তুরস্কে নেতানিয়াহুসহ ইসরাইলি ৩৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা

পরোয়ানায় গাজায় গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গত সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক ত্রাণ বিতরণকারী জোট ফ্লোটিলার ত্রাণের বহরকে আটকে দেয়াকে অভিযোগ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু
শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু |সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ ৩৭ শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে তুরস্ক।

শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের শীর্ষ সরকারি কৌঁসুলির দপ্তর থেকে এই পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক বার্তাসংস্থা আল জাজিরা। নেতানিয়াহু ব্যতীত অন্যান্য যেসব কর্মকর্তার নামে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে— সেই তালিকায় থাকা উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা হলেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ, জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-গিভর এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়া’আল জামির। তবে সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।

পরোয়ানায় গাজায় গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গত সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক ত্রাণ বিতরণকারী জোট ফ্লোটিলার ত্রাণের বহরকে আটকে দেয়াকে অভিযোগ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইস্তাম্বুল প্রসিকিউটর অফিসের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে ইসরাইলি হামলায় ৫০০ জন নিহত হয়েছিলেন। ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি ইসরাইলি সৈন্যরা ইচ্ছাকৃতভাবে চিকিৎসা সরঞ্জাম ধ্বংস করে এবং গাজায় অবরোধ আরোপ করে মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দেয়।’

এতে আরো বলা হয়েছে, ‘তুরস্ক নির্মিত ‘তুর্কি-ফিলিস্তিনি মৈত্রী হাসপাতাল’ গত মার্চে ইসরাইলি বাহিনীর বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে।

তবে শুক্রবার পরোয়ানা জারির কিছুক্ষণের মধ্যেই এর নিন্দা জানিয়েছে ইসরাইল। দখলদার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদন সা’র এক প্রতিক্রিয়ায় এই গ্রেফতারি পরোয়ানাকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগানের ‘পিআর কৌশল’ বলে উল্লেখ করে বলেছেন, “এরদোগান তুরস্কের বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের মুখ বন্ধ রাখতে এবং ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক, বিচারক ও মেয়রদের বন্দি করার কাজে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন।”

উল্লেখ্য, গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) যে মামলা দায়ের করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, গত বছর সেটির বাদিপক্ষে নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে তুরস্ক। ইস্তাম্বুলের শীর্ষ সরকারি প্রকৌশলী এমন এক সময়ে এই পরোয়ানা জারি করলেন, যখন গাজায় একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চলছে।

গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। শুক্রবার এক বার্তায় গোষ্ঠীটির হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “গাজা ইস্যুতে তুরস্কের জনগণ ও তাদের নেতৃত্বের আদর্শগত অবস্থান এই পরোয়ানা আরো একবার নিশ্চিত করল।”

সূত্র : আল জাজিরা।