ইউরোপে তাপপ্রবাহে ১০ দিনে ২৩০০ মৃত্যু

গত ২৩ জুন থেকে ২ জুলাইয়ের মধ্যে দুই হাজার ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক ও সুইজারল্যান্ডের পাঁচটি ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠানের এক ডজনেরও বেশি গবেষকের পরিচালিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন তাপপ্রবাহকে আরো তীব্র করে তুলেছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
সংগৃহীত

ইউরোপের ১২টি শহরে তীব্র তাপপ্রবাহে ১০ দিনে দুই হাজার ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। একটি নতুন গবেষণা অনুসারে, দুই-তৃতীয়াংশ মৃত্যুর ঘটনা সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত।

বুধবার প্রকাশিত ওই বিশ্লেষণে গত ২৩ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত বার্সেলোনা, মাদ্রিদ, লন্ডন ও মিলানসহ ইউরোপের ১২টি শহরের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। এই সময়টায় পশ্চিম ইউরোপের বিশাল অংশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করছিল। এ সময় স্পেনে তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফ্রান্সের বিভিন্ন স্থানেও দাবানল ছড়িয়ে পড়েছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে বলে ওই গবেষণায় বলা হয়েছে।

এই সময়ের মধ্যে দুই হাজার ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে যাদের মধ্যে প্রায় দেড় হাজার মানুষের মৃত্যু জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত। যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক ও সুইজারল্যান্ডের পাঁচটি ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠানের এক ডজনেরও বেশি গবেষকের পরিচালিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন তাপপ্রবাহকে আরো তীব্র করে তুলেছে।

গবেষণার সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষক বেন ক্লার্ক বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা আগের চেয়ে অনেক বেশি গরম হয়ে উঠেছে, যা এটিকে অনেক বেশি বিপজ্জনক করে তুলেছে।’

নীরব ঘাতক

গবেষকরা মহামারিসংক্রান্ত মডেল ও অতীতের মৃত্যুর তথ্য ব্যবহার করে নিহতের সংখ্যা অনুমান করেছেন। এই দুই হিসাবে মূলত গরমকে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ধরা হয়েছে। তবে সেসব ব্যক্তিকেও হিসাবে ধরা হয়েছে, যারা আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন, কিন্তু গরমের কারণে তাদের অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে।

ক্লার্ক বলেন, কিছু মানুষের জন্য আবহাওয়া এখনো উষ্ণ, ভালো। কিন্তু জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশের জন্য এটি আরো বিপজ্জনক। বিশেষ করে বয়স্ক, অসুস্থ, ছোট শিশু, বাইরে কর্মরত কর্মী এবং দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ তাপমাত্রার সংস্পর্শে থাকা যে কারো জন্য তাপপ্রবাহ বেশ বিপজ্জনক, যার কোনো উপশম নেই।

ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের প্রভাষক গ্যারিফ্যালোস কনস্টান্টিনোডিস বলেন, ‘মাত্র দুই বা চার ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধি হাজার হাজার মানুষের জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্য তৈরি করতে পারে। এই কারণেই তাপপ্রবাহ নীরব ঘাতক হিসেবে পরিচিত। বেশিভাগ তাপ-সম্পর্কিত মৃত্যু জনসাধারণের দৃষ্টির বাইরে বাড়ি ও হাসপাতালে ঘটে এবং খুব কমই তা রিপোর্ট করা হয়।’

সূত্র : আল জাজিরা