ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও ধর্মঘটে ইতালিজুড়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির কয়েক ডজন শহরে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। ফলে স্কুলগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে, ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে এবং বন্দর ও সড়ক অবরোধ করা হয়েছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতিসঙ্ঘের সাধারণ অধিবেশনে ফ্রান্স ও আরো বেশ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তুতি নেয়ার সময় এই বিক্ষোভ শুরু হয়। এর আগের দিন রোববার যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগাল ও কানাডা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
তবে ইতালি এখন পর্যন্ত এই উদ্যোগ থেকে নিজেকে দূরে রেখেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এর আগে বলেছিলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগেই এর স্বীকৃতি দেয়া বিপরীতমুখী ফল দিতে পারে। তিনি জুলাইয়ের শেষের দিকে ইতালির সংবাদমাধ্যম লা রিপাবলিকাকে বলেছিলেন, ‘যদি কাগজে-কলমে এমন কিছুকে স্বীকৃতি দেয়া হয় যার অস্তিত্বই নেই, তবে সমস্যাটির সমাধান না হলেও মনে হতে পারে যে এর সমাধান হয়ে গেছে।’
এদিকে গাজার জনগণের সাথে সংহতি প্রকাশ করে সোমবার ইতালিজুড়ে তৃণমূল ইউনিয়নগুলোও ২৪ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেয়। ‘লেটস ব্লক এভরিথিং’ স্লোগানের অধীনে ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারীরা সরকারকে ইসরাইলের সাথে বাণিজ্যিক ও সামরিক সহযোগিতা স্থগিত করার আহ্বান জানায় এবং গাজার উদ্দেশে যাত্রা করা আন্তর্জাতিক গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা উদ্যোগে সমর্থন প্রকাশ করে।
মিলান থেকে পালের্মো পর্যন্ত দেশের কমপক্ষে ৭৫টি পৌরসভার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। জেনোয়া ও লিভোর্নোতে ডক শ্রমিকরা বন্দর অবরোধ করে রাখেন। তারা জানান, ইতালির বন্দরগুলো ইসরাইলে অস্ত্র পাঠানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। অন্যদিকে, রোমে টার্মিনি ট্রেন স্টেশনের বাইরে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ জড়ো হয়। এ সময় তারা ফিলিস্তিনি পতাকা তুলে ধরে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দেয়।
আয়োজকরা জানান, উত্তরাঞ্চলীয় শহর মিলানে ৫০ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিল। বোলোগনার পুলিশ সংখ্যাটিকে ১০ হাজারেরও বেশি বলে জানায়।
তবে মিলানে একপর্যায়ে উত্তেজনা বেড়ে যায়, যখন কালো পোশাক পরা ও লাঠিসোঁটা হাতে সজ্জিত কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী শহরের কেন্দ্রীয় ট্রেন স্টেশনের প্রধান প্রবেশদ্বার ভাঙার চেষ্টা করে। এ সময় প্রায় ৬০ জন পুলিশ কর্মকর্তার আহত হন এবং ১০ জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান