পশ্চিমবঙ্গে একটিবারের জন্য হলেও সুযোগ নিতে চান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সম্প্রতি কেন্দ্র ও রাজ্যে বিজেপি সরকারের ‘ডবল ইঞ্জিন সরকার’ গঠনের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে এক বক্তব্যে বলেছেন, ‘বিজেপিকে একটা সুযোগ দিন। ডবল ইঞ্জিন সরকার গড়তে দিন, দেখুন কত দ্রুত এখানে উন্নয়ন হয়।‘
তৃণমূলকে কটাক্ষ করে মোদি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে অরাজকতা চলছে। তিনি বলেছেন, ‘বিহারে জঙ্গলরাজ উপড়ে দিয়েছে বিজেপি। ২০ বছর পরেও বিজেপিকে আগের থেকে বেশি আসন পেয়েছে।‘
‘পশ্চিমবঙ্গে মহাজঙ্গলরাজ চলছে। এর থেকে মুক্তি দরকার।‘
মোদি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস তাকে ‘গো ব্যাক’ বললেও অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে কিছু বলে না। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ত্রিপুরার উদাহরণ টেনে তিনি বলেছেন, ‘ত্রিপুরাকে দেখুন। কমিউনিস্ট, বামপন্থীরা সেখানে কিভাবে সবকিছু নষ্ট করেছে। ত্রিপুরাবাসী আমাদের সুযোগ দিয়েছে, আমরা সেখানে উন্নয়ন করেছি।‘
‘বাংলাও লাল ঝন্ডাধারীদের থেকে মুক্তি পেয়েছে। মানুষ আশা করেছিলেন, ভালো কিছু হবে। তৃণমূল বামপন্থীদের খারাপ গুণ গ্রহণ করেছে। ত্রিপুরাতে দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু বাংলায় হচ্ছে না। বাংলার গৌরব ফিরিয়ে দিতে চাই।‘
তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে বিজেপির অনেক পরিকল্পনা রয়েছে, গ্রহণ করেছে। তৃণমূলের ‘কারণে’ তা।
মোদি বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের জন্য অর্থ, পরিকল্পনা বা ইচ্ছের অভাব নেই। কিন্তু এখানে যে সরকার রয়েছে তাদের কারণে প্রকল্প থমকে আছে। আপনাদের সবাইকে সামনে রেখে বলতে চাই এবং এটা স্পষ্ট করে দিতে চাই যে টিএমসি যদি মোদির বিরোধিতা করতে চায়, বিজেপির বিরোধিতা করতে চায়, তাহলে অবশ্যই করুক। তাদের পুরো শক্তি দিয়ে করুক। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের গতিকে কেন তারা অবরুদ্ধ করবে?‘
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশী অনুপ্রবেশের অভিযোগ তুলে প্রথম থেকেই তৃণমূলকে নিশানা করে এসেছে বিজেপি। একাধিক বিজেপি নেতা অভিযোগ তুলেছেন- রাজ্যে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী এবং রোহিঙ্গা রয়েছেন, যাদের সাহায্য করছে তৃণমূল। এসআইআর-এর তাদের চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
তাকে পাল্টা নিশানা করে তৃণমূলের অভিষেক ব্যানার্জীকে বলতে শোনা গেছে, ‘বিজেপি বলে পশ্চিমবঙ্গে এত বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী আর রোহিঙ্গা রয়েছে, তাহলে এসআইআর-এ হিন্দুদের, মতুয়াদের নাম বাদ পড়ল কেন?‘
সেই আবহে অনুমান করা হয়েছিল এসআইআর-র প্রসঙ্গে বিরোধীদের অভিযোগের জবাব দেবেন তিনি। তবে তা হয়নি।
অন্যদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক বিষয় নিয়ে গেরুয়া শিবির নিয়ে সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে। তার মধ্যে বাংলা বললেই তকমা দেয়ার অভিযোগ, বাংলাদেশী সন্দেহে মানুষকে সীমান্ত পার করানোর মতো অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি সন্তান সম্ভবা সোনালি খাতুনও রয়েছেন, যাকে আদালতের হস্তক্ষেপে ভারতে ফেরানো হয়েছে।
প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে ভারতবিদ্বেষী বক্তব্য ও অস্থির পরিস্থিতি নিয়ে অবশ্য তিনি কিছু বলেননি। তবে ওই সভাতে উপস্থিত শুভেন্দু অধিকারী ও শমিক ভট্টাচার্য অবশ্য তাদের ভাষণে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন।
সূত্র : বিবিসি



