ডেনমার্কে ড্রোন অনুপ্রবেশ : প্রতিরক্ষা জোরদারের পরিকল্পনা ইইউ নেতাদের

ডেনমার্কে সম্প্রতি অজ্ঞাত ড্রোনের কারণে বিভিন্ন বিমানবন্দর বন্ধ করার পর বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটিসহ বিভিন্ন সামরিক স্থাপনার কাছেও ড্রোন দেখা গেছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা রাশিয়ার হুমকিকে সামনে রেখে ইউরোপের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ ও ইউক্রেনের আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করতে বুধবার (১ অক্টোবর) ডেনমার্কে এক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। সম্প্রতি ডেনমার্কে রহস্যজনক ড্রোন উড্ডয়নের ঘটনায় এ উদ্বেগ আরো বাড়িয়ে তুলেছে।

বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এই বহুল প্রত্যাশিত আলোচনার জন্য ইউরোপজুড়ে নেতারা কোপেনহেগেনে একত্র হচ্ছেন। হাজার হাজার পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। বেসামরিক ড্রোন নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং ন্যাটো মিত্ররা ডেনমার্কে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠিয়েছে।

ডেনমার্ক বর্তমানে ইইউ’র সভাপতিত্বের দায়িত্ব পালন করছে। দেশটিতে সম্প্রতি অজ্ঞাত ড্রোনের কারণে বিভিন্ন বিমানবন্দর বন্ধ করার পর বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটিসহ বিভিন্ন সামরিক স্থাপনার কাছেও ড্রোন দেখা গেছে। এ ধরনের ঘটনা দেশের বিমান চলাচল ও নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে।

উত্তর ইউরোপীয় প্রতিবেশী দেশগুলোসহ যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে ইউক্রেন পর্যন্ত অনেক দেশ ডেনমার্ককে সহায়তা করতে অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তি ও বিশেষজ্ঞ পাঠিয়েছে।

ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন এই ঘটনাকে ‘হাইব্রিড আক্রমণ’ হিসেবে বর্ণনা করলেও, এখনো পর্যন্ত কারো নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। তবে সন্দেহের তীর রাশিয়ার দিকেই রয়েছে।

এই ড্রোন ঘটনাগুলো ইউরোপের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বিদ্যমান দুর্বলতাকে আরো স্পষ্ট করে তুলেছে। বিশেষ করে পোল্যান্ড ও এস্তোনিয়ায় মস্কোর সাম্প্রতিক আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনার পর।

কোপেনহেগেনে ইইউ নেতারা এখন ‘ড্রোন ওয়াল’সহ বেশ কিছু অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্পের রূপরেখা তৈরি করার চেষ্টা করছেন, যা রাশিয়ার হুমকির মোকাবেলায় সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত সপ্তাহে ইউরোপের পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত প্রায় ১০টি দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা ড্রোন শনাক্ত ও ধ্বংস করার জন্য একটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। এই ধরনের একটি সমন্বিত ব্যবস্থা কার্যকর হলে, ড্রোনগুলোকে শনাক্ত ও ধ্বংস করা যাবে।

ইউরোপজুড়ে এমন সতর্কতা বাড়ছে যে মস্কো আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আক্রমণ চালাতে পারে। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় নেতারা ইউরোপের সবচেয়ে জরুরি প্রতিরক্ষা চাহিদা পূরণের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করার চেষ্টা করবেন।

২৭-জাতির ইইউ ইতোমধ্যে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধির জন্য ১৫০ বিলিয়ন ইউরোর একটি ঋণ পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে, যার বেশিভাগই পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলো গ্রহণ করেছে।

সূত্র : বাসস