ঝুম বৃষ্টিতে চাই পাকা কাঁঠাল!

গরমের সময়ে ফলটি পাকতে শুরু করলেও বর্ষায় হয়ে ওঠে রসালো ও সুমিষ্ট। তাই বাড়িতে মুড়ির সাথে কাঁঠাল খাওয়ার সবচেয়ে সেরা সময় হতে পারে মেঘলা আকাশের দিন।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
পাকা কাঁঠাল
পাকা কাঁঠাল |সংগৃহীত

টিপ টিপ শব্দ, ঝুম বৃষ্টি। পুরো শরীরে কোমলতার স্পর্শ। ভাবনা ছাড়াই জানালার পাশে কাঁথা মুড়িয়ে শুয়ে পড়লাম। তার এক ফাঁকে আকাশের পানে চেয়ে আছি কিছুক্ষণ। ইচ্ছে জাগল গুণে দেখি বৃষ্টির কিছু ফোটা। এভাবে গড়িয়ে গেল পুরো একটি বিকেল। হঠাৎ নাকে এসে লাগল মিষ্টি ঘ্রাণ। পরক্ষণেই হৃদয়ের কোণে ভেসে এলো আবদার।

মেঘলা আকাশ কিংবা বৃষ্টির এমন দিনে কাঁঠালের স্বাদ যেন উপভোগের কোনো কমতি রাখে না। গরমের সময়ে ফলটি পাকতে শুরু করলেও বর্ষায় হয়ে ওঠে রসালো ও সুমিষ্ট। তাই বাড়িতে মুড়ির সাথে কাঁঠাল খাওয়ার সবচেয়ে সেরা সময় হতে পারে মেঘলা আকাশের দিন। বর্তমানে কয়েক দিন ধরে চলছে এ বৃষ্টি। কখনো হালকা, কখনো ভারী, থেমে থেমে চলছে বর্ষণ। এমন দিনে একটি কাঁঠাল না হলে যেন আসছেই না পূর্ণতা।

এদিকে জাতীয় এ ফলটির শুধু কোষ নয়, বিচি-খোসা সবই খাওয়া যায়। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি ফলটিতে লুকিয়ে আছে নানা রোগের ওষুধ।

জেনে নেই ফলটির বেশ কিছু উপকারিতা-

প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে কাঁঠালে। এই ভিটামিন দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। এছাড়া ফাইবারের ভালো একটি উৎস কাঁঠাল। যা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা থেকে দূরে রাখে।

এছাড়া আলসারের সমস্যা প্রাকৃতিক উপায়ে কমাতে সাহায্য করে কাঁঠালে থাকা এক ধরনের উপকারী উপাদান। বেশ কয়েক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎসও কাঁঠাল। এসব উপাদান হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে বেশ।

এদিকে কাঁঠালে থাকা পটাসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। একইসাথে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ মেলে কাঁঠাল থেকে। নিয়মিত ফলটি খেলে ত্বক ভালো রাখার সাথে ত্বককে রোদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দূরে রাখে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

এছাড়া ক্যানসারের ঝুঁকি কমে কাঁঠাল খেলে। কারণ কাঁঠালে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহকে ক্ষতিকর ফ্রির‌্যাডিকেলস থেকে রক্ষা করে। এছাড়া অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকে কাঁঠাল খেলে। ফলে অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে দূরে থাকা যায় ও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

কাঁঠালে থাকা ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি হাড় শক্তিশালী রাখতে সহায়তা করে। আয়রনও মেলে ফলটি থেকে, এতে এ খনিজ উপাদান রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।

এদিকে কাঁঠালের ১০টি কোষের গুণ একটি ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুলের সমতুল্য। কাঁঠাল ফাইবার সমৃদ্ধ ফল হওয়ায় এটি হজমশক্তি বাড়ায় এবং পেট পরিষ্কার রাখে। এতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড়কে করে তোলে আরো মজবুত।