আদিনা মসজিদ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদহ জেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। সিরিয়ার উমাইয়া মসজিদের আদলে নির্মিত স্থাপনাটি তৎকালীন দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম মসজিদ ছিল। আর এখানে গিয়েই কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের রোষানলে পড়লেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভা সদস্য ইউসুফ পাঠান।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ইউসুফ পাঠান মসজিদটিতে যান এবং তার ভেরিফায়েড এক্স একাউন্টে সেখানকার কয়েকটি ছবি শেয়ার করেন। পাশাপাশি ক্যাপশনে লেখেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের মালদাহে অবস্থিত আদিনা মসজিদ একটি ঐতিহাসিক মসজিদ, যা ১৪ শ’ শতকে ইলিয়াস শাহি বংশের দ্বিতীয় শাসক সুলতান সিকান্দার শাহ নির্মাণ করেন। খ্রিষ্টীয় ১৩৭৩ থেকে ১৩৭৫ সালের মধ্যে নির্মিত এই মসজিদটি সে সময় সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় মসজিদ ছিল। এটি সেই যুগের বাংলার স্থাপত্য ঐশ্বর্য ও শৌর্যের অনন্য নিদর্শন হিসেবে আজও টিকে আছে।’
ইউসুফ পাঠানের এই পোস্টটি দেয়ার পরই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা তার সমালোচনা করতে শুরু করেন। এমনকি ‘বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ’র এক্স একাউন্ট থেকেও পোস্টটি শেয়ার করা হয় এবং তার ক্যাপশনে লেখা হয়- ‘সংশোধন : আদিনাথ মন্দির’। মানে ইউসুফ পাঠান যেটিকে (আদিনা মসজিদ) মসজিদ বলেছেন, বিজেপি সেটিকে মন্দির দাবি করেছে।
এর আগেও এই ঐতিহাসিক মসজিদটিকে মন্দির হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়েছিল, যখন ২০২২ সালে বিজেপি নেতা রতীন্দ্র বসু দাবি করেছিলেন যে, মসজিদের নিচে ‘আদিনাথ মন্দির’কে চাপা দেয়া হয়েছে।
পরে ২০২৪ সালে এক হিন্দু পুরোহিত হীরনময় গোস্বামী মসজিদ প্রাঙ্গণে পূজার আয়োজন করেন, যার পর পুলিশ হস্তক্ষেপ করে মামলা দায়ের করে। এরপর এক হিন্দু আইনজীবী ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে চিঠি লিখে দাবি করেন- এই স্থানে হিন্দুদের পূজা করার অনুমতি দেয়া হোক। যদিও কোনো ঐতিহাসিকের লেখাতেই হিন্দুত্ববাদীদের দাবির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না।
উল্লেখ্য, আদিনা মসজিদ বর্তমানে প্রত্মতাত্ত্বিক নির্দশন হিসেবে সংরক্ষিত। এই মসজিদে নামাজ পড়া হয় না।
সূত্র : ডেইলি জংগ, বিবিসি ও অন্যান্য



