দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে জোরদার করার অঙ্গীকার পাকিস্তান-রাশিয়ার

পাকিস্তান জ্বালানি আমদানি ও বহুমুখী অংশীদারিত্বের প্রয়োজনেই রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে, ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দক্ষিণ এশীয় কূটনীতিতে ভারসাম্য আনার সুযোগ করে দেবে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন |সংগৃহীত

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের এক ফাঁকে বৈঠক করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ সময় উভয় নেতাই দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি, অবকাঠামো, কৃষি ও পরিবহন ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) তুর্কী সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবাল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

পুতিন জানান, সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের বাণিজ্য কমেছে। উভয়পক্ষকে এর কারণগুলো বিশ্লেষণ করে বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। একইসাথে পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যার জন্য শোক প্রকাশ করে পুতিন আশা প্রকাশ করেন, শরিফের নেতৃত্বে দেশটি দ্রুত দুর্যোগ কাটিয়ে উঠবে।

এদিকে শাহবাজ শরিফ সাম্প্রতিক অগ্রগতি তুলে ধরে জানান, গত বছর পাকিস্তান রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করায় বাণিজ্যে নতুন গতি এসেছে। তিনি বেলারুশ, রাশিয়া, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তান পর্যন্ত বাণিজ্য করিডরের গুরুত্বও তুলে ধরেন।

গত বছর আসতানায় বৈঠকের পর থেকে কৃষি, লোহা-ইস্পাত, জ্বালানি ও পরিবহন খাতে দুই দেশের মধ্যে কয়েকটি চুক্তি হয়েছে। জুলাইয়ে করাচির পাকিস্তান স্টিল মিলস পুনরুজ্জীবিত ও সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেয় ইসলামাবাদ ও মস্কো। এটি মূলত ১৯৭০-এর দশকে রাশিয়ার সহায়তায় নির্মিত হয়েছিল।

বৈঠকে শাহবাজ শরিফ জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান ভারতের সাথে রাশিয়ার দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ককে সম্মান করে। তবে মস্কোর সাথে তারাও নিজস্ব শক্তিশালী ও পরিপূরক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়।

পর্যবেক্ষকদের মতে, পাকিস্তান জ্বালানি আমদানি ও বহুমুখী অংশীদারিত্বের প্রয়োজনেই রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে, ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দক্ষিণ এশীয় কূটনীতিতে ভারসাম্য আনার সুযোগ করে দেবে এবং জ্বালানি রফতানি ও আঞ্চলিক সংযোগ উদ্যোগে তার ভূমিকা আরো গভীর করে তুলবে।

বৈশ্বিক সংকট ও নিষেধাজ্ঞার কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, উভয় নেতা অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রচেষ্টা জোরদার করতে সম্মত হয়েছেন। উভয় পক্ষই জ্বালানি, অবকাঠামো, কৃষি ও পরিবহন ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।