‘বাংলাদেশী’ তকমা দিয়ে বীরভূমের ৫ শ্রমিককে ওড়িষ্যার ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। এর মাস কয়েক আগেই পাইকর ও মুরারইয়ের ছয়জনকে সন্দেহের বশে পুশব্যাক করা হয়েছিল- এখনো যারা দেশে ফিরতে পারেননি।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) পশ্চিমবঙ্গভিত্তিক গণমাধ্যম পুবের কলমের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফের উঠে এলো ‘বাংলাদেশী’ তকমার যন্ত্রণা। বীরভূমের পাঁচ শ্রমিককে ওড়িষ্যায় আটক করে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর ঘটনায় থমকে গেছে দু’টি গ্রামের মানুষ। মাস কয়েক আগেই পাইকর ও মুরারইয়ের ছ’জনকে সন্দেহের বশে পুশ ব্যাক করা হয়েছিল- এখনো যারা দেশে ফিরতে পারেননি। বারবার শুধু বাংলায় কথা বলার অপরাধেই দেশের ভেতরেই এভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন শ্রমিকরা।
ওড়িষ্যার ভদ্রকে বহু বছর ধরে পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করা পাঁচ শ্রমিকের জীবনে হঠাৎ নেমে এলো পুলিশি আতঙ্ক। নলহাটির ভগলদিঘির আব্দুল আলিম শেখ, তার দুই ভাই আতাউর ও সেলিম, চাচাতো ভাই নূর আলম এবং ভাগ্নে মনিরুল- সবাইকে শনিবার দুপুরে নথি যাচাইয়ের নামে থানায় ডেকে আটক করা হয়। পরে তাদের একটি কালীমন্দিরের সামনে অবস্থিত ডিটেনশন ক্যাম্পে ফেলে রেখে যায় পুলিশ। কানাঘুষোয় শুনতে পান- তারা নাকি ‘বাংলাদেশী’!
গ্রামে খবর পৌঁছতেই পরিবারজুড়ে অশান্তি। ‘সব নথি থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশী বলা হচ্ছে’ কাঁপা গলায় আক্ষেপ জানালেন আব্দুল আলিমের স্ত্রী তহিমা বিবি। পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ দ্রুত সকল নথি সংগ্রহ করে ওড়িষ্যা পুলিশের শীর্ষকর্তাদের পাঠিয়েছে। সংগঠনের দাবি, এটা শুধু প্রশাসনিক অবহেলা নয়, বাংলাভাষী শ্রমিকদের প্রতি লক্ষ্যভিত্তিক অপমান।
শেষ খবর অনুযায়ী, শ্রমিকদের ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে ছাড়া হলেও আপাতত প্রতিদিন থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। প্রায় ৪০ বছর ধরে একই এলাকায় কাজ করা মানুষগুলো আজ খুঁজছেন একটাই উত্তর- নিজের দেশেই কেন তাদের এমন বারবার প্রমাণ দিতে হয়?
সূত্র : পুবের কলম



