অনেকের কাছেই খুব পছন্দের ফল কাঁঠাল। তবে তা পাকা অবস্থায়। মিষ্টি স্বাদ আর রসালো এ ফলে রয়েছে নানা পুষ্টি। তবে কাঁচা কাঁঠালেও কমতি নেই পুষ্টিগুণের। যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এ কাঁচা কাঁঠালে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, সি, বি-১, বি-২, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ নানা রকমের পুষ্টি ও খনিজ উপাদান। যা শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি পূরণ করে ভিটামিনের চাহিদাও।
জানা যায়, প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালে খাদ্য-আঁশ থাকে দু’ গ্রাম, শর্করা ২৪ গ্রাম, চর্বি দশমিক তিন মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৪ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম ৩৭ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৩০৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-এ ২৯৭ আইইউ ও ভিটামিন-সি ছয় দশমিক সাত মিলিগ্রাম।
জেনে নেয়া যাক কাঁচা কাঁঠালে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়-
হজমশক্তি বাড়ায় : পেটের নানা রকম সমস্যা কমাতে পারে কাঁচা কাঁঠাল। এ ফল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং অন্ত্রের সক্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে যে আঁশ থাকে, তা কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ করে। পেটের অম্লতা ও আলসার ঠেকাতে কাঁচা কাঁঠাল খেতে পারেন। ফাইবারসমৃদ্ধ ফল হওয়ায় হজমশক্তি বাড়ায় এবং পেট পরিষ্কার রাখে কাঁচা কাঁঠাল।
বয়সের ছাপ দূর করে : কাঁচা কাঁঠাল বয়স ধরে রাখতে সাহায্য করবে। মুখে বলিরেখা পড়তে বাধা দেয় এটি, যা ত্বকের জন্য ভালো। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ সৃষ্টিকারী মুক্ত উপাদানের (ফ্রি র্যাডিক্যালস) বিরুদ্ধে লড়াই করে। প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকায় হাড়ের ক্ষয় ঠেকাতে পারে কাঁঠাল। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে ও বলিরেখাও কমে।
ওজন কমায় : এতে চর্বির পরিমাণ খুব কম। তাই বেশি খেলেও ওজন বাড়ার শঙ্কা নেই বরং পেট ভরে রেখে ওজন কমাতে সাহায্য করে কাঁচা কাঁঠাল।
চোখ ভালো রাখে : কাঁচা কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ ও বিটা ক্যারোটিন, যা চোখ ভালো রাখে।
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী রাখে : কাঁচা কাঁঠাল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টসমৃদ্ধ। এতে থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া ক্যান্সার ও টিউমারের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। এতে থাকা সোডিয়াম ও পটাশিয়াম শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্সকে ঠিক রাখে, যা উচ্চরক্তচাপ ও হার্টও ভালো রাখে। পাইলস ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ বাড়ায় : কাঁচা কাঁঠালে প্রায় কোনো কোলেস্টরল নাই বললেই চলে। তাই কাঁচা কাঁঠাল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ। যেকোনো বয়সের মানুষ এটা খেতে পারেন। এটি শক্তির ভালো উৎস। এতে আয়রন থাকায় রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ বাড়ায়। রক্তাল্পতায় রোগীদের জন্য কাঁচা কাঁঠাল খুবই উপকারী।
হাড় শক্ত করে : কাঁচা কাঠালে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় শক্ত রাখে।
কাঁঠালের বিচির প্রোটিন
কাঁঠালের বিচি গুঁড়ো করে সকালের জুস হিসেবে খেতে পারেন। কাঁঠালের বিচি ফেলনা নয়। এটি চাইলে খেতে পারবেন হালকা নাশতায়, সালাদ, তরকারি, হালুয়া বা ভর্তা হিসেবে। কাঁঠালের বিচিতে থাকা প্রোটিন মাংসপেশি গঠনে ভূমিকা রাখে।
এদিকে ডায়াবেটিস রোগীদের কাঁঠাল খাওয়ায় কিছুটা বিধি-নিষেধ রয়েছে। এছাড়া কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি তাদেরও কাঁঠাল না খাওয়াই ভালো বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।