আসছে হাওরের প্রকৃতি নিয়ে রহস্য-চলচ্চিত্র ‘নাওবিবি’

হাওরের প্রকৃতি, জলবায়ু পরিবর্তন, মানুষের আবেগ ও রহস্যকাহিনি নিয়ে নির্মিত হচ্ছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নাওবিবি’। কিশোরগঞ্জের নিকলী ও করিমগঞ্জের বিভিন্ন লোকেশনে সম্প্রতি এর শুটিং শেষ হয়েছে।

মো: আল আমিন, কিশোরগঞ্জ

Location :

Kishoreganj
হাওরের প্রকৃতি নিয়ে রহস্য-চলচ্চিত্র ‘নাওবিবি’
হাওরের প্রকৃতি নিয়ে রহস্য-চলচ্চিত্র ‘নাওবিবি’ |নয়া দিগন্ত

হাওরের প্রকৃতি, জলবায়ু পরিবর্তন, মানুষের আবেগ ও রহস্যকাহিনি নিয়ে নির্মিত হচ্ছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নাওবিবি’। কিশোরগঞ্জের নিকলী ও করিমগঞ্জের বিভিন্ন লোকেশনে সম্প্রতি এর শুটিং শেষ হয়েছে।

‘নাওবিবি’ মূলত হাওরের আবেগ, রহস্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতা নিয়ে নির্মিত এক থ্রিলার। গল্পে দেখা যায়- এক ট্র্যাভেলার হাওরে এসে অদ্ভুত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়। রাতের আঁধারে হাওরের হাঁটু ডোবা কচুরিপানায় হঠাৎ জ্বলে ওঠে আগুন, আর সেই আগুনের ওপারে দাঁড়িয়ে থাকে রহস্য তরুণী মায়া। তার পিছু ছুটতে গিয়ে ট্র্যাভেলার ঢুকে পড়ে হাওরের অজানা রহস্যের ভেতর। সেই রহস্য উন্মোচনে ‘মায়া’র চরিত্রে ভর করে হাওরের প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও মানুষের গভীর টানাপোড়েন।

একসময় স্পষ্ট হয় মায়া কেবল এক তরুণী নয় বরং হাওরের বাস্তবতা। তার মাধ্যমে প্রকাশ পায় হাওরের প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও মানুষের গভীর টানাপোড়েন। চলচ্চিত্রটির মূল বিষয় জলবায়ু পরিবর্তন ও হারিয়ে যাওয়া প্রকৃতি। তবে পরিবেশ সচেতনতার পাশাপাশি এতে রয়েছে রোমাঞ্চ, রহস্য, আবেগ ও শিল্পিত সৌন্দর্য।‘নাওবিবি’র গল্প ও চিত্রনাট্য করেছেন শাহ মুহাম্মদ মোশাহিদ। পরিচালনা করেছেন তরুণ নির্মাতা মশিউর রহমান কায়েস। এদিকে প্রযোজনায় ম্যাক রিপন এবং চলচ্চিত্রটির কো-অর্ডিনেটর হিসেবে আছেন আহমদ আমিন।

শর্টফিল্মটির কেন্দ্রীয় দুটি চরিত্রের একটিতে অভিনয় করেছেন মাহাফুজ মুন্না। বড় পর্দায় ‘উড়াল’ সিনেমায় আলোচনায় আসার পর এবার তিনি নতুনভাবে হাজির হচ্ছেন এ ছবিতে। রহস্যময় তরুণী ‘মায়া’র চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইসরাত জাহান পমি। ফিকশনে এটি তার প্রথম কাজ হলেও তিনি গায়িকা হিসেবে দেশ-বিদেশে ইতোমধ্যে পরিচিত। দু’বার পেয়েছেন নতুন কুঁড়ি পুরস্কার।

চলচ্চিত্রটির সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন আনন্দ সরকার। এছাড়া ফেঁউচ্চা চরিত্রে দেখা যাবে শাহ শান্তকে। আর শিশু চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাহ ওবায়েদ নেহান।

অভিনয়ের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে মাহাফুজ মুন্না বলেন, ‘পরিচালক কায়েস ভাই তার প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন আমাকে। মোশাহিদ ভাইয়ের চিত্রনাট্য পড়ে অসম্ভব ভালো লেগে যায়। এতো সুন্দর বিশ্লেষণ করা চিত্রনাট্য আমি খুব কম দেখেছি। প্রতিটি কাজে চরিত্র এবং গল্প আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি আরো বলেন, ‘যেহেতু এটা স্বাধীন চলচ্চিত্র তাই শুরু থেকেই জানতাম কষ্ট করে টিমওয়ার্কের মাধ্যমে কাজটি করতে হবে। সেই প্রস্তুতি নিয়েই হাওরে গিয়েছি। আমি এর আগে কয়েকটি স্বাধীন চলচ্চিত্রে কাজ করেছি। এরমধ্যে ‘নাওবিবি’তে কাজ করে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পেয়েছি। চিত্রগ্রাহক আনন্দ, কো-অর্ডিনেটর আহমদ আমিন, সহকারী পরিচালক শান্ত ও কাঞ্চনসহ টিমের সবার সহযোগিতা পেয়েছি। সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’

ইসরাত জাহান পমি বলেন, ‘মায়া চরিত্রে কাজ করা ছিল ভীষণ চ্যালেঞ্জিং। এখানে শুধু অভিনয় নয়, হাওরের প্রতিনিধিত্বও করতে হয়েছে। আমার মাধ্যমে দর্শক মায়াকেই নয়, দেখবে হাওরকে।’

নির্মাতা মশিউর রহমান কায়েস জানান, পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ শেষ হলে ‘নাওবিবি’ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পাঠানো হবে।

ছবি: ‘নাওবিবি’-তে ধরা দেয় হাওরের প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও মানুষের গভীর টানাপোড়েন।