রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলের একটি উপকূলীয় শহরে সুনামির ঢেউ আছড়ে পড়ার ভিডিও বুধবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বিশাল ঢেউ বাড়িঘর ও অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ ভাসিয়ে সমুদ্রে নিয়ে যাচ্ছে।
মস্কো থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।
এর আগে রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপে ৮ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলীয় কয়েকটি এলাকায় সুনামি সতর্কতা জারি করা হয় এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নেয়া হয়।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার (২১৭ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত সেভেরো-কুরিলস্ক শহরে সুনামির ঢেউ আছড়ে পড়ে। এই শহরে প্রায় দুই হাজার মানুষ বসবাস করে। ঢেউ বন্দরের এলাকা প্লাবিত করে এবং স্থানীয় মাছের ফ্যাক্টরি ডুবিয়ে দেয়।
কিছু এলাকায় ঢেউ ৪ মিটার পর্যন্ত উঁচু ছিল। সেই ঢেউ উপকূল থেকে প্রায় ৪০০ মিটার দূরে অবস্থিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটি স্মৃতিস্তম্ভ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। তবে শহরের বেশিরভাগ অংশ উঁচু ভূমিতে অবস্থিত হওয়ায় বন্যার হাত থেকে সুরক্ষিত ছিল।
মেয়র আরো জানান, ‘সবাইকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আমাদের হাতে যথেষ্ট সময় ছিল, প্রায় এক ঘণ্টা। তাই সব মানুষকে সুনামি আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদে নেয়া সম্ভব হয়েছে।’
সুনামির সময় পার্শ্ববর্তী শুমশু দ্বীপে অবস্থান করছিল রাশিয়ান জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির একটি অভিযাত্রী দল। ঢেউ তাদের তাঁবুর ক্যাম্পটি ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
দলটির সদস্য ভেরা কোস্তামো রাশিয়ার এক গণমাধ্যমে বলেন, ‘যখন ঢেউ আঘাত হানল, তখন আমাদের কেবল উঁচু ভূমির দিকে দৌড়ানো ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। একে কুয়াশা তার ওপর পিচ্ছিল ঘাসের ওপর বুট পরে দৌড়ানো খুবই কঠিন ছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘সব তাঁবু ও সরঞ্জাম ঢেউয়ে ভেসে গেছে। আমাদের জিনিসপত্র সৈকতজুড়ে শত শত মিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা সবাই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি, কিন্তু আমাদের সব জিনিসপত্র হারিয়ে গেছে।’
কুরিল দ্বীপপুঞ্জের উত্তরাঞ্চলসহ শাখালিন অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
আঞ্চলিক ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, ১৯৫২ সালের পর এটিই ছিল এই অঞ্চলের সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প।
তারা আরো সতর্ক করে জানিয়েছে, ‘৭ দশমিক ৫ মাত্রার শক্তিশালী আফটারশক বা ভূমিকম্প-পরবর্তী কম্পনের আশঙ্কা রয়েছে।’
সূত্র : এএফপি/বাসস