এবং ডিসেম্বরে দু’টি নির্বাচন হয়েছে।

লন্ডন বৈঠকের পর ভোটের তারিখ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বৈঠক শেষে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান জানিয়েছেন শিগগিরই নির্বাচন কমিশন তারিখ ঘোষণা করবে। এরই মধ্যে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নিয়েও আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্র জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে।

আগামী বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি চাঁদ দেখা সাপেক্ষে পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে পারে। নির্বাচন করতে হলে তার কয়েকদিন আগেই ভোটগ্রহণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে রোজার আগের সপ্তাহে ভোটের সম্ভাব্য তারিখ হতে পারে ১২ই ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার। আগেও একাধিক নির্বাচন বৃহস্পতিবার হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হলে রোজার আগে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এর পরের দুইদিন শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় এই দুইদিন ভোট গ্রহণের সুযোগ নেই। এরপরে নির্বাচন হলে রোজার আগে নির্বাচন কমিশনের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করা যাবে না। প্রয়োজনে ১২ ফেব্রুয়ারির আগের কোনো একদিনও ভোট গ্রহণ হতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এটা ছিল প্রথম সাক্ষাৎ। তবে গত ১০ মাসে তাদের মধ্যে একাধিকবার টেলিফোনে আলাপ হয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এদিকে লন্ডন বৈঠকে নির্বাচনের সময় নিয়ে সমঝোতার আভাস পাওয়ার পর দেশে নির্বাচনী আবহ তৈরি হয়েছে। নির্বাচনের সময় নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ছিল তা কেটে গেছে এই বৈঠকের মাধ্যমে। বৈঠকের বার্তা পাওয়ার পর নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করছে দলগুলো। যদিও কিছু দল আগে থেকেই নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে।

অন্যদিকে জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি দলীয় কাঠামো তৈরিতে ব্যস্ত থাকায় নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে তারা এখনই ভাবছে না। আপাতত সাংগঠনিক তৎপরতা চালিয়ে যাবে দলটি। একইসঙ্গে বিচার এবং সংস্কারের বিষয়টি সামনে রেখে কাজ চলবে বলে নেতারা জানিয়েছেন।

নির্বাচনে সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা না হলেও জামায়াতে ইসলামী প্রায় ৩০০ আসনে তাদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। ইতোমধ্যে তারা নির্বাচনী প্রচারণার কাজ শুরু করছে। এ ছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টি ঈদের আগে থেকেই সারা দেশে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। এখন দলটি কমিটি গোছানোয় মনোনিবেশ করছে। নির্বাচন হলে তা অংশগ্রহণ করবে। এর আগে তারা জুলাই সনদ, সংস্কার ও বিচারকে প্রাধান্য দিচ্ছে।

রাজনৈতিক দলসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি সব সময়ই থাকে। তবে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করবে দলটি। নাগরিক ঐক্য ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি নির্বাচনী প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে। এলডিপি’র নির্বাচনী প্রস্তুতি থাকলেও তারা সমঝোতার ভিত্তিতে বিএনপি’র সঙ্গে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইছে। গণফোরাম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল এবং গণঅধিকার পরিষদও দলগতভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভোটের আগে বিএনপি’র সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য হলে সমঝোতার ভিত্তিতে প্রার্থী দেবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এই দলের নির্বাচনী প্রস্তুতি সব সময়ই থাকে। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো প্রার্থী বাছাই শুরু হয়নি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে, এরপরে আমরা মনোনয়নপত্র নেয়ার জন্য আহ্বান জানাবো। আর রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক কাজই হচ্ছে নির্বাচনী প্রস্তুতি।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না গণমাধ্যমকে বলেন, নির্বাচন প্রস্তুতির কাজ আস্তে আস্তে শুরু হচ্ছে এবং কৌশল ঠিক করা হচ্ছে। বিএনপি’র সঙ্গে জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে মান্না বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রস্তাব করেছিলেন যে, জাতীয় সরকার গঠন করবেন। সবাই মিলে একসঙ্গে সরকার পরিচালনা করবো। এই কমিটমেন্টে এখনো তিনি আছেন। তবে এ বিষয়ে এখনো কথা বলা হয়নি। এখন আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলে সব ঠিক করবো।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, রাজনৈতিক দলের সব সময়ই একধরনের নির্বাচনী প্রস্তুতি থাকে। এখন আমরা সাংগঠনিক কাজে মনোযোগ দিয়েছি। গণসংযোগের কাজ শুরু করেছি। জোটগতভাবে না-কি সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো, এ বিষয়ে বিএনপি‘র সঙ্গে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি, নির্বাচন এগিয়ে আসলে আলোচনা হবে।

গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান বলেন, গণফোরাম একটি নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি রয়েছে। গণফোরামের প্রত্যেক জেলা ইউনিটকে নির্বাচনী প্রস্তুতি কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসবে, আমরা প্রার্থী বাছাই নিয়ে তত কাজ করবো।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, অনেক দিন ধরেই আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রার্থী তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। জেলা কমিটিগুলোও ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং করে চূড়ান্ত করবো। আর বিএনপি’র সঙ্গে আমরা যুগপৎ আন্দোলনে আছি, এখন জোটগতভাবে আমরা নির্বাচনে অংশ নেবো কিনা, এ বিষয়ে অফিসিয়ালি এখনো কোনো আলোচনা হয়নি।

গণ-অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান গণমাধ্যমকে বলেন, লন্ডনে বৈঠকে নির্বাচনের সিদ্ধান্তকে আমরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। আর আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি ভালো। দলগতভাবে আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিএনপি’র সঙ্গে জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হলে তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।