সম্প্রতি রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি ফাঁস করেছে ইতালিভিত্তিক গণমাধ্যম ইনসাইড ওভার। সেখানে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডারের একটি নথিতে উল্লেখিত আছে যে কোনো কোনো রুশ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে ১২ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত অর্থ ব্যয় হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটিতে এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছেন পাওলো মাউরি নামের এক প্রতিবেদক। তিনি বলেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই নথিতে তাদের বিভিন্ন সামরিক চুক্তির তথ্য রয়েছে। তথ্যগুলো ইউক্রেনীয় গণমাধ্যম মিলিটার্নি উদ্ধার করেছে। এই তথ্যগুলো ফাঁসের মধ্য দিয়ে প্রথম বারের মতো রাশিয়ার অস্ত্রাগার ও সামরিক বাজেট সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশ্যে এলো।
প্রতিবেদক বলেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেন যুদ্ধে বিভিন্ন ব্যালেস্টিক মিসাইল ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছেন। তাদের ভাণ্ডারে রয়েছে স্বল্প পাল্লার ইস্কান্দার এম ক্ষেপণাস্ত্র, খা-১০১ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, খা-৪৭এম-২কিনজাল।
ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহৃত আরেকটি দূরপাল্লার অস্ত্র হলো ৯এম৭২৮ ক্রুজ মিসাইল। এটি একটি মোবাইল গ্রাউন্ড ভেহিকল থেকে উৎক্ষেপন করা হয়। এই পদ্ধতিটিকে ইস্কান্দার-কে নামে পরিচিত। এই পদ্ধতি অবলম্বন করেই ২৫০০ কিলোমিটার দূরে উৎক্ষেপনযোগ্য ক্রুজ মিসাইলগুলো (যার মধ্যে ৯এম৭২৯ বা এসএসসি-৮ অন্যতম) উৎক্ষেপন করা হয়।
৯এম৭২৯ ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে ৩এম১৪ ক্যালিবর ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত সংস্করণ। ৩এম১৪ ক্যালিবর ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ৫০০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে পারে।
ফাঁস হওয়া নথিপত্রে জানা যায় যে রাশিয়ান ডিজাইন ব্যুরো নোভেটর ২০২৪ ও ২০২৫ সালে দুইবারে অন্তত ৯এম৭২৯ মডেলের ৩০৩টি ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনের নির্দেশ পেয়েছে। যেগুলোর প্রতিটির উৎপাদন ব্যয় আনুমানিক ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন।
প্রথম দফায় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে ৯এম৭২৯ মডেলের ৯৫টি ক্ষেপণাস্ত্র দেয়া হয়েছে। এতে প্রত্যেকটির জন্য ১ দশমিক ৪ মিলিয়ন থেকে ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে।
প্রতিবেদক মাউরি বলেন, রাশিয়া তাদের সাবমেরিন ও ফ্রিগেটে স্থাপন করা ৩এম১৪ ক্যালিবরের ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে উন্নত করে ১৫০০ কিলোমিটার দূরে নিক্ষেপযোগ্য করেছে। তারা ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ২৪০টি ক্ষেপণাস্ত্রের পেতে অর্ডার করেছিল। এখন ২০২৫ সাল থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে পেতে আরো ৪৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র অর্ডার করেছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের প্রত্যেকটির ব্যয় প্রায় দুই মিলিয়ন ডলার করে ধরা হয়েছে।
পাশাপাশি ডিজাইন ব্যুরো নোভেটরকে নির্দেশ করা হয়েছে, নতুনভাবে যেন তারা আরো ৫৬টি ৩এম১৪ মডেলের ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছে, যেন পরমাণু বোমা বহন করতে পারবে। এগুলো যেন ২০২৪ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে অস্ত্রাগারে যুক্ত হয়। এগুলো প্রত্যেকটির জন্য দুই মিলিয়ন থেকে ২.৩ মিলিয়ন পর্যন্ত ব্যয় ধরা হয়েছে।
সূত্র : আল জাজিরা



