পর্যটন মানচিত্রে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ‘রাঙ্গাবালী’

এখানে রয়েছে হেয়ার আইল্যান্ড, সোনারচর, জাহাজমারা আর তুফানিয়ার মতো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা অনিন্দ্য সুন্দর সৈকত।

রবিন আহম্মেদ, পায়রা বন্দর (পটুয়াখালী)

Location :

Patuakhali
রাঙ্গাবালী
রাঙ্গাবালী |নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশের পর্যটন মানচিত্রে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সাগরকন্যা খ্যাত জেলা পটুয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা ‘রাঙ্গাবালী’। এখানে রয়েছে হেয়ার আইল্যান্ড, সোনারচর, জাহাজমারা আর তুফানিয়ার মতো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা অনিন্দ্য সুন্দর সৈকত। দেশী পর্যটকদের পাশাপাশি ইদানিং বিদেশীদের পদচারণায়ও মুখরিত হয়ে উঠছে গন্তব্যটি।

বিস্তীর্ণ জলরাশি, অতিথি পাখির কোলাহল, সবুজ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল, সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য আর অফুরান্ত সাগরের ঢেউ-প্রকৃতির এক অনন্য মায়াবী রূপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পটুয়াখালীর এ রাঙ্গাবালী উপজেলার দ্বীপগুলো।

এক ভ্রমণে চার সৈকত দেখার বিস্ময়কর সুযোগ যেন কড়া নেড়ে জানান দিচ্ছে পর্যটকদের। এক সময় এটি ছিল শুধু স্থানীয়দের ঘোরাঘুরির জায়গা, এখন ধীরে ধীরে রাঙ্গাবালী জায়গা করে নিচ্ছে দেশের পর্যটন মানচিত্রে। বাড়ছে দেশী ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণা।

দেশী পর্যটক ও অভিনেতা সাদ্দাম মাল জানান, রাঙ্গাবালী পর্যটনের জন্য এক সম্ভাবনাময় জায়গা। এখানে যে চারটি সৈকত আছে তার প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা সৌন্দর্য আছে। আমরা এসব দেখে উপভোগ করি, মুগ্ধ হই।

সব মিলিয়ে মন ভালো করতে আর ঘুরতে অনন্য সৌন্দর্যে ঘেরা রাঙ্গাবালী বারবার কাছে টানবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

শুধু দেশী নয়, এর সৌন্দর্য টেনে আনছে বিভিন্ন দেশের পর্যটকদেরও। দেশী পর্যটকদের সাথে বিদেশীদের পদচারণায় এটি

ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে পর্যটনের নতুন গন্তব্য। সম্প্রতি রাঙ্গাবালী ঘুরে মুগ্ধ হয়েছেন হাঙ্গেরির টমাস, চেক রিপাবলিকান নাগরিক রাদেক, মাল্টা থেকে ড্যারেন, সুইজারল্যান্ড থেকে টাচিয়ানা, জার্মানি থেকে হেনড্রিকসহ অসংখ্য বিদেশী পর্যটকরা।

বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণে কাজ করছেন স্থানীয় তরুণ শাওন আহমেদ। কখনো বিদেশী পর্যটকদের সাথে গানের আড্ডায়,

আবার কখনো তাদের ইচ্ছায় বাংলা শব্দ শেখানোর আড্ডায়। এছাড়াও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনধারা, তাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য, জেলেদের জীবনবাজি রেখে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা, মান্তা সম্প্রদায়ের জীবন কাহিনীসহ নানান বিষয়ে বিদেশী পর্যটকদের ধারণা দিতে বেশ পটু এই তরুণ। ইউটিউব থেকে ইংরেজি শিখে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালিয়ে পরিচিত করছেন রাঙ্গাবালীর দর্শনীয় স্থানগুলোকে।

লোকাল গাইড ও ট্যুর প্রমোটার শাওন আহমেদ বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরো সহজলভ্য করতে পারলে রাঙ্গাবালী পর্যটন খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি। যোগাযোগ ব্যবস্থায় সরকার অগ্রণী ভূমিকা পালন করলে বিদেশী পর্যটকরা আরো সহজেই আসতে পারবে এ অঞ্চলে। আর যারা ইতোমধ্যে রাঙ্গাবালী ঘুরে গেছেন তাদের রিভিউ বেশ ভালো এবং তারা ফুললি স্যাটিস্ফাইড।’

স্থানীয় প্রশাসন জানায়, রাঙ্গাবালীর পর্যটন সম্ভাবনা কাজে লাগাতে অবকাঠামো, উন্নয়ন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব দাশ পুরকায়স্থ বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি এখানে প্রতিবছর বেশ ভালো সংখ্যক দেশীয় পর্যটকদের পাশাপাশি দুই-তিনজন করে বিদেশী পর্যটকরাও আসছেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যা যা করণীয় সেসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’