ইসরাইলকে অবিলম্বে যুদ্ধ থামানোর আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাজ্যসহ ২৭টি দেশ একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। তাদের মতে, গাজায় ‘মানুষের দুর্ভোগ এক নতুন গভীরতায়’ পৌঁছেছে।
এক যৌথ বিবৃতিতে এসব দেশ ইসরাইলের ত্রাণ বিতরণ পদ্ধতিকে ‘বিপজ্জনক’ বলে আখ্যায়িত করেছে। তারা ‘ধীরগতিতে ত্রাণ বিতরণ’ ও ’খাদ্য ও পানির জন্য অপেক্ষমান মানুষদের অমানবিকভাবে হত্যা’ করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গাজায় হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ সপ্তাহের শেষে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে খাবারের জন্য অপেক্ষামান ১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং অপুষ্টির কারণে আরো ১৯ জন মারা গেছেন।
তবে ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশগুলোর বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে দাবি করেছে, এটি ‘বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন’। তারা বলেছে, এ ধরনের বক্তব্য হামাসকে ভুল বার্তা দিচ্ছে।
গাজায় গত ২১ মাস ধরে চলা যুদ্ধ নিয়ে নানা সময় আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হলেও এবারের বিবৃতিটি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। কারণ এতে ২৮টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরাসরি সই করেছেন। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান, নিউজিল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ড।
বিবৃতিটির শুরুতেই বলা হয়, ‘গাজায় এখনই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে।’
বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ‘গাজার বেসামরিক নাগরিকদের দুর্ভোগ নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। ইসরাইলি সরকারের সাহায্য বিতরণ পদ্ধতিটি বিপজ্জনক। এটি অস্থিতিশীলতা বাড়াচ্ছে এবং গাজাবাসীদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করছে।’
এতে আরো বলা হয়েছে, ‘আমরা ধীর গতির ত্রাণ ব্যবস্থা এবং শিশুসহ বেসামরিক নাগরিকদের অমানবিক হত্যার নিন্দা জানাই। তারা তাদের সবচেয়ে মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য পানি ও খাবার খুঁজছিল। এটা ভয়াবহ যে ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি সাহায্য চাইতে গিয়ে নিহত হয়েছেন।’
২৭টি দেশের বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, গাজার ২১ লাখ মানুষকে দক্ষিণ রাফাহ অঞ্চলের একটি তথাকথিত ‘মানবিক শহরে’ স্থানান্তরে ইসরাইলের প্রস্তাবটি গ্রহণযোগ্য নয়। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘স্থায়ীভাবে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের লঙ্ঘন।’
এই ২৭টি দেশ ইসরাইল, হামাস ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘একটি তাৎক্ষণিক, নিঃশর্ত এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে এই ভয়াবহ সংঘাতের অবসান ঘটানোর’ আহ্বান জানিয়েছে। একইসাথে তারা সতর্ক করে দিয়েছে, তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি এবং নিরাপত্তা ও শান্তির পথকে সমর্থন করার জন্য তারা আরো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বিবৃতিতে ‘ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার’ ইঙ্গিত রয়েছে। যদিও যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স এখনো ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।